somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শিশির সিন্ধু অলমোস্ট ব্যাক ইন ফর্ম (রম্য ও কইতে পারেন আবার ভোজন সংক্রান্ত ও কইতে পারেন তয় কাহিনি সত্য)

০২ রা নভেম্বর, ২০১১ রাত ২:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একসিডেন্টের পরে পাক্কা একমাস বিছানায় রেস্ট নিতে নিতে ক্লান্ত হওয়ার পরে মনে হইল অনেক তো রেস্ট নেওয়া হইল এবার একটু বিশ্রাম নেওন দরকার....মনের কতাডা মনের মানুষে ধইরা ফালাইলো.....আমারে ফোনে কইলো দেখো এমনে বিছানায় ভেটকি মাইর‌্যা পইরা থাকলে তো হইবো না চলো এট্টু চক্কর মাইরা আসি....মাইয়া মানুষের ডাক আবার অবগ্গা করতে পারি না..বাইর হইয়্যা গেলাম তার পিছে পিছে.....জানিনা কই যামু...দেখা হইতেই আমি কইলাম আমার খিদা লাগছে...আমারে বুঝ দিলো যে আমার পেটে যথা সময়ে জিনিষ পৌছাইয়া যাইব....আমি খুশ...তিনি একটা রিকশা ওয়ালারে ডাইক্যা কইলো এই যাবেন নিউমার্কেট...

কুৎ....


বলেন তো এইটা কিসের শব্দ? নিউমার্কেটের কথা শুইনা একটা ঢোক গিলছিলাম.... এইআমি একসিডেন্টের পরে এই কয়দিন নড়াচড়া ও করছি ক্যালকুলেটরে হিসাব কইর‌্যা...আমারে নাকি নিয়া যাইব নিউমার্কেটে ঠেলাঠেলির ভিতরে....রিকশায় উইঠাই রিকশাওয়ালারে কইলাম মামা রিকশা আস্তে টাইনো বেশি ঝাক্কিঝুক্কি খাওয়াইওনা সমস্যা আসে...রিকসাওয়ালা কি বুজলো কে জানে?? শালায় আমার দিকে না তাকাইয়া আমার উনার দিকে তাকাইয়া বুযতে চেস্টা করলো সমস্যা কার.....শালায় ইমুন আস্তে টানা শুরু করলো যে একটা ল্যাংড়া কুত্তাও অর আগে যাইবগা..যাইহোক নিউমার্কেটে যাওয়ার ধানমন্ডির সেই বিখ্যাত রাস্তায় আইসা পরলাম যেইখানে রিকশার ৬টা লাইন একটা লাইনে রুপান্তরিত হইয়া আগায় (যাদের ধানমন্ডির এই রাস্তা ব্যবহার করে নিউমার্কেটে যান নি তারা আমার এই লাইনের মর্ম নাও বুঝতে পারেন)
অইখানে আসার পরে আমার উনি বলেন আজকে না আসলেও চলতো, চলো ব্যাক করি.....আমি খুশিতে মুখটা চ্যাগাইয়া সারি নাই এর ভিতরে হঠাৎ কইরা রিকশা১০ ফুট আগাইয়া যাওয়াতে পুনরায় উনি তাহার মন্তব্য পরিহার করিয়া গন্তব্যে চলিতে লাগিলো.....ভাগ্য ভালো বিধায় ধানমণ্ডি থেকা মাত্র সোয়া ঘন্টায় নিউমার্কেটে পৌছাইলাম...নিউমার্কেটে ল্যান্ড করার পরে জানতে পারলাম যে উনার কাজ আবার গাউছিয়াতে.....কুৎ(বুইঝা লন)

উনি কইছিলো যে আমারে খাওয়াইবো তাই গাউছিয়ায় গেলে নরমালি যে দোকানে খাই ঐ দোকানে গিয়া বসলাম.....দোকানদার জিগাইলো কি খাইবেন আমি কইলাম তিনটা শরমা(২টা আমার জন্য)....কইতে দেরি দিতে দেরি নাই....দিতে দেরি খাইতে দেরি নাই....নগদে শরমার মাথায় কামড় দিলাম....এক কামড়ে অর্ধেকটা নাই....এর মধ্যে দোকানদার জিগাইলো লাচ্ছি খাইবেন...যেহেতু শরমার মাথা খাইছি তাই শরমের মাথা বাকি থাকবো ক্যান....শরমের মাথা খাইয়া কোন মতে মাথাডা উপ্রে নিচে নারলাম(মুখ ভর্তি শরমা তাই কথা কইতে পারতেছিলাম না)............যেহেতু শরমা চাইছি তিনডা তাই দোকানদাররে আর আলাদা কইরা কইতে হয়নাই যে লাচ্ছিও তিনডাই লাগব......সমঝদারকে লিয়ে ইশারাই কাফি হে;);)......অবশিস্ট শরমা গুলি তিন কামুরে এক্সপোর্ট কইরা দিলাম জায়গা মতন......চাইয়া দেখি আমার উনি অর্ধেক ও শ্যাষ করতে পারেন নাই......আমার দিকে তাকাইয়া বলল আমার কাছ থেকে একটু নাও......কথাটা কি ভদ্রতা কইরা কইলো কিনা অইটা চিন্তা করার টাইম নেই নাই:D:D

