somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কয়লার রঙ বিষয়ক জটিলতা

২৬ শে আগস্ট, ২০১১ দুপুর ১:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গল্পের প্রাক কথন


এই গল্পের সাথে আমার সম্পৃক্ততা না থাকলেও যে শহরে এখন আমি বাস করি, তার সাথে রয়েছে। আমার কাজ হচ্ছে প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান নিয়ে। আর এই শহরের আশে পাশে এ রকম বেশ কিছু জায়গা রয়েছে, যার ফলে শহরটা এখন আপাতত আমার বাসস্থান। দিনের বেলা বের হয়ে পড়ি। প্রখর রোদ মাথায় নিয়ে ইতিহাসের সন্ধানে আশেপাশের এলাকায় ঘুরে বেড়াই।

এ সবের কোনটা হয়ত বিহার, আবার কোনটা কোন হয়ত এক বিত্তশালী জমিদার অথবা কখনো কখনো স্বাধীন এক রাজার ক্ষয়ে যাওয়া ভিটা। কখনো স্রেফ মাটির একটা স্তুপের মধ্যে হয়ত ক্ষয়ে যাওয়া কোন এক ইতিহাস বাস করে।

আমি সেই ইতিহাস সত্যি না মিথ্যা তা নিয়ে কাজ করছি। ইতিহাসের বড় অংশে থাকে এক চমকপ্রদ গল্প, যা এক সময় সাধারণের কাছে রূপকথা হয়ে ওঠে।



আমার কাজ হচ্ছে ইতিহাসের গল্পটাকে আবার খুঁড়ে বের করা। তার জন্য আমি আশেপাশের এলাকায় গল্প অনুসন্ধান করছি। এর জন্য এই শহরের একটা হোটেলে ডেরা গেড়েছি। দিনে গল্প খুঁজে বেড়াই আর রাতে এসে হোটেলে নাক ডেকে ঘুমাই।



এই কাজে এর আগেও এই শহরে আমার আসা হয়েছে। যেমন এই শহরের সাথে আমার কোন ব্যক্তিগত সম্পর্ক নেই, তেমনি নেই শহরের লোকদের সাথে। কিন্তু এবার এই শহরে এসে মনে হচ্ছে শহরটা বেশ শঙ্কিত এবং উত্তেজিত।

এর কারণ, প্রথমে জানা যায় এই এলাকা কয়লার খনির উপরে অবস্থিত। এতে এলাকার লোকজন কোথায় আনন্দিত হবে তা না আন্দোলন শুরু করে দেয়। আন্দোলনের পথ ধরে আসে বিক্ষোভ, মিছিল, গুলি, মৃত্যু। এখন অবশ্য সব শান্ত, আবার শান্ত না, মাঝে মাঝে মিছিলের স্বর শুনতে এবং দেখতে পাই।



আমার কাজের সাথে এর কোন সম্পর্ক নেই, কিন্তু এই গল্পের সাথে এই ঘটনার সম্পর্ক রয়েছে।



গল্পের শুরু


সেদিন বেশ প্রাচীন এক মন্দির দেখতে গিয়েছিলাম। আদতে এখন তা মাটির স্তূপে পরিণত হয়েছে। এই মন্দিরকে ঘিরে বেশ কিছু গল্পের সূত্রপাত, ফিরে আসার সময় বুঝতে পারলাম একদিন হয়ত গল্পটাই থেকে যাবে মন্দিরটা নয়।

ফিরতে ফিরতে বিকাল গড়াল। ফিরছিলাম ভটভটি নামক যানে। যান হিসেবে মোটেও সুবিধার নয়,কিন্তু উক্ত এলাকায় এর বিকল্প না থাকায় এটাতে করেই রওনা দিলাম। বিকেল তখন উষ্ণতা ছড়িয়ে নিজেকে সন্ধ্যার দিকে মেলে দিচ্ছে। ভটভটির ছাদ না থাকায় পুরো বাতাসটা উপভোগ্য হয়ে উঠেছে। আর দূরে ঈশান কোনে এক টুকরো কালো মেঘ দেখা যাচ্ছে।

বলতে হবে যেখানে ঝড়ের ভয়, সেখানে টায়ার পাংচার হয়। শহরে ঢোকার আগে ভটভটির টায়ার বিকট শব্দ করে নিজের মৃত্যু ঘোষণা করল। মেঘ যখন ঘন হয়ে ঝড়ের পূর্বাভাস হিসেবে বাতাস তৈরি করা শুরু করল তখন আবিষ্কার করলাম, এই সড়কে বিশাল বিশাল বৃক্ষ আর আমি ছাড়া কেউ নেই।

