না, লিখতে একবারে মনে চাইছিল না। চাইবে কেন, এমন লেখা পুরুষ ব্লগাররাও পছন্দ করে না। মেয়েরা তো নয়-ই। অপছন্দতো অপছন্দ। নাগালে পেলে আপুরা যেন চর, থাপ্পর, কিল, ঘুষি মারে। দৌড় দিলে ইট-পাটকেল। কথা-বার্তায় আঁচ করি। সুযোগ হয়নি পাওয়ার এখনো। তবু লিখব, লিখবোই। কপালে যা আছে, আছে।
যদি নারী নির্যাতনের কাহিনী লিখি, নারীদের কাছে তা পজেটিভ।
নারী নির্যাতনের কাহিনী এখন এতোটা পজেটিভ, সবাই চিল্লায় নারী মরল, নারী শেষ হয়ে গেল বলে। যে যত বেশী চিল্লাতে পারবে এ নিয়ে, সে ততো সুশীল, তত প্রগতিবাদী।
আর যদি পুরুষ নির্যাতনের কাহিনী লিখি, তা পুরুষদের কাছেই পজিটিভ নয়। কি অদ্ভুত পার্থক্য দুটো প্রাণীর! আবার তারা এক সাথে থাকতে চায়। থাকে। ঘুমায়। খায়। কিভাবে যে থাকে ভাবি, ভাবতে থাকি। কুল-কিনারা পাই না।
মেয়েরা স্বভাবগতভাবে দু:খ বিলাসী। তারা সর্বদা, বঞ্চিত হচ্ছি, নির্যাতন সহ্য করছি, কষ্টে আছি জাতীয় কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করে। সুখে থাকলেও বলে নরকে আছি। আমার মত দু:খী জীবন আর কার আছে? সংসারে খাওয়া-পরার সুখ আছে তো স্বামীর আদর নেই বলে নালিশ। খাওয়ার পরার সুখ আছে, স্বামীর আদর ভালোবাসা আছে, তো স্বাধীনতা নেই বলে নালিশ। এগুলোর যখন সবই আছে তখন অমুকের মত আমাদের নেই, বলে নালিশ।
এর বিপরীত অবল পুরুষ, আসলে সব পুরুষই। তারা কষ্টে থাকলেও চেপে রাখে। প্রকাশ করে সুখে আছি, ভাল আছি। নিজের কষ্টের কথা বলা মানে নিজের অযোগ্যতা আর ব্যর্থতা প্রচার। কোন পুরুষ কি চায় এ হতে? তাহলে পুরুষত্ব যে ঠান্ডা হয়ে যায়।
যে কাহিনী তিনটি এখানে তুলে ধরছি, কোন কল্প-কাহিনী নয়। কোনোটা নিজের দেথা। অনেকগুলো নিজের কানে শোনা।
পুরুষ নির্যাতন কাহিনী – ১.
