আদি-অস্ত্রাল পরিচয়
ড.আহমদ শরীফ তাঁর ‘বাঙলা,বাঙালী ও বাঙালীত্ব’ গ্রন্থে লিখেছেন, আদি অস্ট্রিকরাই (আদি-অস্ত্রাল) এদেশের প্রাচীনতম বাসিন্দা। (পৃষ্ঠা,২৪)
কাবেদুল ইসলাম লিখেছেন, এখন পর্যন্ত যে-সব তথ্যপ্রমাণ আবিস্কৃত হয়েছে বা পাওয়া গেছে তার ভিত্তিতে একথা নিঃসন্দেহে বলা যেতে পারে যে বাংলার আদিম অধিবাসী ছিল অস্ট্রিক ভাষাভাষী জনগোষ্ঠী। (প্রাচীন বাংলার জনজাতিগোষ্ঠী। পৃষ্ঠা,১৬৭)
অস্টিক শব্দটি লাতিন শব্দAuster থেকে উদ্ভূত। এর মানে দক্ষিণ বা দক্ষিণদেশীয়।
অস্ট্রিক ভাষাভাষী জনগোষ্ঠী এককালে ভারতবর্ষ থেকে প্রশান্তমহাসাগরের ঈস্টার দ্বীপ অবধি ছড়িয়ে ছিল। (দ্র: স্যার জর্জ আব্রাহাম গ্রিয়ারসন সম্পাদিত লিঙ্গুয়িস্টক সার্ভে অভ ইন্ডিয়া।
অস্ট্রিক ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীকেproto-Austroloid বা আদি-অস্ত্রাল বলার কারণ, মনে করা হয় যে অস্ট্রেলিয়ার আদিম অধিবাসীদের সঙ্গে অস্ট্রিক ভাষাভাষী জনগোষ্ঠী মিল রয়েছে। (আর এখানেই আমি ভুল করেছিলাম। বলেছিলাম, বাংলার আদিম অধিবাসী এসেছিল অস্ট্রেলিয়া থেকে!জলপথে ...)
তা আদি-অস্ত্রালর দেখতে কেমন ছিল?
খর্বাকৃতি। মাথার খুলি দীর্ঘ বা লম্বা থেকে মধ্যমাকার, নাক চ্যাপ্টা ও চওড়া। গায়ের রং কালো।
অস্ট্রিক জনগোষ্ঠীর ভাষা দুভাগে বিভক্ত ছিল।
ক) অস্ট্রো-এশিয়াটিক।
খ) অস্ট্রোনেশীয়।
প্রাগৈতিহাসিক বাংলার মানুষ কথা বলত অস্ট্রো-এশিয়াটিক ভাষায়।
আর, বেদ ও বিষ্ণপুরাণে যে নিষাদ জাতির কথা রয়েছে অনুমান করা হয়, তারাই পূর্ব ভারতের অস্ট্রিক ভাষাভাষী জনগোষ্ঠী।
আজ এ পর্যন্তই।
এ পর্বের তথ্যের মূল উৎস: কাবেদুল ইসলাম রচিত “প্রাচীন বাংলার জনজাতিগোষ্ঠী।”
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১২:২১