সাধারণ এই ধরনের ঝড়ের পরে আসে মুষলধারে বৃষ্টি। গাছের নিচে আশ্রয় মিলতে পারে কিন্তু মেঘ ঘন অন্ধকার সৃষ্টি করায় একটা মানুষ্য বসতির অনুসন্ধান শুরু করলাম।

বাতাসের বেগ যত বাড়তে লাগল তার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়তে লাগল আমার দৌড়ের গতি। একটা সময় চোখে পড়ল ক্ষীণ একটা আলোর রেখা।

যে আলোকে লক্ষ্য করে দৌড়চ্ছিলাম, আবিষ্কার করলাম সেটা রাস্তার পাশের একটা চায়ের দোকান। এর সাথে লাগোয়া মুদি দোকান বন্ধ থাকলেও চায়ের দোকানটা এই ঝড়ের মধ্যে খোলা রয়েছে।

সেখানে হ্যারিকেন জ্বলছে। ঝড় সন্ধ্যাকে রাতে পরিণত করেছে।

দোকানের মালিক আন্তরিকতার সাথে একটা গামছা এগিয়ে দিল, কারণ বৃষ্টির ফোঁটা আমাকে বেশ ভিজিয়ে দিয়েছে।



দোকানি আর তার পিচ্চি সহকারী ছাড়া দোকানে এক প্রবীণ বসে আছে। দোকানটা বেশি বড় না। তবে তার পেছনটা বিস্তৃত। সেখানে একটা টিউবয়েল বসানো। তার সামনে চায়ের চুলা। কিন্তু চুলাটা নেভানো। ঝড়ের কারনে হয়ত বা। এতে বোঝা গেল যে চা পওয়ার আশা বৃথা।

দোকানের ক্যাশবাক্সের সামনে মালিক বসা।

আর তার মাথার উপর হ্যারিকেনটা ঝুলানো। ঝড়ের বাতাসে তাঁর আলোটা নাচছে।

হারিকেনের চেহারাটা পুরোনো কিন্তু পরিষ্কার। এতে বোঝা যাচ্ছে দোকানে বিজলি বাতির তার থাকলেও সেটা দিয়ে বিদ্যুৎ আসে সামান্য। আর এই রকম ঝড়ের মধ্যে তাকে আসা এবং তার আশা করে যায় না।

দোকানদার এক ফাঁকে জিজ্ঞেস করে গেছে কিছু খেতে চাই কিনা, কিন্তু অনেক বেলা করে খাওয়ার ফলে আর কিছু খেতে ইচ্ছে করল না। চা পেলে মন্দ হত না, কিন্তু এই মুহূর্তে তার উপায় নেই। তাই দোকানে বসে ঝড়ের রুপ দেখা ছাড়া আর আর কিছু করার নেই। তাই করছিলাম। এমন সময় সেই প্রবীণ ব্যক্তিটি আমার সামনে এসে বসল।



“আপনি কি ঢাকায় বাস করেন”। পরিষ্কার এবং শুদ্ধ কণ্ঠে প্রবীণ উচ্চারণ করল

আমি বললাম “জী”।

এর পরের প্রশ্নটির জন্য আমি মোটেও তৈরি ছিলাম না, যদিও প্রশ্নটি একটা অতীব নির্দোষ প্রশ্ন।

“ঢাকায় কারেন্ট কেমন যায়”?

এখানকার মত এত ঘন ঘন যায় না, তবে সেখানেও কারেন্ট যায়। অবশ্য গরমের সময় ঘন ঘন লোড শেডিং হয়। আমি তার প্রশ্নের উত্তর দেই, কিন্তু মনে মনে ভাবি লোড শেডিং-এর মানে সে কি জানে।



তার মানে দেশে সারা দেশে এক অবস্থা। চাহিদার তুলনায় বিদ্যুতের উৎপাদন কম।

বোঝা গেল লুঙ্গি সাধারণ শার্ট পরা এই লোকটা বেশ লেখাপড়া জানে।



তার দ্বিতীয় প্রশ্ন এই ধারণাকে শক্তিশালী করে।

তিনি বলে উঠেন কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়, তাই না?

আমি ঘাড় নাড়ি।



তিনি তার প্রশ্নের সাথে একটা উত্তর জুড়ে দেন, “আর এই এলাকায় কয়লা পাওয়া গেছে। তা হলে এই কয়লা বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজে লাগানো যেতে পারে”।

ঘাড় কাত করে উত্তর দেই।

ইতোমধ্যে মনে মনে আমি ভাবতে শুরু করেছি এই প্রবীণ কেমন ধারা লোক। গ্রামে বা মফস্বলে কিছু মানুষ পাওয়া যায়, যারা অন্যকে জানাতে পছন্দ করে তিনি আসলে কতটা জ্ঞানী, ইনি কি সেই ধারার লোক?

