এটার আপনার ঘরের খবর অথচ আপনি জানছেন বাহিরের লোকের থেকে। উদাহরণ, আপনার বউয়ের বাচ্চা হবে অথচ আপনি ই জানেন না সেই সংবাদ কিন্তু আপনার প্রতিবেশী জানে যে আপনার বউয়ের বাচ্চা হবে। কি কেমন লাগল কথাটা? বাস্তবে যদি এমন টা আপনার ক্ষেত্রে হয় তাহলে তো শরীরে আগুন ধরে যাবার কথা তাই না? আর সেই আগুনে আপনি আপনার বউকে নিশ্চয়ই পুড়িয়ে মারতে চাইবে? তাহলে এটা তো গেল আপনার বাড়ির বউ। কিন্তু আপনি যদি একটা দেশে বাস করেন এবং সেই দেশের মজুত করা টাকা মানে আপনার টাকা বেহাত হয়ে যাবে এবং সেই খবর আপনি জানতে পারবেন বিদেশী কার ও থেকে সেটা সম্পূর্ণটায় আপনার বউয়ের বাচ্চা হবার মতন। আর এতে দোষ আপনার প্রতিবেশীর চেয়ে দোষটা বেশী আপনার বউয়ের। কারণ মিয়া আপনি তো ঠিক মতন বউ শাসন করতে পারেন না তাহলে পরের দোষ দিয়ে লাভ কি? নিজের ঘর আগে সামলাম তারপর প্রতিবেশীকে সোজা করেন বা যে আপনার বউয়ের বাচ্চা হবার পিছনে যে দায়ি। তাহলে দেখা যায় যে, আপনি এখন কিছুই করতে পারছেন না কারণ আমি আপনার বউয়ের দ্বারা আগে থেকে ই নির্যাতিত। তার মানে আপনি আপনার বউয়ের জিম্মী। আপনার পরিবর্তে আপনার বউ আপনাকে শাসন করে। কিন্তু আপনার বউ আপনার প্রতিবেশীর বাচ্চা এবং আপনার টাকা নিয়ে পালিয়ে গেল প্রতিবেশীর সাথে। এখন কি করবেন হাত কামড়াবেন না গলায় দড়ি দিবেন?
এবার আসি দেশের কথায়, গত কয়েক দিন ধরে দেশের এবং দেশের বাহিরের মিডিয়াতে বহুল প্রচারিত বাংলাদেশ ব্যাংঙ্কের পুকুর চুরির গল্প। কিন্তু ঘটনাটা ঘাটতে যেয়ে দেখতে হল বিভিন্ন সংবাদ পত্র। তাই বিভিন্ন পত্রিকার ভিতরে দেখতে হল প্রথম আলু সরি প্রথম আলো। কারণ এটা হলুদ হউক বা নীল এটাই বাংলাদেশর সেটা পত্রিকা। তাহলে যেটা দেখলাম সেটা হল ঘটনা ঘটেছে গত মাসের ৫ তারিখে এই পুকুর চুরির ঘটনা ঘটে কিন্তু কি হল ঠিক এর একমাস ২ দিন পরে আমাদের আতিয়ার সাহেব সেটা লিখিত ভাবে জানালেন যে আমাদের পুকুর চুরি হয়েছে আজ থেকে এক মাস ২ দিন আগে কিন্তু আমরা এটা দেশের জনগন কে জানায় নি তার কারণ হল দেশ সেই সময় ২১ শে ফ্রেব্রুয়ারি আর এশিয়া কাপ নিয়ে ব্যস্ত ছিল। আর আমরা চাইনি দেশের জনগন এই ছোট একটা বিষয় নিয়ে দেশের জনগন চিন্তায় থাকুক। আর এটা আমাদের ডিজিটার ব্যবস্থায় কিছু ই না। কারণ আমরা একটা ডিজিটাল দেশ। আমাদের আছে সজিব ওয়াজেদ জয় যিনি আমারদের তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা এবং গুগলের অন্যতম আবিষ্কারক।এক তুড়িতে টাকা আমাদেরকে ফিরিয়ে নিয়ে এসে দিবে।
