somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুভিখোর ব্লগার ইন্টারভিউঃ ব্লগার দারাশিকো

০১ লা জুলাই, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মুভিখোর ব্লগার ইন্টারভিউ মাসিক আয়োজনের এটা ৩য় পর্ব। ১ম পর্বে ছিলেন ব্লগার মাষ্টার এবং ২য় পর্বে ব্লগার দূর্যোধন

আজকের কাঠগড়ায় ব্লগার দারাশিকো। আমার এবং ব্লগের অধিকাংশ মুভিখোরদের প্রিয় ব্লগার। দারাশিকো আর ১০ টা মুভি ব্লগারদের মতো না। কি যেন একটা ধারন করে দারাশিকো, আর সিনেমা রুচি, রেকমেন্ড, তার লেখনী সব কিছুতেই কেমন যেন অন্যরকম একটা মাধুর্য। তথাকথিত বাংলা ফিল্ম নিয়ে নাক সিটকানো যেখানে একটা ধর্ম হয়ে গেছে সেখানে দারাশিকো একের পর এক বাংলা ফিল্মগুলোর পজেটিভ রিভিউ দিয়ে আমাদের ব্লগারদের হল মুখি করছে।

আমি ঠিকভাবে দারাশিকোকে কখনোই বুঝতে পারেনি, ফেসবুকে ব্যক্তিগত চ্যাটে দারাশিকোর সাথে আমার যতবার কথা হয়েছে দারাশিকো নিজেকে রহস্যময় রাখতে সক্ষম হয়েছেন। যেদিন আমাদের দেখা হয় সেদিন অনেক কথা হলেও আমি ঠিক সঠিকভাবে তার রুচিবোধটাকে আয়ত্ত্ব করতে পারিনি। একদিন বললাম, আমাকে কিছু মুভি সাগেষ্ট করুন, ভেবেছিলাম, এখান থেকেও দারাশিকোর রুচিবোধ ও চিন্তা-ভাবনা সম্বন্ধে একটা ধারনা পাব। কিন্তু সেখানেও রহস্যময় রয়ে গেল দারাশিকো। এতোগুলো কথা বলার একটাই মানে, সেটা হলো, দারাশিকোকে ভালোভাবে না বুঝতে পারার কারনে তাকে ঠিক সেভাবে প্রশ্ন করতে পারিনি। তার জন্য আমি আগে থেকেই সকলের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। যতটা ঘাটতি রয়ে গেল, তা পূরনের দ্বায়িত্ত্ব আপনাদের হাতে তুলে দিলাম।

মূল নামঃ নাযমুল হাসান দারাশিকো

ব্লগ নামঃ দারাশিকো

ব্যক্তিগত ব্লগঃ দারাশিকো ব্লগ

ফেসবুকঃ Nazmul Hasan Darashiko

আমিঃ দিন কাল কেমন যাচ্ছে?

দারাশিকোঃ আলহামদুলিল্লাহ ভালোই যাচ্ছে। বাসায় পিসি-তে নেট কানেকশন পাচ্ছে না বলে ঝামেলায় আছি। নতুন কেনা কোয়েল পাখিটা পুরাতনদের আক্রমনে মৃতপ্রায় অবস্থা। তার জন্য টেনশনে আছি। আর দিপের সাথে ইন্টারভিউ – এইসব ছাড়া বাকী সব ভালো। আলহামদুলিল্লাহ।

আমিঃ বর্তমানে কি নিয়ে ব্যস্ত?

দারাশিকোঃ বিশেষ কিছু নিয়ে ব্যস্ততা নেই। সপ্তাহে পাচদিন অফিস করি। বাকী দুইদিন সিনেমা-লেখালিখি ইত্যাদি নিয়ে ব্যস্ত থাকার চেষ্টা করি। ডিজিটাল মাল্টিপ্লেক্স নিয়া লিখতে চাইছি বলে পড়াশোনা করছি টুকটাক। এই তো।

আমিঃ নিজেকে নিয়ে কিছু বলুন ?