আমি এখানকার কয়লা নিয়ে খানিকটা পড়ালেখা করেছি। এখানকার কয়লা উত্তম মানের। এটা বিটুমিনাস কয়লা। এখানে মজুতের পরিমাণ ৫৭২ মিলিয়ন টন। প্রবীণের পড়ালেখার দৌড় বোঝা যায়।

এবার আমাকে আর ঘাড় কাত করতে হয় না, আমি নিজেও এই তথ্য জানতাম না।

তিনি অবশ্য থামেন না, এর সাথে যোগ করেন, খনি কোম্পানী চাইছে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা তুলতে।

এই তথ্য আমার জানা ছিল। কারণ এই নিয়ে তীব্র আন্দোলন।

লোকটা বলতে থাকে, এতে আশে পাশের ৮ বর্গ কিলোমিটার এলাকা নষ্ট হয়ে যাবে। কিন্তু কয়লা তো পাওয়া যাবে। বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান তো হবে। এই চাষের জমি কি ফিরে পাওয়া যাবে? লোকগুলো যাবে কোথায়?

কয়লা আমার বিষয় নয়, তাই এই বিষয়ে চুপ থাকা ছাড়া উপায় নেই।



লোকটা খানিকটা বিজ্ঞের মত মাথা নাড়িয়ে বলে, এটা পরবর্তী সমস্যা। আপাতত বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান করা দরকার।

তিনি হঠাৎ করে বিষয় পাল্টে ফেলেন।



মাটির নিচে কয়লা এলো কোথা থেকে?

নিজেই তার উত্তর দিতে থাকে।

এক সময় প্রাণী এবং গাছ মাটির নিচে চাপা পড়ে যায় এবং যুগ যুগ ধরে চাপা পড়ে তারাই কয়লা হয়ে যায়।



আচ্ছা আপনি কি জানেন এখনকার মানুষরা কয়লা উঠাতে দিচ্ছে না কেন? সমস্যা কোথায়?

এবার আমি মনে বলি তা জেনে আমার দরকার কি?



লোকটা নিজের মনে বলে, তা ঠিক, এ সব যেনে আপনার লাভ কি? আমি তো পাহাড়ের মানুষদের সমস্যা নিয়ে ভাবি না।

আমি শুধু ভাবছি এখনকার মাটির কান্নার কথা। পাহাড়ের কান্না আমার কানে বাজে না। এখনকার মানুষেরা ভাবছে আন্দোলন করে মাটিকে বাঁচিয়ে রাখবে, তারা আসলে বোকা অথবা তারা কয়লার ইতিহাস সম্বন্ধে জানে না।

আমি পড়েছি আর জেনেছি, যেখানে কয়লার মত কয়লার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে, সেখানে রয়েছে রক্তের ইতিহাস।

এই মানুষদের এই এলাকা ছেড়ে পালাতে হবে, আর তা না হলে মরতে হবে। কেউ না কেউ কয়লার জন্য আবার এলাকার মাটি রক্তে লাল করে দেবে।

কিন্তু এরা তো যেতে চাইবে না, মাটি কামড়ে পড়ে থাকার চেষ্টা করবে। অশান্তির সৃষ্ট করবে।

আর তাদের তাড়িয়ে যে কয়লা পাওয়া যাবে তাতে ৩৮ বছরের কাজ চলবে। তারপর?

এবার লোকটা তার কণ্ঠস্বর নিচু করে ফেলল, যেন আমি ছাড়া আর কেউ শুনতে না পায় এই স্বরে বলল “আমার কাছে এর একটা গ্রহণযোগ্য সমাধান আছে। এই সব লোকদের গুলি করে মেরে ফেলা। এরপর তাদের একটা বড় গর্ত খুঁড়ে একসাথে মাটি চাপা দেওয়া। যদি যুগ যুগ ধরে এই মানুষগুলো মাটির নিচে চাপা পড়ে থাকে, তা হলে তারও তো একদিন কয়লায় রূপান্তরিত হবে।



লোকটা থামল, কিন্তু সামান্য সময়ের জন্য।

কিন্তু এইখানে নিজেই এক সমস্যায় আক্রান্ত হয়েছি। আচ্ছা আপনি কি বলতে পারেন, এই সব কয়লার রঙ কি কালো হবে, না লাল হবে?……

বাইরে বৃষ্টির শব্দটা মনে হচ্ছে খানিকটা ধরে এসেছে।

দোকানদার বলল; স্যার কিছু মনে করবেন না, উনি একজন স্কুল শিক্ষক। এই আন্দোলনে তার একমাত্র ছেলে মারা গেছে। এরপর থেকে মাথার ঠিক নাই।

বাইরে ঝড়ের শব্দ আরো তীব্র হবার আওয়াজ পাচ্ছি। মনে হচ্ছে এই ঝড় সহজে থামবে না।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×