somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আসমার ওসমান এবং 'এই বাড়িটি ভালো না'

২০ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ২:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তেল আভিভ শহরের জন্ম ১৯০৯ সালে। তেল আভিভ ইসরায়েলের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। ১৯০৯ সালে যখন এই শহরের গোড়াপত্তন হয় তখনও কেউ জানতো না মাসুদ রানা নামের একজন ভয়ংকর এজেন্টের জন্ম হবে তারও অনেকবছর পর বাংলাদেশ নামের একটি ছোট্ট দেশে এবং তেল আভিভের গোড়াপত্তনের ৯০ বছর পর মাসুদ রানা এই শহরে এসে উপস্থিত হবে অবকাশ যাপনের জন্য।

১৯৯৯ সালের অগাস্ট মাস। তেল আভিভ শহরের প্রান্তছোয়া সমুদ্রসৈকত। মাসুদ রানা যদিও এসেছে অবকাশ যাপনে কিন্তু এখানকার রানা এজেন্সি থেকে ওকে কোন হোটেলে থাকতে দেয়নি রানার নিরাপত্তার কথা ভেবেই। রানার সাথে মোসাদের সম্পর্ক ভাল নয়। প্যালেস্টাইন এবং আরব দেশগুলোর পক্ষ নিয়ে রানা বেশ ক’বার লড়েছে মোসাদের বিপক্ষে এবং বলাবাহুল্য যে প্রতিবারই রানা এজেন্সির কাছে নাস্তানাবুদ হতে হয়েছে মোসাদকে। তাই এবার যখন রানা এজেন্সির তেল আভিভ চীফ ফিদা হুসাইন রানাকে খুব করে ধরলো তাদের Shalom Meir Tower এর অফিসের ছদ্মবেশে নেয়া রানা এজেন্সির সেইফ হাউজে উঠতে, রানা আর মানা করতে পারেনি। তাছাড়া বহুদিন পর সোহানার সাথে এক হয়েছে রানা, এ অবস্থায় তার মনও সায় দিচ্ছিল না কোন উটকো ঝামেলা নিতে।

আজকে খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠেছে রানা - এমনটা বললে ভুল হবে। সোহানা গতকাল গভীর রাতের ফ্লাইটে তেল আভিভে এসে পৌঁছেছে সিউল থেকে। তারপর লেট সাপার করে হট শাওয়ারে যাবার পর থেকে আর দু’জন আলাদা হয়নি। বলা যায় ভোরের দিকে দরজায় ‘do not disturb’ ঝুলিয়ে ঘুমুতে গেছে দু’জন। এই কিছুক্ষণ আগে ঘুম থেকে উঠেছে। রানা হাত-মুখ ধুয়ে বীচে চলে এসেছে, সোহানা অন্য সময় খুব তাড়াতাড়ি তৈরি হতে পারলেও আজ রানার কাছ থেকে সময় চেয়ে নিয়েছে খানিকক্ষণ, শাড়ি পড়বে বলে।

রানা অন্যমনস্কভাবে চারপাশের উঁচু ভবনগুলো খেয়াল করে নিল। সতর্কতার কোন বিকল্প নেই তাদের এই এস্পিওনাজ জগতে, একমুহুর্তের অসতর্কতায় জীবন খোয়াতে হতে পারে, খুব ভাল করেই জানে রানা। তেল আভিভ বীচটা আজ খুব শান্ত। তাপমাত্রা সহনীয়, ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মতো হতে পারে, যা স্বাভাবিকের চাইতে খানিকটা কমই বলা চলে। বাতাস বইছে সমুদ্রতীরবর্তী শহরটাতে, কিছু ধনী ইহুদী ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে তাদের বেঁধে রাখা ইয়টে অলস শুয়ে আর কিছু শিশু-কিশোর বালির মধ্যে দৌড়া-দৌড়ি করে আনন্দে মত্ত। রানার হঠাৎ করেই মন খারাপ হয়ে যায়। প্যালেস্টাইনি মুসলমানদের জায়গা দখল করা ইহুদী ইসরায়েলিরা আজ বেশুমার আয়েশিতে জীবন কাটাচ্ছে অন্যদিকে দরিদ্র প্যালেস্টাইনিদের পানির সরবরাহও বন্ধ করে দেয় জালিম ইসরাইলি বাহিনী যখন-তখন। ভাবতে ভাবতে চোয়াল শক্ত হয়ে যায় মাসুদ রানার। এবারের অভিযানটা সফল হলে স্বাধীন প্যালেস্টাইন রাষ্ট্র গঠন সহজ হয়ে যাবে অনেকাংশেই এবং এর জন্য আরব বিশ্ব যে ওরদিকেই তাকিয়ে আছে তাও বেশ বুঝতে পারে রানা।

