somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

Apathy is more dangerous than failure!

১৪ ই মে, ২০১৫ বিকাল ৫:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জীবনে ব্যর্থতা আসবেই। তবে ব্যর্থতাকে কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করতে হবে। ব্যর্থ হয়ে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকলে চলবে না। গুগলে আগে বিভিন্ন ভার্সিটির সবচেয়ে ভাল ছাত্রদের নিয়োগ দেয়া হত। প্রথমদিকে সাফল্য আসলেও পরে দেখা গেল আশানুরূপ কাজ দেখাতে পারছে না তারা। এর পিছনের কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে তারা দেখলেন যে সব ছাত্ররা জীবনে কোনদিন খারাপ ফল করেনি, তারা কোন কারণে ব্যর্থ হলে হতাশ হয়ে পড়ছে, ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না। কিন্তু বাস্তবে তো হতাশ হলে চলবে না। যত ব্যর্থতা আসুক সামনে এগিয়ে যেতে হবে। এরপর থেকে তারা নিয়োগ দেয়ার সময় শুধু ভাল ছাত্রদের না, যারা বিভিন্ন প্রতিযোগীতায় ভাল করছে তাদেরকেও নিয়োগ দিতে শুরু করল। দেশের বাইরের এত বেশি ইউনিভার্সিটি থেকে নিয়োগ মনে হয় গুগল ছাড়া আর কেউ দেয় না।

মেডিকেলের ছাত্র-ছাত্রীদের বেশিরভাগ দেখা যায় স্কুল-কলেজে ভাল ছাত্র ছিল, মেডিকেলে এসে দেখে এটা একটা অন্য জগত, অনেক পড়ালেখা করার পরেও এখানে ফেল করতে হচ্ছে। এতে অনেকে হতাশ হয়ে পড়ালেখা ছেড়ে দিয়ে সারাদিন হলে শুয়ে থাকে, ঘুমায় না হলে মুভি দেখে। ধুর! সিয়াম তো পড়ালেখাই করে না, তাও সব পরীক্ষায় পাশ করে। পড়লেও আমাকে দিয়ে কিছু হবে না, তাই পড়ার কোন দরকার নাই!- এই ভাবনাগুলো যে কত ভয়ঙ্কর সেটা বুঝতে বুঝতে তাদের জীবন থেকে অনেক মূল্যবান সময় চলে যায়। এক সময় পিছন ফিরে দেখে তার বন্ধু-বান্ধবরা অনেক দূরে চলে গেলেও সে এখনও আগের জায়গাতেই পড়ে আছে।



২০-২৫ বছর বয়সে ব্রেন সবচেয়ে কর্মক্ষম থাকে, তাই কোন কিছু করতে উৎসাহের কমতি থাকে না, দুনিয়ার কোন কিছুকেই বাধা মনে হয় না। এই সময়েই উচিত প্রচণ্ড পরিশ্রম করে নিজের জ্ঞান বাড়িয়ে নেয়া। ভার্সিটিতে এই সময়টাই প্রচণ্ড অপচয় হয় পড়ালেখা ছাড়া অন্য যে কোন কাজে। ফলশ্রুতিতে হতাশা ভর করে। পরবর্তীতে অনেকে হতাশা কাটিয়ে উঠতে না পেরে আত্মহত্যা করে, অনেকে নেশার জগতে প্রবেশ করে।

কখন কোন কাজটা করা গুরুত্বপূর্ণ সেটা বুঝতে হবে। ভার্সিটি লেভেলে অনেকে বন্ধু-বান্ধব, গিটার, মুভি, ফুটবল নিয়েই সময় কাটিয়ে দেয়। এগুলোর অবশ্যই দরকার আছে। কিন্তু মনে রাখতে হবে এগুলো হচ্ছে বিনোদন, সারাদিনই যদি বিনোদনের পিছনে চলে যায় তাহলে কাজ করবে কখন? আমার ক্ষুদ্র জীবনে দেখা সেরা ছাত্রটি ছিল আমার এক বড় ভাই। উনি ডাবল স্ট্যান্ড করে বুয়েটে ইলেক্ট্রিক্যালে ভর্তি হয়েছিলেন। বুয়েটে ভর্তি হলে ছেলেপেলেরা সবাই টিউশনি করে। এটা খারাপ না বরং ছাত্র অবস্থাতেই নিজের খরচ চালাতে শিখলে নিজের মাঝে আত্মবিশ্বাস জন্মায়, কিছু করে দেখাবার ক্ষমতা জন্মায়, যা পরবর্তীতে অনেক কাজে লাগে। বন্ধুরা মিলে নতুন কোন কাজ করা, কোন ব্যবসা শুরু করা বা কোন সমাজসেবামূলক কাজ করার মাধ্যমে ছাত্রবস্থাতেই নিজেকে অনন্য মানুষরূপে গড়ে তোলা যায়। কিন্তু এই সময় টাকার লোভে পড়ে যাওয়াটা মারাত্মক দুর্গতি ডেকে আনে জীবনে। যা বলছিলাম, ঐ ভাইয়ের মত এত কনফিডেন্ট আমি কাউকে দেখি নি। উনি যা পড়াতেন তার সম্পর্কে উনি ১০গুণ বেশি জানতেন। এসএসসি, এইচএসসির ছেলেপেলে পড়ানোর জন্য এত জ্ঞান লাগে না। কিন্তু উনি অনার্সের ম্যাথ, কেমিস্ট্রিও পড়তেন যাতে নিজেকে আলাদা করে চেনাতে পারেন। (স্বীকার করতে দ্বিধা নেই, কলেজের অনার্স-মাস্টার্স করা শিক্ষকরাও তার থেকে অনেক কম জানতেন, অনেক কিছু ভুল পড়াতেন। ভয়ে সেটা তাদের মুখের উপর বলা যেত না।) স্বভাবতই এতে করে তার স্টুডেন্ট সংখ্যা অনেক বেশি ছিল, অনেক টাকা ইনকাম করতেন, সেই সাথে তার অনেক সময় নষ্ট হত। পরবর্তীতে তার নিজের একাডেমিক পড়ালেখায় অনেক ল্যাগিং হয়। নিজের ছাত্ররা যখন তার সাথে ক্লাসে পড়তে আসে তখন তার হুশ হয়। যাইহোক প্রচন্ড প্ররিশ্রম করে সেটা তিনি কাটিয়ে উঠতে পেরেছিলেন।



হয়ত জীবনের অনেক সময় চলে গেছে। হয়ত পরীক্ষার ফলাফল ভাল হয়নি। হয়ত বন্ধুরা অনেক ভাল জায়গাতে আছে আমার থেকে, ভাল চাকরি করছে, অনেক টাকা কামাচ্ছে। এসব দেখে হতাশ হয়ে বসে থাকা যাবে না। কর্মবিমূখতাই আমাদের সবচেয়ে বড় শত্রু। যে কোন পরিস্থিতিতে ঘুরে দাঁড়াতে হবে, প্রচণ্ড পরিশ্রমের মাধ্যমে ব্যর্থতা কাটিয়ে উঠার মানসিক শক্তি থাকতে হবে নিজের মাঝে। মনে রাখতে হবে জীবন কখনও ব্যর্থ হয় না। কেউ যখন হাল ছেড়ে দেয়, শুধুমাত্র তখনই সে ব্যর্থ হয়।
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×