কি বললেন? গুলতেকিন বিয়ে করেছে?...
- ছি: ছি: এ বয়সে এ মহিলার ভীমরতি হয়েছে।..... নাতি পুতি নিয়া সুখে থাকবে না তো, নানি এখন বিয়ের পিঁড়িতে...খিক্ খিক্ খিক্ !!
- ওওও তাই নাকি!! আরে বুঝলেন না ভায়া প্রতিশোধ প্রতিশোধ ….. গুমায়ুনের জীবিত থাকতে প্রতিশোধ নিতে পারে নাই, তাতে কি মরার পর তো নিসে …. হেহেহেহেহে
- বলেন কি এ সব??? দেশ তো এখন ইউরোপ আম্রিকা হয়ে গেছে দেখি। এ বয়সে বিয়ে করে তো বাকি মেয়েদেরকে পথ দেখিয়েছে…. বউগুলারে আর ঘরে থাকতে দিলো না...ছি: ছি: ছি:
- খবরতো শুনলাম, যাক্ মহিলার সাহস আছে বটে। শাওনরে এক হাত নেয়া গেছে। এইবার শাওন পাল্টা বিয়া করুক… হাহাহাহা
- ওওও আচ্ছা নাকি। আরে এরা নারীবাদী। পুরুষরা এই বয়সে বিয়ে করে তাই তারাও দেখিয়ে দিতে চায় ওরা কম যায় নয়…. হায়রে নারীবাদী !!
অনেক বলেছেন আপনারা, এবার শুনুন…. গুলতেকিন এর পরিচয় কি শুধুই একজন জনপ্রিয় লেখকের স্ত্রী? না, উনি একজন কবি, একজন লেখক, নিজের পরিচয়ে বেড়ে উঠা একজন আত্ববিশ্বাসী স্বত্ত্বা। যে হাজারো ঝড়ে ভেঙ্গে পড়েনি। মোকাবেলা করেছেন সকল বাধাঁ ঝড় ঝাপটা। আগলে রেখেছেন নিজের সন্তানদের। জনপ্রিয় স্বামী কিংবা চরিত্রহীন স্বামীর শত আঘাতেও ভেঙ্গে পড়েননি। উনি বিয়ে করবেন বা করেছেন তা সম্পূর্ণ উনার ব্যাক্তিগত বিষয়। সেখানে আমার আপনার নাক গলানোর কিছু নাই। নাক বেশী গন্ধ শুকতে চাইলে পিয়াজ নিয়া মাতামাতি করেন…. কারো ব্যাক্তিগত বিষয়ে না।
আমরা যারা হুমায়ুন আহমেদের বই পড়ে বড় হয়েছি তারা জানি আজকের হুমায়ুন হবার পিছনের সবচেয়ে বড় কারিগড় এই গুলতেকিন। শত অভাব অনটন, দু:খ কষ্টের ভার কিভাবে দিনের পর দিন বহন করেছেন, একজন জনপ্রিয় লেখকেকে তার লিখার পরিবেশ তৈরির পিছনে নিজের নিজস্ব স্বত্বাটুকুও বিসর্জন দিয়েছেন। হুমায়ুন আহমেদের আগের বইগুলো পড়লে সবই জানতে পারবেন। আমি বানিয়ে বলছি না, সব কিছুই হুমায়ুন আহমেদ নিজেই লিখেছেন বই এর পর বইতে পাতার পর পাতায়। বই পড়ে আমরা একজন অসম্ভব মমতাময়ী গুলতেকিনকে চিনি, তার দু:খ কষ্ট আনন্দ ভাগ করে নিয়েছিলাম সেই ছোটবেলা থেকে। সেই কিশোরী বয়স থেকে সংসারের জোয়াল বহন করে চলেছিল, শত দু:খ কষ্টেও ছেড়ে যায়নি লেখককে। যে মানুষটি তাকে দু:খে আগলে রেখেছিলেন, পাশে ছিলেন, সাহায্য করেছেন আর জনপ্রিয়তার সময় তাকে ছুড়ে ফেলে দিলো লেখক। আর সে কারনেই আমরা অসম্ভব দু:খ পেয়েছিলাম লেখকের দ্বিতীয় বিয়েতে।
.
.
অভিনন্দন কবি গুলতেকিন!
আপনি বেচেঁ থাকুন নিজের মতো করে। নিজের জন্য বেচেঁ থাকুন, অন্যের জন্য নয় আর। নিজের ভালো লাগায় মন্দ লাগায় বেচেঁ থাকুন.... আনন্দ উচ্ছলতায় বেচেঁ থাকুন ...... জীবনের প্রতিটি মূহুর্ত করে তুলুন অর্থবহ............ আর অনেক অনেক ভালো থাকুন সবসময়।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:২৪