somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিশ্বকাপের অনেক ভেন্যু এখনও অপ্রস্তুত!

১০ ই জানুয়ারি, ২০১১ রাত ৯:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

—বিশ্বকাপ শুরু হতে আর কতদিন বাকি?
ক্যালেন্ডারের তারিখ উত্তরে বলছে—‘ছয় সপ্তাহ’।
মাত্র ছয় সপ্তাহ!
এত কাছে চলে এলো বিশ্বকাপ। অথচ যেখানে হবে বিশ্বকাপ—সেই মাঠই যে ভীষণ রকমের অপ্রস্তুত! এই অভিযোগের তীর সবচেয়ে বেশি ছুটছে এখন ভারতের দিকে। মাঠের প্রস্তুতি নিয়ে পুরোপুরি প্রস্তুত নয় বাংলাদেশও। শ্রীলঙ্কার দুটো নতুন ভেন্যু ক্যান্ডি ও হামবানতোতায়ও এখন দিন-রাত হাতুড়ি, রড, সিমেন্ট ও নির্মাণ সামগ্রীর জঞ্জাল চারধারে।
ভারতের কলকাতার ইডেন গার্ডেন্স, মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে, বাংলাদেশের মিরপুরে শেরে-ই-বাংলা, চট্টগ্রামের জুুহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম এবং শ্রীলঙ্কার ক্যান্ডি ও হামবানতোতা—ঠিক এ মুহূর্তে বিশ্বকাপের এই ভেন্যুগুলোতে ক্রিকেট অনুপস্থিত! এ স্টেডিয়ামগুলো এখন পুরোপুরি ইট-সুরকিতে একাকার। দিন-রাত প্রায় চব্বিশ ঘণ্টাই কোনো কোনো স্টেডিয়ামে নির্মাণ কাজের তোড়জোড় চলছে। বাজেট বেড়েছে। নির্মাণ শ্রমিকের সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু তারপরও পুরনো সেই শঙ্কাটা রয়েই গেছে। বিশ্বকাপের আগে কি পুরোপুরি তৈরি হতে পারবে এ স্টেডিয়ামগুলো?
নাকি দিল্লি কমনওয়েলথ গেমসের আগেভাগে পুরো ভারত যেভাবে বিশ্বের কাছে লজ্জায় পড়েছিল—সেই দৃশ্য ফের ফিরে আসছে ক্রিকেট বিশ্বকাপেও?
অপ্রস্তুত স্টেডিয়াম, নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে তৈরি ক্রীড়াপল্লী, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ এবং বিপুল পরিমাণ আর্থিক দুর্নীতি—এমনসব অনিয়ম শুরুর আগে দিল্লি কমনওয়েলথ গেমসকে চরম বিতর্কের মুখে ফেলেছিল। সে অবস্থা সামাল দিতে ভারতীয় প্রেসিডেন্টকে জরুরি বৈঠক পর্যন্ত ডাকতে হয়েছিল।
বিশ্বকাপ ক্রিকেটও তাহলে ভারতের জন্য তেমনি মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে?
ভারতীয় ক্রিকেটের গর্ব হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা কলকাতার ইডেন গার্ডেন্স এখন বিশ্বকাপের আগে সবচেয়ে বড় সমস্যার নাম! ৮০ হাজার দর্শক ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন ভারতের এই স্টেডিয়ামের বেশিরভাগ অংশই এখন ক্রিকেটের জন্য অপ্রস্তুত। এই স্টেডিয়াম সংস্কারের জন্য বাজেটের কোনো কমতি নেই ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের। প্রায় ১০ লাখ ডলার ব্যয় হচ্ছে ইডেন গার্ডেন্সের সংস্কারের কাজে। কিন্তু সমস্যা এবং প্রশ্ন একটাই—বিশ্বকাপের আগে কি এই স্টেডিয়ামের নির্মাণ কাজ শেষ হবে?
আর যাই হোক, বিশ্বকাপ তো আর পেছানো যাবে না!
ইডেন গার্ডেন্সে দুটি নতুন ব্লক তৈরিটাই বড় সমস্যা তৈরি করেছে। কাজের গতি দ্বিগুণ করেও এই ব্লকের কাজ বিশ্বকাপের আগেভাগে শেষ করা যাবে কিনা—তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। পিলার উঠে গেছে। কিন্তু ছাদের কাজ কবে শেষ হবে—কারও জানা নেই! এখনও পুরো স্টেডিয়ামে চেয়ার বসানোর কাজ শেষ হয়নি। টয়লেটের দেয়াল ভাঙা। গোটা স্টেডিয়ামে পুরু ধুলোর রাজত্ব। ক্রিকেট দলের পুরনো ছবির ফ্রেম সেই ধুলোর মধ্যে লুটোপুটি খাচ্ছে। করপোরেট বক্সের নির্মাণ কাজ অর্ধেকও শেষ হয়নি। পুরো ইডেন গার্ডেন্স নিয়ে এখন একটাই শব্দ সবচেয়ে বেশি প্রযোজ্য—অপ্রস্তুত!
এ প্রসঙ্গে বার্তা সংস্থা এএফপিকে ইডেন গার্ডেন্সের সংস্কার কাজের সঙ্গে জড়িত সজল প্রামাণিক নামের এক কর্মকর্তা জানান—‘মাত্র ১১ মাসে এত বড় একটা প্রজেক্টের কাজ শেষ করা অসম্ভব ব্যাপার। আমাদের হাতে তো জাদু নেই। এত বিশাল যজ্ঞের জন্য সময় তো লাগবেই। পূর্বদিকের ব্লকের ছাদের কাজ ফেব্রুয়ারির আগে শেষ করা সম্ভব নয়।’
শুধু নির্মাণ কাজ নিয়ে নয়, ইডেন গার্ডেন্সে বিশ্বকাপের আগে আরও অনেক সমস্যা আছে। এই স্টেডিয়ামে স্পন্সরদের টিকিট নিয়েও আইসিসির সঙ্গে তৈরি সঙ্কটের এখনও কোনো সুরাহা পাননি কর্তারা।
মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড় স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ হবে। তবে দু’বছর আগে এ স্টেডিয়ামের সংস্কার কাজে হাত দেয়ার পর এখনও পুরো স্টেডিয়ামেই লোহালক্কড়ের কাজ চলছে। ৫৫ লাখ ডলারের এ কাজ কবে শেষ হবে—সেটাও এই বিশ্বকাপের জন্য বড় কুইজ! ভারতীয় পত্রপত্রিকার খবর—আইসিসির দেয়া ৩১ জানুয়ারির ডেডলাইন মিস করার পথে ওয়াংখেড় স্টেডিয়াম।
বিশ্বকাপ শুরুর ১৫ দিন আগে সবগুলো ভেন্যু আইসিসির কাছে হস্তান্তর করার দিনক্ষণ আগেই নির্ধারণ করা রয়েছে। ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামের ফ্লাডলাইটের আলোর বিচ্ছুরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। স্টেডিয়ামের বিভিন্ন কাচের দেয়ালে আলোর বিচ্ছুরণ ব্যাটসম্যানদের দৃষ্টির জন্য সমস্যা তৈরি করতে পারে—এমন শঙ্কাও জেগেছে। স্টেডিয়ামে আম্পায়ারদের জন্য বরাদ্দ করা কক্ষ, মেডিকেল রুম এবং ডোপ টেস্টের কক্ষ ভুল স্থানে স্থাপিত করা হয়েছে। ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামের নির্মাণ কাজের ধীরগতির কারণ প্রসঙ্গে মুম্বাই ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাবেক টেস্ট ক্রিকেটার লালচাঁদ রাজপুত জানান—‘মৌসুমি বৃষ্টির কারণে ২০১০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এ স্টেডিয়ামের নির্মাণ কাজ শেষ করা সম্ভবপর হয়নি। তবে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আগামী ২৪ জানুয়ারি আইসিসির পরিদর্শক দল এই স্টেডিয়াম পরিদর্শনে আসছে। আমরা আশা করছি তাদের কাছে আমরা পুরো প্রস্তুত স্টেডিয়ামকেই উপস্থাপন করতে পারব।’
মিরপুরের শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ১৯ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ-ভারত উদ্বোধনী ম্যাচের মধ্য দিয়ে এবারের বিশ্বকাপ শুরু হবে। মিরপুরের এই মাঠে দুটি কোয়ার্টার ফাইনালসহ বিশ্বকাপের ছয়টি ম্যাচ হবে। তবে এ মাঠের নির্মাণ কাজ এখনও শেষ হয়নি। তবে বিসিবির ক্রিকেট কর্তারা আশাবাদ জানিয়েছেন—‘নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই বিশ্বকাপের আগেই প্রস্তুত হয়ে উঠবে মিরপুরের এই মাঠ।’
এবারের বিশ্বকাপের টুর্নামেন্ট ডাইরেক্টর রত্নাকর শেঠিও বিশ্বকাপের নির্মাণাধীন ভেন্যুগুলো নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত নন। তিনি জানান—‘প্রতিদিনই আমরা বিশ্বকাপের ১৩টি স্টেডিয়ামের নির্মাণ কাজ তদারক করছি। বিশ্বকাপের ঠিক আগে আগেই ইডেন গার্ডেন্সসহ সব ভেন্যু পুরোপুরি প্রস্তুত হয়ে উঠবে।’
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×