দারাশিকোঃ নিজেকে নিয়ে বলার কিছু নাই।

আমিঃ আচ্ছা,ফিল্ম বিষয়ক আপনার ভাবনাটা খোলাশা করুন ?

দারাশিকোঃ ফিল্ম বিষয়ে খোলসা করে বলার কিছু নাই আসলে। এই দেশের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিটা পাল্টে দিতে চাই। এই পাল্টে দেয়া সব দিক থেকে। সিনেমাহলে দর্শক গিয়ে বিনোদিত হবে আবার শিক্ষিতও হবে। চিন্তার খোড়াক নিয়ে ঘরে ফিরবে, আন্দোলিত হবে, সমাজকে পাল্টে দেয়ার আগ্রহে উদ্দীপ্ত হবে – এমন একটা স্বপ্ন আছে। কিন্তু আমার যোগ্যতা কিছুই নাই। এইসব কোন কাজই আমার পক্ষে করা সম্ভব হবে কিনা সন্দেহ। এ কারণে আমি একটু ভিন্ন রাস্তা বেছে নিয়েছি। আমি লিখছি।
কেন লিখছি? কারণ যারা পড়ছে তাদের অনেকের মধ্যে এই যোগ্যতাটুকু আছে। কিন্তু জেগে উঠার চেতনাটুকু হয়তো নেই। আমি দুইটা ভালো কথা লিখে যদি দুইজন মানুষকে জাগিয়ে দিতে পারি, তাহলে দশ বছর বাদে বিশটা লোক তৈরী হয়ে যাবে। এই বিশটা লোক শুধু সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি না পুরো দেশটাকেই পাল্টে দেয়ার নেতৃত্ব দেবে তখন। এমন না যে আমি সেইরকম লিখতে পারছি। সত্যি হলো যারা লিখতে পারেন তারা লিখছেন না, অথবা লিখলেও অনেক মানুষের কাছে পৌছুতে পারছেন না। আমার লেখা দেখে হয়তো তারা লিখতে আগ্রহী হবেন, তাদের লেখা পড়ে জেগে উঠবে আরও কিছু মানুষ। এতেই হবে। আর যে লোকগুলো তৈরী হবে তারা যদি কিছু করার সুযোগ করে দেয়, তবে তাদের পাশে বা পেছনে দাড়িয়ে কাজ করবো।


আমিঃ লেখালেখির ব্যাপারে ব্লগ ও ফেসবুক কেমন দৃষ্টিকোন থেকে দেখেন?

দারাশিকোঃ ব্লগ ও ফেসবুক লেখক তৈরীর একটা বিশাল প্ল্যাটফর্ম। যখন এই সুযোগ ছিল না তখন অনেকেই লিখেছে, তাদের সেই লেখা তাদের ডায়রীর পাতায়ই থেকে গেছে। প্রকাশের জায়গা ছিল পত্রিকাগুলো কিন্তু সেখানে পৌছুনো সহজ ছিল না। এখন এই সমস্যা নাই। ১০/২০ জন হলেও পড়ার সুযোগ পাচ্ছে, একজনের চিন্তা দশজনের কাছে ছড়িয়ে পড়ছে। এইটা বেশ ভালো। তবে এই কথাগুলো ব্লগের জন্য বেশী সত্য, ফেসবুকের জন্য এতটা না। ফেসবুক বিনোদনের জায়গা। কাজ নাই তো ফেসবুকে বসে থাক – ব্লগ যতটা পজেটিভ, ফেসবুক ততটাই নেগেটিভ। এইটা একটা অ্যাডিকশন। বাংলাদেশের মত দেশে ইয়াং জেনারেশন এই দিকে বেশী ব্যস্ত থাকার ফলে তার মধ্যে যে রিসোর্স সেইটা অব্যবহৃত থেকে যাচ্ছে। এই ব্যাপারটা আমরা সবাই জানি, কিন্তু অ্যাডিকশন তো- এড়াতে পারছি না। কাটিয়ে উঠার কোন রাস্তাও দেখছি না এখন। সচেতনতা ছাড়া বোধহয় আর কিছু সম্ভব না।

আমিঃ প্লানেট অফ ফিল্মে আসার হাতেখরি কে বা কিভাবে ?

