somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দিন : দ্য ডে মুভি - রিভিউ

২২ শে জুলাই, ২০২২ সকাল ১০:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



দেখলাম অনন্ত জলিলের দিন : দ্য ডে।

দিন-দ্যা ডে হলো ২০২২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ইরান-বাংলাদেশ যৌথ প্রযোজনার একটি অ্যাকশন থ্রিলার চলচ্চিত্র। এটি পরিচালনা করছেন ইরানি পরিচালক মুর্তজা অতাশ জমজম।

প্রথমেই এ সিনেমার পরিচালক এবং স্ক্রিপ রাইটারকে ধন্যবাদ জানাই বাংলাদেশে ব্যতীত ইরান, আফগানিস্তান, হেরাত, মরক্কো, তুরস্ক প্রভৃতি দেশের সংস্কৃতিকে এ সিনেমায় তুলে ধরার জন্য। আলোক সজ্জা এবং রূপ সজ্জা উভয়ের জন্যও সংশিল্পষ্ট ব্যক্তিবর্গ ধন্যবাদ পাওয়ার দাবি রাখেন।

তবে সিনেমার সাউন্ড কোয়ালিটি খুবই বাজে। মূল সংলাপের তুলনায় ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের ভলিয়ম বেশি হওয়ায় সংলাপগুলো প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। যেভাবে বাজনার ভিড়ে গান হারিয়ে যায় ব্যাপারটি সেরকমই আরকি!
যারা অ্যাকশন মুভি পছন্দ করেন তাদের কাছে ছবিটি ভালো লাগতে পারে। তবে মোটের ওপর ছবিতে দর্শক ধরে রাখার মতো করে কাহিনিটি তৈরি হয়নি। কালজয়ী সাহিত্যগুলোর নায়ক নায়িকাদের সুখে পাঠক সিক্ত হয়, আহলাদিত হয় আর তাদের দুখে পাঠককুলের হৃদয়েও ক্ষরণ ঘটে। ভালো সিনেমার ক্ষেত্রেও এমনটি হওয়া উচিত। এদিক থেকে বিবেচনা করলে 'দিন : দ্য ডে' মুভির অনেক ঘাটতিই পরিলক্ষিত হবে।



সিলেট নন্দিতা সিনেমা হলের পঞ্চম তলায় যেখানে আসন সংখ্যা ৪৫০-এর অধিক সেখানে উপস্থিত ছিল ১০ থেকে ১২ জনের মতো। অনেক দর্শকই পুরো সময় ভরে ছবটি দেখেনি।

হুমায়ুন আজাদ একবার শামসুর রাহমন সম্পর্কে বলেছিলেন, ''কাকে নিয়ে সজ্জায় যেতে হয় আর কাকে নিয়ে প্রমোদে যেতে হয় শামসুর রাহমানের এ বিষয়ে জ্ঞান খুবই কম।'' দিন : দ্য ডে- মুভিটি দেখে আমারও কেন যেনো মনে হলো যেখানে যে ভয়েসে, যে উচ্চারণে, যে বলিষ্ঠতায় কথা বলতে হয় অনন্ত জলিলের তাতে যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে।

দিন : দ্য ডে মুভিতে অভিনয় করেছেন বাংলাদেশের বহুল আলোচিত সমালোচিত চলচ্চিত্র অভিনেতা অনন্ত জলিল। চলচ্চিত্রটি ইরানের ফারাবি সিনেমা ফাউন্ডেশন ও অনন্ত জলিল যৌথভাবে প্রযোজনা করছেন।




বলা হয়েছে চলচ্চিত্রটি নির্মাণে ১০০ কোটি টাকার বেশি খরচ হয়েছে ।কিন্তু ছবিটির পুঙ্খানুপুঙ্খ ক্যালকুলেনে মনে হয়েছে খরচের অ্যামাউন্টের হিসাবটি সঠিক নয়। বড়োজোর ৮ থেকে ৯ কোটি টাকার মতো খরচ হতে পারে।

ইরান, আফগানিস্তান, তুরস্কের পুলিশসহ স্থানীয়দের সঙ্গে কেন্দ্রীয় চরিত্রের অভিনেতা অভিনেত্রীদের বাংলা কথাবার্তা বাস্তব শিল্পসত্তকে কিছুটা হলেও ক্ষুণ্ণ করেছে। প্রগলভতা মনে হয়েছে।

তবে মুভিতে দেশকে নানাভাবেই রিপ্রেজেন্ট করার চেষ্টা করা হয়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশি পুলিশের বিশেষ বাহিনি সোয়াদ-এর কর্মযজ্ঞকেই বেশি হাইলাইটস করার চেষ্টা করা হয়েছে।

নায়িকা বর্ষা অনন্তের অভিনয় থেকে অনেকটাই এগিয়ে। তবে অসেক সিকুয়েন্সেই তার মুখের এক্সপ্রেশন প্রশ্নবিধ। বিশেষ করে করুণ মুহূর্তগুলোতে।




আসিফ আকবর যখন গান গায়, তখন মনে হয় সে তার ভেতর থেকে গাচ্ছে। সম্পূর্ণ সত্তা দিয়ে গাচ্ছে। কিন্তু এ ছবিতে বর্ষার বিভিন্ন সিকুয়েন্সের বডি ল্যাংগুয়েজে বর্ষাকে কেমন কৃত্রিম কৃত্রিম মনে হয়েছে। মনে হয়েছে দরদের জায়গায় যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে।
এছাড়া কাহিনির ঘনঘটাকেও প্রশ্নবিদ্ধ মনে হয়েছে। ঠিক যেনো জমে ওঠেনি। আবেগের জায়গাটাকে আরও একটু শান দেওয়া যেতে পারত।
তবে অভারল বাংলাদেশের জন্য অনন্ত জলিলের 'দিন : দ্য ডে' মুভিটি নিঃসন্দেহে মাইলফলক। বিগ বাজেট, দেশপ্রেম, বিদেশি সংস্কৃতির সন্নিবেশসহ, আলোক সজ্জা, রূপসজ্জাসহ নানা কারণেই ছবিটি নতুন আলোচনার দাবি রাখে।

সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জুলাই, ২০২২ সকাল ১০:০২
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×