সতর্কতাবাণী - এই ব্লগের সবগুলো চরিত্র বাস্তব এবং এদের সাথে বাস্তবে যদি কারও মিল পাওয়া যায় তাহলে এরা সবাই আমার পরিচিত এরূপ মনে করবার কোনো কারণ নেই। এই ব্লগটির কন্টেন্ট খুবই ছাপোষা, তাই নিতান্ত অবসর না থাকলে পড়বার কষ্ট করে আমাকে মনে মনে কিংবা সরাসরি গালাগাল করলে আমি দায়ী থাকব না। তবে সবরকম কমেন্ট সাদরে আমন্ত্রিত।
অনেকদিন ধরেই লিখব লিখব করছিলাম। এর আগেও দুই-একবার যে লিখবার চেষ্টা করিনি তা নয়। কয়েক লাইন লিখবার পর মনে হয় - কী লিখলাম এগুলো ?? যত্তোসব!! তাই এবার পহেলা ফাল্গুন আর ভ্যালেন্টাইন্স ডে’র ফুফুরে আমেজে সাহস করে লিখেই ফেললাম।
“ভালোবাসার আবার দিবস লাগে নাকি? যারা ভালবাসতে জানে তাদের জন্য প্রত্যেক দিন-ই তো ভালেন্টাইন্স ডে”...এই বিখ্যাত উক্তিটি আমার নয়। আমার খুব কাছের এক বন্ধুর ; আভিজ্ঞতা-সম্পন্ন বন্ধুর। অভিজ্ঞতার বলতে যা বোঝাতে চাচ্ছি তা হলো বারবার প্রেম এবং তথাকথিত ছ্যাকা খাবার অভিজ্ঞতা। সেই ভদ্রলোকের প্রেমিক মন - একটি প্রেমের করুন উপাখ্যানের সাথে সাথেই কোথা না কোথা থেকে যেন নতুন প্রেমের রঙ্গিন সূতোটি বের হয়ে আসত তা একমাত্র উপরওয়ালাই জানেন। স্কুল-লাইফের শৈশবকাল থেকে শুরু করে চলমান যৌবন পর্যন্ত সে বেশ ক’জনাকেই -“আসলেই ভালবেসেছে”(তার ব্যাক্তিগত ভাষ্য অনুযায়ী)। অবশ্য আমি তার অনেক কাছের একজন হয়েও তার কাছ থেকে কিছুই শিখতে পারি নি। মাঝে মাঝে তার রোমান্টিক সময়গুলো দেখলে মনে হয়- আমার যদি এরকম কেউ থাকত যে অন্য সবার চেয়ে আলাদা; যে নিজের চেয়েও আমাকে বেশি খেয়াল করবে; যে আমার সাথে হাসবে-কাদঁবে ... এরকম আরও অনেক কিছু। কিন্তু কিছুদিন পর যখন তার/তাদের অন্য চেহারা দেখি তখন মনে হয় -ভাগগিস আমি এখনও সিংগেল। তবে আমার সেই বন্ধুর মনের এই ভাঙ্গা-গড়ায় আর যা-ই হোক না কেন, প্রতি পর্বের পরিশেষে বেশ ভাল কিছু কবিতা আমরা পেতাম।
এরকম কিছু চরিত্র আমাদের বন্ধুমহলে বেশ কমন।তবে একটি পশ্ন আমার মনে থেকেই যায়- ভালোবাসা ব্যাপারটা কি পরিণত বয়সের একটি জটিল সিদ্ধান্ত নাকি অপরিণত বয়সের পাগলামির মাশুল?
