ছোটবেলা থেকে আমি ছিলাম শেষ বেঞ্চের স্বঘোষিত নেতা। একটি বিনাশ ও একটি শুরুর খবর মেঘের
রাজ্যে সম্প্রচারের আশায় দিনের পর দিন উল্টোপথে হেঁটে আজ পেছন ফিরে দেখি কেউ নাই। কারো ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর সময় নাই, খায়েস নাই। ছোটোরা ছোটো, বড়োরা বড়ো হয়ে গেছে। কারো স্কুল, কারো অফিস...সবার সময়ের অনেক অনেক দাম। খুব চাইলাম এই শহরের লোহা-সিমেন্টের দালানগুলোর ছাদে গাছ লাগাই- যাতে বোমারু বিমান লোকালয় খুঁজে পেতে বেগ পায়, যাতে ওপর দিয়ে উড়ে যাবার সময় ক্লান্ত কোনো পাখি জিরিয়ে নেবার অবকাশ পায়। গাছ লাগাতে, চারা-বীজ-মাটি-সার-টব কিনতে টাকা লাগবে- আমার মানুষের ছাদে বাগান করার টাকা নাই। পুরো বিষয়টা গুছিয়ে দেবার জন্য, শুরু করে দেয়ার জন্য যে সময়, শ্রম, লোকবল দরকার- তার অনেকটা আমার ছিল, এখন কিছুটা আছে। আর এই কাজে এনজিও অথবা কর্পোরেট-দের কাছে ভিক্ষে চাওয়ার রুচি আমার ছিল না, নেই। ভাবলাম, যাদের ছাদ আছে তারা খুশি হয়ে চারা-বীজ-মাটি কিনে দিয়ে নয়তো কেনার টাকা দিয়ে বলবে, "লাগিয়ে দাও। আমরা নিয়ম করে পানি দেব, আর লাগলে তোমাকে ডেকে পাঠাব।" কোথায় কী-- ওরা আমাকে বললো ছাদে সবুজ রং করে দিতে!
রাস্তা-জলাশয় সাফ করতে চাই, প্রতিটা দালানের ছাদে গাছ লাগাতে চাই, প্রতিটা জানালার কার্নিশে ছোটো একটা কাঠের বাক্স রেখে দিতে চাই চড়ুইয়ের ঘর বানানোর জন্য, যারা নদীতে-পাহাড়ে-অরণ্যে চিপ্স, চানাচুর, কনডম ফেলে তাদের কষে থাপ্পর চাই। ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর মন-সময় আছে এমন কিছু মানুষ চাই। উল্টোপথে হাঁটার আর শেষ বেঞ্চে বসার সাহস আছে এমন কিছু মানুষ চাই।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই এপ্রিল, ২০১০ রাত ১১:১০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




