somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নারী ও যৌনতা-২ : মেয়ে, তুমি প্রেমিকের শয্যাসঙ্গিনী হচ্ছ... বিনিময়ে কিছুই কি পাচ্ছ?

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এই লেখাটি অত্যন্ত অশ্লীল এবং প্রায় চটি পর্যায়ের। বিশেষ করে যাদের বিবাহ বহির্ভূত শারীরিক সম্পর্কের ব্যপারে তীব্র আপত্তি আছে, তারা দয়া করে এড়িয়ে যান।
এবং দয়া করে কেউ ধর্ম ও নীতি নিয়ে ক্যাচাবেন না।

গাইনি ক্লাস চলছিলো, টপিক ছিল contraception অর্থাৎ জন্মনিয়ন্ত্রণ। পড়াতে পড়াতে ম্যাডাম বললেন, আজকাল emergency contraceptive এর ব্যবহার খুবই বেড়ে গেছে। সুতরাং এটা ভাল করে পড়বে। ক্লাসে হাসির রোল পড়ে গেলো। ম্যাডাম বললেন, তোমরা হাসছ? এই তোমাদের বয়সী ছেলেমেয়েরাই চেম্বারে এসে এগুলো চায়, আর আজকাল টিভিতে অ্যাড দেখে অনেকেই নিজে নিজে খায়, ডোজ জানেনা, ওষুধ ঠিকমত কাজও করেনা। তোমাদেরই বন্ধু-বান্ধবরা চাইলে তখন কি করবে?

ম্যাডামের কথা যদি সত্যি ধরে নেই, তাহলে এই বিপুল পরিমাণ emergency contraceptive কাদের প্রয়োজন হচ্ছে? বিবাহিত দম্পতিদের অবশ্যই না, অবিবাহিতরাও অধিকাংশই কনডম ব্যবহার করে, তারপরও যারা অতি সাহসী, অ্যাডভেঞ্চারাস বা দুর্ঘটনাবশত ঘটনা ঘটিয়ে ফেলে তাদেরই এগুলো প্রয়োজন হয়। সেক্ষেত্রে আমরা কি কল্পনা করতে পারি, ধর্ম ও নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে সমাজের ঠিক কি পরিমাণ মানুষ বিবাহবহির্ভূত শারীরিক সম্পর্কে আবদ্ধ হচ্ছে? আর এরা যে শুধু তরুণ, কিশোর-কিশোরী বা অবিবাহিত তাও নয়, এদের অনেকেই মধ্যবয়স্ক এবং অন্যত্র বিবাহিত।
আমাদের আশেপাশে চলমান প্রেমের সম্পর্কগুলো একটু ব্যবচ্ছেদ করলে দেখা যায়, একটি ছেলে ও মেয়ের মধ্যে প্রেম হয়, কিছুদিন ভালই চলে, এরপর ছেলেটি, অথবা কোন কোন ক্ষেত্রে মেয়েটি শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের কথা তোলে। যেকোনো এক পক্ষ রাজি না থাকলে শুরু হয় বিভিন্ন অজুহাত, জোরাজুরি ও চাপ প্রয়োগ। এই ভূমিকাটা সাধারণত ছেলেরাই পালন করে! ( যদিও কথাটা একতরফা শোনাচ্ছে, কিন্তু আমার মনে হয় এটাই সত্যি ) বন্ধু বা নিজের খালি বাসা, হোটেল এমনকি জনবহুল রাস্তায় গাড়ির ভেতরেও নিয়মিত সঙ্গম করার কথা শুনেছি আমি। মোস্তফা সরওয়ার ফারুকীর "লিটনের ফ্ল্যাট" তো আর এমনি এমনি এতো জনপ্রিয়তা পায়নি!

আমার প্রশ্ন হচ্ছে, এই যে মেয়ে তুমি এইধরনের বিপজ্জনক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছ, তুমি আসলে কি পাচ্ছ? অনেকে প্রেম-ভালবাসার টানাপোড়েনে জড়িয়ে পড়ে, ভাবে শরীর দিলেই ছেলেটি তাকে ভালবাসবে। অথচ এই ধারণাটা যে কত ভুল, তা যদি তারা জানতো! যে ভালবাসার সে এমনিই বাসে, আর যে ভালবাসা পোক্ত করতে শরীরটাকে চায়, তার ভালবাসা কোনদিনই ভালবাসা না, ওটা lust , যাকে অনেক ছেলেও love বলে ভুল করে।
কিছুদিন পড়ে যখন মোহ কেটে যায়, তখন ছেলেটিও কেটে পড়ে। মেয়েটি তীব্র মানসিক যন্ত্রণা ভোগ করে, সতীত্ব হারায় ( যদি আগে থেকেই হারিয়ে না থাকে ), ঘটনা প্রকাশ পেলে সমাজে, পরিবারে অসম্ভব রকমের লাঞ্ছনা সইতে হয়, আর গোপন ভিডিও কি ছবি বেরোলে তো কথাই নেই। সাথে ভয় আছে অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণের ( যেখান থেকে এই লেখা শুরু করেছিলাম ) বা সংক্রামক যৌনরোগের।

