বিকিনির ইতিহাস অত্যন্ত পরিবর্তনশীল একটি ইতিহাস। বিকিনি থাকার সবচেয়ে প্রাচীন প্রমাণটি পাওয়া যায় তাম্র যুগে। সেসময়ের দক্ষিণ আনাতোলিয়ার এক অংশে ক্যাটালাহোইউক নামক এক দেবীর পেছনে দুইপাশে দুইটি চিতা উপবিষ্ট ছিলো যাদের পরনের পোষাক ছিলো বর্তমান কালের বিকিনির সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। এছাড়া খ্রিস্টপূর্ব ১৪০০ বছর পূর্বের কিছু গ্রিক চিত্রকর্মে অ্যাথলেটিক কাজকর্মে মেয়েদের দুই প্রস্থ বিশিষ্ট পোষাক পরিধান করতে দেখা গেছে। প্রাচীন গ্রিসের কর্মজীবি মহিলারা ম্যাসটোডেটন (mastodeton) বা অ্যাপোডেসমস (apodesmos) নামক বুকে ফিতা সদৃশ কাপড় পরিধান করতেন, যাকে মধ্যযুগের অন্তর্বাস হিসেবে ধরা হয়। যখন প্রাচীন গ্রিসের পুরুষের পেরিজোমা (perizoma) (একপ্রকার মোটা প্রান্তভাগ বিশিষ্ট ব্রিফ) পরিধান করা ছেড়ে দেয়, তখন মহিলা কসরৎবাজরা এটি পরা শুরু করে। খ্রিস্টপূর্ব ২৮৬-৩০৫ অব্দে সিসিলির ভিলা রোমানা দেল কাসালের মেঝের মোজাইকের চিত্রকর্মে বিকিনি পরিহিতা মেয়েদের ছবি দেখা যায়। এরকম দশটি বিকিনি পরিহিতার একটি ছবির নাম ছিলো ‘বিকিনি মেয়েরা’। এই মোজাইকের মডেলটি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশিবার নকলকৃত মোজাইকের মডেল, যার রঙিন টাইলের প্রায় ৩.৭ কোটি। প্রত্নতত্ত্ববিদরা পম্পেইয়ে রোমান দেবী ভেনাসের বিকিনি পরিহিত থাকার প্রমাণ খুঁজে পেয়েছেন। ভেনাসের একটি মূর্তিতে এই প্রমাণ পাওয়া যায়।
১৯০৭-এর দিকে পুনরায় আধুনিক বিকিনির প্রচলন ঘটতে শুরু করে, যখন অস্ট্রেলীয় সাঁতারু অ্যানেট কিলারম্যান বোস্টোনে একপ্রস্থ কাপড় বিশিষ্ট সাঁতারের পোষাক পরার অপরাধে গ্রেফতার হন। পরবর্তীতে ১৯১০ সালে মেয়েদের এ ধরনের সাঁতারের পোষাক জনসম্মুখে পরার স্বীকৃতি পায়। তাঁর সেই বিকিনি পরিহিতা ছবির প্রকাশনা নিয়ে এসকোয়ার ম্যাগাজিন ও ইউনাইটেড স্টেটস পোস্টমাস্টার জেনারেলের মধ্যে আইনি লড়াই চলে ১৯৪৩ সাল পর্যন্ত। ১৯১৩ সালে অলিম্পিকে সাঁতারের ইভেন্টর জন্য ফ্যাশন ডিজাইনার কার্ল জ্যান্টজেন প্রথমবারের মতো সাঁতারের জন্য দুই-প্রস্থ বিশিষ্ট পোষাক তৈরি করেন। এটির নিম্নাংশে ছিলো আটোসাটো একপ্রস্থ শর্টস, এবং উর্দ্ধাঙ্গ আবরণী হিসেবে হাতাকাটা টপ। নতুন ধরনের বস্ত্র তৈরির উপাদান লাস্টেক্স ও নাইলন আবিষ্কৃত হবার পর, ১৯৩৪ সালের দিকে সাঁতারের পোষাক শরীরের সাথে আরো বেশি লেগে থাকতে শরু করে, এবং ট্যানিংয়ের সুবিধার্থে কাঁধে স্ট্যাপের প্রচলন শুরু হয়।
প্রাচীন রোমান নারীদের মাঝেও বিকিনি পরিহিত অবস্থায় খেলাধূলা করার প্রমাণ পাওয়া যায়, যা ছিলো অনেকটা হ্যান্ডবলের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
৪টি মন্তব্য ১টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন্যায়ের বিচার হবে একদিন।

ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন
আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন
আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন
J K and Our liberation war১৯৭১


জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন
এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ
এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ
২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।