জ্বরে গা পুড়ছে, এই সময় যদি কেউ ধর্ম নিয়ে প্যাচাল পাড়ে, কোরআন পড়ার জন্য নছিহত করে, রোজা করি না কেনো প্রশ্ন করে কেমন লাগে। আমার জীবনটা আমার, আমি যদি স্থির করি আমি বেহেস্তে যাবো না তাও তারা আমাকে বেহেস্তে নেয়ার জন্য টানা হেচড়া করবে? মানুষগুলির যে কি হয়েছে, মেয়ের স্কুলে ফাইনাল এক্সামের সার্টিফিকেট বিতরণ অনুষ্ঠান, প্রচণ্ড মাথা ব্যাথা নিয়ে বসে আছি, পাশের এক হিজাবী মহিলা বললেন
-ভাবী রোজা রাখছেন?
-না
-কেনো ভাবী?
-আমি রোজা রাখি না, শুনে উনি সন্তষ্ট হলেন না।
-রাখেন না মানে কি?
-রাখি না মানে রাখি না
-রাখতে পারেন না?
-চেষ্টাতো করে দেখিনি
-ও আল্লাহ বলেন কি, মনে হলো উনি আমার কাছ থেকে একটু সরে বসলেন।
-নামাজ পড়েন?
-ছোটো থাকতে পড়েছিলাম
-এখন পড়েন না কেনো?
-আমি কাষ্ট হাসি দিয়ে বললাম, নামায পড়ে আমি শান্তি পাই না।
-কোরআন পড়তে পারেন?
-আগে পারতাম, বাবামা ক্বারী রেখে শিখিয়েছিলেন? এখন আর মনে নাই।
-শিখছেন তবে পড়েন না কেনো?
-কোরআন পড়তেও আমার শান্তি লাগে না। তার চেয়ে একটা ভালো উপন্যাস বা একটা ভালো কবিতা পড়লে আমার শান্তি হয়।
এই বার তিনি কেমন রাগত ভাবে আমার দিকে তাকালেন, একেতো সীমা ছাড়িয়ে আমাকে একের পর এক অশালীন প্রশ্ন করে যাচ্ছেন তার উপর আবার এই দৃষ্টি, হিজাবের আড়াল থেকে উনি আমাকে দেখে বললেন
-আপনি আসলে কি বলেনতো?
-কি মানে কি?
-আপনারা কি খ্রীষ্টান?
-না
-হিন্দু?
-না
তাইলেতো মুসলিমই, তার ক্রোধ দেখে মনে হলো এখন আমি যদি বলি -আমি তাও না তাহলে হয়তো তিনি তার বোরখার আড়াল থেকে এখুনি চাপাতি বার করবেন। আমি তাকে বললাম
-আপনি যে বোরকা পড়নে, মাথার উপর এতো উচু করে একটা হিজাব জড়িয়েছেন, আমি কি একদিনও বলেছি, আপনি হিজাব পড়েন কেনো? উনি অদ্ভুত চোখে তাকিয়ে রইলেন। যারা হিজাব পড়ে অন্যকে এটা করেন না কেনো ওটা করেন না কেনো এই সব প্রশ্ন করা যেন তাদের মৌলিক অধিকার হিসেবেই তারা মনে করে। আমার কোনো সুনির্দিষ্ট কোনো ধর্মে বিশ্বাস নেই বলে। আমি মানুুষ হিসেবেই নিজেকে যথেষ্ট মনে করি বলে। আমাকে বিব্রত করা বা হত্যা করাও তাদের মৌলিক অধিকার। এর জন্য দেশের আইনও তারা লঙ্ঘন করতে পারেন অনায়াসে। কবে যে পৃথিবীটা মানুষের হবে! আদৌও হবে কি?
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪৩