somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্ষনের পার্ফেক্ট ঝড়

১০ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৩:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সেদিন রেডিও তে Peggy Orenstein
নামের এক মহিলার সাক্ষাতকার শুনতেছিলাম।ভদ্রমহিলার দুইটা বই বেশ আলোচিত। বই দুই টা আলাদা আলাদা করে টিনএজ ছেলে এবং মেয়েদের সেক্সুয়ালিটি এবং সেটার সাইকোলজিকাল ইম্প্যাক্ট নিয়ে বেশ গভীরে গিয়ে আলাপ করে। প্রায় ১০০ জন ছেলে এবং মেয়েদের ইন্টারভিউ নিয়ে উনার একটা জিনিস মনে হইছে। মেয়েদের নিজেদের শরীর নিয়ে বাস্তবিক জ্ঞান দেওয়া হয় না সমাজ থেকে বিভিন্ন ট্যাবুর কারনে এবং সেটা তাদের মনস্তাত্বিক রিয়াল স্টেট দখল করে নিছে এবং একটা ডিস্ট্যান্স তৈরি হইছে।এরফলে এত এত মেকাপ কোম্পানি,ব্রেস্ট এনলার্জমেন্ট,পুশাপ ব্রা ইত্যাদি পন্য বাজার দখল করে নিয়ে বসছে। এরপর আবার পুরুষ দের ব্যাপার হইল সমাজের ট্যাবুর কারনে পুরুষের ফিলিংস থাকা হয়ে গেছে একটা ভুল কন্সেপ্ট।পুরুষদের একটা আরোপিত আবরন গায়ে জড়িয়ে থাকা লাগে। ঘরে মা-বোন থাকা স্বত্তেও সমাজের কাছে কুল সাজার জন্য পুরুষেরা মেয়েদের পন্য হিসেবে আলোচনা করতে পছন্দ করে অথবা স্রেফ যৌন অংগের কালেকশন হিসেবে চিন্তা করতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করে এবং শুধু খাবে আর লাগাবে। একজনের ফেসবুকের কমেন্ট অনুযায়ী পেস্ট্রির মতন। মন-মানসিকতা এবং ইমোশনের সাথে শরীরি অনুভূতির দূরত্ব টা মারাত্মক। এগুলা শুধুই আমাদের দেশে আছে তা ভুল। আমাদের দেশে আইনের হাত আইনের কাজ না করে শুধু মাস্টারবেশনে এবং হ্যান্ডজবে ব্যস্ত দেখে আমাদের মনে হয় আমাদের দেশেই বেশি।

