তখন বর্ষাকাল। আমাদের গ্রামের রাস্তার অবস্থা ভালো নয়। বর্ষার শুরুতেই তলিয়ে যেত পানির নিচে। ফলে নৌকা ছাড়া যোগাযোগের বিকল্প চিন্তাই করা যেত না।
রমযান মাস, আমি আর আব্বা তারাবীহ নামাজ পড়ে নৌকায় উঠলাম। মসজিদ থেকে বাড়ি ফিরছি। পূর্ণিমা রাত।
ধবধবে সাদা পূর্ণিমার আলোয় নদীর পানি যেন ঝলমল করছে! নদীর বুকে ধমকা হাওয়া ঢেউ খেলে যাচ্ছে।
আব্বা নৌকার মাঝখানটায় বসে আছে।
আর আমি নৌকা চালাচ্ছি।
বাতাসে নৌকা ঠিক রাখতে পারছিলাম না! বার বার এদিক ওদিক ঘুরে যাচ্ছিল দেখে আব্বা বলল___
"দে আমার কাছে বৈঠাটা। তুই পারবি না"
আমি বললাম " না, পারুম, আপনি বসে থাকেন"
আব্বা বললো "তাইলে ঠিক কইরা বা (চালা)"।
আমি খুব সাবধানে নৌকাটা সোজা রেখে চালানোর চেষ্টা করছি।
নদীর ঢেউ আর ধমকা বাতাস ঠেলে এগুচ্ছে আমাদের নাউ (নৌকা)।
কি যে ভালো লাগছে...........
নদীর বুকে জোছনার জোয়ার!
পানি নাচে বাতাসের হু হু গানে!
আমরা বাপ-ছেলে জোছনা উপভোগ করছি! এরচেয়ে পরম সুখ আর কি হতে পারে!
বাবাকে হারিয়েছি ২০০৮এ।
এর পর থেকে আর এভাবে জোছনা উপভোগ করা হয়না।এখনো নদীতে জোয়ার আসে, জোছনার ঢেউএ ভেসে যায় নদী। জোছনার দিকে থাকিয়ে অশ্রু ধরে রাখতে পারিনা। জোছনাটা খুব কাঁদায়!
বাবা জোছনার আলোয় তোমার ছেলের চোখ ভিজে যাচ্ছে, তুমি কি দেখতে পাচ্ছো?
হে খোদা, দয়াময় পরোয়ারদেগার!
আমার বাবার সকল গোনাহ ক্ষমা করো কুদরতে তোমার।
হে আল্লাহ, আমার আব্বাকে তুমি জান্নাত বাসী করো। (আমিন)

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


