somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যখন চোখের সামনে দাসত্ব ও মৃত্যু বিরাজমান...।। আসিফ

২৭ শে মে, ২০১১ বিকাল ৪:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পৃথিবী নামক একটি শ্যামল গ্রহের অধিবাসী আমরা। সেকেন্ডে ১৬ মাইল বেগে সূর্যের চারদিকে ছুটে চলেছি। আর সূর্য পৃথিবীসহ গ্রহগুলোকে সঙ্গে নিয়ে আন্তঃনাক্ষত্রিক শূন্যতার ভেতর দিয়ে সেকেন্ড ৪২ মাইল গতিতে ধাবমান, আমরা তো মহাজাগতিক পথিক। সতত মহাবিশ্বের মধ্য দিয়ে বহমান আমাদের গন্তব্য কী? মহাবিশ্বের সূচনাইবা হয়েছিল কীভাবে?

একটি বিন্দুর মহাবিস্ফোণের মধ্য দিয়ে এ মহাবিশ্বের সূচনা। মহাবিস্ফোরণ বা বিগ ব্যাং হলো এমন একটি ঘটনা, যার আগে বর্তমান বিশ্বের পদার্থ, শক্তি, স্থান, কাল একটি মাত্র বিন্দুতে কেন্দ্রীভূত ছিল। পর্যবেক্ষিত ফলাফল নির্দেশ দেয় যে, আজ থেকে প্রায় ১৫শ' কোটি বছর আগে জাগতিক বিশ্বের সবকিছুর আঁধার এই বিন্দুর বিরাট বিস্ফোরণের মধ্য দিয়েই মহাবিশ্বের সূচনা হয়। কেউ যদি প্রশ্ন করে, ওই বিন্দুর বাইরে কী ছিল তাহলে সে প্রশ্ন অর্থহীন। এটিই মহাবিশ্বের প্রথম ঘটনা। আদি মহাবিশ্বে বিরাজমান পদার্থের ঘনত্বের হেরফেরের ফলে গ্যালাক্সি এবং নক্ষত্রগুলো গঠিত হয়েছিল, যা রাতের আকাশকে অপরূপ রূপে অলঙ্কৃত করেছে।

কত গ্যালাক্সি আছে এ মহাবিশ্বে, এর মধ্যে আমাদের অবস্থানই বা কী? অপরিমেয় মহাশূন্যে নক্ষত্রগুলো যথেচ্ছভাবে ছড়ানো নয়। বরং তারা পরস্পর বিচ্ছিন্ন বিশাল সব সরণির সদস্য। এই নক্ষত্র পরিবারগুলোর মধ্যে পারস্পরিক দূরত্বও বিশাল। প্রতি পরিবারে নক্ষত্র সংখ্যা হচ্ছে প্রায় ১০ হাজার কোটি। এই নক্ষত্র পরিবারগুলোই হলো এক একটা গ্যালাক্সি। আমাদের সূর্য হলো এরকম এটি গ্যালাক্সির ক্ষুদ্র সদস্য, আকাশে দৃশ্যমান ‘ছায়াপথ’ হলো মিল্কিওয়ের অংশমাত্র। অবশ্য বর্তমানে মিল্কিওয়ে বা ছায়াপথ বলতে সমগ্র গ্যালাক্সিকেই বোঝায়। রাতের মেঘমুক্ত আকাশে তাকালে আমরা প্রায়ই অনুজ্জ্বল আলোক নির্মিত পথ দেখতে পাই। স্মরণাতীতকাল থেকেই এই মৃদু আলোক-নির্মিত পথটি পাশ্চাত্যে মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি এবং প্রাচীন ভারতবাসীদের কাছে আকাশ গঙ্গা বা ছায়াপথ নামে পরিচিত। ধারণা করা হয় মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির মতো প্রায় দশ হাজার কোটি গ্যালাক্সি এ মহাবিশ্বে আছে।

