টানা দুই মাসের অসুখে এস এস সির গোল্ডেন এ+ এইচ এস সি তে ফিকে হতে শুরু করেছে। ছন্দতনের আষ্টেপৃষ্টে উজ্জল ভবষ্যিতের রঙিন স্বপ্ন পরাহত। দুর্বিনীত প্রত্যাশা হতাশায় রুপ নিতে আর বুঝি দেরি নেই। যেন সুনামীতে বিধ্বস্ত কোন নগরী। তারপর আমার তত্তাবধান। ছিন্নভিন্ন হয়ে যাওয়া এক বালিকা জোড়া লাগতে শুরু করেছে। চির গম্ভীর সেই মুখে এক চিলতে হাসিও যেন দেখা যায় কদাচিৎ রংধনুর মত। মনে হত মহাসমুদ্রে ডুবন্ত কোন মানুষকে টেনে তোলার মহান দায়িত্বে আমার আন্তরিকতার কমতি নেই। সেই শুরু।
নিবিষ্ট মনে বইয়ের দিকে তাকিয়ে শান্ত বিকেল। সদা গম্ভীর সেই শিশুসুলভ মুখের এক চিলতে হাসি কত সুন্দর আর নিষ্পাপ হতে পারে রবীন্দ্রনাথ যদি দেখতেন ! সদ্য ঘুম থেকে উঠে আসা এক বই পোকা। সদ্য বিধৌত মুখে পরিচ্ছন্ন পানির রেশ। কৃত্রিমতার কোন আস্তরন ছাড়াই সেকি অদ্ভুত সুন্দর! প্রকৃতির কোনো পাপ তাকে স্পর্শ করেনি কখনো।
তারপর সাথে থেকে সাহস জুগিয়ে চলা- 'তোমার মত গুড স্টুডেন্ট দের জন্য এটুকু গ্যাপ কোনো ব্যপারই না, You are going to get golden A+ again । আর কথায় কথায় পদার্থ, গণিত আর রসায়নের জটিল সব তত্ত্ব, সমীকরণ কিভাবে যে জল হয়ে যায়! আরো কত উৎসাহ, এগিয়ে যাবার নির্ভেজাল মুলমন্ত্র।
স্বপ্নের সিড়ি বেয়ে আবার উঠতে শুরু করেছে সুলতানা। মন ফিরে পেয়েছে আত্মবিশ্বাস। আকাশ ছোয়ার এইতো অল্প বাকি। পৃথিবী আগের মতই সুন্দর...।
পুরুষের চোখও অশ্রুসজল হয়। বিশ্বাস করার প্রয়োজন পরেনি কখনো। কখনো জানতে হয়নি হৃদয় ছিড়ে যাওয়া তারে বীণার সুর কি সকরুণ। মনে হতো, অশ্রু সেতো পুরুষের তরবারির বিপরীতে নারীর যুদ্ধাস্ত্র। অথচ আজ? নীরবতা ডুকরে কেঁদে উঠে। একাকীত্ব কি নিদারুন! কত অবলীলায় বালিশ ভিজে যায়! প্রতিরাতে। আর সেই জলে ভেসে যায় আমার থারড্ ইয়ারের ফাইনাল পরীক্ষাগুলো। একটা একটা করে। নিস্তব্দ নদীতে দিগভ্রান্ত কাগজের নৌকার মত।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জুন, ২০১১ রাত ৯:১৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



