somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সোহানী
হাজার হাজার অসাধারন লেখক+ব্লগারের মাঝে আমি এক ক্ষুদ্র ব্লগার। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া লেখালেখির গুণটা চালিয়ে যাচ্ছি ব্লগ লিখে। যখন যা দেখি, যা মনে দাগ কাটে তা লিখি এই ব্লগে। আমার ফেসবুক এড্রেস: https://www.facebook.com/sohani2018/

মেয়েমানুষ নয়, আসুন তাদের মানুষ ভাবতে শিখি

১৬ ই অক্টোবর, ২০২০ সকাল ৮:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান নারী ও শিশুর প্রতি যৌন সহিংসতার কারণ ও তা প্রতিরোধে করণীয়-১ম পর্ব

লিখাটা ব্লগার জাফরুল মবীন ভাই এর। বাংলাদেশের নারী নির্যাতনের পরিসংখ্যান দেয়া আছে। আপনি যদি একজন সত্যিকারের মানুষ হোন (হাত পা ওয়ালা কোন বিশেষ প্রাণী নয়) তাহলে তা দেখে আতঁকে উঠবেন!


ধর্ষণ, নারীর প্রতি সহিংসতা নিয়ে আন্দোলন হচ্ছে। এরকম সহিংসতা কি হঠাৎ ই শুরু হয়েছে দেশে? একটি সমাজ কি রাতারাতিই নারীর প্রতি সহিংস হয়ে উঠেছে?

না, আজকের এ বিপর্যয় অনেকদিনের ফসল মাত্র। কিন্তু কেন হচ্ছে? কেন পুরুষ নারীর প্রতি এতোটা নির্দয়? নারীর গর্বে জন্ম নেয়া, বা নারীর আদরে বেড়ে উঠা সে পুরুষ কিভাবে নারীর প্রতি এতোটা সহিংস হতে পারে?? নিজেকেই প্রশ্ন করি?

উত্তর কিন্তু সহজ......... !

১) ক্ষমতার দ্বন্দ: পুরুষ নারীকে তার প্রতিপক্ষ ভাবে। নারীকে কখনই আপন করে নিতে পারেনি। কি মা হিসেবে. কি বোন হিসেবে, কি স্ত্রী হিসেবে! খুব খারাপ লাগছে শুনতে? কিন্তু এটাই বাস্তবতা। আপনি বুকে হাত দিয়ে বলুন, আপনি কি চাননি আপনার স্ত্রী, আপনার বোন, আপনার সহকর্মী আপনার অধীনস্ত থাকুক? আপনি চেয়েছেন সবসময়ই তার চেয়ে এগিয়ে থাকতে। তাকে মনের অজান্তেই হিংসে করেন। কখনই তাকে তার যোগ্য সন্মান দিতে চাননি। তাই যখনই পেরেছেন তাকে আঘাত দিয়েছেন।

২) অসন্মান: আপনি জন্ম থেকেই দেখেছেন আপনার মা অত্যাচারিত। আপনার বাবা কথায় কথায় আপনার মাকে অপমান অপদস্ত করে। বাড়ির বাকি সদস্যরাও পারলে আপনার মাকে অপদস্ত করে। সে যে একটা মানুষ তা ও আপনি মাঝে মাঝে ভুলে যান। আবার দেখেন সেই মা ই আপনার বোনকে নয় আপনাকেই পক্ষেই বেশী ঝুঁকে। তাই আপনার অজান্তেই মনেই গেঁথে নেন নারী মানেই তাকে যখন ইচ্ছে অপমান করা যাবে, এটাই আপনার অধিকার। তাই যখনই "না" শব্দটা কোন নারীর মুখে শোনেন তখনই আপনার মাথা গরম হয়ে যায়। সেটা স্ত্রী হোক, বান্ধবী হোক, কিংবা প্রেম নিবেদন করা কোন মেয়েই হোক। তাকে আঘাত করার জন্য মুখিয়ে থাকেন।

