সে পাকি সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষনে এবং পাকি মননে গড়ে ওঠা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে মুক্তিযুদ্ধের পরে মুজিব সরকার কখনই পাকি মনন উচ্ছেদ অভিযান চালায় নি। সে সময় প্রয়োজন ছিল চিরুনী অভিযান চালিয়ে পাকি মানসিকতার অফিসারদের চিরতরে শেষ করে দেয়া, যেটা করা হলে আজকে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর ক্ষমতা এবং অর্থের প্রতি লোভ একধরনের ভয়ে রুপ নিত, সেনাবাহিনী দেশের সম্পদ ভোগ করতে গেলে তাদের বিনিময়ে কিছু কাজ করার মানসিকতা সৃষ্টি হত। কিন্তু সেটা হয় নি। যার ফলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ক'দিন পর পর পাকি ভুত মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে, আর তাতে কৌশলে ইন্ধন যোগায় পাকি ঔরষে জন্ম নেয়া শিবির-হিজবুত প্রজন্ম।
সেনাবাহিনীর মত আমাদের দেশে সেনা সমর্থনে টিকে যাওয়া জামাতে ইসলামী বাংলাদেশের অবস্থাও প্রায় এক। মুজিব সরকারের নপুংশক ব্যার্থতায় আমাদের দেশে টিকে যায় জামাতের মত দল এবং তার নেতারা, যারা পরবর্তীতে সেনাবাহিনীর পদলেহন করে বেশ শক্ত অবস্থানই গড়ে তুলেছে। আর আজকে তারা বনে গেছে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব আর আর স্বাধীনতার প্রতীক। কিন্তু আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বলে যে বীর বাঙ্গালী অস্ত্র না ধরলে আজও আমাদের পাকি গোলামি থেকে মুক্তি মিলতো না।
পাকিস্তান সেনা বাহিনী থেকে যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ গ্রহনের জন্য বেড়িয়ে গিয়েছিল, অস্ত্র ধরেছিল, তারা বাংলাদেশের সেনাবাহিনী হিসেবে বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্যের কারনে তখন পাক বাহিনী থেকে বেড়িয়ে যায় নি। তারা বেড়িয়ে এসেছিল বাঙ্গালী হিসেবে, একজন সাধারন বাঙ্গালী সরকারী কর্মচারী যেমন বেড়িয়ে এসেছিল, একজন সেনাবাহিনীর সদস্যও সেদিন বেড়িয়ে পরেছিল দেশ মাতৃকার ডাকে। সেনাবাহিনীতে থাকা অবস্থায় যা শেখানো হয়, উপরের নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করা, সেনাবাহিনীর সেই মৌলচেতনা ধারন করে থাকলে সেনাবাহিনীর কোন সদস্যের পক্ষেই সম্ভব হতো না পাকিস্তান সেনাবাহিনী থেকে বেড়িয়ে আসা। সেনাবাহিনীর অটুট নিয়ম শৃংখলা আর বজ্র বাধুনি ভেদ করে সেদিন সেনাসদস্যদের মানবিক চেতনার জয় হয়েছিল বলেই তারা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে পেরেছিল।
১৯৪৭ থেকে ৭১ পর্যন্ত যেই অখন্ড পাকিস্থান রাষ্ট্র টিকে ছিল, সেই পাকিস্তানের টিকে থাকার আদৌ কোন আদর্শ বা চেতনা ছিল কিনা সেটা ভাবনার বিষয়। বাংলাদেশের মানুষের কাছে ইসলামের যেই রুপ সেটা অবশ্যই অনেক কোমল ইসলাম, যার সাথে মধ্যপ্রাচ্যের হিংস্র নোংরা বর্বর হাত কাটা পাথর ছোড়া ইসলামের কোন রকম সম্পর্ক ছিল না। বাংলাদেশের মানুষ পলিমাটি আর নদীর মানুষ, নদীর তীরে যারা বড় হয় তাদের ভেতরে প্রকৃতিগত ভাবেই কোমলতা থাকে, তারা সংগীত এবং সাহিত্যপ্রেমী হয়।
