somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হোয়াক্স!!

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৮ রাত ২:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



শীত লুকোচুরি খেলছে গ্রীষ্মকে পরাজিত করে, বাতাসের সাথে মিশে সন্ধ্যাবেলা মৃদু ছোঁয়া দিয়ে যায়। তুমি এমন প্রোটোকল নিয়ে অবস্থানরত যে, শীতও তোমার খোঁজ জানে না। আমি আনমনে খুঁজে বেড়াই কখনো নীলের শেষ প্রান্তে কখনো সবুজের দ্বারপ্রান্তে। ফেইসবুক তো এ্যামাযন বনেও আছে, এ্যান্টার্কটিকায়ও আছে। মেসেঞ্জারের পথ মেপে মেপে আমি এগিয়েছি কাঁপা কাঁপা পায়ে। তুমিও যেন আমাকেই খুঁজছিলে নিজের অজান্তে, খুব সম্ভবত ভুল করে পথ হারিয়ে।
দু-তিন শব্দ-গাথুনির বাক্য বিনিময়ে কাটলো বেশ কিছুকাল। তারপর আস্তে আস্তে শব্দের পর শব্দ দিয়ে পাহাড় গড়ে উঠলো, নানা শব্দ আর অনুভূতিতে মিশেল দুটি পাহাড়। সময় গড়িয়ে পরিবর্তন আনে সবকিছুতেই, এবার পরাজিত হলো শীত গ্রীষ্মের কাছে।
এ পাহাড়ের চূড়ায় আমি দাঁড়িয়ে আর তুমি ওই পাহাড়টায়। মাঝখানে কোন দুর্বোধ্য শঙ্কার দেয়াল থাকায় কেউ কাউকে দেখছি না। শুধু সেলুলার নেটওর্য়াকে কণ্ঠ শোনা আর উড়িয়ে দেয়া বাইনারি চিরকুট পড়া। এবার দুই পাহাড় সংযুক্ত হলো নির্বোধ মায়ার সাকো দিয়ে।এভাবেই অতিক্রান্ত হলো কয়েক সহস্র সেকেন্ড। প্রতীক্ষার অষ্টম প্রহর, খা-রোদ্দুর। প্রথম দেখার তৃষ্ণা, খড়খড়ে চোখ। তোমার চোখেও সে তৃষ্ণার ছোঁয়া। কিন্তু অদৃশ্য নৈতিক শৃঙখল আটকে রাখে । নিভৃতে বসবাস তোমার।
কিছু হোয়াক্স এবং ইলিউশন তৈরি করা হলো, এভাবেও যদি অন্তত দেখা হয়। কত ব্যাকুলতা ভিড় করেছিলো সারাটা আমি জুড়ে। তোমাকে এ পর্যন্ত সে কথা আর বলা হয়নি।
একটা ইতিহাস সংঘটিত হলো, কারো কারো হৃদপটে সে ইতিহাস দীর্ঘদিন লেগে থাকবে। কয়েকজন ইলিউশনে পড়ে গিয়েছিলো, যাদের কষ্টের ঋণ আমাকে আজীবন তাড়িত করবে।

হোয়াক্স / ইলিউশনে অবশ্য কাজের কাজ হলো না কিছুই।
তারপর হঠাৎ এক সুপ্রসন্ন দিনে মাহেন্দ্রক্ষণ এলো মেঘ না চাইতেই ক্যাটস এ্যান্ড টাইগার যেন! ছুটি!!

সকল সমস্যা থেকে ছুটি! ছুটি হয়েও তোমার ছুটি মিলল না। মিল বন্ধ, খাবার রান্না করায় ঝামেলা, নানাবিধ সমস্যায় আধা সেহেরী খেয়ে সারাবেলা রোজা, আবার ইফতারেও অপ্রতুল খাবার। আমার জন্যই এমন কিছু ঘটছে, অথচ আমার কাছেই তুমি গোপন করে গিয়েছিলে। এমনি আরো কত কষ্টই না তুমি করেছ আমার জন্য!
আমি তোমার সব কষ্টের আজীবন সঙ্গী হতে চেয়েছিলাম, এজন্য কি?

তোমার সম্ভ্রান্ত ও আত্নমর্যাদাশীল মানসিকতা আমাকে সশ্রদ্ধ ভালোবাসার যোগান দিয়েছে। তোমার নিরব নিভৃত থাকার বিশেষত্ব আমার ভেতর নিষ্পাপ এক অনুভূতি জাগিয়েছে। তোমার বুদ্ধিমত্তা আর প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব আমার ভেতর সুখের সন্ধান দেখিয়েছে। তোমার কিছু কিছু পাগলামী আমাকে করেছে বিগলিত, আপ্লুত। তোমার রিনরিনে সুমিষ্ট কন্ঠ আমার প্রাণ জুড়িয়েছে। তোমার মায়াভরা মুখটা কেড়ে নিয়েছে আমার সকল হতাশা, কষ্ট।

