প্রসঙ্গ ইস্টার এবং মুছলিমদের করনীয়
চৌধুরী হাফিজ আহমদ
ইস্টার একটা ধর্মীয় উৎসব , খ্রিস্টান দের প্রায় সব দল উপদল ও চার্চ কম বেশী মর্যাদা দিয়েই পালন করে থাকে । ইউরুপের বিভিন্ন দেশে পালিত হয় খুব জোরাল ভাবে , আয়োজনে ও তাহাদের কমতি নেই । ইয়াহুদি সম্প্রদায় ও এতে অংশ নেয় ও উৎসবে শরীক হয় । ইস্টার এর আয়োজনে থাকে লম্বা ছুটি । বিদ্যালয় কলেজ সহ প্রায় সকল শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকে প্রায় ২ সপ্তাহের মত , বিলেতে সরকারি দফতর বন্ধ থাকে প্রায় টানা ৫ দিনের মত । এই উৎসব কে পালন করে অনেকে নিজের মত করে , কেউ যায় বিদেশে ছুটি কাটাতে আবার কেউ যায় পরিবার পরিজনদের সাথে মিলিত হতে , কেউ আবার পারিবারিক মিলন মেলা করে , ইস্টার ঘিরে ব্যবসায়িক অঙ্গনে থাকে মহা পরিকল্পনা , আকর্ষণীয় মুল্য হ্রাস , থেকে অর্ধেক মুল্য , একটা কিনলে আরেকটা বিনামুল্যে , ফ্রি ডেলিভারি ও এর মধ্যে থাকে অন্তর্ভুক্ত । ধর্মের সাথে তাহাদের ব্যবসায়ীক মিল থাকে প্রচুর , তাই তাহাদের মধ্যে থাকে আকর্ষণ । ইস্টার আকর্ষণ হল ইস্টার এগ ( ডিম ) এবারে ডিমের আকারে থাকে সব কিছুর ব্যবহার । মাথা থেকে পা পর্যন্ত আসবাব পত্র থেকে ব্যবহারিক নানান দ্রব্যে থাকে এই ইস্টার এগের বাহাদুরি । বাচ্চাদের কাছে এগ চকলেট এই সময় হয়ে যায় চাওয়া পাওয়ার ক্ষেত্রে বিশাল কিছু । বাজারের চলে ক্রেতাদের আনাগোনা বেশী , মাস খানেক আগে থেকেই বিজ্ঞাপন চোখে পরে চমৎকার ভাবে কথা মালা দিয়ে সাজানো । সারা দেশেই থাকে বেজায় ভীর অন্তত দিন তিনেক ।যদি ও উৎসব ধর্মীয় তা পালিত হয় মাত্র ২ দিন । এর মধ্যে একদিন যায় চার্চে কিছু সময় আলোচনায় । ২য় দিন প্রায় ঘণ্টা ২য়েক প্রাথনায় দোয়ায় , সব চাইতে বড় চার্চ রাষ্ট্রীয় ভাবে আয়োজন করে ইস্টার দিনার এর এতে থাকেন সকল সরকারি ও বিরুধী দলীয় কর্তা নেতা । রানী ও আসেন সেই প্রার্থনায় অংশ নিতে । কট্টর বা মৌলবাদী যাহারা তাহারা উপবাস ও করে দিন চারেক । নান রা বিশেষ আয়োজন করে ব্রেইক দা ফাস্ট এড় জন্য এগ (ডিম ) দিয়ে সেই থেকেই নাকি এই নামের চল পরে গেছে ইস্টার এগ । অবশ্য নামের ব্যাপারে আরও কথা চালু আছে বাজারে , এখন আর নামকরন কেন হল তা দেখেনা আনন্দ ই মুল মুখ্য । এই প্রাথনার যে শুক্রবার এর নাম হল গুড ফ্রাইডে । এই গুড ফ্রাইডে তে তাহারা প্রার্থনা করে চার্চে , তাই এই দিনে চার্চের থাকে জমকালো ব্যবস্তাপনা । তাহাদের মধ্যে দল উপদল অনেক তবু যার যার ভাবে এই দিনে চলে উইশ করা ও প্রার্থনা করা ।