অন্যদিকে মরুভুমির আরব ছিল বর্বর যুদ্ধবাজদের অঞ্চল, যাদের কাছে যুদ্ধ এবং যুদ্ধলব্ধ মাল ভোগের ইচ্ছা তাদের মানবতাকে সব সময়ই ছাপিয়ে যেত। ভারতে ইসলামের প্রবেশ আফগানিস্তান পেরিয়ে পাকিস্তান হয়ে ঢুকে পরার কারনেই হোক, বা অন্য কারনেই হোক, আফগানিস্তান বা পাকিস্তানের ইসলাম আর বাংলাদেশের ইসলামের মধ্যে রয়েছে আসমান জমিনের পার্থক্য। বিভিন্ন সময়ে মানবতাবাদী সুফী সাধকদের অসাম্প্রদায়িক চেতনার ইসলাম, যা মৌলবাদী কট্টর মুসলিমদের মতে প্রকৃত ইসলাম নয়, তাদের হাতেই প্রচার এবং প্রসার ঘটেছে এই অঞ্চলে ইসলামের।
কিন্তু পাকিস্তানের উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠীটার হাতে সৃষ্ট রাজনৈতিক দল জামাতে ইসলাম যখন আত্মপ্রকাশ করলো,উগ্র ওয়াহাবীবাদ যখন মাথায় চেপে বসল পুরো পৃথিবীতে, সেটা আরও বেশি মধ্যপ্রাচ্য থেকে ইসলাম আমাদের অঞ্চলে ঢুকাবার খায়েস নিয়েই আসলো।
সেনাবাহিনী মূলত একটা দেশের রক্ষকের ভূমিকা পালন করবে, সাধারন জনগোষ্ঠী এবং দেশের মধ্যবিত্ত হিপোক্রেট শ্রেণী সেনাবাহিনী থেকে এরুপ প্রত্যাশা নিয়েই সারাবছর ট্যাক্স দিয়ে থাকে। জনগনের ট্যাক্সের টাকায় লেফট রাইট করা, শরীরে ক্রমশ মেদ জমানো এবং মেদ ঝড়ানো ছাড়া এদেশের সেনাবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্ত্ব খুব সাংঘাতিকভাবে রক্ষা করে আসছে এবং রক্ষা করে চলছে এমন প্রমাণ আমরা দেখি না। আধুনিক সেনাবাহিনীর চরিত্র অনেক পাল্টেছে, তারা তাদের রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের স্বপ্ন দেখা কমিয়ে এখন জাতিসংঘের হয়ে কাজ করার চিন্তায় মগ্ন। রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের স্বপ্ন যে তারা এমনি এমনিতেই ছেড়েছে সেটা ভাবলে ভুল হবে, সেনা বিদ্রোহ তাদের বিপুল লাভজনক ব্যাবসা জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের বারোটা বাজিয়ে দেবে বলেই সেনাবিদ্রোহ এবং রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের চলে আসা প্রথা তারা পাল্টাতে চেষ্টা করছে। এটা তাদের সততা, জনগন এবং রাষ্ট্রের প্রতি যতটা কমিট্মেন্ট, তার চাইতে বেশি জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের থেকে পাওয়া বিপুল ডলারের লোভ বলে ধারনা করলে ভুল হবে না।
এই কিছুদিন আগেও সেনাবাহিনীতে তরুন সেনাসদস্য সংগ্রহের সময় তরুনদের এক ধরনের মানসিকতা তৈরি করে দেয়া হত যে, সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ পদ হচ্ছে রাষ্ট্রপ্রধানের পদ। সফল সেনাবিদ্রোহ করতে পারলেই রাষ্ট্রপ্রধানের পদ পাওয়া যাবে, যেন এটা একটা প্রমশন।
এই সেনামানসিকতা এবং সংস্কৃতির বাংলাদেশি ধারক এবং বাহক হচ্ছেন বাংলার দুই কুলাঙ্গার জিয়া এবং এরশাদ। তারাই জামাতে ইসলামীকে ক্ষমতা ভাগ দিয়েছে বিভিন্ন সময়ে, ধর্মান্ধগোষ্ঠীকে লালনপালন করেছেন নিজ নিজ স্বার্থ হাসিলের জন্য। জনগনকে রাষ্ট্রধর্মের মূলা খাইয়ে আর বিসমিল্লা পড়িয়ে নিজেদের অসততা ঢেকেছেন, সেনাবাহিনীর সবচাইতে গুরুত্বপুর্ণ আদর্শ লঙ্ঘন করে নিজেই নিজেদের রাষ্ট্রনায়ক বানিয়েছেন।
আর আমরা সাধারন মানুষ, ভোদাই জনগন বিভিন্ন সময়ে তাদের কর্মকান্ডে হাততালি দিয়েছি, সানগ্লাস নেতা আর লম্পট এরশাদের লাম্পট্যে মুগ্ধনয়নে তাকিয়ে থেকেছি।
সেনাবাহিনী, বিডিআর প্রভৃতি বাহিনী তৈরি করা হয় দেশের সার্বভৌমত্বের স্বার্থে, দেশকে বহিঃশত্রু থেকে রক্ষার জন্য জনগন মাথার ঘাম পায়ে ফেলা পরিশ্রমের ট্যাক্সের টাকায় অস্ত্র কিনে তুলে দেয় সেনাবাহিনী আর বিডিআরের হাতে। তাদের প্রত্যাশা থাকে এই সেনাবাহিনী এবং বিডিআর তাদের রক্ষা করবে, তাদের ঘর পাহারা দেবে বিশ্বস্ত কুকুর যেভাবে বাড়ি পাহারা দেয়।
কিন্তু বিভিন্ন সময়ে আশ্চর্য হয়ে দেখতে হয়, এই সেনাবাহিনী-বিডিআরের মত বাহিনী হাতে অস্ত্র পেয়ে কিভাবে ভোল পাল্টে ফেলে। তারাই তখন হয়ে ওঠে আমাদের প্রভু, তারাই আমাদের মাথার উপর ছড়ি ঘুরাতে শুরু করে, আমাদের "ব্লাডি সিভিলিয়ান" বলে গালি দিতে শুরু করে।
২৫ ফেব্রুয়ারীর এই দিনে বিডিআর বিদ্রোহের মত এক নারকীয় ঘটনা ঘটে গিয়েছে আমাদের ঢাকার পিলখানায়। আমরা সেই সব ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছি, এবং আমাদের মধ্যবিত্ত মানসিকতা নিয়ে ঘটনা পরম্পরা বিচার বিশ্লেষন করে নিজ নিজ মাথা খাটিয়ে বিভিন্ন ধরনের গুজব আর কল্পকাহিনীর জন্ম দিয়েছি। বিভিন্ন ধরনের কল্পকাহিনীর জন্ম নিলেই এই ঘটনা যে দুর্নীতির টাকা নিয়ে সেনাবাহিনী এবং বিডিআরের মধ্যে পারস্পরিক কামড়াকামড়ি ছিল, এটা আমরা সকলেই জানি এবং বুঝি।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে সেনাবাহিনীর দুর্নীতির কোন সীমা ছিল না। অদুর ভবিষ্যতে এরকম সুযোগ আর পাওয়া যাবে না ভেবে সেই সামান্য সময়েই সেনাবাহিনী অতীতের গনতান্ত্রিক সকল সরকারের সকল দুর্নীতির রেকর্ড ভেঙ্গে নিজেদের আখের গুছিয়েছে। আর অন্যদিকে বিডিআর সেনাবাহিনীকে সমর্থন এবং পরিশ্রম দুইই দেবার পরেও পকেট ভারী করতে ব্যার্থ হয়ে পাগলা কুকুরের মত ঝাপিয়ে পরেছে সেনাবাহিনীর উপর। আর আমরা আবাল বাঙ্গালী ভয়ে আতংকে থরথর করে কেঁপেছি, পুরোদেশ তখন গৃহযুদ্ধের আতংকে দিশেহারা হয়েছি।
আমাদের টাকা আমাদের ট্যাক্স, সেই টাকায় একদল দুর্নীতি করলো আর একদল নিজেদের ভাগ বুঝে নেবার জন্য অন্য দলটির উপরে ঝাপিয়ে পরলো। এযেন তাদের বাপদাদার সম্পত্তি, আমাদের চোখের সামনেই তারা রক্তারক্তি করে গেল, সেনাসদস্য এবং বিডিআরদের পরিবারের সাধারন মানুষদের নৃশংসভাবে খুন করলো।
আমরা তাহলে কাদের লালন পালন করছি, কাদের হাতে অস্ত্র তুলে দিচ্ছি আমাদের রক্ষার জন্য?