কয়েকদিন আগের ঘটনা, আনুমানিক দু মাস। কবীর গাজী তিন বছর আগে বিয়ে করেছে। বর্তমানে তাদের দু বছর বয়সী একটি ছেলে আছে। চাকুরী করে বাহরাইনে। টাকা-পয়সা আগে বাপের নামে পাঠাতো। বিয়ে করার পর স্ত্রীর কাছে মুরীদ হয়েছে। ব্যংক থেকে বাপের নমিনি বাদ দিয়ে নমিনি করেছে স্ত্রীকে। বিয়ে করার পর বাপের সংসারে আর টাকা পাঠায় না। পাঠায় স্ত্রীর কাছেই। পুরাতন টাকা আর নতুন ঠাকা সবই স্ত্রীর হাতে। থাকবেই না কেন? সেই-তো সব। এত বছর পর খুঁজে পাওয়া। এমন তো খুঁজতে হয়নি কাউকে। অন্য সকলকে তো মাগনা-ই পাওয়া গেছে।
পুরুষরা বিয়ে করার পর স্ত্রী, শ্বশুর, শাশুড়ী, শালা-শালিদের আদর যত্নে উম্মাদ হয়ে যায়। নিজের পিতা-মাতা, ভাই-বোনকে আর আপন ভাবতে থাকে না। তাদের মনে হয়, খামাখা ঝামেলা। এদের অস্তিত্ব না থাকলেই ভাল। মাঝে মাঝে ভাবে, আহারে! এরাই যে আমার একমাত্র আপন, শুধুমাত্র ভালোবাসা আর অদ্বিতীয় প্রেম, কয়েক বছর আগে যদি একবারও জানতাম, তাহলে সব কিছু ছেড়ে দিয়ে বিনা পয়সায় এ বাড়ির চাকর খাটতাম।
আমিও যে কখনো এমন হইনি, এ রকম ভাবিনি, তা নয়। এ উম্মাদনা থেকে কারো কারো হেদায়েত নসীব হয়, অনেকেরই হয় না।
কবীর গাজী এবার দেশে আসল। দেশে আসার আগেই স্ত্রীর বাড়ি থেকে তার বাড়িতে জানিয়ে দেয়া হল, সে যেন শ্বশুড় বাড়ী না আসে।
কারণ, স্ত্রী তার সাথে ঘর করবে না। তার অভিযোগ, সে নাকি পুরুষত্বহীন।
কবীর বলল, আপনারা আমাকে পরীক্ষা করে দেখতে পারেন, আমি সত্যিই কি . .। যেভাবে পারেন, পরীক্ষা করেন।
-না, কোন পরীক্ষার দরকার নেই। তোমার স্ত্রী-ইতো বলেছে। সে কি পরীক্ষা ছাড়া বলেছে?
-তা হলে বিগত তিন বছরে আমি চার পাঁচ লক্ষ টাকা পাঠিয়েছি এগুলো ফেরত দেন। বাহরাইনের মরুভূমিতে কত কষ্ট করে রোদে পুড়ে বিদ্যুতের খুটি বসাই। বাপের ঋণটাও এখনো শোধ করা হয়নি।
-না এগুলো তো তোমার বউ, পোলার খরচ, মোহরানা, খোর-পোষ ইত্যাদিতে শেষ হয়েছে।
কবীর গাজীর সামনে দুটো টার্গেট; বউ ফিরে পাওয়া আর টাকা। নয়তো শুধু দ্বিতীয়টি। প্রথমটি পেলে তো দ্বিতীয়টি এমনিই পাওয়া যাবে।
দেন-দরবার শুরু করল, তার সীমা-সাধ্যের মধ্যে। শেষে স্ত্রী তার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের মামলা ঠুকে দিল। নালিশ; খোর-পোষ না দেয়া, খোজ-খবর না রাখা আর যৌতুক দাবী করা।
কবীর গাজীর অবস্থা এখন, খয়রাত লাগবে না, কুত্তা ফিরাও। মামলাটা তুলে নাও। আমি আবার বিদেশে যাই। এই বার যাইতে পারলে আর আমু না দ্যাশে।
এরপর পরের খবর আমার কাছে আপডেট নেই।
আমার যদি কোন পত্রিকা থাকত, যদি সে পত্রিকায় পুরুষ নির্যাতনের কাহিনী জমা দেয়ার আহবান করা হত, তাহলে কত হাজার হাজার মর্মান্তিক কাহিনী আপনারা শুনতে পেতেন, কত হৃদয় বিদারক চিত্র দেখতেন, একটু ভাবুন তো। ভাবুন।
(চলবে)
নারী কর্তৃক অব্যাহত পুরুষ নির্যাতন - সোচ্চার হওয়ার সময় হবে কখন? (১ম পর্ব)
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
১৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন্যায়ের বিচার হবে একদিন।

ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন
আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন
আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন
J K and Our liberation war১৯৭১


জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন
এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ
এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ
২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।