ধরে নেই, এর কোনটাকেই ভয় পাও না মেয়ে তুমি। তোমার যৌন জীবনটাকে উপভোগ করাই তোমার উদ্দেশ্য। প্রেমিকপ্রবর কি তা দিতে পারছে তোমাকে? কয়টা মেয়ে জানে শয্যায় সুখী হওয়া কি জিনিস? বুদ্ধদেব গুহ'র এক লেখায় পরেছিলাম, বাঙ্গালী নারীরা সঙ্গমের সময়টা কড়িকাঠ গুনে আর টিকটিকি দেখে কাটিয়ে দেয়। আজকের যুগে অবস্থার কি খুব পরিবর্তন ঘটেছে? Female orgasm বিষয়ে ধারণা আছে কতজনের? তুমি নিজে কতটুকু জান তোমার শরীর সম্পর্কে? কি করলে তুমি উত্তেজিত হও, কিসে তোমার অস্বস্তি, এগুলো নিয়ে কখনো ভেবেছ? তাহলে তোমার প্রেমিক ভাববে কেন? আর ভাবলেও সে জানবেই বা কি করে? শয্যায় যদি সুখই না পেলে, তবে তোমার যৌন জীবন উপভোগ্য হল কোন দিক দিয়ে? শুধু নিজেকে স্মার্ট প্রমাণ করার জন্য এত ঝুঁকি না নিলেই কি নয়?

ধরে নেই, বিছানায় তুমি অত্যন্ত সাহসী ও দুর্দান্ত খেলোয়ার, সেক্ষেত্রে সঙ্গী তোমার এই পারদর্শিতাকে কোন চোখে দেখে? প্রথমেই তোমাকে সন্দেহের কাতারে ফেলা হয়, আর কতজনের সঙ্গে এগুলো করে এসেছ তুমি? দ্বিতীয়ত, পুরুষ নিজের সুখের বাইরে সঙ্গীর সুখের জন্য কিছু করতে প্রায়সময়ই বিরক্ত বোধ করে, ব্লো-জব পেতে অতি আগ্রহী পুরুষও সঙ্গিনীর যোনীতে একটু ঠোঁট ছোঁয়াতে চায়না, কোন কোন মেয়ে সঙ্গমের সময় ব্যথায় কুঁকড়ে যায়, তবু তার প্রেমিকের সাধ মেটেনা, এরকম হাজারো উদাহরণ দেয়া যায়। কোন সুখটা তুমি পেলে এখান থেকে, মেয়ে?

বোনাস হিসেবে, তুমি উপহার পাবে কিছু গালাগাল। বেশ্যা, মাগী, খানকি, whore, nymphomaniac.... কত সুন্দর সব নামে প্রেমিক তোমার বর্ণনা দেবে বন্ধুদের কাছে। তোমারই শরীরের পুঙ্খানুপুঙ্খ মানচিত্র ভেবে ভেবে তারা মাস্টারবেশন করবে। শরীর তুমি একজনকে দিলেও ভাগ কিন্তু পাবে সবাই। সেটাই কি তুমি চাও?

সবকিছুকে তো আর এক কাতারে ফেলা যায় না, তেমনি এর প্রত্যেকটা ঘটনারই ব্যতিক্রম রয়েছে। অনেক অনেক প্রেম রয়েছে যা মন ও শরীর দুটোর চাহিদাকেই পূর্ণ করে, অনেক ঝড়- ঝঞ্ঝা পেরিয়েও টিকে থাকে, শুভ পরিণতিতে গড়ায়...

কিন্তু এদের বেশিরভাগের শেষটাই আমাদের জানা। মেয়ে, তুমি তখন অসহায়, ভিকটিম সাজার কোন প্রয়াস চালিও না যেন!
কেন মেয়ে? তুমি তো স্বেচ্ছায় গিয়েছিলে তার সাথে? সে তো তোমাকে হাত-পা বেঁধে, ছুরি ঠেকিয়ে বা পিস্তল দেখিয়ে ধরে নিয়ে যায়নি! তুমি তো বান্ধবী, বোন, আত্মীয়াদের মধ্যে কিংবা নিজেরই প্রাক্তন প্রেমে এধরনের ঘটনার পরিণতি দেখেছো। তাহলে কেন সতর্ক হলে না? এ তোমার নিজেরই ভুল, আর মনে রেখো, একই ভুল বারবার করে যারা ভিন্ন ভিন্ন ফলাফল আশা করে, তারা নির্বোধ ছাড়া আর কিছুই নয়।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:০২
২৪টি মন্তব্য ২১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

সম্পর্ক

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪২


আমারা সম্পর্কে বাঁচি সম্পর্কে জড়িয়ে জীবন কে সুখ বা দুঃখে বিলীন করি । সম্পর্ক আছে বলে জীবনে এত গল্প সৃষ্টি হয় । কিন্তু
কিছু সম্পর্কে আপনি থাকতে চাইলেও থাকতে পারবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×