কিন্তু বাস্তবতা অন্য জায়গাতে। শ্রীলংঙ্কাতে আমাদের ২ কোটি ডলার গেছে এবং আমাদের বাকি ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার গেছে ফিলিপাইনে। কপাল ভাল যে শ্রীলংঙ্কার সরকার আমাদের টাকা ফেরত দিয়েছে কিন্তু এখন ও বাকি ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার এখন ও আমরা পাইনি, এবং সংবাদের তথ্য অনুসারে ৮ কোটি ২ লাখ ডলার চলে গেছে হংকং এ। কথায় আছে, নিজের ইচ্ছাতে যাবেন আত্মীয় বাড়িতে আর ফিরবেন আত্মীয়ের ইচ্ছাতে। তাই এখন কথা হল ২ মাসের ও বেশী সময় পার হবার পরে ও আমরা কি আমাদের কষ্টে অর্জন করা টাকা কি ফিরে পাব আবার আমাদের রিজার্ভে? যদি না পায় তাহলে কি হবে এবং যদি পায় ও তাহলে কি এর নিশ্চয়ইতা কি যে আবার টাকা আমাদের টাকা বেহাত হবে না?
আরে এত চিন্তা করার দরকার কি? এই পুকুর চুরির ঘটনা বিদেশী গনমাধ্যমে আসার আগে পর্যন্ত আমাদের রাবিস খ্যাত জনাব আবুল মাল মুহিত সাহেব জানতেন ই না যে আমাদের পুকুর চুরি হয়ে গেছে। তিনি যখন জানলেন তখন জানালেন যে এই ব্যাপারে তদন্ত হবে তারপর এই ব্যাপারে মন্তব্য করবেন। কিন্তু ব্যাপার হল তদন্তের স্বার্থে যখন প্রথম আলো কিছু তথ্য দিল তা আসলে আমাদের জন্য দূরভাগ্যজনক কারণ আমাদের দেশের সুইফ কোড নিয়ন্ত্রণ হয় ভারত থেকে। কেন? একটা স্বাধীন দেশের জাতীয় ব্যাংঙ্কের সুইফ কোড কেন নিয়ন্ত্রণ হবে অন্য কোন দেশ থেকে? তাহলে কি আমরা এখন ও পরাধীন আছি। যদি তাই হয় তাহলে কেন স্বাধীনতার নামে এত গলাবাজি হয়? কেন দেশে কথা উঠবে অমুক দল স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি আর অমুক দল বিপক্ষের। আসলে বাস্তবতা হল যে যার আপন পকেট সামলা। মরলে সালা মরুক দেশের লোক আমি তো যাব আমেরিকাতে কিংবা ইংল্যান্ডে, শুধু আমি না ছেলে মেয়ে নাতি পুতি যা আছে সব নিয়ে যাব।
এখন প্রশ্ন আমার দেশের একজন সচেতন নাগরিক হিসাবে, কোথায় তিনি যিনি মাসে মাসে কিংবা ২ বা ৩ মাস পরে এসে কোটি টাকার বেতন নিয়ে আবার ফিরে যারা আমেরিকাতে এবং যে কয় দিন দেশে থাকেন সেই কয়দিন উল্টাপাল্টা মন্তব্য করে কিছু আলোচনা খোরাক যুগিয়ে উধাও হয়ে যান? আমার প্রশ্ন হল আজ পর্যন্ত দেশের যত টাকা আপনি নিয়েছেন তার একটা পয়সার কাজ ও কি করেছেন? আসেন আর টাকা নিয়ে চলে যান মনে হয় আপনার বাপের সম্পত্তি। এই দেশ আমার আমার মতন ১৬ কোটি মানুষের সারা রাত জেগে বিদেশী ডলার নিয়ে আসি আর সেই সমস্ত লোক যারা দিনে দিন মুজুরি করে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে টাকা আয় করে ব্যাংঙ্কে রাখে। আপনি কি বাংলাদেশী? আপনার কি দেশের প্রতি কোন দরদ নেই? আপনি কি দেশের একটা ফোটা পানি পান করেন নি? এই দেশ কি আপনাকে কিছুই দেয়নি? না আপনি এই দেশের কেউ না? না আপনি অন্য দেশের হয়ে এই দেশে প্রতিনিধিত্ব করছেন?
