আমাদের এখন নিজের কিছু আর ভালো লাগে না। নিজের অবস্থান, চেহারা, স্বাস্থ্য, পরিবার কিংবা চারপাশ।
তুলনামূলক হৃদয় সর্বদা ফেসবুকে স্ক্রল করতে করতে মেপে নেয় মিথ্যা আর অলিক বন্ধুগণের সাজানো টাইমলাইনের নির্যাস।
চকচকে জামাকাপড় পরে জবরদস্ত শরীর আর মোহময় রঙিন খোপখোপ চাকচিক্যে আমরা বেদনা মিশিয়ে নিজেকে সৌভাগ্যহীন আর অতৃপ্ত ভাবতে ভাবতে টক ঢেকুর তুলি। আহা, আমি ভালো নেই, আমি কিছু পেলাম না.. এরকম সব হাহাকার বিষবৃক্ষ হয়, আর আমরা অত:পর সবসময় অসুখী হয়ে মিথ্যে সিনেমাসূলভ পোষ্টগুলোতে লাভ রিয়াক্ট দিতে দিতে চাপা দিই ক্ষোভ!
অথচ, আমরা কি একটু ভেবেছি, এই যে একচক্ষু দত্যির মতো একটানা নিজের তৃপ্তি অতৃপ্তি জন্যে ভেবে চলা, শোভিতের সাথে মিলানোর আক্ষেপ- এখানে জীবন কোথায়! নিজের ব্যক্তিগত প্রাপ্তিগুলোর মূল্যায়ন কি কখনও করেছি! বস্তুত সোসাল মিডিয়া আমাদের এমনভাবে অন্ধ করে রেখেছে যে বাস্তবতা নিয়ে ভাববো সে ফুরসত কোথায়!!
তারপর, সময় ফুরায়, অথবা করোনার মতো কোন অনাহুত এসে আলিঙ্গন করে এ জীবনের সাথে, নিথর হয়ে যাওয়া হৃদয় তখন আর অবকাশ পায় না জীবনখাতার জের টানার, কখনও একটুও সময় হয়নি এই যে অফুরান নিয়ামতরাশি ভোগ করলাম তার সন্তুষ্টিতে একবার ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলবার, যেন সরল সমীরকরণ মিলিয়ে ফেলেছে জীবনভর ভোগ আর তুলনার গুনিতক; এবং আমরা তখন শুধু খালি হাতে, নিমকহারাম জীবনের বিষাদ নিয়ে মাটির নিচে চাপা হই।
হয়ত ফেসবুক টাইমলাইনে হয়ত কোন বন্ধু ঝুলিয়ে দেয় হঠাৎ মৃত্যু সংবাদ, আমিন এবং ইন্নালিল্লাহ’র ভিড়ে পোষ্টদাতা চকিতে দেখে নেয় কতজন লাইক কিংবা স্যাড রিয়াক্ট দিলো!
এটাই ভোগবাদের সবচে নির্মম নিগ্রহ!
শেফি দ্বীপ, ০৪/০১/২০২১
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জানুয়ারি, ২০২১ ভোর ৪:৩৮