দারাশিকোঃ ফিল্ম দেখার দুনিয়ায় কিভাবে আগমন সেইটা বলতে চাচ্ছি না। ঢাকায় আসার আগে সিনেমা নয়, মিউজিক ভিডিও নির্মানে আগ্রহ ছিল। ঢাকায় আসার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ- এ সদস্য হবার চেষ্টা করলাম। ধারণা ছিল, ওদের সাথে যুক্ত হতে পারলে সিনেমানির্মান জগতের সাথে যুক্ত হতে পারবো। কিন্তু ওরা আমাকে রিজেক্ট করলো। ভাইভায় যে প্রশ্নগুলো করেছিল তা বেশ অপমানজনক। খুব কষ্ট লেগেছিল সেই সময়।
পরে এক বন্ধুর মাধ্যমে একটা গ্রুপের সাথে পরিচিত হলাম, তাদের সাথে থাকতে থাকতেই অনেক কিছু শিখলাম, তাদের সহায়তায়ই কোর্স করা হলো কিছু। দেখা যাক ভবিষ্যতে কি আছে কপালে।


আমিঃ লেখালেখির খাতিরে নাকি ভালোলাগা থেকে বাংলা ফিল্ম দেখেন?

দারাশিকোঃ হা হা হা – ট্রিকি কোশ্চেন। ভাইরে, আমি সিনেমা নিয়ে লেখালিখি শুরু করার অনেক আগে থেকে সিনেমা দেখতেসি। বাংলা ফিল্ম দেখি অনেকগুলো কারণে – এই সিনেমাগুলো খুবই সোজা, কোনই ঝামেলা নাই সিনেমায়।
বাংলা সিনেমা দেখি, কারণ এর মাধ্যমে দেশীয় সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি কতটা পরিবর্তিত হচ্ছে সেইটা বোঝা যায়।
বাংলা সিনেমা নিয়ে লিখি কারণ আমি আমার পাঠকদের সিনেমার দর্শক বানাতে চাই – সিনেমার দর্শক বাড়লে সিনেমা ব্যবসাসফল হবে, ইন্ডাস্ট্রি আস্তে আস্তে উন্নতির দিকে এগোবে।


আমিঃ শাকিব তথা সমগ্র বর্তমান বাংলা ব্যানিজিক ফিল্ম বিষয়ক আপনার দৃষ্টকোণটা একটু খোলাশা করুন?


দারাশিকোঃবোধহয় খোলসা করে বলার কিছু নাই। শাকিব খান জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়ার পরে ব্লগ-ফেসবুকে বেশ কিছু আলোচনা দেখার সুযোগ হয়েছিল। শাকিব খানকে ধুয়ে ফেলেছেন সবাই। এরকম একটা আলোচনায় তোমাকে দেখেছিলাম একাকী প্রতিবাদ করতে। আমি শাকিব খানের ভক্ত না। আমি শাকিব খানকে শাহরুখ খান/আমির খান কিংবা লিওনার্দো দ্য ক্যাপ্রিও/টম হ্যাংকস এর সাথে তুলনা করি না। শাকিব খানের তুলনা হবে বাংলা সিনেমায় যারা অভিনয় করছে তাদের সাথে। সুতরাং একা শাকিব খানকে গালি দেয়ার ঘোর বিরোধী আমি। আমি শাকিব খানকে শ্রদ্ধা করি এই কারণে যে অন্তত তার জন্য হলেও অনেক দর্শক এখনো সিনেমা হলে যায়, অনেক প্রোডিউসার সিনেমা নির্মান করে। অন্তত এখনো নির্মান প্রক্রিয়া চালু আছে।
বাণিজ্যিক বাংলা সিনেমা অনেকদিন ধরে একইভাবে চলছে। পরিবর্তন আসছে এখন – গত ২/৩ বছরে বেশ। শাহীন-সুমন তাদের সিনেমা ‘ভালোবাসার রং’ এর জন্য ওয়েবসাইট বানাবেন, রেড ক্যামেরায় সিনেমা নির্মান করবেন – এই চিন্তা আমি কখনোই করি নাই। কিন্তু হচ্ছে । তার মানে কি? মানে হল, পরিবর্তন আসছে। আসবেই। সুতরাং আর কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। ভালো সিনেমা নির্মিত হলে ভালো অভিনেতারাও আসবে, শাকিব খান টিকে থাকতে পারলে থাকবে, নাহয় বিদায় নেবে। ব্যাস।


আমিঃ আচ্ছা,বর্তমান কলকাতায় যেমন হচ্ছে,এমন হলেই কি বাংলা মিডিয়া স্যাটিসফাই হবে বলে মনে করেন ?

দারাশিকোঃ ধুর। কলকাতাকে স্ট্যান্ডার্ড ধরবো ক্যান। দর্শকের একটা অংশ খুশি হবে এইটা স্বাভাবিক। সুন্দর ছবি আর গল্প থাকলে যে কেউ পছন্দ করবে। টেকনিক্যাল দিক থেকে দেখলে কোলকাতার সিনেমার এই দিকগুলোকে আমরা গ্রহন করতে পারি। কিন্তু কাহিনীর বিষয়বস্তুর জন্য কোলকাতার দিকে তাকানোর কোনই প্রয়োজন নাই। ওদের সমাজ-চিন্তা ভাবনা ইত্যাদি থেকে আমাদের সমাজ ও চিন্তা ভাবনা অনেক আলাদা। কোলকাতার সাম্প্রতিক সিনেমাগুলোর মধ্যে লিভিং টুগেদার, এক্সট্রা মেরিটাল রিলেশনশীপ, অ্যালকোহল এই বিষয়গুলো বেশ গুরুত্ব পাচ্ছে এখন। আমি জানি না ওদের সামজ এরকম কিনা। আমাদের সমাজ তো এরকম না। তাছাড়া, আমি মনে করি সিনেমা নির্মাতাদের নৈতিকতার জায়গা থেকেও এ ব্যাপারে স্বচ্ছ থাকা প্রয়োজন। এইসব উপাদান থাকলে আমি খুব ভালো সিনেমা বানাই, সমাজের বাস্তব চিত্র তুলে আনি, না হলে না – আমি এইরকম চিন্তায় বিশ্বাসী না। কাহিনী বিষয়বস্তুর জন্য বাংলাদেশ বাংলাদেশই – কলকাতা বা মুম্বাই এর আদর্শ হতে পারে না, হওয়া উচিতও না।

আমিঃ বাংলা ফিল্মে ইংরেজি নাম,বা অতিরিক্ত ইংরেজি ব্যবহারটাকে ঠিক কিভাবে দেখেন ?

দারাশিকোঃ বাংলা ফিল্মে ইংরেজি নাম ব্যবহার নিয়া আমার আপত্তি তেমন নাই যদি সেই নামের ব্যবহারে যৌক্তিকতা থাকে। এখন যারা সিনেমা নির্মান করছে তাদের প্রায় সবারই চোখ তৈরী হয়েছে বিদেশী সিনেমা দেখে। সুতরাং তারা ওইভাবে নাম সিলেক্ট করতে বেশী স্বচ্ছন্দ বোধ করতেই পারে। এতে দোষের কিছু নাই। একই ভাবে সিনেমায় যদি ইংরেজি শব্দের ব্যবহার প্রয়োজনীয় হয় তবে আপত্তি কিসের। দ্য স্পিড সিনেমায় নাম কিংবা ডায়লগে শব্দের ব্যবহার যথাযথ ছিল না – অনেক ক্ষেত্রেই অপ্রয়োজনীয় ছিল। সুতরাং আপত্তি করছি এক্ষেত্রে।
আবার এইটা এক দিক থেকে আশাব্যাঞ্জকও। আমি দেখছি এভাবে – আওয়ার সিনেমা ইজ গোয়িং গ্লোবাল। এইটা একটা ইন্ডিকেটর। কে বলবে না আর দশ বছর বাদে আমাদের ছেলেরাই হলিউড থেকে সিনেমা বানাবে না? সুতরাং যথাযথ হলে ব্যবহার চলতেই পারে, এমনকি বাংলা সিনেমার পুরোটাই ইংরেজিতে হতে পারে। তবে, আমি আরও সাপোর্ট করি যদি কোন নির্দিষ্ট অঞ্চলকে কেন্দ্র করে তৈরী সিনেমায় অরিজিনাল আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহার করা – প্রয়োজনে বাংলা সাবটাইটেল ব্যবহার করা।


