চট্টগ্রামের রাজনীতিতে প্রভাবশালী নেতা আ জ ম নাছির। সদ্য সমাপ্ত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। যদিও এবারের সিটি নির্বাচন নিয়ে রয়েছে নানা প্রশ্ন।
ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে উঠে আসা আ জ ম নাছির বিভিন্ন সময়ে চট্টগ্রামে হয়েছেন আলোচিত-সমালোচিত। ২৮ এপ্রিলের নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পরের দিন রাতে চট্টগ্রামে জেলা ক্রীড়া সংস্থার অফিসে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে কথা বলেন, আ জ ম নাছির।
এ সময় তিনি প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন আর চট্টগ্রামের রাজনীতির অনেক কিছুই এড়িয়ে যান। কিছু প্রশ্নে ক্ষেপে যান, কিছু প্রশ্নে ছুড়ে মারেন বক্তব্য রেকর্ড হতে থাকা এ প্রতিবেদকের মোবাইল ফোন সেট।
‘নির্বাচনটা প্রশ্নবিদ্ধ। সাংবাদিকদের কাজে বাধা দেওয়া হয়েছে’— দ্য রিপোর্টের এমন প্রশ্ন শুনেই ক্ষেপে যান নাছির। রেকর্ড হতে থাকা সাংবাদিকের মোবাইল ফোন সেটটি ছুড়ে ফেলেন। উচ্চস্বরে বলে উঠেন, ‘সাংবাদিক চড়াইতে চড়াইতে এতদূর আসছি।’
‘প্রশ্নবিদ্ধ এই নির্বাচনে জয়ী হয়ে আপনি কি খুশি?’— এমন প্রশ্নের উত্তরে আ জ ম নাছির বলেন, ‘আপনি খুশি? আপনি কোনো কিছু অর্জন করলে কি অখুশি হবেন? এইগুলো কোনো প্রশ্ন হল? আপনি সাংবাদিক, আপনি কি টাইপের প্রশ্ন করেন? আপনি যদি কোনো কিছু অর্জন করেন তাহলে খুশি হন কিনা? এইগুলো লেসক্যালিবারির জার্নালিজম, না হলে ইয়েলো জার্নালিজম। স্ট্যান্ডার্ড প্রশ্ন করেন। যেগুলো দ্বারা মানুষের উপকার হবে। আজগুবি কী প্রশ্ন করেন?’
এ সময় প্রতিবেদক বলেন, ‘প্রশ্নে অনেক কমন বিষয় থাকতে পারে। তার পরও আপনার কাছ থেকে আলাদাভাবে জানতে চাই।’
আ জ ম নাছির বলেন, ‘না, না, এইটা কোনো কথা হইল। নির্বাচনে প্রার্থীরা এত কষ্ট করে, নির্বাচন করে জয় পাইলে খুশি হবে না?’
আপনি মনে হয় ...
-আপনার কি মনে হয়? আমি কি বেজার হইছি? পৃথিবীর ইতিহাসে এমন কোনো নজির আছে যে, নির্বাচনে জয়ী হয়ে কেউ বেজার হয়?
আমার প্রশ্নটা ....
-আপনার সঙ্গে কোনো কথা নেই, যান। আমার সামনে আঁতেলগিরি করবেন না। এই সব তাজ্জব কথা বলার সময় আমার নেই। প্রশ্ন করতে পারেন না আঁতেলগিরি করেন কেন? সাংবাদিকদের চড়াইতে চড়াইতে এতদূর আসছি। আমার কাছে মাস্তানি করতে আসছে ...।
মাননীয় মেয়র, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সরাসরি নির্বাচনের ইতিহাসে এর আগে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে কেউ ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে নির্বাচনের দিন ভোট বর্জনের ঘোষণা দেননি। তাই প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনে জয়ী হয়ে আপনি খুশি কিনা?
-এইবার বুঝেছি। আপনার ইনফরমেশনেও কিন্তু ভুল আছে। ১৯৯৪ সালে সরাসরি নির্বাচন শুরু হলেও এর পরের নির্বাচনে কিন্তু এ বি এম মহিউদ্দিন সাহেব বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। আর এবারের নির্বাচনের কথা বলছেন? এই নির্বাচন সম্পূর্ণ ভিন্ন পরিস্থিতিতে হয়েছে।
শুনেন, আপনি এইখানে আসছেন, দৈনিক আজাদীর একজন সাংবাদিকও ইন্টারভিউ নিয়েছে। ওরা চট্টগ্রামের সমস্যা-সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলছে। এই রকম প্রশ্ন করেন। চট্টগ্রামের ৬০ লাখ মানুষের বিষয়ে এবং তাদের কল্যাণের বিষয়ে কথা বলবেন। তা না করে আপনি আলতু-ফালতু প্রশ্ন করা শুরু করছেন। অবশ্য আপনি কি প্রশ্ন করবেন সেটা আপনার বিষয়।
আমি যদি আপনাকে স্বাধীনভাবে প্রশ্ন না করতে পারি তাহলে ....
-আপনাকে বুঝতে হবে আপনার একমাত্র পেশা সাংবাদিক। এটা আপনাদের রুটি-রুজিরও বিষয়। আমি কিন্তু একক পেশায় নেই। বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রমে জড়িয়ে আছি। এ জন্যই আপনাদের আমাদের সহযোগিতা করা উচিত। এটা বুঝা উচিত, সহযোগিতা কতটুকু করা যাবে, কখন করা যাবে, কতটুকু করা উচিত। এই বিষয়টা তো আপনাদের বিবেচনায় থাকতে হবে।