দোকান থেকা বাইর হইতেই আমার প্রিয় গাউসিয়ার হালিমের দোকানের সামনে দিয়া যাওয়ার সময় মনে হইলো যে না খাইলে আফসুস থাইক্যা যাইতে পারে.....তাই চান্স নিলাম না......যারা গেসেন তারা হয়ত জানেন দোকানের সাইজ হইলো ১০ ফুট বাই ২ ফুট..ভিতরে মাত্র ৬ জন বসতে পারে....কিন্তু দোকানের উপ্রে আল্লাহর খাস রহমত আছে....পাতিলের পর পাতিল খালি হইয়া যায় ডেইলি.....ভিতরে ৬ জন খায় তো বাইরে ৩০ জন খাড়াইয়া খাড়ইয়া খায়.....চামে দিয়া ৬জনের মধ্যে জায়গা কইরা নিলাম আমরা দুইজনে......আমি একবাটি আর উনি এক বাটি খাসির হালিম নিলাম...আমি খুব তাড়াতাড়ি খাই দেইখা উনার সাথে আমার ঝগড়া কিন্তু কম হয় নাই এই জীবনে.....তাই আস্তে খাওয়ার চেস্টা নিলাম......ফলাফল উনি তিন চামুচ খাইতে না খাইতে আমি বাটি খালি কইরা খাসির হাড্ডি চুইসা চাবাইয়া চিন্তা করতাসি যে হাড্ডির শুকনা অংশ বাটিতে ফেলুম নাকি গিল্লা ফেলুম....বাটির দিকে তাকাইয়া দেখি যে উনি উনার বাটি থেকা আমার বাটিতে হালিম ঢাইলা দিতাছে.....লগে খাসির হাড্ডির টুকরা টাও দিয়া দিসে....আবারও যথারীতি হাড্ডিটা ইচ্ছা কইরা দিছে নাকি হালিম দিতে গিয়া হাড্ডিটাও পইরা গেছে অইটা চিন্তা কইরা সময় ওয়েস্ট করি নাই তাতে যদি সময় নস্ট হয়:D:D:D.......হালিমের দোকানদার জিগাইলো যে লাচ্ছি দিব কিনা......অটোমেটিক আমার মাথা উপ্রে নিচে আপ ডাউন করা শুরু করল....এবার পেটটা একটু ভরা ভরা লাগতেছিলো...ম্যাডাম বিল দিতেই দোকান থেকে বের হইলাম....তারপর যেই কামে গেসিলাম সেটা শুরু করলাম....কিছু কেনাকাটা করার পর উনি আমারে নিয়া একটা গয়নার দোকানে গেল...অইখানে গিয়া একটা নুপুর কিনল আর উনার আগের একটা নুপুর স্বর্ণের পানি দিয়া ধুইতে দিলো.....দোকানদার কইলো ভাই আধা ঘন্টা লাগব.......তো কাজ কাম যেহেতু সব শ্যাষ তাই আধা ঘন্টা ক্যামনে কাটামু হেইডা নিয়া চিন্তায় পইড়া গেলাম......আমি একটা সিংগেল সানডে আইসক্রিম নিয়া খাইতে খাইতে চিন্তা করতে লাগলাম যে কি করা যায়......(আমারে নিয়া মিথ আসে আমি নাকি ছোটবেলায় খালি বলতাম যে আমার ভালো লাগতেছেনা........একই কথা শুনতে শুনতে আম্মা নাকি
বিরক্ত হইয়া বলছিল যে তাকের উপ্রে একটা বয়ামে কিসমিস আছে বইসা বইসা খা.......আমি নাকি আধা কেজি কিসমিস নামাই দিসিলাম).......