আমিঃ ছবিয়াল তথা এ-ধরনের কাজগুলোতে আপনার দৃষ্টকোন?

দারাশিকোঃ ছবিয়াল গ্রুপের সিনেমার কন্টেন্টে আমার আপত্তি আছে। কিন্তু আমার আপত্তির কোন গুরুত্ব নাই, কারণ আমি বেটার কিছু তৈরী করতে পারি নাই। যতক্ষন আমি বেটার কিছু করতে না পারি, ততক্ষন তাদের সম্পর্কে কিছু বলা আমার সাজে না।

আমিঃ ঠিক কোন বিষয়টার উপর আরো প্রচুর ফিল্ম হওয়া দরকার বলে আপনার মনে হয়?

দারাশিকোঃ ঠিক কোন বিষয়ের উপর ফিল্ম হওয়া দরকার সেইটা আমার পক্ষে বলা সম্ভব না। এটা রিসার্চ করে হয়তো বলা যাবে। তবে আমি মনে করি সব ধরনের সিনেমা হওয়া উচিত। শুধু ড্রামা বা সামাজিক অ্যাকশন সিনেমা না। অ্যাকশন, থ্রিলার, মিস্ট্রি, হরর, কমেডি, এপিক ইত্যাদি। আমি স্বপ্ন দেখি বাংলাদেশী সিনেমা নির্মাতা হলিউডে ব্যবসা করছে। সুতরাং সেইভাবে তৈরী তো হতে হবে।


আমিঃ স্যাটায়ার মুভি রিভিউ সম্নধে আপনার মতামত কি ?


দারাশিকোঃ দূর্যোধনের বিপরীতে দাড়া করানোর চেষ্টা করছেন দেখি। স্যাটায়ার রিভিউ দূর্যোধন যে নিয়্যতে করছে তা ভালো কিন্তু সমস্যা আছে ওখানে। তিনি চাচ্ছেন নেগেটিভ দিকগুলো তুলে ধরবেন, এতে পরিচালক-অভিনেতা ভুলগুলো শুধরে নেয়ার সুযোগ পাবেন। চিন্তাটা ভালো। কিন্তু আমাদের পরিচালকরা তো এখনো এই লেভেলে আসেন নাই। স্বপন সাহেব সারাদিন ফেসবুকে থাকেন বলে তিনি হয়তো লালটিপের রিভিউ পড়েছেন – কিন্তু অনন্ত সাহেব কি এই রিভিউ পড়ে দেখবেন? আমার সন্দেহ হয়। স্যাটায়ার রিভিউ বলে এই রিভিউ কোথাও ছাপাও হবে না, ফলে এই রিভিউ শুধু আনন্দই দেবে পাঠককে। আরেকটা ব্যাপার. আমি ঠিক শিওর না স্যাটায়ার রিভিউ পড়ে কারও সিনেমা দেখার আগ্রহ তৈরী হয় কিনা। সেক্ষেত্রে এই সময়ে এটা একটা থ্রেট বটে।
তবে নিরুৎসাহিত করতেও পারছি না। স্যাটায়ার রিভিউ সারা বিশ্বে চলছে। স্যাটায়ার মুভিও রিলিজ পায় প্রতিবছর। সুতরাং এই দেশে সমস্যা কই? এখন আমি স্যাটায়ার রিভিউয়ের বিরোধিতা করি, কারণ আমার একটা ভয় আছে। কোনদিন যদি আমি একটা সিনেমা নির্মান করেই ফেলি, সেক্ষেত্রে সেই সিনেমার স্যাটায়ার রিভিউ যদি লালটিপের রিভিউয়ের মত ব্লকবাস্টার হয়, তবে আমি তো ঝুকিতে পড়ে যাবো, তাই না? সুতরাং আমার বিরোধিতা করা স্বাভাবিক। সমালোচনা হয়তো পরিচালক সহ্য করতে পারবেন, কিন্তু বিদ্রুপ সহ্য করা সম্ভব হবে কি?