৭১ এবং ৭৫ এর পরের সরকার গুলোতে দেখা যায় উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠী জামাতে ইসলামী সেনাবাহিনীর একটা অংশ হিসেবে কাজ করেছে। তারা সেনাবাহিনীর অস্ত্রশক্তির নিচে গিয়ে লুকিয়েছে, সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করেছে নিজে টিকে থাকার জন্য। সেনাবাহিনীও তাদের ব্যবহার করেছে ধর্মকে কাজে লাগিয়ে সস্তা হাততালি পাওয়ার জন্য, জনমত গঠনের জন্য।
কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে সেনাবাহিনী আর জামাতে ইসলামীর সেই দহরম মহরম আর নাই। তাই এই সময়ে জামাতে ইসলামীর সেই শুণ্যস্থান পুরণের চেষ্টায় রয়েছে আরেক ধর্মান্ধ গোষ্ঠী, যার নাম হচ্ছে হিজবুত তাহরীর।
তারা আমাদেরই সেনাসদস্যদের মৃত্যুশোক এবং জনগনের সহানুভুতি কাজে লাগিয়ে নিজেদের অবস্থান তৈরির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে অনবরত, তারা একটু পরে পরে চোখ ভিজিয়ে রুমাল দিয়ে চোখ মুছছে, যেন সেনাবাহিনীর সদস্যদের মৃত্যুতে তাদের মত কষ্ট আর কেউ পায় নি। তারা রাতারাতি বনে গেছে সেনা প্রেমিক, সেনা তোষক। তারা বিভিন্ন পোস্টার তৈরি করে মাঠ গরমের চেষ্টা করছে, সেনাবাহিনীকে খেপিয়ে দেবার চেষ্টা করে যাচ্ছে সরকারের বিরুদ্ধে।
এতে তাদের লাভ বহুমুখী। জামাতে ইসলামী যেমন সেনাবাহিনীর কাধে বন্দুক রেখে শিকার করেছে, সেই জায়গাটা এখন দখলের ধান্দায় আছে হিজবুত তাহরীরের মত স্বপ্নদোষাক্রান্ত একটা জনবিচ্ছিন্ন দল, যাদের ইতিমধ্যে নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে, তার পরেও তারা গোপনে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
তাদের কার্যক্রম দেখে মনে হচ্ছে একজন বিডিআরও এই ঘটনায় মারা যায় নি। সেনাবিদ্রোহের পরে কতজন বিডিআর সদস্যকে বিনাবিচারে হত্যা করা হয়েছে সেই হিসাব সামনে আসলে হয়তো আমরা আঁতকে উঠবো, কিন্তু সেই হিসাব আমাদের সামনে কখনই প্রকাশ করা হবে না।
এই ছবিটার দিকে তাকালেই তাদের ধৃষ্টতা চোখে পরে। কতবড় ধৃষ্টতা!!!
ভাষা শহীদদের এই ছবিতে বলা হচ্ছে ভাই, আর সেনা বাহিনীর সদস্যদের বীর? হিরো?
