somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

“হঠাৎ দেশপ্রেমিক নাকি ছাগলের তিন নং বাচ্চা???”

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ রাত ১২:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি ভাই খুবি দুধ-ভাত টাইপের মানুষ। কোনো কিছু নিয়েই মাথা ঘামাই না। যেমন ধরুন - এতো প্রত্যাশিত একটি নির্বাচন গেল অথচ আমি ঠিক মত আমাদের নির্বাচনী এলাকা কিংবা প্রার্থীদের নামও জানতাম না। অস্কার ওয়াইল্ডের “হ্যাপি প্রিন্স” গল্পের সেই ছোট্ট পাখিটির মত আমারও মনে হয় “thinking always makes me sleep”। তাই খাই-দাই ঘুমাই - আমার নিজের জীবন এর চেয়ে বেশি কিছু করি বা করেছি বলে মনে হয় না।


আমার সবচেয়ে বড় টাইম-পাস সিনেমা দেখা(আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু নাহিদের সুবাদে আমার কোনো ডিভিডি কিনতে হয় না তাই ফ্রী মুভি দেখার আনন্দটাই আলাদা) কিন্তু আজ কেন যেনো ভাল লাগছে না। কিছুক্ষণ পরপর টিভির কাছে ছুটে যাচ্ছি- কী হচ্ছে এসব? আমাদের দেশের সেনা বনাম বিডিআর- এটাই কী সমীকরণ? কিছুই যেন মেলাতে পারছি না। খুব সাভাবিকভাবেই কোনো দন্দ হলে মানুষ যা করে আমিও তা-ই করেছি। চিন্তা-ভাবনা করে সে কোনো না কোনো একটি পক্ষকে সমর্থন করে- সেটি বিএনপি-আওয়ামী নির্বাচনের ময়দান হোক, পাক-ভারত ক্রিকেট ম্যাচ হোক আর লিভারপুল-চেলসি ফুটবল ম্যাচই হোক। অনেকেই হয়ত “না” করেবেন; কিন্তু অতন্ত্য সাধারণের কথা যদি বলি তাহলে আমার ধারনা যখন অপশন মাত্র দুইটি থাকে তখন আমরা কোনো না কোনো এক পক্ষকে সমর্থন করি।


প্রাথমিকভাবে আমিও বিডিআর’দের উপর শোষন আর নির্যাতনের কথা শুনে মর্মাহত হই। তারাও তো সৈনিক, তাদেরও পরিবারের সাথে ছুটি ভোগ করার অধিকার আছে, তারাও চায় তাদের সন্তানরা ভাল থাকুক। কিন্তু প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে আতঘাতী এরকম একটি পথ তারা বেছে নেবেন এটি কখনই আশা করি নি। সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী বিডিআর যখন বিএসএফ-এর সাথে লড়াই করে শহীদ হন তখন মনের ভেতর কেমন যেনো একটি দুঃখবোধ জেগে ওঠে। একই অনুভূতি হয় যখন শুনি ইউ এন মিশনে কোনো বাংলাদেশী সিপাহী শহীদ হয়েছেন। চোখের সামনে ভেসে ওঠে তাদের সন্তান আর পরিজনের আহাজারীর চিত্র। বিডিআর’দের দাবিদাওয়া গুলো যুক্তিসংগত হতে পারে তাই বলে আমাদের দেশের সেনাবাহিনীর উপর এরূপ চরম একটি প্রতিশোধ তারা নেবে তা সেনাবাহিনীর চরম শত্রু হয়ত সপ্নেও ভাবেনি।


বিডিআর একটি প্যারামিলিশিয়া বাহিনী; তারা তাদের অত্যাচারের জন্য শতাধিক সেনা কর্মকর্তাদের নির্বিচার হত্যা করতে পারে তাহলে সেই জের ধরে সেনাবাহিনীও যদি একই কাজ করে বসে? অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে বিডিআর-এর সাবেক এবং প্রয়াত ডিজি খুব সুবিধার লোক ছিলেন না। তাই বলে তার সাথে সাথে তার পরিবার এবং আরও শতাধিক সেনা কর্মকর্তা এবং তাদের পরিবারের কেন সেই মাশুল টানতে হবে? বিডিআর’রা তো সৈনিক, তারা কেন কাপুরুষের মত আচরণ করবে? এখন পর্যন্ত যতটুকু জেনেছি তাতে এত বড় একটি ঘটনাকে আমি সতঃস্ফূর্ত বলে মেনে নিতে পারছি না। এত বড় একটি ঘটনার পেছনে কারও কি কোনো প্ল্যান ছিল না? কোনো মাস্টার মাইন্ড ছাড়াই এতগুলো মানুষ প্রাণ হারাবে? একটি কথা আমি জোর দিয়ে বলতে চাই- সবার আগে একটি ব্যাক্তির পরিচয় সে একজন মানুষ তারপর সে একজন সেনা কিংবা বিডিআর। শুধু জিম্মি নাটক নয়, লুটতরাজ আর ধ...নের যে খবর পাওয়া গেছে তা যদি সত্য হয় তাহলে তাদের সাথে বিদেশি হামলাকারীদের পার্থক্য থাকল কোথায়? যদি সমস্যা শুধু প্রশাসনিক ব্যাপারে হয়ে থাকে তার কী অন্য কোনো সমাধানের উপায় ছিল না? সেনা কর্মকর্তাদের উপর ব্রাশ ফায়ার, লুটতরাজ আর ধ...নের মত কাজ কীভাবে করা হল আমার তা বোধগম্য হয় না।


যাই...আবার টিভি সেটের সামনে বসি- এই আশায় যে সুয়ারেজ লাইন দিয়ে ভেসে আসা ছাড়া আর কোনো সেনা কর্মকর্তা নিহত হন নি এবং আতসমর্পণের পর বিডিআর’রাও জীবন নিয়ে ফিরে যেতে পারবেন তাদের পরিবারের কাছে। আমার মত গা-ছাড়া টাইপের মানুষের মন আজ হঠাৎ একটু বেশি-ই উদ্বিগ্ন। আমি বারবার একটিই প্রার্থনা করেছি স্রষ্টার কাছে- হে বিধাতা এরা সবাই আমাদের দেশেরই সন্তান, এদের তুমি রক্ষা কর, কিন্তু আজ পার্থক্যটা শুধু এই যে পরস্পরের হাত থেকেই তাদের রক্ষা কর। তাই নিজের কাছেই মনে হচ্ছে আমি “হঠাৎ দেশপ্রেমিক নাকি ছাগলের তিন নং বাচ্চা ???”

৭টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৬

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট



পানি জীবনের মূল উৎস। এটি ছাড়া কোনো প্রাণের অস্তিত্ব সম্ভব নয়। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন:

وَجَعَلۡنَا... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে shoot করে লাভবান হলো কে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২৪


শরিফ ওসমান হাদি যিনি সাধারণত ওসমান হাদি নামে পরিচিত একজন বাংলাদেশি রাজনৈতিক কর্মী ও বক্তা, যিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে গঠিত রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত। তিনি ত্রয়োদশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×