নানাকথা ভাবতে ভাবতে দেখতে পায় সোহানা এগিয়ে আসছে তার দিকে হাসতে হাসতে। কালো জর্জেটের একটা শাড়ি পড়েছে সোহানা, সোনালী ঢেউ খেলানো চুল কাধের ওপরদিয়ে এলিয়ে দিয়ে এগিয়ে আসছে রানার দিকে। রানা যতবারই সোহানাকে দেখে এখনও তার হার্ট-বিট মিস করে। মনে পড়ে যায় প্রথম চুম্বনের দিনটার কথা। কোন এক ১৪ ফেব্রুয়ারী, এখন যে জায়গাটায় বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার প্লট বিক্রি চলছে, সেখানেই একটা এসাইনমেন্টের পর রানা আর সোহানা দাড়িয়ে ছিল চুপচাপ। সেদিন পূর্ণিমা, রানার স্পষ্ট মনে আছে কোন এক অদ্ভুত কারণে সেদিনও সোহানা কালো একটা শাড়ি পড়ে ছিল যদিও সাধারণত এজেন্টরা মিশনে যাবার সময় শাড়ি পড়েনা। রানা আকাশ জোড়া চাঁদের আলোয় পরিষ্কার দেখেছিল সোহানার বা-কাধের তিলটাকে আর সেদিনই বুঝি বুঝে গিয়েছিল আর কোনদিনও কারও প্রেমে পড়া হবেনা তার।

সোহানাকে এগিয়ে আসতে দেখে রানার ইচ্ছা করে আবার ঘরে ফিরে যায়, কিন্তু কিচ্ছু করবার নাই, তার প্রিয় বন্ধু এবং রানা এজেন্সির সি।ই।ও সোহেলও এই মুহুর্তে তেল আভিভে এবং জরুরী দরকারে রানা আর সোহানার সাথে দেখা করতে চায়। তাই প্রিয় বন্ধুকে আর মানা করেনি রানা, বলে দিয়েছে দুপুরের লাঞ্চটা তারা করবে একসাথে Catit এ। Catit শহরের ঠিক বাইরে একটা রেস্টুরেন্ট, অভিজাত এবং স্ট্র্যাটেজিকালি নিরাপদ; রানা আগেও খেয়েছে ওখানে কয়েকবার, তাই সোহেল যখন প্রস্তাব করল তখন আর মানা করতে পারেনি।

সোহানা যখন তার কালো জর্জেট শাড়ি পড়ে এগিয়ে যাচ্ছিল মাসুদ রানার দিকে, ঠিক তখনই ১৯৯৯ সালের একই দিনে অগাস্ট মাসের কোন এক সন্ধ্যায় শামীম আহমেদ নামে এক যুবক মাসুদ রানার একটা বই পড়া শেষ করে ঘর থেকে বের হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনে পৌঁছে। আজ ‘ডি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার রেজাল্ট দিতে পারে বলে জোর গুজব। নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছেনা। শামীম যখন কলাভবনে পৌঁছে তখন সন্ধ্যা হয় হয়, চারদিকে অন্ধকার নেমে আসছে। ফলাফল প্রত্যাশী কিছু শিক্ষার্থীরা ছাড়া তেমন কেউ নেই। শামীম যখন দেয়ালে সাটানো ময়লা ছেঁড়া কাগজে ফলাফল খোঁজার ব্যর্থ চেষ্টা করছে ঠিক তখনই আরেকটা ছেলে কলাভবনের একতলার বারান্দায় বসে পা নাচাতে নাচাতে তাকে গভীর মনোযোগ দিয়ে দেখতে থাকে।

দেয়ালে বসে পা নাচাতে থাকা সেই ছেলেটি এবং শামীম আহমেদ পরে একসাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে ভর্তি হয়। তখনও তারা জানতোনা, ১৫ বছর পর একুশে বইমেলায় তাদের দু’জনেরই দু’টি বই প্রকাশিত হবে। শামীম আহমেদের প্রথম কাব্যগ্রন্থ এবং আসমার ওসমানের ১৯ তম গ্রন্থ। আসমার ওসমানের ডাক নাম রুপেন। ১৯৯৯ সালে না হলেও তার কয়েক বছরের মধ্যে শামীম জেনে যায় বছর বিশেকের মধ্যে আসমার ওসমান হবে বাংলা সাহিত্যের সবচেয়ে শক্তিশালী লেখক। এই বইমেলায় রুপেনের একটা বই বের হয়েছে, নাম ‘এই বাড়িটা ভালো না’ এবং মাত্র কিছুক্ষণ আগে বইটি পড়ে শেষ করলাম।