যাই হোক কোনো মতে আধাঘন্টা পার কইরা দোকানদারের কাছে গেলাম...গিয়া দেখি যে কাজ হয় নাই.....কিন্তু দোকানদার আমাদের জন্য হালিম আনাইছে আপ্যায়ন করব বইলা(পরিচিত দোকানদার).......আমার উনি বলল যে আমরা খাইয়া আসছি মাত্র.....কিন্তু দোকানদার আবার জোর করল....ভাইয়েরা বিশ্বাস করেন আমার খাওয়ার কোনো ইচ্ছা ছিলো না যদিও খাইতে কস্ট হইছে:D:D:D.....যাই হোক নুপুরের দাম মিটাইয়া জিনিস বুইঝা নিলাম........তো উনারে সিএনজি তে উঠাইয়া দিতে হবে তাই সিএনজি খুজা শুরু করলাম......৩/৪ টারে জিগানোর পরে একটা গন্তব্যে যাইতে রাজি হইলো........সিএনজি ঠিক করার সময় দেখি পাশেই চিংড়ির মাথা বিক্রি হইতাছে.....জিনিষটার স্বাদ অনেক দিন নেই না...এদিকে সিএনজিও ঠিক করা হইয়া গেছে তাই দুইটা মাথা পার্সেল কইরা নিলাম....উনার গন্তব্যের মাঝপথেই আমার বাসা, তাই জায়গা মত সিএনজি থামাইয়া নাইমা পড়লাম...সিএনজি থেকা নামার পরে কেন জানি নিজেরে অনেক হালকা হালকা লাগতাছিলো...আমার উনারে বিদায় দেয়ার পরপরই উনি আমারে একটা কল দিব এটা গত আট বছরের অলিখিত নিয়ম.....যথারীতি উনি আমাকে কল দিলো দুই একটা কথা বলার পরে উনি বলল যে আজকে শপিং শেষে থাই স্যূপ খাওয়ার প্ল্যান ছিলো কিন্তু পেট ভরা তাই আর অই পথ মাড়ানো হয় নাই.......আহ হা কি একটা জিনিস মিস হইয়া গেলো:-/:-/.....মানুষ কেন যে খালি নিজের অবস্হা দিয়া অন্যেরে বিচার করে....নাহ আমার উনি আট বছরেও আমারে চিনতে পারলো না...আফসুস.........ফোনে কথা কইতে কইতে হঠাৎ উনি চিক্কুর পাইরা কইলো যে হায় হায় তুমি তো তোমার চিংড়ীর মাথা সিএনজিতেই রাইখ্যা নাইমা পরসো.......ভাই পর পর দুইটা শোক সংবাদ নেওয়ার মত মানসিক অবস্হা ছিলো না.......প্রায় চোখে পানি থুক্কু জিবলায় পানি আইসা পড়লো দুঃখে.......যথারীতি কুৎX(



বিঃদ্রঃ সিএনজি থেকা নামার পরে কেন যে নিজেরে হালকা হালকা লাগতেসিলো অইটা পরে বুজতে পারছিলাম:((:((:((





আমার আগের কয়েকটা পোস্ট যেগুলান ব্যবহার না করতে করতে জং ধইরা যাইতাছে

১/ রেস্টুরেন্টে খাইতে গিয়া দুই ঘন্টা পার হওনের পরেও খাওন টেবিলে আসে না?? এইবার ১০০%নিশ্চিত আইবো
২/ছোটবেলায় একটা কেক খাইসিলাম, বাজি লাগাইলাম এরম কেক জীবনে কেউ খায় নাই

৩/ব্যুফেতে গিয়া কেমনে টাকা উসুল করবেন??(গবেষনা মুলক পোস্ট)

৪/ব্যুফেতে গিয়া কেমনে টাকা উসুল করসি??(অভিগ্গতা মুলক পোস্ট)

৫/মিশন শাহসাবের বিরিয়ানী এবং শাহসাব বাড়ি বাজারের মতি মিয়ার বিখ্যাত ফালুদা(একটি ভোজন সংক্রান্ত পোস্ট)
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা নভেম্বর, ২০১১ দুপুর ১২:২০
২৭টি মন্তব্য ২৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আজ রমনায় ঘুড়ির 'কৃষ্ণচূড়া আড্ডা'

লিখেছেন নীলসাধু, ১৮ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:২৬




আজ বিকাল ৪টার পর হতে আমরা ঘুড়ি রা আছি রমনায়, ঢাকা ক্লাবের পর যে রমনার গেট সেটা দিয়ে প্রবেশ করলেই আমাদের পাওয়া যাবে।
নিমন্ত্রণ রইলো সবার।
এলে দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×