আজ ভোরে ঘুম থেকে উঠে জানালা দিয়ে তাকিয়ে মনটা ভালো হয়ে গেল। চারপাশ সাদা চাদরে আবৃত করে তুষারপাত আমাদের মফস্বল ঢেকে দিয়েছে। পবিত্রতা আর শান্তির প্রতিক সাদা রঙ, স্বস্তি আর আনন্দ শুভ্রতায় জমে উঠে ঢেড়! আমি সাদা তুষারের সাথে দেখা করতে নেমে এলাম সমুদ্রপথে! আমার মতো বেশ ক'জন ঘুমভাঙা মানুষ তখন করোনা তোয়াক্কা করে সমুদ্রের দিকে তাকায়ে হাঁটছে। দু'তিনজন ছিপ ফেলে তাকায়ে আছে দরিয়ায়, তাদের লাল জ্যাকেট আর কালো এক্রেলিকের টুপিতে শান্ত বরফ শুভ্রতা বিছিয়ে শুয়ে আছে। একঝাঁক সমুদ্র-চিল ডানা ঝাপটে সা করে উড়ে গেল। মনে হলো এ পৃথিবীতে মহামারী নেই, মৃত্যু নেই, শ্বাসকষ্ট নেই।
আমি পথের যে দিকটা নিচু হয়ে বিস্তৃত মাঠ আর নিঝুম হ্রদের দিকে নেমেছে, সেখানে নেমে পড়ে অবশ হয়ে রইলাম। আমরা সামনে সাদা একদুনিয়া জুড়ে নিকষ শুভ্রতা। অসহ্য সুন্দর ঝলকে উঠা অপার্থিব ক্যানভাস! হৃদয় এবং আবেগকে মথিত করা শুভ্র মরিচিকা! আমি হাঁটতে লাগলাম ঘোরের মধ্যে, যেন কেউ আমাকে সেই ক্রোনিকাল অফ নারনিয়া' র ওয়ার্ডরোব থেকে ঠেলে ফেলে দিয়েছে আশ্চর্য রুপকথায়।
হাঁটতে হাঁটতে কখন যেন লেকের পাশে এসে থেমেছি। সাদা বরফের ভেতর ঝিকমিক করছে লেকের পানি, আর পানির মধ্যে পেখম তুলে সাঁতরে চলেছে শুভ্র একদল রাজহাঁস। তারা যেন পানির উপর উঁচিয়ে থাকা বরফখন্ড, অথবা ইঞ্জিন বন্ধ হওয়া ষ্টিমার।
এসব দেখতে দেখতে আমার ঘোর ভাঙলো পকেটে রাখা মোবাইল ফোনের শব্দে।
আমি বাড়ী ফেরার জন্য আবারও সমুদ্রপথ বেছে নিলাম।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জানুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৪:০৪