somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সোহানী
হাজার হাজার অসাধারন লেখক+ব্লগারের মাঝে আমি এক ক্ষুদ্র ব্লগার। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া লেখালেখির গুণটা চালিয়ে যাচ্ছি ব্লগ লিখে। যখন যা দেখি, যা মনে দাগ কাটে তা লিখি এই ব্লগে। আমার ফেসবুক এড্রেস: https://www.facebook.com/sohani2018/

আসেন, একই প্যাচাল পাড়ি আবার......

১৪ ই মে, ২০২০ সকাল ৯:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ক'দিন ধরেই ব্লগে গার্মেন্টস্, মার্কেট খোলা নিয়ে বেশ ক্যাচাল চলছে। এবং অনেকেই এসব খোলা নিয়ে খুব রেগে আছেন। অবশ্যই তাদের যুক্তি সঠিক। করোনা পরিস্থিতিতে বড় বড় হাতি ঘোড়া যেখানে হাবু ডুবু খাচ্ছে সেখানে আমাদের মতো মাছিই বা কি করবে। কিন্তু তার বিপরিতেও কিছু যুক্তি আছে আমি সেটা নিয়েই বেশি চিন্তা্য় আছি।

এবার বলেন আপনারা এদেশে প্রায় কোটির কাছাকাছি গার্মেন্টস্ কর্মী আছে, কয়েক কোটি ছোট বড় মাঝারি দোকান কর্মচারী আছে, সাথে আছে রিক্সাওয়ালা, টেক্সিওয়ালা, ড্রাইভার, কন্ট্রাকটার, ফেরিওয়ালা, ফুটপাথের হকার বা ভিক্ষুক। এই আঠারো কোটি মানুষের পরিবারের প্রধান কোন না কোন ভাবে আয় করে সংসার চালায়। এরকম লকডাউনে তাদের পেটের ভাত কিভাবে জোগাড় হয়?? আমাদের দেশের কি পর্যাপ্ত আর্থিক সঙ্গতি আছে যে এ মানুষগুলোকে বাসায় খাবার পৈাছে দিবে?

...না নেই, আমাদের সে সামর্থ্য নেই। তার উপর যাও বা সরকার দেয় তার সিংহভাগইতো চোর বাটপার নেতা-ছাতারা খেয়ে শেষ করে দেয়। বাকি যা কিছু অংশ তাদের হাতে পৈাছে তা দিয়ে কি এ বিরাট সংসার চলে??

করোনায় পুরো বিশ্ব এখন তালমাতাল অবস্থায় আছে। অর্থনীতির চাকা ঘোরানোর জন্য যা আছে তার সবই প্রায় বন্ধ। যার যা রিজার্ভ আছে তা দিয়ে বর্তমানকে সামাল দিচ্ছে। আমেরিকা, ইউরোপ কান্ট্রি, কানাডা, অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশ ও হিমশিম খাচ্ছে বর্তমান অবস্থা সামাল দিতে। সেখানে আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশ যার জিডিপির একটা বড় অংশ বিদেশী লোন ও সাহায্যের উপর নির্ভর করে তার বর্তমান ও ভবিষ্যত নিয়ে আতংকিত হবার মতো যথেষ্ট কারন আছে।

একটু শেয়ার করি ওয়েসন্টার্ন কান্ট্রির লাইফ স্টাইল। ওয়েদার চেইন্জ এর কারনে আমেরিকা, ইউরোপ বা কানাডার মতো দেশগুলো সারা বছরেই পোষাক কিনতে হয়। তবে সারা বছর কিনলেও এর বড় অংশই কেনা হয় স্প্রিং ও সামারে। এসব দেশে সামার মানে ঘুরে বেড়ানো, পার্টি ফাংশান, আনন্দ। তাই পোষাকের চাহিদাও থাকে সীমাহীন। আর সেকারনে গার্মেন্টস্ আমদানীর বড় অংশই আসে এ সময়ে। এবার যেহেতু এ স্প্রিং ও সামার বন্ধ, পার্টি ফাংশান বন্ধ তাই কেনাকাটাও এক রকম বন্ধ। আর তার ধারাবাহিকতায় গার্মেন্টস্ আমদানীও বন্ধ হতে বাধ্য।

এবার একটু হিসেব করি, আমাদের প্রধান আয়ের উৎসই গার্মেন্টস্ ই্ন্ডাস্ট্রি। তাই আমদানী কম মানে গার্মেন্টস্ ই্ন্ডাস্ট্রিগুলোর আয় কমে যাওয়া। আর এসব ই্ন্ডাস্ট্রির আয় বন্ধ মানে এর সাথে জড়িত শ্রমিক কর্মচারী মালিকদের আয় বন্ধ। মালিক বা আপার শ্রেনীর হয়তোবা কিছু সঞ্চয় আছে তা দিয়ে চলতে পারবে কিন্তু বাকিরা যাদের শুধুমাত্র সামান্য বেতনের টাকায় সংসার চলতো তাদের কিভাবে দিন যাবে?