আমিঃ পরিমিত অর্থ এবং যোগ্য টেকনিশিয়ান পেলে কি ধরনের ফিল্ম বানাবেন ?

দারাশিকোঃ পরিমিত শব্দের অর্থ মনে পড়ছে না।আমার আগ্রহ আছে পিরিয়ড ফিল্ম বানানোয়। অন্তত দুইটা টপিক আছে সিনেমা বানানোর জন্য। আবার স্বল্প ব্যয়ে নির্মান করবো বলে একটা স্ক্রিপ্টের প্রথম ড্রাফট তৈরী হয়ে দ্বিতীয় ড্রাফটের কাজ চলছে – গল্পটা একটা থ্রিলার। আপাতত এই চিন্তা। অন্তত একটি সিনেমা নির্মান করা হলে বাকীগুলো কি হবে সে দিকে নজর দেয়া যাবে। এখনই গোফে তেল দেয়ার কোন মানে নেই ।

আমিঃ রিভিউয়ের ক্ষেত্রে আপনি ঠিক কোন বিষয়টাকে প্রাধন্য দিয়ে থাকেন?

দারাশিকোঃ রিভিউয়ের জন্য দুই ভাবে গুরুত্ব দেয়া যায়। একটা হল নির্মান সংক্রান্ত। কাহিনী, চিত্রগ্রহন, সম্পাদনা, অভিনয় ইত্যাদি ইত্যাদি। আরেকরকম হল, কোন সিনেমাকে কেন্দ্র করে জীবনদর্শন। আমি প্রথমটা সম্পর্কে আগ্রহী কারণ এইটা নিয়া কিঞ্চিত কথা বলতে পারি, কিন্তু জীবন দর্শন সম্পর্কে আমার কিছুই বলার ক্ষমতা নাই, কারণ আমি এইটা নিয়া কিছুই পড়ি নাই, আন্দাজে কিছু বলে পাবলিকে ধরাও খাইতে চাই না। সুতরাং আমি প্রথম স্টাইল ফলো করি। আবার নির্মান সংক্রান্ত ব্যাপারে সিনেমাটোগ্রাফি, সম্পাদনার চেয়ে কাহিনী ভালো বুঝি – সিনেমাটোগ্রাফি বুঝতে চেষ্টা করছি, পড়ছি। সম্পাদনা বোঝার চেষ্টা এখনো শুরু করিনি। এ কারণে এখন গুরুত্ব বেশী পাচ্ছে কাহিনী। এইটা আমার ইচ্ছার ব্যাপার না, যোগ্যতার ব্যাপার। এই অযোগ্যতা নিয়া লিখতে পারতেছি কারণ পাঠক ধরতে পারতেছে না, অথবা পড়তেছে না। যেদিন বুঝবে সেইদিন দারাশিকো-কে নিয়া স্যাটায়ার পোস্ট হবে।

আমিঃ কোন জেনারের মুভি সব থেকে পছন্দ করেন ? কেন ?