কোন একটা ঝড় বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ কোন একটা মাত্র কারনে হয় না। অনেক কারন একসাথে হয়ে তারপর হয়। এই ধর্ষনের ঝড় ও একই কারনে হচ্ছে। অসংখ্য জিনিস মিলে তারপর হয়। আমাদের সোসাইটি(যে দেশেই যাই না কেন) এবং নিউ ওয়েভ অফ ফেমিনিজম আর আল্ট্রা কনজার্ভেটিভ বিলিফ,পর্ন মিলিয়ে এই ধর্ষনের ঝড়। মেয়েরা ফেমিনিজমের ধাক্কায় এখন ফ্রিডম পায় সত্য কথা কিন্তু তাদের প্রথম পুরুষ রোল মডেল তাদের বাবা সেই পুরনো রয়ে যায়। আর এই মেয়েরা চায় সেই পুরনো ছেলেটা যে কিনা গম্ভীর ভাবে নিজের দুঃখ কষ্ট রাগ চেপে রেখে টেবিলে ভাত/পোলাও/মাছ/মাংস এর ব্যবস্থা করবে। কিন্তু ফেমিনিজম অপভ্রংশে বিশ্বাসী মেয়েরা আবার এটাও চাবে যাতে পুরুষ ঘরের কাজটাও করে দিবে যাতে মেয়ে স্বপ্নের পিছনে ছুটতে পারে ফ্রি থাকতে পারে,চিল করতে পারে। পুরুষের কাছ থেকে যে আংশিক অনুভূতিহীনতা আবার ভালোবাসা এর যে এক্সপেক্টেশন টা এটা সব পুরুষের পক্ষে মেটানো সম্ভব না। তাই পুরুষ রা ডিপ্রেসনে পরে,সুইসাইড করে,জেলে যায়।এবার ধর্ষনে আসি। অল্প বয়স থেকে যখন অনুভূতিহীন করে আমরা পুরুষ দের গড়ে তুলি। সেই সাথে আল্ট্রা স্ট্রং কনজার্ভেটিভ বিলিফ দিয়ে আমরা বুঝাই মেয়েরা নরম ভোগ্য বস্তু। আর যেহেতু ফিলিংস জিনিস টা জলাঞ্জলি দিয়ে দিয়েছি তাতে আর কোন কিছুই ভুল মনে হয় না। শেষ কবে,কষ্ট পেয়ে কান্না করছি পুরুষেরা,কিংবা নিজের ফ্রাস্ট্রেশন কিংবা মানসিক সমস্যার কথা কোন মেয়ে/পার্টনারকে কিংবা আমাদের কষ্ট গুলো শেয়ার করতে পেরেছি সত্যিকার কন্সট্রাকটিভ ওয়েতে এবং প্রপার সাপোর্ট পেয়েছি? হয় শুনেছি "মেয়েদের মতন কথা বল কেন?""কাদে তো মেয়েরা" "এইগুলো নিয়ে অভিযোগ করিও না খুব আনইম্প্রেসিভ লাগে"
যদি উত্তর না হয় তবে বুঝতে হবে যে আমরা আমাদের অনুভূতি গুলো খোলসে অলরেডি ঢুকিয়ে ফেলেছি।অন্ধকার এ আছি এখন এবং এই অন্ধকার আরো গাড় হবে। এদের ভিতর অনেকে অনেক রকমের অন্ধকার পথে যাবে কিন্তু পরিবার টিকিয়ে রাখবে হাসিমুখে কেউ কেউ ডিভোর্সড/ব্রেকাপ দিবে,হবে। এরা মাদকাসক্ত হবে,এরা ক্রিমিনাল হবে,এরা পেডোফাইল হবে,এরা পরকীয়া করবে,স্ত্রী-কন্যা কে পাশের ঘরে রেখে পর্ন দেখবে। যতদিন পুরুষ ও নারীর সোশ্যাল এক্সপেক্টেশন এর রিয়ালিস্টিক অপটিমাইজেশন না হবে কোন কিছুর সমাধান হবেনা।এর মানে বসে বসে কান্নাকাটি করা লাগবে ছেলেদের সেটা ভুল।কিন্তু ছেলে হলেই কিছু বলতে পারবেনা সেটাও ভুল।আবার মেয়ে হলেই দমিত রাখা লাগবে সেটাও ভুল।
একটা ছোট অংশ থাকবে যারা আল্লাহ,খোদায় অতি মাত্রায় বিশ্বাসী হবে,কবি,সাহিত্যিক,মিউজিশিয়ান হবে অর্থাৎ অন্যভাবে ফিলিংস এর আউটপুট দিবে এবং কেউ কেউ জেনুইনলি সৌভাগ্যবান যারা এই ভাবে ভালো থাকবে।
এই খানে সাইকোপ্যাথ দের হিসাবে না এনেই কথা গুলো বললাম। আমি হয়তোবা সম্পূর্ন ভুল কিন্তু মনে রাখবেন, নেলসন ম্যান্ডেলা আর ডেসমন্ড তুতু একটা জিনিস বুঝছিলেন। রেসিজমের জন্য মানুষ যতখানি দায়ী তার চেয়ে বেশি দায়ী মানুষ কে রেসিস্ট হতে দেওয়ার আর্থসামাজিক ও আইনগত ব্যবস্থাটা আরো বেশি দায়ী।যার ফলে দক্ষিন আফ্রিকাতে কোন সাজা হয় নি,শুধুমাত্র পাবলিক হিয়ারিং এ কনফেশন করতে বলা হইছিল।এই ধর্ষন রোগ আমাদের এভাবেই উতপাটন করতে হবে।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ১১:১৪
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

প্রতি মাসে সামু-ব্লগে ভিজিটর কত? মার্চ ২০২৪ Update

লিখেছেন জে.এস. সাব্বির, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৮

মার্চ ২০২৪ সালে আমাদের প্রিয় সামু ব্লগে ভিজিটর সংখ্যা কত ছিল? জানতে হলে চোখ রাখুন-

গত ৬ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভিউ ছিল জানুয়ারি মাসে। ওই মাসে সর্বমোট ভিজিট ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রোএক্টিভিটি এবং কম্পাউন্ড ইফেক্ট: আমার গুরুত্বপূর্ণ দুইটি শিক্ষা

লিখেছেন মাহদী হাসান শিহাব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১১



আমার গুরুত্বপূর্ন দুইটা লার্নিং শেয়ার করি। এই দুইটা টুল মাথায় রাখলে দৈনন্দিন কাজ করা অনেক সহজ হয়। টুল দুইটা কাজ করতে ও কাজ শেষ করতে ম্যাজিক হিসাবে কাজ করে।

এক.

স্টিফেন কোভের... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রসঙ্গ রূপান্তরঃ ট্রান্সজেন্ডার, সমকামিতা এবং যৌনতা বিষয়ক কিছু আবশ্যিক আলাপ

লিখেছেন সায়েমার ব্লগ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৩

প্রসঙ্গ রূপান্তরঃ
ট্রান্সজেন্ডার, সমকামিতা এবং যৌনতা বিষয়ক কিছু আবশ্যিক আলাপ

১।
যৌন প্রাকৃতিক, জেন্ডার নয়।জেন্ডার মানুষের সৃষ্টি (social, cultural construction)। যৌনকে বিভিন্ন সমাজ বিভিন্ন সময়ে যেভাবে ডিল করে, তাঁকে ঘিরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্মৃতির ঝলক: প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অনুভূতি এবং মনের শান্তির খোঁজে

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০১



সরল প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সংমিশ্রণে একটি ঘূর্ণায়মান পথ জুড়ে ঘুরে বেড়ানোর অবস্থানে আমি খুব শান্তি অনুভব করি। নদীর জল ছুঁয়ে পথ ধরে হাঁটতে হাঁটতে নৈসর্গিক সৌন্দর্যের সঙ্গে এক আন্তরিক সংযোগ অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×