একনিষ্ঠ আওয়ামীলীগ পরিবারের একটি ছেলে অনেকটা হঠাৎ করেই শিবির হয়ে গেলো। তার জীবনের তখন সবকিছু বদলে গেলো। চারিদিকে বাধা। সে বাধা অগ্রাহ্য করে সে শিবিরকে আকড়ে ধরে থাকলো। তারপর যখন পৃথিবী সম্পর্কে আরও বেশী জানলো, তখন চিড় ধরতে থাকলো তার বিশ্বাসের মূলে। সেই কাহিনীই লিখবো আগামী কয়েকটি পোস্টে।
৩. খেলাঘর
ক্লাস এইটে পড়ার সময় স্থানীয় খেলাঘর আয়োজিত একটি রচনা প্রতিযোগিতায় প্রথম বা দ্বিতীয় হয়েছিলাম। প্রাইজ আনতে গিয়ে আস্তে আস্তে খেলাঘরের সাথে পরিচয়। বিকালে গানের আসর বসতো। কখনো শ্রোতা হিসাবে কখনো কোরাসের গায়ক হিসাবে গানের আসরে থাকতাম। সুকান্তের রানার, ভুপেন হাজারিকার 'মানুষ মানুষের জন্য' - গানগুলো সব সময় ঠোটে লেগে থাকতো। আরেকটা খুব প্রিয় গান ছিল, 'ডিম পাড়ে হাসে, খায় বাগডাসে, শুনছো নি ভাই শুনছো নি, বুঝছো নি ভাই বুঝছো নি'। সমাজবাদী মতাদর্শের প্রতি তখন থেকেই ঝুকে পড়ি।
এক বড়ভাই ছিলেন খেলাঘরের পরিচালক। তিনি কলেজে পড়তেন। ছাত্র ইউনিয়নের নেতা ছিলেন। খুব সুন্দর করে কথা বলতেন। ভালো ছবি আকতেন। আমি তার ভক্ত হয়ে গেলাম।
তিনি একটা ছোট পত্রিকা প্রকাশের উদ্যোগ নিলেন। আমাদের লেখা তাতে ছাপা হবে। খুবই উত্তেজনাকর বিষয়। কিন্তু সমস্যা বাধলো ছাটানোর টাকা নিয়ে। আমরা দোকানে দোকানে গিয়ে চাদা তুললাম। নিজেরাও কিছু কিছু দিলাম বাবা-মায়ের কাছ থেকে নিয়ে। টাকাগুলো দেয়া হলো সিনিয়র ভাইটির কাছে। তিনি পত্রিকা প্রকাশের জন্য কাজ করতে থাকলেন।
সম্ভবতঃ একুশে ফেব্রুয়ারীতে ছাপানোর কথা ছিল। দিন যত এগিয়ে আসে, ততো আমাদের উত্তেজনা বাড়তে থাকে। আমরা তার বাসায় গিয়ে প্রতিদিন খোজ নিতাম।
ছাপা হবার কয়েকদির আগে হঠাৎ করে তিনি লাপাত্তা হয়ে গেলেন। ফিরে এসেছিলেন মাস খানেক পর। এসে কি একটা কাহিনী ফেদে বলেছিলেন, তার সবটাকা হারিয়ে গেছে। অনেক সুন্দর করে, গুছিয়ে। আমরা কেউ বিশ্বাস করিনি।
এখনও যখন ইনু, মেননদের দেখি টিভিতে গুছিয়ে সুন্দর করে কথা বলতে, তখন সেই ভাইটির কথা মনে পড়ে যায়।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