যদি আপনি একজন খাটি বাঙ্গালী হয়ে থাকেন দেশের প্রতি আপনার যদি কর্তব্য বলে কিছু থেকে থাকে এবং নিজের ভিতরে তথ্য প্রযুক্তি বিশদ জ্ঞান থাকে তাহলে এখনই সময় প্রমাণ করার। গলা বাজি বন্ধ করুন এবং কাজে প্রমাণ দিন। আপনি যদি যোগ্য নেতা হন তাহলে আপনাকে নেতা মানতে ১৬ কোটি বাঙ্গালীর কোন আপত্তি থাকবে না। কারণ টাকা যাচ্ছে ১৬ কোটি বাঙ্গালীর আপনার না। কারণ আপনার টাকা বাংলাদেশ ব্যাংঙ্ক থেকে যায় আমেরিকান ব্যাংঙ্কে আপনার টাকা থাকে সুরক্ষিত। কিন্তু আমাদের টাকা যায় মাগি পাড়াতে। কারণ দেশী ব্যাংঙ্কের যে টাকা উধাও হয়েছে তা বেশীর ভাগ যাবে মাগি পাড়াতে। বিশ্বের নামীদামি মাগিদের পিছনে উড়ানের হবে এই টাকা কিংবা ব্যক্তিগত স্বার্থে খরচ হবে এই টাকা। তাহলে আমরা ১৬ কোটি বাঙ্গালি পেলাম কি কলার খোসা?
দেখা যাচ্ছে যে, দেশী ব্যাংঙ্কের এই পুকুর চুরির গল্প শুরু হয়েছে আজ থেকে ১ বছর আগে থেকে, কিন্তু তার আলামত পেলাম আমরা ১ বছর পরে। কেন এটা হবে? আমাদের না আমেরিকার চেয়ে বেশী বুদ্ধি সম্পূর্ণ গোয়েন্দা সংস্থা্ আছে? তারা নাকি কোন ঘটনা ঘটার মাত্র ২৪ ঘন্টার ভিতরে তার কারণ খুজে বের করতে পারে এবং অনেক সময় ঘটনা ঘটার আগেই আলামত বুজতে পারে। তাহলে কেন আমাদের এই সর্বনাস হবে? আমরা তো হিসাব অনুসারে পৃথিবীর সবচেয়ে সুরক্ষিত জাতি হবার কথা এবং সেই সাথে হবার কথা শ্রেষ্ট ব্যাংঙ্ক ব্যবস্থা। কিন্তু হল কি? কেউ এসে আমাদের চু ... দিয়ে চলে গেল। না আমাদের কেউ আমাদের পাছায় তেল মাখিয়ে নিজের টা শক্ত করে চু... দিয়ে চলে গেল কে জানে?
