somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সৎ সন্তানের দূর্গতি------------

২০ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১১:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


যেখানে স্টেপ মাদার আছে, সেখানে নতুন করে আর দোজখ দেখার দরকার নেই। কারন সৎ মা নিজের হাতে যে দোজখ তৈরি করেন তা পরকালের যে কোন দোজখের সমান।
সেই সৎ সন্তানের নাম আমি দিয়েছি ভাস্কর।তার বয়স এখন১৭।বয়স যখন ভাস্করের ৫, তখন তার মা তার বাবার সাথে ঝগড়া করে আত্মহত্যা করেন। বোঝাই যায় তিনি ভারী ইমোশনাল ছিলেন, তাই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় তার বাচ্চার ভবিষ্যতের কথা ভাবেননি। এর পর ভাস্করের দেখাশোনার দায়িত্বের জন্য তার বাবাকে তাদের আত্মিয়দের মধ্যে থেকে একজনের সাথে বিয়ে দেয়া হয়।এর পর শুরু হয় ভাস্করের নতুন ও নির্যাতিত জীবন।
ভাস্কর জন্ম থেকেই বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় ভুগছিল।শিশু অবস্থায় বিভিন্ন জটিল সমস্যার সমাধানে নিয়মিত ওষুধ খেতে হত, ফলস্বরূপ সে সামান্য এবনরমাল হয়েছে ।যদিও দীর্ঘসময় ধরে তার সাথে কথা না বললে তার এই এবনরমাল অবস্থাটা বোঝার উপায় নেই।
ভাস্করের নতুন মা তার দেখাশোনার জন্য এলেও বিয়ের পর তার আসল রুপ বের হয়ে যায়।ভাস্করকে সেই ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন মানসিক নির্যাতন( যেমন সে মারা গেলেই তার নতুন মা খুশী হন,পাগল বলে গালাগাল,আর কুকুরের মত দূরব্যাবহার তো এখনও আছে) ,কখনও কখনও শারীরিক নির্যাতন সইতে হয়েছে, যা এখনও হচ্ছে।
ভাস্করের একজন সৎ ভাই আছে, যার বয়স ১০।বলা যায় এই সৎ ভাই হলেন প্রিন্সের মত সকল সুবিধা ভোগী, আর ভাস্কর চাকরের মত করে ।ভাস্করের লেখাপড়ার তেমন কোন সুবিধা নেই। কোন মতে এইট পাস করলেই হল। ওইদিকে তার সৎ ভাই আড়ালে আবডালে নানান রকম সুস্বাদু খাবার দাবার থেকে শুরু করে সব কিছুই নতুন নতুন ও আভিজাত্যপূর্ণ জিনিসপত্র পায়।ভাস্করের সাথে ওরা কেউ তেমন কথা বলেনা, মেশেনা। কোথাও বেড়াতে গেলে তাকে নিয়ে যায়না। সে তখন একাএকা বাসায় থাকে।গরমের মধ্যে ঘুমালে ফ্যান পর্যন্ত অফ করে দেয়।সে যে কতদিন ভাল খাবার ভালভাবে খায়না সেই হিসেব তো নেইই। তার কোন সঙ্গী সাথী নেই। বাইরে খেলতে যাওয়া নিষেধ, কারন ভাস্করকে অনেকেই জিগ্যেস করে তার সৎ মায়ের অত্যাচার সম্বন্ধে, যা ওই সৎ মায়ের জন্য সম্মানহানীকর। বাসার যা কিছু হারাবে, নষ্ট হবে সব দোষ ভাস্করের। অথচ ওর মত ভদ্র আর নম্র ছেলে আমি দেখিনি।এত অত্যাচারের মধ্যে থেকেও তার কোন অভিযোগ, অনুযোগ নেই তার বাবার প্রতি। সে কোন অত্যাচারের কথা তার বাবাকে জানায়না। কারন সে জানে তার বাবা তার সৎ মায়ের কথাকে বেশি প্রাধান্য দেয়। যে কোন অত্যাচার ভাস্করের বাবার অনুপস্তিতিতে ঘটে,যেহেতু তার বাবা সকালে ৯টা থেকে ৬টা পর্যন্ত বাসায় থাকেনা।
ভাস্করের বাবা তার মিসেসএর জন্য তেমন কিছু করতে পারেননা,এর আগে যেহেতু একজন আত্মহত্যা করেছেন হয়তো এই ভয়ে।ভাস্করের বাবা ছাড়া এই দুনিয়ায় তার আর আপন কেউ নেই। এমন হৃদয়বিদারক অবস্থা আগে শুধু টিভিতে বা সিনেমায় দেখতাম।কিন্তু বাস্তবে এমন অবস্থা দেখব , তা কখনও আশা করিনি। ভাস্করের জন্য দোয়া ছাড়া আর কিছুই করার নেই। যদিও বলা আছে এতিমের জন্য যদি কেউ কিছু করেন বা তার মাথায় সামান্য একটু স্নেহের হাত বুলিয়ে দেন,তাতে আল্লাহ্‌ অনেক খুশী হন। এতিমদের প্রতি দায়িত্বও অনেক আছে আমাদের। কিন্তু এরকম সৎ মায়ের উপস্থিতিতে কোন মেহারবান লোকের পক্ষে কোন ভাল কিছু করা সম্ভব না।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১১:০২
৪টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×