পালংশাক কম ক্যালরি ও অধিক ভিটামিনযুক্ত একটি গাঢ়সবুজ শাক|
পুষ্টিবিদেরা সবসময় বলেন যে, আমাদের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় অবশ্যই একবেলা হলেও গাঢ়সবুজ শাক বা পাতা জাতীয় খাবার থাকতেই হবে| কারণ, এই ধরনের দরকারী শাকে থাকে অনেক প্রয়োজনীয় পুষ্টি, antioxidants এবং anti-cancer উপাদান|
পালংশাক এই ধরনের দরকারী গাঢ়সবুজ শাক, যাতে আছে প্রচুর ভিটামিন ও মিনারেল| পালং শাকের ভিটামিনে আছে folate, niacin, vitamin A, B6, C, Niacin, Thiamin, Riboflavin, , bioflavonoids, vitamin K, E (Alpha Tocopherol)| এতে মিনারেলস আছে–potassium, manganese, zinc, copper, magnesium, iron, calcium, phosphorus, , sodium, ও iodine.
এতে অধিক মাত্রায় omega-3 fatty acidsও আছে, যা হার্ট, ত্বক, ব্রেইন ইত্যাদির জন্য খুবই ভালো| এতে আমিষও আছে| আর আছে অনেক দরকারী amino acids|
এছাড়াও এর রোগ প্রতিরোধী antioxidant ও phytochemicals এর তালিকায় আছে – carotenoids/ beta-carotene, lutein, lipoic acid, xanthenes |
কাঁচা পালংশাকে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি ও ক্লোরফিল থাকে, যা শক্তিশালী antioxidant ও ক্যান্সার প্রতিরোধ করে|
এতে ফ্যাট/ স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও Cholesterol নেই, আর আছে প্রচুর ফাইবার|
পালংশাক আমাদের শরীরের জন্য কেন ভালো?
এটি চোখের দৃষ্টি শক্তি বাড়ায়, চোখের নানা রকম রোগ সারাতে সাহায্য করে|
ব্লাড প্রেসার কমায়/ নিয়ন্ত্রণে রাখে, শরীরের রক্ত চলাচল ঠিক রাখে, হাইপার টেনশন কমায় , ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে ও প্রতিরোধ করে
মাসেলের শক্তি বৃদ্ধি করে, বিশেষ করে হার্টের মাসেলের, এতে হার্টের বিভিন্ন অসুখ হতে রক্ষা পাওয়া যায়
এর antioxidant এর কারণে চোখের ছানি পড়ে না ও বয়সের কারণে দৃষ্টি শক্তি কমা হতে রক্ষা করে
এর আমিষ–ফ্যাট ও Cholesterol দূর করে, ফলে হার্ট এটাকের, স্ট্রোকের ঝুকি কম হয় | এর পটাশিয়াম হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে|
এটি নিয়মিত খেলে আলঝেইমার রোগ হয় না, কারণ এটি শরীরের নার্ভ ঠিক রাখে | বয়সের কারণে স্মৃতিশক্তি কমা হতে রক্ষা করে ও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে| তাছাড়া হেলদি নার্ভাস সিস্টেম ও হেলদি ব্রেইনও পাওয়া যায় নিয়মিত পালংশাক খেলে|
এতে অনেক ক্যালসিয়াম থাকায় এটি হাঁড় শক্ত রাখতে ও হাঁড়ের ঘনত্ব বাড়াতে সাহায্য করে, ফলে হাঁড়ের বিভিন্ন রোগ, যেমন: Osteoporosis, Arthritis ইত্যাদি হয় না
এর ভিটামিন এ ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে ও বলি রেখা পড়তে দেয় না
তাছাড়া এতে প্রচুর ভিটামিন এ থাকায় এটি ইনফেকশন সারাতে ও প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে
গ্যাস্টিক ও আলসার হতে বাঁধা দেয়
এতে প্রচুর আয়রন থাকায় এটি রক্ত বৃদ্ধি করে, লাল লোহিতকনিকা বৃদ্ধি করে, রক্তে অক্সিজেন বাড়ায় ও রক্তশূন্যতা দূর করে
এতে প্রচুর ভিটামিন সি থাকায় ভিটামিন সির অভাব জনিত রোগ দূর করে
বিভিন্ন রকমের ক্যান্সার, যেমন: bladder, prostate, liver ,colon, stomach, skin, breast, ovarian এবং lung cancer প্রতিরোধ করে ও ক্যান্সারের কোষ ধ্বংশ করে ও ক্যান্সারের কোষ সৃষ্টি হতে বাধা দেয়|
এটি শরীরের রোগ প্রতরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, শরীরের সব অঙ্গ ও প্রক্রিয়া, যেমন: শ্বাস, হজম, ইত্যাদি প্রক্রিয়া ঠিক রাখে
ক্ষতিকর সুর্য রশ্মি, যেমন ইউভি রশ্মি হতে ত্বককে রক্ষা করে, ফলে ত্বকের ক্যান্সার হয় না
এতে protein, vitamins, minerals ও phytonutrients থাকায় শিশুদের বেড়ে ওঠায় অনেক ভূমিকা রাখে
Insomnia বা ঘুমের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে
শরীরের যে কোনো জায়গায় tumor হয় না, বা সারাতে সাহায্য করে
এর ফাইবার বা আঁশ সারাদিনের ২০% ফাইবারের চাহিদা পূরণ করে, এই ফাইবার বা আঁশ, হজমে সাহায্য করে ও ফ্যাট দূর করে ওজন কমাতে ও নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, শরীরের ক্ষুধা নিবারণ করে, ক্ষুধা কম লাগে, ফলে ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, হজম শক্তি বৃদ্ধি করে, ও হজম প্রক্রিয়া সচল রাখে|
এর মিনারেলস খুবই ক্ষারীয়, যা শরীরের pH এর সমতা বজায় রাখতে সাহায্য করে|
এটি হতে পারে মাংশের বিকল্প আমিষ|কারণ, সমপরিমান পালংশাক থেকে মাংসের মতই একই পরিমানে আমিষ পাওয়া যায়
গর্ভবতী মহিলারা এটি খেলে গর্ভকালীন নানান রকম সমস্যা হতেও রক্ষা পাওয়া যায়
শরীর সুস্থ্য রাখতে, ওজন কমাতে ও নিয়ন্ত্রণে রাখতে তাই পালংশাকের জুড়ি নেই | তাই একে বলা হয় “ nutritional powerhouse”| তাই, বুঝতেই পারছেন, আমাদের শরীরের জন্য পালংশাকের অনেক উপকারিতা আছে|এর প্রচুর ও নানান রকম ভিটামিন, মিনারেলস, ইত্যাদির জন্য এটি একটি হেলদি খাবার হিসাবে আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় সবার উপরে রাখা উচিত|
তাই নিয়মিত পালংশাক ও অন্যান্য সবুজ শাকপাতা খেতে হবে|