অতঃপর এখন কি হচ্ছে? কি আর হবে! দেশী ব্যাংঙ্কে সুইফট কোন ভারতের থেকে নিয়ন্ত্রণ হয় আর এখন এই পুকুর চুরি যাবার পরে সেই ভারতীয় কেউ একজন আমাদের কে মৌখিক পরামর্শ দিয়েছে যে, তার তৈরী সফট্যয়ার যেন আমরা ব্যবহার করি আমাদের জাতীয় ব্যাংঙ্কে সিস্টেমে। বাহ! ভাল তো ভাল না? অনেক ভাল তো? ১৯৭১ সালে মনে হয় এই জন্য ভারত আমাদের সাহায্য করেছিল যে, সময় মতন বাংলাদেশ নিজেদের করে নিব আর না পারলে সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক ভাবে পঙ্গু করে দিয়ে নিজের শাসন ব্যবস্থা পরিচলান করব। হে শহীদ মুক্তিযোদ্ধারা তোমরা কি ভূল করে গেছ দেখে যাও ভারত থেকে নামে মাত্র সাহায্য নিয়ে। তোমাদের সেই নামে মাত্র সাহা্য্যের নামে আজ তোমাদের রক্তে কেনা দেশে আর দেশের নাগরিকরা পক্ষান্তরে অন্য দেশের গোলাম। দেশ চলে দিল্লি ইশরায় দেশীয় ব্যাংঙ্কে সুইফ কোড থাকে অন্যদের হাতে আর টাকা লুট হয় হরি লুঠের মতন। এটায় কি স্বপ্ন ছিল তোমাদের?
এখন আমরা কি করব? কি আর করবেন আমার মতন ফেসবুকে নোট তৈরী করেন, স্ট্যাটাস দেন, ইভেন্ট তৈরী করেন এশিয়া কাপের মতন যে, দেশের টাকা দেশে ফিরে না আসলে অমুকের অমুক জিনিস ছিড়ে নিব কিংবা কাপড় না পরে রাস্তায় হাটব, বিড়ি খাওয়া ছেড়ে দিব, লুঙ্গি পরব না। তৈরী করে ইভেন্ট আর সেখানে মানুষ এড করেন ৫০ হাজার কিংবা ১ লাখ। আমার জানা মতে এখন পর্যন্ত আমাকে এই ধরণের ইভেন্ট এড করা হয়েছে অন্তত ১০ বার। তার মানে আমাদের দেশের লোকজন প্রচুর এক্টিভ ফেসবুকে এবং এরা খুব ভাল ইভেন্ট তৈরী করতে পারে। কিন্তু ভাই লাভ কি এই ইভেন্ট তৈরী করে? আমরা যেটা পারি সেটা করি না কেন তারচেয়ে বরং আমরা একটা ইভেন্ট তৈরী করি যে, দেশীয় টাকা দেশে ফিরে না আসলে আমরা পুলিশি পাহারা প্রকাশ্যে চুমু খাব আর না হয় শাহবাগে বসে চটি পড়ে আউট করে যানজট বাধিয়েঁ দিব।
কারণ আমরা এটায় পরি এবং এটা নিয়ে আমাদের দেশের সংবাদ পত্রগুলোতে খবর হয় যে, অমুক ব্লগার অমুক ইভেন্ট তৈরী করেছে এবং সেখানে লাখে লাখে মানুষ আচ্ছে এব্ং সেটা সাথে একতা প্রকাশ করছে। কিন্তু কাজের যে গুলো আসলে সেই গুলো থেকে যায় আড়ালে। তার চেয়ে এই সব চিন্তা না করে বাড়িয়ে বউ থাকলে সন্তান উৎপাদের কাজে লেগে যান আর যদি বউ না থাকে তাহলে গার্লফ্রেন্ড নিয়ে ঘুরেন আর মনে করেন যে কিছু ই হয় নি আপনি বেশ ভাল আছেন। আর যদি মনে করেন যে না আসলে ই কিছু করার দরকার তাহলে ভোট নামের যে যন্ত্র আমাদের এত যন্ত্রণায় ফেলে সেটা একটা না ভোট দেবার ব্যবস্থা করেন। কারণ যারা বর্তমানে দেশের ক্ষমতায় আছে তারা নিজেদের পকেট গরম করার তালে আছে। এদের পকেট গরম হলে ই হবে। তাছাড়া আর কিছুই লাগবে না আর আপনি আর আমি বাচি কিংবা মরি তাতে কোন সমস্যা নেই কারণ তাদের চোথে আমরা কুত্তার বাচ্চা।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ১০:৪৯