যাহাই হউক না কেন তাহারা চায় আনন্দ উপছে পরুক তাহাদের জিবনে । এবারে আসা যাক ইস্টার আসলে কেন পালিত হয় । তা হল যখন নবী ইসা আঃ তাহাদের হল জিসাস ক্রাইস্ট , ক্রুশ বিদ্ধ হলেন তখন দেখল অবস্তা বেগতিক হালে উল্টো ব্যাপার , উনাকে পাওয়া যায়নি । তাই তিনি আবার আসবেন এই চিন্তায় আনন্দ করার সময় ও দিন ই হল ইস্টার , এই দিনে আসবেন বলেই তাহারা তাহাদের সকল ইচ্ছা প্রকাশ করে প্রার্থনা করে । যদিও আল্লাহর ইচ্ছায় নবী ইসা আঃ কে আছমানে উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং উম্মাতে মুহাম্মাদী হিসেবে দুনিয়াতে আবার তাহাকে ফেরত পাঠানো হবে বলে ওহীর বানী তে রয়েছে তথাপি এক দলের ধারনা যে নবী ঈসা আঃ আসবেন তাহাদের উদ্ধার করতে । আরেক পক্ষের ধারনা হল যাই হউক না কেন পাপি কিংবা তাপী জিসাস আসবেন এবং তাহাদের পাপ মোচন করে তাহাদের পরিত্রান দান করবেন । তাহাদের সব ধারনার মূলে কোন প্রমান নাই , তথাপি চলে আসছে যুগ যুগ ধরে তাই ধারাবাহিকতায় চলছে আজো । এই ইস্টারে আমরা মূছলিম রা যা করতে পারি তা হল মাছজিদে মাছজিদে আয়োজন করা আলোচনা ও খাবার ( ডিনার ) এর , এতে আমন্ত্রিত থাকবে যার যার এলাকার নন মুছলিম সম্প্রদায় । নারী পুরুষ এবং বাচ্চাদের জন্য রাখা হবে বিভিন্ন সামগ্রী উপহার হিসাবে । এর মধ্যে থাকবে নবী ঈসা আঃ এর ওহীর প্রামানিক তথ্য ইংরেজিতে । তাহাদের বলা যায় আসলে কি ঘটেছিল মরিয়াম পুত্র ঈসা আঃ কে নিয়ে সে সময় । তাহাদের কে ও বলতে দিতে হবে এবং শুনাতে হবে ধরজ্যের সহিত । এর সাথে বলতে হবে ইছলামে নবী ঈসা আঃ কে কিভাবে মর্যাদা দেয় ও সম্মান জানায় । তিনি আসবেন কাউকে পরিত্রান দিতে বা কাউকে উদ্ধার করতে নয় , তিনি আসবেন আল্লাহ এক ও মহান তা বলতে উম্মতে মুহাম্মাদী সঃ হিসেবে নেয়ামাত প্রাপ্ত হয়ে তিনি জয়ী হবেন শাইতান তথা বাতিলের বিরুদ্ধে ।তাহাদের আর ও বলা যায় ইছলাম হচ্ছে সম্প্রীতির সহযোগিতার সহমর্মিতার , ইছলামে রয়েছে পবিত্রতা এবং আদব ও আখলাকের চমৎকার সব সুজুগ । এই সত্য তুলে ধরলে মাছজিদের কোন ক্ষতি হবেনা বরং ভালই হবে , গত ক্রিসমাসে বারমিংহাম সেন্ট্রাল মাছজিদে ক্রিসমাস দিনার আয়োজনে সাড়া পাওয়ায় এবারে ও চলছে ইস্টারের আয়োজন । আসুন দেরী না করে বিলেতের প্রত্যেকটি মাছজিদে আয়োজন করুন Estar Talk with Non Muslim Free Dinar provided . এতে প্রকাশ পাবে ইছলামের মহানুভবতা এবং প্রতিস্টা পাবে আমাদের সৌহার্দতা । এই কাজে আমরা লাগাতে পারি আমাদের যুবক যুবতী দের , তাহাদের মাধ্যমে অনেক ভাল কাজ করানো যায় ইচ্ছে করলে । এই দীর্ঘ ছুটিতে আমাদের ছেলে মেয়েরা অন্তত একটা মহৎ কাজে ব্যস্ত থাকলে এড়ানো যাবে অনেক ঝামেলা । এখানে ইংলিশে আলোচনা করতে হবে যা তাহাদের ভাষা । তাই এই ধরনের আয়োজনে সামনের কাতারে আনতে হবে নব প্রজন্ম কে , তাহাদের হাতে আমরা এই মহতি কাজের দায়িত্ব দিলে ইনশাহ আল্লাহ কামিয়াবী আসবে বোলে আমি আশাবাদী । শুধু বিলেত নয় দেশে দেশে সকল মুছলিমদের তাই করা উচিৎ। আনন্দে গা ভাসিয়ে সহমর্মিতা প্রকাশে ভাল হওয়া যায়না সত্য পথ ছাড়া , তাই ইস্টারের মূল সত্য উপস্তাপন করতে হবে সকল স্তরে ।এই দাওয়াতি কাজে অংশ নিতে সকল মাছজিদ কমিটির সবাইকে উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি ।