ঘটনা -১:
ষাটোর্ধ জামিল সাহেবের অফিসে নতুন সেক্রেটারী হয়ে এসেছেন সালেহা মমতাজ। জামিল সাহেব যুবক বয়সে প্রচুর খেটেছেন। নারীসংগের তৃপ্তি যাকে বলে, তা পাওয়ার মত সময় তিনি কখনোই ম্যানেজ করতে পারেন নি। স্ত্রীর সংগে রুটিন বাঁধা চড়ুই পাখির মেলামেশার বাইরে তার সারা সময় জুড়ে ছিলো শুধু কাজ আর কাজ। প্রৌঢ় জামিল সাহেব এখন একজন প্রতিষ্ঠিত মানুষ। কিন্তু বয়স বসে থাকে নি, বয়স বসে না থাকলেও তার সেই কামনা-বাসনা এই বয়সেই মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। আগের পোষ্টে যেটা বলেছি, এই ভীমরতি যতোটা না দেহের ক্ষুধা, তারচেয়েও বেশি মনের ক্ষুধা। সালেহা মাত্র কৌশোর পার করলেই হিসেবি মেয়ে। পুরুষ মানুষকে সে রগে রগে চেনে। জামিল সাহেবকে অফেস ঢোকার প্রথম দিন থেকেই সে এক্সপ্লয়েট করে চলেছে। এই বয়সে জামিল সাহেব তেমন কিছুই পান না; কিন্তু চোখের ক্ষুধার খেসারত তাকে দিতে হয় সারাজীবন হাড় ভাঙগা খাটুনি খেটে উপার্জিত পয়সায় দেদারসে উপহার কিনে দিয়ে। এখানেই শেষ নয়। একান্ত করে পাবার আশায় সালেহাকে তিনি আলাদা ফ্লাট কিনে দেন। সালেহা সুযোগ বুঝে তাকে কাঁচকলা দেখিয়ে চাকরীতে ইস্তফা দেয়।
ঘটনা ২:
আসাদ সাহেব অতোটা বয়স্ক নন। সামনের জুন মাসে ৫২ পূর্ণ হবে। এখনও ২৫ বছরের যুবকের ন্যায় দেহে ও মনে সবল। রাজউকের একটি অফিসে মোটামুটি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে প্রেম করে সহপাঠিনীকে বিয়ে করেছিলেন। ৫২ বছর বয়স্কা স্ত্রী আছিয়া চৌধুরী দৈহিক মিলনাকাংখা অনেক আগেভাগেই হারিয়ে বসেছেন। শারিরীকভাবেই মেয়েদের যৌবন আগে আসে, আগে যায়। আসাদ সাহেব বিপাকে পড়েছেন। ছেলেমেয়েদের সামনে তাকে মুখ বুজে থাকতে হয়; কিন্তু চাহিদা তো মিটে না। একবার তার অফিসে কাজ করা বিথীর সাথে পরিচয় হয়। বিথী কর্মজীবী মহিলা হোস্টেলে থাকে। আসাদ সাহেব অফিস ট্যুরের কথা বলে বিথীকে নিয়ে কয়েকবার সিংগাপুর-মালয়েশিয়া করেছে। কিন্তু এভাবে আর কতদিন চলে? বিথীর সাথে একটি ফাইনাল সম্পর্কে তিনি আসতে চান। বিথী ভবিষ্যত নিরাপত্তার কথা তুলে তার অ্যাকাউন্টে ৫০ লাখ টাকার ব্যাংক ব্যালেন্স দাবি করে। টাকা ট্রান্সফার হয়ে যাওয়ার পর থেকে বিথীর অন্যরূপ প্রকাশ পেতে থাকে। একসময় রাজউকের চাকুরীটা সে ছেড়ে দেয়। অনেক মানুষের সাথে জানাশোনা এবং ৫০ লাখ টাকার সুবাদে নিজেই একটি ছোটখাটো ব্যবসা শুরু করে।
সম্ভাব্য ঘটনা ৩:
মনে করেন, লেখকদের কোনো একটি ক্লোজড ইয়াহু গ্রুপে আপনি ঢুকতে চান। কিন্তু তারা শুধু বেছে বেছে সদস্য নেয়। চাইলেই আপনি অ্যাক্সেস পাবেন না। এ ব্যাপারে সাহায্য পেতে কোনো ভীমরতিপ্রাপ্ত বুড়োকে খুঁজে বের করুন। তবে আপনার নিকটি অবশ্যই নারী নিক হতে হবে। তারপর তার সাথে ইমেইলে যোগাযোগ করুন। দেখবেন, তিনি ঠিকই আপনার জন্য কিরা কেটে সুপারিশ করছেন। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, এতে ওই ভদ্রলোকের কোনো স্বার্থপ্রাপ্তিও নেই। যেসব মেয়েদেরকে তিনি সাহায্য করবেন, তারা সুযোগ পেলে ঠিকই তাকে আংকেল ডাকবে। তিনি তারপরও থেমে থাকবেন না। অপমানে টলেনা বীর!
উপরোক্ত আলোচনা হতে এ সিদ্ধান্তে পৌছানো যায় যে, ভীমরতিপ্রাপ্ত বুড়ো তথা বয়স্ক লোকেরা অনেক সময়ই তরুনীকর্তৃক ঠগবাজির শিকার হয়। নারীবাদীগণও এ কথা অকপটে স্বীকার করেন বলে জানা যায়। সুতরাং, আসুন আমরা ভীমরতিপ্রাপ্ত বুড়োদেরকে অপমান না করে, তাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেই। মনে রাখতে হবে, তারা সমাজে অপাংতেয় হলেও তারাও সমাজেরই একটি অংশ।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মার্চ, ২০০৮ রাত ১২:৩৬