৩) অর্থনৈতিক বৈষিম্য: ইসলাম নারীদেরকে সম্পত্তির ভাগের অংশ যেমন কম দিয়েছে তেমনি সামাজিকভাবে মেয়েদেরকে সবসময়ই ঠকানোর একটা চেষ্টা থাকে। সেটা হতে পারে বাবা মায়ের দিক থেকে, হতে পারে স্বামীর দিক থেকে, হতে পারে ভাইয়ের দিক থেকে.... এমন কি সহকর্মীর কাছ থেকে। সব দিক ঠেকেই সে ঠকে আসছে। এমন কি পারিবারিকভাবে মেয়েকে শিক্ষিত করার ব্যাপারেও অনেক পরিবারের অনীহা। কারন খুব সহজ, সবসময়ই বাবা মা ছেলে সন্তানের উপর ডিপেন্ড করতে চায়। মেয়ে সন্তানকে পরের পরিবারের ভাবে নিজের পরিবারের সদস্য নয় কিছুতেই।

৪) মেয়েতো মানুষ নয় মেয়েমানুষ: ব্লগেরই এক ভাইয়ের মুখে শোনা ঐতিহাসিক বাণী, "পুরুষ রাগে বাদশা, মেয়ে রাগে বেশ্যা"। অর্থ্যাৎ একটি মেয়ের রাগ দু:খ করার মত অধিকারও থাকে না। সে রাগ করেছে মানে তাকে যে কেউই ইউজ করতে পারে। এ ধরনের বিশ্বাস যদি ব্লগের মতো আধুনিক স্থানে দেখি তাহলে ঘরে ঘরে দেখা খুব স্বাভাবিক। তাই একটি মেয়েকে অপমান অপদস্ত করাই স্বাভাবিক যেন, কিন্তু সে মেয়ে কোনভাবেই মুখ তুলে কথা বলতে পারবে না।

৫) মেয়েদেরকে অসন্মানসূচক কথা: আমি অনলাইনে বিভিন্ন গ্রুপের সাথে আছি। এবং বলতে গেলে এরা সবাই উচ্চ শিক্ষিত ভদ্রলোক। কিন্তু গ্রুপ ম্যাসেন্জারের ৮০% ই হলো মেয়ে সংক্রান্ত কোন জোক্স। শুধু কি এখানে, সারা অনলাইন ঘাটুন, দেখবেন যা জোক্স আছে তা মেয়েদেরকে ঘিরেই, পৃথিবীতে যত খারাপ গালি আছে সবই প্রায় স্ত্রীবাচক। অর্থ্যাৎ মেয়েদেরকে নিয়ে হাসাহাসি, নোংরা কথা খুব স্বাভাবিক একটা বিষয়, খুব আনন্দঘন একটি বিষয়। এটা নিয়ে মাইন্ড করার কিছু নেই।

এরকম আরো অনেক কিছু আছে। তাই লিখাটা বড় করতে চাই না। এ আন্দোলন, চিৎকার বা ফাঁসি সত্যিকারের এ সহিংসতার সমাধান আনবে না যতক্ষন পর্যন্ত আপনি নিজের মনকে শুদ্ধ করেন। নিজের পরিবারের মেয়েটিকে যথাযথ সন্মান করেন।


আসুন, একটু ভাবুন, একটু নারী নির্যাতনের কারনগুলো নিয়ে আবারো ভাবুন্।.....

নিজের মন থেকে সন্মান দেন একজন নারীকে।
নারীকে প্রতিপক্ষ হিসেবে নয় একজন আপন হিসেবে ভাবতে চেস্টা করুন।
নারী শুধু ভোগেরই বস্তুরই নয় একজন মানুষ, মায়া মমতায়ভরা একজন মানুষ ভাবতে শিখুন।


দেখবেন অনেক কিছুর সমাধান হয়ে যাবে, অনেক পাজল সহজে মিলে যাবে।

সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ১২:৪৬
২৩টি মন্তব্য ২৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×