সারা দিন হাড়ভাঙ্গা খাটুনি, সকাল ৮ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত কামলা খাটার নাম নাকি চাকরি। আমি একজন চাকরিজীবি। তারমানে চাকর।
জীবন এর চাকা আজ আমাকেও নিয়ে এসেছে চাকরির কষ্টকর লগ্নে। বিশবিদ্যালয় থেকে পাস করার আগেই চাকরির অফার আসা শুরু করলো। নিজেকে ভাগ্যবান মনে করতাম। এরপর চাকরি করা শুরু হলো। প্রথম প্রথম অনেক ভাল লাগত। নিজেকে বড় বড় মনে হতো। প্রথম বেতন পেয়ে তো খুশিতে আট খানা।সবার জন্য উপহার কিনলাম। মনে হল নাহ চাকরি করাটা খুবই মজার। এভাবে ১ মাস চলে গেল। তারপর বিরক্ত লাগা শুরু হল। সপ্তাহে ৫ দিন কেন অফিস হবে আর ছুটির দিন কেন মাত্র ২ দিন হবে তা নিয়ে বিশাল চিন্তা হতে লাগল। ছুটির ২ টা দিন শুরু হতে না হতেই শেষ হয়ে যেতে লাগল। আর ঢাকার রাস্তার জ্যাম প্রত্যেকদিন বেপক পীড়া দিতে লাগল। সকাল এই আরামের ঘুম এর মায়া ছেড়ে ৭ টার মধ্যে বাসা থেকে বের হয়ে যাও। বাস টাইম মতো না পেলে অফিসে লেইট এ ঢুক্তে হবে। সারাদিন পর আবার বাসায় তাড়াতাড়ি ফেরত আস্তে হবে , তার জন্ন্য আবার আর একটা তাড়াহুড়া। যতই তাড়াহুড়া করি না কেন, জ্যাম এর কারনে বাসায় ঢুক্তে রাত ৯টা বেজে যায় প্রায়। শরীর আর কাজ করতে চায় না। ক্লান্তি ভর করে। তখন শুধু মনে হয় বাবার কথা, এবং বুঝতে পারি আসলে ছোটবেলায় আমিই আসলে আরামে ছিলাম সবচেয়ে। বাবার কষ্ট এখন খানিক্টা বুঝতে পারছি।
চাকরি করছি প্রায় ২ বছর হয়ে গেল। এখন ও বিরক্ত লাগে। কিন্তু অভ্যাস হয়ে গেছে। জীবন একটা রুটিন হয়ে রয়ে গেল। বাকি জীবন এভাবেই কাটাতে হবে এই ভেবেই কষ্ট লাগে। কিন্তু একই সাথে আমাকে মানুষ করার জন্ন্য বাবা নিজে যে সারা জীবন এভাবে চাকরি করে আসছেন তা ভেবে আর ও কষ্ট লাগে। একদিন নিজের ও ছেলে মেয়ে হবে, তারাও হয়তো ছোটবেলায় আমাকে দেখে ভাব্বে আমাদের বাবার কোন কষ্ট নাই। খালি আরাম করে বাসায় এসে। যত কষ্ট শুধু আমাদের। ভাবতেই কেমন যেন লাগে , তারাও নিশ্চই আমার মতো একবার হলেও বুঝতে পারবে, যে চাকরি বেলা মোটেও সুখকর কোন ব্যাপার নয়।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