দারাশিকোঃ এপিক আর থ্রিলার। কেন? সম্ভবত ছোটবেলা থেকেই এপিক কাহিনীর সাথে পরিচয় বলে। একটু বড় হওয়ার পর থেকে থ্রিলার আর মিস্ট্রি-র সাথে পরিচয়। ওয়েস্টার্ন বইও পড়েছি প্রচুর। ফলে এই সিনেমাও খুব ভালো লাগে। সিনেমা দেখতে দেখতে ড্রামা পছন্দ হয়ে গেছে এবং ধুন্দুমার অ্যাকশন সিনেমা দেখতে মোটেই ভালো লাগছে না। সময় নষ্ট বলে মনে হচ্ছে।

আমিঃ সেরা ছবি,পরিচালক,নায়ক,নায়িকা ?

দারাশিকোঃ উত্তর দেয়ার যোগ্যতা হয় নাই।

***** এককথায় উত্তর ******

আমিঃ রিভিউ লেখা না পড়া?

দারাশিকোঃ দুটোই। রিভিউ তো বেশী মানুষ লিখছে না। রিভিউ পেলে মিস করি না। চুপিসারে প্রায় সব রিভিউ-ই পড়া হয়।

আমিঃ মৃনাল না মানিক ?

দারাশিকোঃ আপাতত মানিক ই পছন্দের। মৃণালের সব দেখার পর এই প্রশ্নের জবাব পাল্টাতে পারে।

আমিঃ সেরা ব্লগার কে ?

দারাশিকোঃ আমি সবার ব্লগ পড়ি নাই, পড়ি না। সুতরাং এই প্রশ্নের জবাব দেয়া আমার কম্ম না।

আমিঃ রিমেক করার ডাক এলে কোনটা করবেন ?

দারাশিকোঃ রিমেক করার যোগ্যতা নাই

আমিঃ সেরা বাংলা ফিল্ম ?

দারাশিকোঃ আপাতত ‘জাগো’

***** সমাপ্ত *****

মুভি বিষয়ভিত্তিক পোষ্ট সংকলন-আপডেটিত

সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জুলাই, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:০২
৫৯টি মন্তব্য ৩১টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাম গাছ (জামুন কা পেড়)

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

মূল: কৃষণ চন্দর
অনুবাদ: কাজী সায়েমুজ্জামান

গত রাতে ভয়াবহ ঝড় হয়েছে। সেই ঝড়ে সচিবালয়ের লনে একটি জাম গাছ পড়ে গেছে। সকালে মালী দেখলো এক লোক গাছের নিচে চাপা পড়ে আছে।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনির্বাণ শিখা

লিখেছেন নীলসাধু, ০৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



রাত ন’টার মত বাজে। আমি কি যেন লিখছি হঠাৎ আমার মেজো মেয়ে ছুটতে ছুটতে এসে বলল, বাবা একজন খুব বিখ্যাত মানুষ তোমাকে টেলিফোন করেছেন।

আমি দেখলাম আমার মেয়ের মুখ উত্তেজনায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ইয়াম্মি খুব টেস্ট=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৪



©কাজী ফাতেমা ছবি
সবুজ আমের কুচি কুচি
কাঁচা লংকা সাথে
ঝালে ঝুলে, সাথে চিনি
কচলে নরম হাতে....

মিষ্টি ঝালের সংমিশ্রনে
ভর্তা কি কয় তারে!
খেলে পরে একবার, খেতে
ইচ্ছে বারে বারে।

ভর্তার আস্বাদ লাগলো জিভে
ইয়াম্মি খুব টেস্ট
গ্রীষ্মের... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিরোনামহীন দুটি গল্প

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৫

গল্প ১।
এখন আর দুপুরে দামী হোটেলে খাই না, দাম এবং খাদ্যমানের জন্য। মোটামুটি এক/দেড়শ টাকা প্লাস বয়দের কিছু টিপস (এটা আমার জন্য ফিক্সড হয়েছে ১০টাকা, ঈদ চাদে বেশি হয়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

এশিয়ান র‍্যাংকিং এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান !!

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:২০

যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী 'টাইমস হায়ার এডুকেশন' ২০২৪ সালে এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে। এশিয়ার সেরা ৩০০ তালিকায় নেই দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়।তালিকায় ভারতের ৪০, পাকিস্তানের ১২টি, মালয়েশিয়ার ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×