
ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীতে পড়াকালীন বিপাস চন্দ্র সাহা আমার সহপাঠি ছিল। বিপাস মালপাড়া থাকত, কদাচিৎ পড়া শিখে আসত। প্রায় প্রতি পিরিয়ডেই ওর মূত্র বিসর্জনের বাসনা হতো; স্যাররা বলতেন, “বাহানা না করে, বসে থাক”। বেত্রহস্ত ভীষন-দর্শন অথচ কোমল-হৃদয় পণ্ডিত স্যার ততটা আমলে নিতেন না। অগত্যা তাঁর ক্লাসে নিয়মিতভাবে শোনা যেত, “স্যার, পেচ্ছাপ কইরা আসি”। স্যারও নিয়মিতভাবে বলতেন, “যাও”। একদিন বললেন, “দাঁড়াও। পড়া শিখে এসছে? পড়া দিয়ে প্রস্রাব করতে যাও”।
- কোন পড়া স্যার?
- যেটা পড়া ছিল সেটা।
- পড়া শিখি নাই স্যার।
- আচ্ছা বস।
- স্যার, পেচ্ছাপ কইরা আসি?
- না, তুমি বসে থাক।
- স্যার, পেচ্ছাপ পইড়া যাইব।
- তুমি বেশি কথা বল, দাঁড়িয়ে থাক বেঞ্চের উপর।
- স্যার, পেচ্ছাপ বাইর হইয়া যাইব।
- বেয়াদপ, যা হয় হোক, তুমি পড়া পারলে যেতে পারবে, তার আগে নয়। পড়া মুখস্থ না হলে আজ তোমার চামড়া তুলে ফেলব।
বিপাস পড়া মুখস্খ করতে পারেনি, তবে ক্লাসে বেঞ্চের উপর দাঁড়িয়ে ঠিকঠিক প্রস্রাব করে দিয়েছিল। স্যারের বেতের ভয়ে হোক বা সত্যিসত্যিই প্রস্রাবের বেগ ছিল কী না সেটা ওই জানত। তবে বিপাসকে এর পর থেকে কোন স্যার 'না' বলেন নি এবং পণ্ডিত স্যারকেও এ ঘটনার পর থেকে আর কখনও ক্লাসে বেত আনতে দেখিনি।
কত বছর হয়ে গেছে, বিপাস তুই কোথায় আছিস কেমন আছিস জানি না! তুই ফিরে আয় দোস্ত, বেশ দুঃসময় যাচ্ছে... তুই পেচ্ছাপ করে ভাসিয়ে দে সব জঞ্জাল!
ছবি: সংগ্রহ
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:০৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