প্রেম বিষয়ে আমার যা অভিজ্ঞতা তার পুরোটাই মূলতঃ পরোক্ষ বা যাকে বলা দেখে দেখে শেখা। আমার আরেক বন্ধুর কথা বলি- নাম সোহেল (আমার বানানো নাম) তার সম্পর্কে আমাদের বন্ধুমহলের মতামত হলো- “he is neither single nor double;...... always triple”। বানিয়ে বলছি না; সে সর্বদা একটি “লাভ ট্রাইএংগেল”এর ভিতর বসবাস করে। কোনো না কোনো একজনের সাথে তার কিছু না কিছু নিয়ে মনঃমালিন্ন্য চলতেই থাকে। ঠিক সেই সময়েই ঘটে আরেক নায়িকার আবির্ভাব। নতুন নায়িকা তার সমস্যাগুলো বোঝে, তাকে মানসিক শক্তি প্রদান করে এবং খুব-ই বুদ্ধিমতি হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেয়। এরপর যা হয় তা কিছুটা রসায়নের SN2 বিক্রিয়ার মত। নতুন নায়িকা প্রথম নায়িকাকে স্থলাভিসিক্ত করে। কিছুদিন যাবার পরই একই কাহিনী। সেই একই কারণে নায়িকার সাথে তার আবার দন্দ শুরু হয়। তখন সেই মেয়েটি আর আগের বুদ্ধিমতিটি নেই কারণ সে তো এখন প্রথম নায়িকার ভূমিকায়। তারপর যা ঘটে তা ৪-৫ লাইন আগেই বলে এসেছি।
এদের ভালোবাসা-ভালোবাসা খেলা দেখলে মনে হয় এক ধরনের hypocrisy। আদৌ কী তারা ভালোবাসার মানে জানে? এদের রোমান্সে ভাল-ভাল ডেটিং-স্পট আছে; দামি-দামি রেস্টুরেন্ট আছে; ফাইনাল পরীক্ষা শিকায় তুলে রাতের পর রাত জেগে মোবাইলে কথা বলার তাগিদ আছে; পকেটমানি কিংবা ঈদের জামা কেনার টাকা বাচিঁয়ে উপহার কেনার মত উদারতাও আছে - কিন্তু কোথায় যেন কিছু একটা জিনিস বাদ পড়ে যায়। এই বাদ পড়া জিনিসটিই হয়তঃ ভালোবাসা।
আমার কাছে মাঝে মাঝে(সবসময় নয়) মনে হয় ভালোবাসা ব্যাপারটা একরকম সার্থপরতা। যারা প্রেমের পাখি তারা আমার উপর রাগ করবেন না; আমি বুঝিয়ে বলছি। ভালোবাসায় আমরা শুধু নিজেরটাই পুরোপরি আদায় করে নিতে ব্যাস্ত- আমাকে নিয়েই বেশি ভাববে; আমার সাথে কাদঁবে-হাসবে; শুধু আমার সাথেই কথা বলবে - এই সবকিছুর মধ্যে “আমার” শব্দটিই কি সবচেয়ে বেশি প্রতীয়মান হয় না? এখানেই কি আমাদের শঠতা নাকি এখানেই ভালোবাসার পূর্ণতা?
আমি ভালোবাসার পক্ষে না বিপক্ষে এটি কোনোভাবেই আমার লেখার প্রতিপাদ্য নয়। আমার মনে কিছু প্রশ্ন ছিল যার কয়েকটি তুলে ধরবার চেষ্টা করেছি মাত্র।উত্তরগুলোর জন্য আমি পাঠক-সমালোচকদের উপর নির্ভর করে থাকলাম। তারপরও অনেক লিখে ফেলেছি। সম্পূর্ণরূপে ব্যাক্তিগত অভিমত নির্ভর একটি লেখা - তাই ভুল-ভ্রান্তির পরিমাণ ব্যাপক। পোস্টটির পর বাইরে গিয়ে আমার প্রেমিক-প্রেমিকা বন্ধুদের হাতে গণধোলাই এর কবলে না পড়লে পরে অন্য কোনো দিন না-হয় “ভালোবাসা” আর “ভালো বাসা” নিয়ে তর্ক করা যাবে। বেশি বড় ব্লগ পড়াও আবার বিরক্তিকর। তাই আজ এখানেই ক্ষান্ত দিচ্ছি।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ সকাল ১১:৩৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