রুপেনের অনেক বইয়ের মধ্যে আমার সবচেয়ে প্রিয় বই ‘আমাদের এই বিষণ্ন নগরী’। এই বইটি এত সহজ সরল করে লেখা এবং এত সহজেই মন ছুঁয়ে যায় যে কি বলব। এই বইটি পড়ে আমি একটি কবিতা লিখি,

“আমাদের এই বিষন্ন নগরীতে
অনড়, অথর্ব বৃদ্ধের মতো
আরেকটি দিন আসে।
কী এক ভীষণ অস্থিরতায়,
আকাশে মেঘ ডাকে!

নিকষ কালো মেঘে
অদ্ভুত গভীরতায়; অসীম শূণ্যতায়...
আষ্ঠে-পৃষ্ঠে জড়িয়ে আমায়,
তুমি বলো,
‘কিছু লাগবেনা, ভালো থেকো
তোমার বৃত্তকে সাথে নিয়ে...
কি ভীষণ নির্দয় তুমি?
শুধু দাও, চাই
আর কিছু নাই?
বড় স্বার্থপর তুমি...
শুধু নিয়েই যাবে?
কিছু দিতে ইচ্ছে করে? কখনো?
কোন অবেলায়?’

আমি বিব্রত, ম্লান হাসি
কিছু বলি, না বলার মতন করে,
আমার ঠোঁট কেঁপে ওঠে, যতটা কাঁপলে
তোমার চোখের পাতায়
ভাঙ্গনের গান বাজে
ভালোবাসা দুমড়ে-মুচড়ে ওঠে!
আমি কিছু বলিনা! ভয় হয়,
তুমিই বলো আবার।
‘গুনেছো কতটা নির্ঘুম রাত কাটে আমার,
তোমায় ভেবে?
অলস দুপুরে, যখন চিলের ডানায়
ভর করে মৃত্যু মিছিল!
তখনো আমার গ্রীবায় খেলা করে
তোমার তৃষ্ণার্থ ওষ্ঠখানি!
তবু বন্ধুই হবে আমার?
আমার ঘর্মাক্ত হাতে ভিজে
তোমার প্রেমের অজানা কাব্যরাশি
হারিয়ে যায় যদি
দিগন্তে, অন্ধকারে?
আমি ঘৃণা করি, তোমাকে
তোমার পরাবাস্তব ভালোবাসার ধুম্রজালে
আটকে থাকা আমার ওই
নগ্ন আঁচলটাকে!’

আমি আস্তে করে বলি
ভালোবাসি! যতটা ভালোবাসলে
ঘৃণাকেও প্রেম বলে ভুল হয়।
বন্ধুত্বে প্রগাঢ় চুম্বন হয়...
জিভে জিভে ঘর্ষণে মেঘ হয়
আর সেই মেঘে ওঁত পেতে থাকে
পাঁচটি অবাক নীল পদ্ম!

আমাদের এই বিষন্ন নগরীতে
আরেকটি গভীর রাত হয়
মৃত্যু হয়,
প্রেম হয়,
চুম্বন হয়...”

এবারের বইমেলায় রুপেনের আরেকটা বই এসেছে যেমনটি বলছিলাম “এই বাড়িটি ভালো না”। বইটি নিঃসন্দেহে চমকপ্রদ, বইটির ভূমিকায় বলা হয়েছে বইটিতে ভূত নেই, ভয় আছে, আছে অনেক শিহরণ – তেমনটি পাইনি। তবে আসমার ওসমানের স্বকীয়তা এবং লেখনী যা আমাকে এখনও বিশ্বাস করায় ওই হবে আগামী দশকের সেরা বাঙালী লেখক, সেই একই কারণে আপনাদের বলি এখুনি বইটি সংগ্রহ করে পড়ুন।

http://rokomari.com/book/76506

[১৯৯৯ সালের অগাস্ট মাসের ওই দিনও পূর্ণিমা ছিল। ভরা পূর্ণিমায় মধ্যরাতে দু’জন নগ্ন নর-নারীকে কেউ কেউ দেখে তেল আভিভের বীচে জল-কেলি করতে। তাদের কেউ কেউ আগ্রহ নিয়ে দেখে, কেউ কেউ দীর্ঘশ্বাস ফেলে। রুপেন আর শামীম ওদিকে তখনও বাংলাদেশে বসে তাদের ‘ডি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল জানতে পারেনি!]
৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×