somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রিয় মুভির প্রিয় দৃশ্য : Chariot race of Ben-Hur (1959)

২৪ শে নভেম্বর, ২০১১ রাত ৯:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মানব মস্তিষ্কের একটি উল্লেখযোগ্য দিক হল এটি স্মৃতি রক্ষার ক্ষেত্রে খুব সৌখিন।কোন কিছু সম্পর্কে সে সেই স্মৃতিটুকুই সংরক্ষণ করে যে অংশটুকু সে রেখে দিতে পছন্দ করে।ভেবে দেখুন,আপনি যে মুভিগুলো দেখেছেন,অনেকদিন পর ঐ মুভির কথা মনে পড়লে আপনার প্রিয় কোন দৃশ্যের কথায় মনে পড়বে,পুরো মুভির কথা মনে পড়বে না।আজ তেমনই একটি প্রিয় মুভির প্রিয় একটি অংশ নিয়ে লিখতে বসেছি।

Ben-Hur (1959) মুভিটি তো আমাদের সবারই দেখা।ছবিটি সেই তিনটি মুভির একটি যারা সর্বোচ্চ ১১টি ক্যাটাগরিতে অস্কার জিতে নিয়েছিল(অপর দুটি মুভি - Titanic(1998) এবং The Lord of the Rings: The Return of the King(2004)।বেন হারের সেই ঘোড়দৌড় দৃশ্যটা(Chariot race) মনে আছে কি??

বেন হারের ঘোড়দৌড় দৃশ্য পরিচালনা করেছিলেন অ্যান্ড্রু মার্টন এবং স্টান্ট পরিচালনায় ছিলেন ইয়াকিমা কানাট।চিত্রায়িত হয়েছিল রোমের বাইরে সিনেসিটা স্টুডিওতে।সে যুগে কম্পিউটারই ছিল না, অ্যানিমেশন তো দূরে থাক।পুরো দৃশ্যটি শেষ করতে সময় লেগেছিল তিনমাস।মোট ১৫০০০ এক্সট্রা ব্যবহার করা হয়েছিল।ঘোড়দৌড়ের জন্য ব্যবহৃত মাঠের ক্ষেত্রফল ছিল ১৮ একর।মোট ১৮টি মাঠ তৈরি করা হয়েছিল,যার অর্ধেকটা শুধু অনুশীলনেই কাজে লেগেছিল।রেসের জন্য সময় নেয়া হয়েছিল পাঁচ সপ্তাহ।




দৃশ্যগুলো ২৬৩-১ কাটিং অনুপাতে করা অর্থাৎ ২৬৩ ফুট ফিল্ম থেকে মাত্র একফুট ফিল্ম রাখা হয়।সম্ভবত এটাই আজ পর্যন্ত ৬৫ মি.মি. সিকোয়েন্সের সর্বোচ্চ কাজ।

সার্কাসের মধ্যবর্তী স্পাইনা বলতে একটা স্থাপনা ছিল যেটা হল রোমান সার্কাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।এছাড়া প্রতিটি ল্যাপ হওয়ার সাথে সাথে সোনালী ডলফিনের ঘূর্ণনের আইডিয়াটা নেয়া হয়েছে রোমের সার্কাস ম্যাক্সিমাসের কাছ থেকে।

নায়ক চার্ল্টন হেস্টন প্রায় এক মাস অনুশীলন করে ঘোড়দৌড় শিখেছিলেন।আর খলনায়ক স্টিফেন বয়েড শিখতে হয়েছিল মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যে।কারণ বয়েড মুভির কাস্টিংয়ে দেরীতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিলেন।



ঘোড়াগুলোর নাম রাখা হয়েছিল Aldebaran, Altaïr, Antares এবং Rigel নামে।যদিও রোমে সাদা ঘোড়া পাওয়া যেত,কিন্তু ঐ ঘোড়াগুলো আনা হয়েছিল স্লোভেনিয়া থেকে।মোট ৭৮টি ঘোড়া পালন করা হয়েছিল,যারমধ্যে ৪টি বাছাই করা হয়।রেসের শুরুতে হেস্টন লাগাম ধরে টানলেন,কিন্তু ঘোড়া তো আর নড়ে না।তখন দর্শকদের মধ্যে বলে উঠল,"Giddy-up!"ঘোড়াগুলো দৌড়াতে আরম্ভ করল।



দৃশ্যগুলোতে বাস্তবতার ছোঁয়া দেয়ার জন্য রেসের মূল পয়েন্টগুলোতে ৩ টা ডামি হিসেবে রাখা হয়েছিল।অশ্বখুরের আঘাতে মেসালার আহত হবার দৃশ্যে যে ডামিকে ব্যবহার করা হয়েছিল,সেই দৃশ্য তখনকার অনেক দর্শকই সহ্য করতে পারেননি।দৃশ্যের চিত্রায়নে কোন স্টান্টের মৃত্যু ঘটেছিল কিনা সেটা ঠিক নিশ্চিত করে বলা যায় না।নোশার পাওয়েল নামে একজন স্টান্ট তার বইতে একজন স্টান্টের মৃত্যুর কথা উল্লেখ করে ছিলেন,কিন্তু পরিচালক উইলিয়াম ওয়াইলার এই ঘটনা অস্বীকার করেন।



তবে জো কানাট নামে একজন স্টান্ট খুব মারাত্মক দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন।রেসের একটি দৃশ্যে দেখা যায়,জুদাহ-র গাড়িটি অন্য একটি বিধ্বস্ত গাড়ির উপর হামলে পড়ে এবং জুদাহ গাড়ি থেকে ছিটকে পড়ে যাবার উপক্রম হয়।এই দৃশ্যের স্টান্ট জো কানাট সত্যিসত্যিই ছিটকে পড়েছিলেন,কিন্তু থুঁতনিতে সামান্য আঘাত ছাড়া আর তেমন ব্যথা পান নি।ওয়াইলার এই ছিটকে যাবার দৃশ্যটি অবিকৃত রেখে পরবর্তী শটে দেখান যে ছিটকে যাওয়া জুদাহ আবার গাড়িতে উঠে আসছে।চিত্রায়নের মাঠের বাইরে একটি সাময়িক হাসপাতাল তৈরি করে রাখা হয়েছিল,যদিও তেমন কোন আঘাতপ্রাপ্ত রোগী সেখানে ভর্তি হয় নি।যারা ভর্তি হয়েছিল তারা শুরু sunburn সমস্যা নিয়েই ভর্তি হয়েছিল। :)

ইউটিউবে দেখুন-


আশা আছে,ভবিষ্যতে আরো কিছু প্রিয় মুভির প্রিয় দৃশ্য নিয়ে লিখব।ভাল থাকবেন।
১২টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×