somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বশীলাইটিস অশলীলতা নয়, এটি একটি রোগ, এ রোগে আক্রান্তদের প্রতি সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে দিন

০১ লা ডিসেম্বর, ২০০৭ রাত ৩:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কদু অর্থাৎ লাউ গাছ থেকে না নামিয়ে রেখে দিলে খোলস শক্ত হয়ে একসময় শুকিয়ে যায়। ইহাকে বশকদু বা সংক্ষেপে বশ বলে। বশ অনেক উপকারে লাগে, তা দিয়ে এমনকি একতারা নামের বাদ্যযন্ত্রও বানানো যায়। বশের আভিধানিক অর্থের পাশাপাশি যেসব মেয়ের অনেক বয়সেও বিয়ে হয় না তাদেরকে রূপক অর্থে বশ বলা হয়। এভাবে বশ হওয়া মেয়ে, থুক্কু মহিলাদের একটি মানসিক রোগের নাম বশীলাইটিস। অবস্থাভেদে ছেলেদের মধ্যেও বশীলাইটিস দেখা গেলেও প্রধানত মেয়েরাই এই রোগের প্রধান শিকার।

গবেষনায় দেখা গেছে একটু কবি বা ভাবুক শ্রেনীর মেয়েরাই বশীলাইটিসে বেশি আক্রান্ত হয়। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, বাস্তব জগত সম্পর্কে একটি অবাস্তব ধারনা পোষন করা এসব মেয়ে ধরাকে সরা জ্ঞান করে একসময় বাস্তবতার মুখোমুখি হয়ে প্রচন্ডভাবে শকড হয়। এই শক থেকে মূলত বশীলাইটিসের লক্ষন সবার সামনে প্রকট হয়ে ধরা দেয়।

বশীলাইটিসে আক্রান্ত মেয়েদের কৈশোর এবং প্রথম যৌবন কাটে স্বপ্ন এবং ঘোরের মধ্যে। কল্পনাপ্রবন হওয়ার ফলে নতুন নতুন বিষয়ের প্রতি এদের আগ্রহ অপরিসীম। এরা কোন বিষয়ে আগ্রহী হলেই সে বিষয়ে যাবতীয় পরীক্ষা-নীরিক্ষা চালিয়ে যাবে। যৌনবিষয়েও এরা বৈচিত্রের জন্যই বৈচিত্র খোঁজে। একের পর এক সঙ্গী বদলের পালা চলে এবং কারো সাথেই থিতু হতে পারে না।

সময় এবং নদীর স্রোতের সাথে পাল্লা দিয়ে যৌবনেও একসময় ভাটা নামে। ক্ষয়িষ্ঞু শরীর মনের মাঝে বিরাজ করা কল্পনার জগতের সাথে তাল মিলাতে অপারগ হয়। এতদিন সেসব মৌ-লোভী পুরুষ সাথে সাথে ঘুরেছে, তারাও ফাকতালে কেটে পড়ে। সে শুধু একের পর এক ডেকে যায়, কেউ ফিরেও তাকায় না। আক্রান্ত রোগিনীর জন্য এ অবস্থা কতোটা মারাত্মক, তা অনুভব করা সাধারন মানুষের সাধ্যের বাইরে।

বশীলাইটিসে আক্রান্ত রোগীর আচার আচরন এরপরে একেবারে বেপরোয়া হয়ে যায়। কল্পনার যৌনজীবন এবং অ্যাটেনশন ফিরে পেতে এমন কিছু নেই, যা তারা করতে পারে না। মধ্য তিরিশেও দেখা যাবে তারা অষ্টাদশবর্ষীয় বালককে পটাতে চেষ্টা করছে, কোন জনসমাবেশে দেখা যাবে হঠাৎ করেই যৌনবিষয়ের ওপর কথা বলা শুরু করে দিয়েছে। সাধারনকে পটাতে উত্তেজক বিষয় যেমন ভায়াগ্রা, কনডম ইত্যাদি নিয়ে বিশদ আলোচনা করতেও এদেরকে উৎসাহী দেখা যায়। এরা ঠিক বুঝতে পারে না, উত্থানের সাথে দর্শনধারীত্বও গুরুত্বপূর্ন, শুধু কথায় এমনকি চিড়া ভিজলেও সাপ ফনা তুলে না, ফনা তুলতে হলে আকর্ষনীয় কিছু দেখতেও হয়। অপ্রাসঙ্গিক এসব বিষয়ে জনসাধারন প্রচন্ড বিরক্ত হলেও সে কেয়ারই করবে না। এক সময় অশলীল ভেবে সবাই তাকে ধিক্কার দিতে থাকে এবং অচিরেই সে ঘরে-বাইরে সবস্থানেই নিগৃহীত হয়।

এ রোগের চিকিৎসাস্বরূপ মনোবিজ্ঞানীরা আশেপাশের সবার কাছ থেকে রোগিনী যাতে সর্বাত্মক সহযোগিতা পায়, সে বিষয়ের ওপর জোর দিয়েছেন। শসা, গাজর, বেগুনজাতীয় তরকারির দাম বেড়ে গেলে প্রতিবেশিরা দরকার হলে চাঁদা তুলে রোগিনীকে এসব সরবরাহ করবেন। প্রাকৃতিক উপায় সর্বোত্তম উপায়। এর বাইরে রোগিনীকে দেখে কোনরূপ হাসিঠাট্টা করা যাবে না, তাকে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক পরিবেশে ফিরিয়ে আনতে হবে, তাকে বুঝাতে চেষ্টা করতে হবে যে, এতদিন শরীরের লোভে যে মৌ-লোভীরা তাকে পাত্তা দিত, সেই শরীর তার আর নেই। সে মনে মনে যে 'সব খেয়ে ফেলবো' বলে প্রতিজ্ঞা করে আছে, সেটাও অবাস্তব বিষয়। এতে তার আহত হওয়ারও কিছু নেই, কেউই সব খেয়ে ফেলতে পারে না। এভাবে থেরাপি চলতে থাকলে একসময় সে নিজের সার্বিক পরিস্থিতি অনুধাবন করতে সমর্থ হবে, তখন জনসমক্ষে কুরূচিপূর্ন উত্তেজক বিষয় নিয়ে গলাবাজি না করে কাজে মন দিবে।

আসুন আমরা বশীলাইটিসে আক্রান্তদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেই। তারাও সমাজের অংশ। বশীলাইটিস একটি রোগ, অশলীলতা নয়।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মার্চ, ২০০৮ রাত ১২:৪২
১৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×