আমরা আজ উত্তর আধুনিকতার যুগে বাস করছি,যে যুগের সিংহভাগই নিয়ন্ত্রণ মিডিয়ার হাতে।এই মিডিয়াই নির্ধারন করে দিচ্ছে আমাদের প্রতিদিনকার প্রতিটি কাজের উপকরণ।আমদের মিডিয়াগুলো ভারতঘেষা বলেই বস্র বিপণি সহ সকল জায়গায় আধিপত্য ভারতীয় পণ্যের।
উত্তর আধুনিকতা অনেকগুলো ধারণার সমষ্টিমাত্র ।অনেকেই ভেবে থাকেন এটা সাহিত্যগত ধারণা।আবার অনেকেই মনে করেন নান্দিকতার অপর পিঠ।
the new confession নামক উপন্যাসে উত্তর আধুনিকতার দিকচক্রবাকহীন দুর্ণীরিক্ষতাকে বলা হয়েছে এভাবে- as i stand waiting for my future,watching the waves roll in ,i feel a strange .light headed elation.After all,this is the age of uncertainty and incompleteness.John James Todd,i said to myself,at last you are in tune with universe।
"এই শান্ত সমুদ্র সৈকতের ধারে দাড়িয়ে ঢেউয়ের দোলা দেখতে দেখতে যখন আমি আমার ভবিষ্যতের অপেক্ষা করছি তখন এক অপরিচিত সুখানুভূতি জেগে উঠেছে।শেষ কথা হলো এ এক অনিশ্চয়তার যুগ।যেখানে দাড়িয়ে আমি নিজেই বলছি,জন জেমসটড ,অবশেষে তুমি এই বিশ্বের সুরের সাথে একাত্ম হতে পেরেছ।"
এ যুগে মিডিয়া সাম্রাজ্যবাদের সাথে জড়িত; কোন না কোন ভাবে এ যুগের চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করছে।আপনার যে স্রী দিনের পর দিন সিরিয়ালে অভ্যস্ত হয়ে খোজ করছে ঐ সিরিয়ালের নায়িকার ব্যবহৃত শাড়ি,কিংবা আপনার মেয়ের পড়নের মাসাকালি স্কার্ট লেহেঙ্গা।কিংবাআপনার ছেলের ফোন সেটে থাকা বাংলা সংস্কৃতির প্রতি উপেক্ষাই নির্দেশ করবে আপনার পরিবারে মিডিয়ার প্রভাব।
শক্তিশালী মিডিয়া এখন কেবল আনন্দের মাধ্যম নয়,এটি আমাদের উপদেশদাতা,শিক্ষক এমনকি আমাদের দেশের মত উন্নয়নশীল দেশগুলোর সাংস্কৃতিক অপরিপক্ক মানুষগুলোর সংস্কৃতির দিক পরিবর্তনের পশ্চিমা হাতিয়ার।
আমদের নূর সাহেবদের মত সাংস্কৃতিক পরিপক্ক লোকগুলোও যখন অন্য দেশের অনুষ্ঠানগুলো অবলীলায় চালিয়ে দিচ্ছেন অবলিলায় ,তখন বাঙালী সংস্কৃতির মৌলিকত্ব নয় কেবল, টিকে থাকাটাই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে।
টেলিভিশনের একটি ছবি কখনো কখনো এমন করেই ধংস করে দেয় আমাদের মূল্যবোধ,যা বোমারু বিমান দিয়েও সম্ভব নয়।
ফানা,ম্যয় হু না,সোর্ড অব ইসলাম,মাই নেম ইস খান এই জাতীয় ছবিগুলো কেবল মুসলিম মূল্যবোধকে প্রশ্নবিদ্ধই করেনি,নতুন চেতনার ইসলামের জন্মও দিয়েছে।
পশ্চিমা দুনিয়া মিডিয়ার মাধ্যমে উপসাগরীয় যুদ্ধে সাদ্দাম হোসেনকে এমনভাবে উপস্থাপন করেছে যে সাদ্দাম হোসেন হিটলারকেও ছাড়িয়ে গেছে,লিবিয়ার ক্ষেত্রেও একই কৌশল।
অপরদিকে সালমান রুশদি কিংবা তাহমিনা আনামকে মিডিয়া দাড় করিয়েছে প্রাচ্যের অতিচিন্তার সার্থক মুসলিম রূপকার হিসেবে।আপনি যদি এদের বই পড়ে থাকেন দেখবেন এদের সাহিত্যে পশ্চিমা তোষন এক বিশেষ স্থান জুড়ে আছে।
চলচ্চিত্রের প্রভাব আগেই কিচুটা বলেছি।চলচ্চিত্র নিজেই একটি মিডিয়া,বিশেষ করে যখন এটি প্রভাব বিস্তারকারী সভ্যতার চরিত্র বৈশিষ্ট্য ফুটিয়ে তোলে এবং তার প্রভাব থেকে কম প্রভাব বিস্তারকারী সভ্যতাগুলো নিজেদেরকে আর রক্ষা করতে পারে না।
হলিউডের কথা ধরা যাক ।গত ক্যেক বছর ধরে হলিউড আমারিকার সভ্যতা ও সংস্কৃতির মুখপাত্র হয়ে কাজ করছে ঠিক কিন্তু এর প্রভাব থেকে আমরা রক্ষা করতে পেরেছি কি?
বিশ্বের অসংখ্য নরনারীর চিন্তা চেতনাকে নাড়া দিয়ে চলেছে আর একইভাবে হলিউডের এক একজন নায়কনায়িকা হয়ে উঠছে বিশ্বের নায়ক নায়িকা।এর শিকার বহুলভাবে মুসলিমরা হলেও প্রাচ্য পাশ্চাত্য ,মুসলিম-অমুসলিম কেউই উপেক্ষা করতে পারছিনা।
আমাদের জন্য আরো উদ্বেগজনক খবর হলো আমাদের পাশের দেশ এদের আরো সহজবোধ্য করে গড়ে তুলেছে তাদের সাংস্কৃতিক পরিমন্ডল।
খুব ধীরে হলেও গড়ে উঠছে ম্যাকলুহানের গ্লোবাল ভিলেজ।
আর কত নিজেদের সংস্কৃতির প্রতি বিমুখ থাকব ?এবার সময় জেগে উঠার, বদলে দেবার।
খেয়াল করেছেন নতুন জন্ম নেয়া সংস্কৃতির অপুষ্ট শিশুর যেখনে আপনার ছেলেটি চুলগুলো স্পাইক করে পাগলু শার্ট গায়ে জড়িয়ে আপনার পাশের বন্ধুটির মাসাকালি লেহেঙ্গা কিংবা মিনি স্কার্ট পরা মেয়েটিকে টিজ করছে রাস্তার মোড়ে দাড়িয়ে।এর দায়ভার আমাদের ভবিষ্যত প্রঝন্মের কাছে কি রেখ যাচ্ছি আমরা????/
এই বিজয়ের মাসে আসুন জেগে উঠি আরেকটিবার।