আরো আরো আছে, মধ্যপ্রাচ্য থেকে শুরু করে সব দেশেই বখেন শ্রমিকরা বেকার। অনেককে আবার দেশেই পাঠিয়ে দিচ্ছে। এ অবস্থায় তাদের আয়ই শূণ্যের কোঠায়। তাই রেমিটেন্স কি পরিমান ধাক্কা খাবে তা বলার নয়। তাহলে সেই আয়ও বন্ধ হবে বলতে গেলে। তাদের উপরে ডিপেন্ড করা পরিবারগুলোর আয়ও শূণ্য হবে।

এ স্বল্প আয়ের মানুষগুলোর উপর ডিপেন্ড করা মুদি দোকান, ফেরিওয়ালা, খুপরি ঘরের বাড়িওয়ালা, রিক্সাওয়ালা যারা দিন আনে দিন খায় তারা কিভাবে দিন কাটাবে? রোজা চলছে, সামনে ঈদ কিভাবে এ মানুষগুলো তাদের পেটের ভাত জোগাড় করবে? অর্থনৈতিক চাকা বন্ধ মানে কারো ঘরেই খাবার নেই। করোনার ভয়ে গৃহবন্দী থাকা যায় কিন্তু পেটে ভাত না থাকলে কতক্ষন ঘরে থাকা যায়??

আমাদের এমন কোন সম্পদ নেই যে এই অসহায় গরীব মানুষগুলোকে ঘরে খাবার পৈাছে দিবো। যে সীমিত সম্পদ আছে তা দিয়ে কিছুই করা সম্ভব নয় তাই যেভাবেই হোক দেশে আয়ের ব্যবস্থা করতেই হবে। বর্তমানকে চালাতে হবে আর ভবিষ্যতের কথাও ভাবতে হবে। অর্থনীতির চাকা ঘুরাতেই হবে।

অনেকের কাছে কথাটা আত্মহত্যার সামিল। কিন্তু ভেবে দেখুন, ঘরে খাবার না থাকলে ওই লোকগুলো এমনিতেই ঘরের বাইরে বের হবে খাবারের সন্ধানে। তারপরও যখন তা না পাবে তখন তো জোর করেই খাবার ছিনিয়ে আনতে চাইবে। বাসায় সন্তানকে অভুক্ত কতদিন রাখতে পারবে??? এ লোকগুলো মরিয়া হয়ে যাবে।

দেশকে সামাল দিতে ইন্ডাস্ট্রিগুলো চালু করতে হবে, পরিবহন ব্যবস্থা চালু করতে হবে, রেমিেটেন্স এর ব্যবস্থা করতে হবে, ব্যাংকিং সেবা রেগুলারাইজড্ করতে হবে, কৃষকের ফসলের বিক্রির ব্যবস্থা কতে হবে। তবে এর জন্য দরকার সঠিক এবং কার্যকরী পদক্ষেপ। সেটা কি নিশ্চিত করতে পারবে সরকার?

.
.
. অনেক ভারী জ্ঞানের কথা হইছে, আসেন একটা গান শুনি। আমার প্রিয় Lindsey Stirling, Lindsey Stirling is an American violinist, songwriter, and dancer.
Lindsey Stirling - Something Wild ft. Andrew McMahon in the Wilderness

কার্টুন কৃতজ্ঞতা: Funny Sri Lankan Political Cartoons
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই মে, ২০২০ রাত ৯:২৬
৩০টি মন্তব্য ৩০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:১৩

ফেসবুকে বাঙালিদের মধ্যে ইদানিং নতুন এক ফতোয়া চালু হয়েছে, এবং তা হচ্ছে "দাওয়াতের নিয়্যত ছাড়া কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।"
সমস্যা হচ্ছে বাঙালি ফতোয়া শুনেই লাফাতে শুরু করে, এবং কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×