তুমি বাসায় যাবার জন্য ছুটির প্রহর গুণতে, পাগল থাকতে যে, কবে ফিরবে। সেই তুমিই পালটে গেলে আমার খপ্পরে পড়ে। সেবার প্রথমবারের মত বাসায় গিয়েও তোমার মনে শান্তি এলনা, কার জন্য যেন খারাপ লাগছে। শুনে আমার চোখে অশ্রু জমাট হয়ে গিয়েছিলো। এমন করে পাগলীর মত কেউ ভালবাসতে জানে?
তুমি একদিন খুব ভোরে হঠাৎ ফোন দিয়ে বাচ্চাদের মত করে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্নাজড়িত কন্ঠে বললে, তোমার বাসা থেকে আমার কারণে খুব করে বকেছে তোমায়। কান্না শুনে লাফ দিয়ে উঠে পড়লাম। তোমায় কি বলে সান্ত্বনা দেব, সে ভাষাই খুঁজে পাইনি তখন। সারারাত তোমার সেদিন ঘুম হয়নি নিশ্চয়ই? অথচ তুমি রুটিনবদ্ধ দিন পার করো, ১১ টার মধ্যে তোমার চোখে ঘুম জড়িয়ে আসে। আমি শুধু এইটুকু বলেছিলাম, সব ঠিক হয়ে যাবে একদম চিন্তা কোরোনা। তুমি ফোন রেখে দিলে। এর আগে কখনোই তুমি আগে ফোন কেটে দাওনি। হয়তো বাঁধভাঙা কান্নার বেগ তুমি সইতে পারোনি।
গভীর দুশ্চিন্তা আমায় আচ্ছন্ন করলো। কিসে এত ট্রাবল মেক হলো, এমন হচ্ছে কেন হঠাৎ?
সকালে কথা হলো, তুমি বললে বাসার কথা তোমার শিরোধার্য। আর বললে যে ফোনে কথা বলা যাবে না। আরো বললে, কথাই তো সব কিছু না, মনের দিক থেকে ঠিক থাকলেই ঠিক। আমাকে তৈরি ও প্রস্তুত হতে বললে।
সারাটা দিনজুড়ে টেক্সটিং হতো, আমি সব কিছু ভুলে ফোন আর পাওয়ার ব্যাংক হাতে করে বসে বসে তোমার হাতের আলতো ছোঁয়ার রিপ্লাই দেখি আর টেক্সট করি। তুমি মন খুলে কারো সাথে কথা বলতে পারতে না। আমার সাথে কত সহজভাবে মনের সব গুলো দরজা খুলে তুমি কথা বলেছো! আমাকে তুমি এতটাই আপন ভেবে নিয়েছিলে, এত অল্প সময়ে!
এরপর বাসা থেকে তোমার ফেইসবুক নিষিদ্ধ হলো। হোয়াটসএ্যাপে এলাম আমরা, তাতেও নিষেধাজ্ঞা এলো, এরপর হ্যাংআউটসে.... প্ল্যাটফর্ম পালটানো হলো অনেক কিন্তু মনের প্ল্যাটফর্ম সম্ভবত আমাদের একই রয়ে গিয়েছিলো। একের পর এক কারাগার আমাদেরকে অবরুদ্ধ করতে চাইলো, অথচ দুজনের জন্য দুজনার প্রেরণা কখনো অবরুদ্ধ হয়নি।
স্টাডি প্রেশার, বাসার প্রেশার আর হৃদয়ঘটিত প্রেশারে তুমি বেসামাল।
টতস্ত হতে পারছো না কোন কূল বা উপকূলের দিকে যাবে...
সামনে ফাইনাল প্রফ, নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার অদম্য ইচ্ছা ও তাগিদ।

আস্তে আস্তে তুমি হাটলে কঠিন বাস্তবতার মেঠোপথ ধরে, তোমার পথে সাহস যোগালো আমাদেরই পরিচিত কেউ কেউ। আমার অস্তিত্ব অস্বীকার করতে তারা তোমাকে প্ররোচিত ও বাধ্য করলো। আমি রয়ে গেলাম অপরাবাস্তবতায়, অলীক জগতে। অতীতের স্বচ্ছ কাঁচের মত দিন গুলো, আলো ঝলমলে তারা জ্বলজ্বলে রাত গুলো আমার নিউরণ জুড়ে ছোটাছুটি করে বিরামহীন। শ্রীহট্ট শহরে আমাদের আর একসাথে পদধূলি পড়লো না। অথচ ইচ্ছা ছিলো সে শহরটার প্রতিটি স্নিগ্ধ পথ আমরা মাড়াবো, শুধু শহর নয় রুপসী প্রতিবেশী গ্রামগুলোকেও আমরা বিরক্ত করবো, ভোরের শিশিরে সিক্ত সবুজ ঘাসের ঘুম ভাঙাবো। বন-বাদার আর টিলা-পাহাড়ে বোহেমিয়ানদের মত ঘুরবো যেমন করে মনটা চায়। কাঁচের মত নদীতে ছোট নৌকা নিয়ে চলে যাবো ঠিক মাঝ বরাবর, পড়ন্ত কোন বিকেলে বেলায়। সেখানে বসে চা খাবো, জাফরান আর আদা মিশ্রিত র-চা, নদীর স্বচ্ছ জলে বর্ণিল মাছদের খেলা দেখতে দেখতে...


( অসমাপ্ত..)
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৮ রাত ২:০৩
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×