এই ছবিটি দেখার পরে একটা প্রশ্নই মনে ঘুরছিল, আমাদের সেনা বাহিনী কোন দিক দিয়ে বীর? কোন দিক দিয়ে হিরো?
তারা কতবার ভারতকে পরাস্ত করেছে? মায়ানমারকে কতটা ভয় দেখাতে পেরেছে? তাদের সব বীরত্ব দেখা গেছে আমাদের দেশেরই পাহাড়ি ভাইদের নির্যাতনের সময়, আমার পাহাড়ি বোনদের ধর্ষনের সময়। আবার ক্ষমতা নিয়ে কামড়া কামড়ি করেছে এরশাদ জিয়া নামক দুই ইতর, যারা দুজনেই রাষ্ট্রের খৎনা করে কুৎসিত হাজামের মত দাঁত কেলিয়ে হেসেছে।
দুই চোর, দুর্নীতিবাজ, অসৎ , জনগনের টাকায় মেদজমানো প্রতিষ্ঠানের মারামারিতে আমরা অথর্ব জনগন ভয়ে আতংকে দিন কাটিয়েছি, একটা গৃহযুদ্ধের আশংকায় আমাদের শিশূসন্তানদের বুকে চেপে ধরে থরথর করে কেঁপেছি।
বিডিআর বিদ্রোহে যতজন সেনা সদস্য এবং বিডিআর জওয়ান মারা গেছে, তারা মোটেও দেশের স্বার্থরক্ষার জন্য আত্মহুতি দেয় নি, না তারা জনগনকে বাঁচাবার জন্য মারা গেছে। বরঞ্চ এটা বললে মোটেও ভুল হবে না যে তারা তাদের দুর্নীতির খবর গোপন করার জন্য বিদ্রোহের পরে আরও প্রচুর সংখ্যক বিডিআর হত্যা করেছে। এই হত্যা, এই রক্ত কিসের স্বার্থে, কাদের স্বার্থে? জনগনের স্বার্থে না এটা তো নিশ্চিত!
তাহলে কেন তাদের বীর বলা হচ্ছে?
বিডিআর বিদ্রোহে যে সকল নিরাপরাধ সেনা সদস্য মারা গেছেন, এবং যে সকল বিডিআর সদস্য মারা গেছেন, তাদের প্রতি পুর্ণ শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, এই বিদ্রোহে কোন সেনা সদস্য দেশের জন্য প্রান দেয় নি, না কোন বিডিআর সদস্য জনগনকে রক্ষার জন্য প্রান দিয়েছে।
আমরা সাধারন আম জনতা, আমরা চাই না আমাদের রক্ত পানি করা ট্যাক্সের টাকায় তোমরা মেদ জমাও আর আমাদেরই টাকা নিয়ে কামড়া কামড়ি করে আমাদের জিম্মি কর। আমরা এই অবস্থার অবসান চাই। এমন না যে সেনাবাহিনী বা বিডিআর দেশমাতৃকার জন্য অকাতরে জীবন বিলিয়ে দিচ্ছে, যুদ্ধ করে যাচ্ছে। কিন্তু তাহলে কেন আমরা তাদের পিছনে এত বিপুল অর্থ ব্যায় করছি?
২০০৯ সালের হিসাব অনুসারে আমাদের প্রতিরক্ষা খাতে মোট ব্যায় সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকার বেশি। এটা সরকারী সুত্র প্রাপ্ত তথ্য, আসল হিসাব এর কয়েকগুন বেশি হবে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমরা এই অর্থ কি ব্যায় করছি আমাদের জিম্মি করার জন্য? তাদের বন্দুকের ভয়ে থরথর করে কাঁপার জন্য?
এই অর্থ দিয়ে কতগুলো স্কুল তৈরি করা যেত, কতগুলো লাইব্রেরী তৈরি করা যেত, কত লাখ ভুখা নাঙ্গা শিশুকে সারা বছর ধরে খাওয়ানো যেত?
কিন্তু এই প্রশ্নের উত্তর কে দেবে?
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১ সকাল ১০:৪১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