খ্রিষ্টপূর্ব ৬০০ বছর পূর্বে পিথাগোরাসের কাছে আয়োনীয় বিজ্ঞানী অ্যানাক্সিমেনিস একটি প্রশ্ন উত্থাপন করেছিলেন-যখন চোখের সামনে দাসত্ব ও মৃত্যু বিরাজমান সে অবস্থায় নক্ষত্ররাজি সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনে কষ্ট করা কতখানি অর্থবহ? এরকম প্রশ্ন আড়াই হাজার বছর পরেও শুনতে হয়। জীবন ও জীবিকার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক নির্ধারণ না করতে পারলেই আমরা অনেকেই এ ধরনের প্রশ্ন করি। ডিসকাশন প্রজেক্ট-এর বিজ্ঞান বক্তৃতায় আমাকেও প্রায় প্রশ্ন করা হয়, চোখের সামনে দারিদ্র্যতা আর মানুষের মৃত্যু ঘিরে আছে তখন এই নক্ষত্র, এই মহাবিশ্ব সম্পর্কে আমাদের জ্ঞান লাভের প্রয়োজনীয়তা কী, কিই বা সম্পর্ক সাধারণ মানুষের জীবনের সঙ্গে? সম্প্রতি সিডরের মতো মারাত্মক ঘূর্ণিঝড়ে সৃষ্ট ঘটনাবলী আমাদের দেখিয়েছে বাস্তুসংস্থান নীতি লঙ্ঘিত হলে কী মহাবিপর্যয় ঘটতে পারে। আর এই বাস্তুসংস্থান নীতি বা প্রকৃতির ভারসাম্যের ব্যাপারটি বিজ্ঞানই আমাদের সবচেয়ে ভালোভাবে জানাতে পারে। জানাতে পারে জীবন ও জগৎ সম্পর্কে, মহাবিশ্ব সম্পর্কে, মহাবিশ্বের তুলনায় মানবজীবন কত ক্ষুদ্র সময় অধিকার করে থাকার কথা। তুচ্ছ সব কারণে বিভেদের প্রাচীর তুলে দেওয়া, মানবজাতির সামগ্রিক অবস্থান থেকে ব্যক্তি বা জাতিস্বার্থকে আলাদা করে ফেলা কত বিপদজ্জক হতে পারে তা উপলব্ধি করতে পারবো, অনুভব করতে পারবো মানুষের সঙ্গে মানুষের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান কত গুরুত্বপূর্ণ।

কত গ্যালাক্সি আছে এ মহাবিশ্বে, এর মধ্যে আমাদের অবস্থানই বা কী? অপরিমেয় মহাশূন্যে নক্ষত্রগুলো যথেচ্ছভাবে ছড়ানো নয়। বরং তারা পরস্পর বিচ্ছিন্ন বিশাল সব সরণির সদস্য। এই নক্ষত্র পরিবারগুলোর মধ্যে পারস্পরিক দূরত্বও বিশাল। প্রতি পরিবারে নক্ষত্র সংখ্যা হচ্ছে প্রায় ১০ হাজার কোটি। এই নক্ষত্র পরিবারগুলোই হলো এক একটা গ্যালাক্সি। আমাদের সূর্য হলো এরকম এটি গ্যালাক্সির ক্ষুদ্র সদস্য, আকাশে দৃশ্যমান ‘ছায়াপথ’ হলো মিল্কিওয়ের অংশমাত্র। অবশ্য বর্তমানে মিল্কিওয়ে বা ছায়াপথ বলতে সমগ্র গ্যালাক্সিকেই বোঝায়। রাতের মেঘমুক্ত আকাশে তাকালে আমরা প্রায়ই অনুজ্জ্বল আলোক নির্মিত পথ দেখতে পাই। স্মরণাতীতকাল থেকেই এই মৃদু আলোক-নির্মিত পথটি পাশ্চাত্যে মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি এবং প্রাচীন ভারতবাসীদের কাছে আকাশ গঙ্গা বা ছায়াপথ নামে পরিচিত। ধারণা করা হয় মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির মতো প্রায় দশ হাজার কোটি গ্যালাক্সি এ মহাবিশ্বে আছে।

আর মনে রাখতে হবে নক্ষত্রগুলো নিছক মানুষের কাছে কৌতূহল তৈরি করেনি, রাতের অন্ধকারে পৃথিবীর অভিযাত্রীদের হাজার হাজার বছর পথ দেখিয়াছে, পথ দেখাবে চিরকাল। সূর্য নামের উত্তাপ পৃথিবীর জীবজগৎকে বাঁচিয়ে রেখেছে। ঘূর্ণিঝড় সিডরের ক্ষয়ক্ষতি দেখার উদ্দেশ্য পটুয়াখালীর গলাচিপা যাওয়ার সময় লেবুখালী নদীর তীরে যখন অন্ধকার চারিদিকটা গ্রাস করে রেখেছিল তখন ছায়াপথ ধরে থাকা নক্ষত্রগুলোর প্রচণ্ড কিন্তু নিরুত্তাপ আলো স্বস্তি দিয়েছিল, ভাবিয়েছিল অন্ধকার আর আলোর পার্থক্য নিয়ে যেমনটি প্রাচীনকালের মানুষদের করেছে।


আসিফ
ডিসকাশন প্রজেক্ট
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুলাই, ২০১১ রাত ২:২৯
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×