শিয়ারা বিশ্বাস করে থাকে যে, কবর পুজা, মাজারের পুজো, অলি আওলিয়াদের কাছে দুয়া করা, তাদের কাছে বিপদে সাহায্য চাওয়া যায়েজ! (নাউযুবিল্লাহ)। ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্থানে কবর মাজার পুজোর যেই শিরকি চর্চার প্রচলন চালু রয়েছে সেটা মূলত এই পারস্য ইরানের শিয়াদের কাছ থেকেই এসেছে। তাছাড়া কতিপয় মোঘল বাদশাহও এই উপমহাদেশে ইসলামের নামে এসব কবর, মাজার পুজো, পীর আওলিয়ায়ার পুজো আর হিন্দু ধর্মের সাথে ইসলামকে মিশিয়ে দীন-ই-ইলাহী নামক খিচুড়ী মার্কা ধর্ম প্রচারে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছিলেন।
পাঁচটা নীতিতে মোটাদাগে শিয়ারা একমত। তবে, শিয়াদের প্রচুর উপদলও আছে। ইসলামি উপদল চিন্তা পাঠের প্রাচীন বইগুলোতে শিয়াদের এমন অনেক উপদলের কথা উল্লেখ পাওয়া যায়, যাদের অস্তিত্ব এখন আর নেই। এখন যে দলগুলো আছে, তাদের মধ্যেও বিপুল মতভেদ আছে। তাই একাট্টা শিয়া ধারণা পাঠ করা বেশ জটিল। সুন্নিদের মধ্যে আমরা দেখি, আকিদা অনেকটা টেক্সটকেন্দ্রিক আর শিয়াদের আকিদা ইতিহাস-কেন্দ্রিক।শিয়াদের যে দল যেভাবে ইতিহাস ব্যাখ্যা করে, সেটাই তার আকিদা।
১)আলি রাঃকে খেলাফতের প্রথম ও একমাত্র উত্তরাধিকারী মনে করা
২) আহলে বাইতকে ধর্মীয় অথরিটি মনে করা। তারা যা বলেছেন, তাকে সাধারণ উলামা বা মুজতাহিদের মত মনে না করে, ধর্মীয় অথরিটি হবার কারণে পালন করা জরুরি মনে করে শিয়ারা। সুন্নিরা হাদিস বলতে যা বুঝে, শিয়াদের কাছে তার সংজ্ঞা আরও প্রসারিত। রাসুলের সংক্রান্ত কথা বা কাজেই তাদের কাছে হাদিস সীমাবদ্ধ নয়। শিয়া ইমামদের কথাও শিয়াদের কাছে হাদিসের অন্তর্ভুক্ত।
৩) আহলে বাইতের সাথে গভীর আবেগের সম্পর্ক, তাদের নিদর্শনকে বারাকাত হিসেবে গ্রহণ। সুন্নিরা একে বাড়াবাড়ি মনে করে
৪) আহলে বাইতের বিরুদ্ধে যে রাজনৈতিক জুলুম হয়েছে, এর স্মৃতিচারণ।বাস্তবে কি তাই হয়েছে???
৫) সাহাবাদের বিরুদ্ধে
নবী কারিম সঃ অসিয়তের বিরুদ্ধাচারণের অপবাদ।
শিয়াদের বর্তমান উপদল
বর্তমান শিয়াদের আমরা তিনভাগে ভাগ করতে পারি, জাইদিয়াহ, ইসমাইলিয়া ও জা’ফরিয়াহ অথবা ভিন্নভাবে বললে, খামসিয়াহ, সাবইয়াহ ও ইছনা আশারিয়াহ।
(১)জাইদিয়াহ।এদের সর্বশেষ ইমাম, ইমাম জায়েদ। ইমাম মোট পাঁচজন। তাই তাদেরকে জাইদিয়াহ ও খামসিয়াহ বা পাচজনীয়ও বলে।এরা সবচেয়ে সুন্নিদের নিকটবর্তী দল। রাজনীতি এদের কাছে মূল আকিদার অংশ নয়, সুন্নিদের মতই
২)ইসমাইলিয়াহ। এদের সর্বশেষ ইমাম, ইমাম ইসমাইল। ইমাম মোট সাতজন। তাই তাদেরকে ইসমাইলিয়া ও সাবইয়াহ বা সাতজনীয়ও বলে।
৩)ইমামিয়াহ ইছনা আশারিয়াহ। তাদের কাছে ইমাম বারজন, সর্বশেষ ইমাম_প্রতিক্ষিত ইমাম, ইমাম মাহদি। যিনি শেষ যুগে আসবেন বলে তারা বিশ্বাস করে।ইমামিয়াদের মধ্যেও তিনটা ভাগ আছে_ মূলবাদী, বর্ণনাবাদী ও শায়খবাদী।
মূলবাদীরা অনেকটা বুদ্ধিবৃত্তিক ব্যাখ্যা গ্রহণ করে, শিয়াদের যে ঐতিহাসিক কুসংস্কার-বর্ণনা আছে, সেগুলকে নাকচ করে। কোরআন ও বুদ্ধির উপর বেশী নির্ভর করে। কিছুটা প্রাচীন মুতাজিলাদের মত এদের চিন্তা-ধারা।এখন এদের প্রাধান্যই বেশী।
বর্ণনাবাদীরা কোরআন বা সুন্নাহ ব্যবহার করেনা। তারা মনে করে, একমাত্র ইমামরাই টেক্সট বুঝতে সক্ষম। ধর্মীয় ক্ষেত্রে বুদ্ধির ব্যবহারের অনুমতি খুব কম দেয়। এমন অনেক কুসংস্কারে বিশ্বাস করে, যাকে অন্য শিয়ারাও নাকচ করে। তবে তাদের প্রভাব ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে।
শায়খবাদীরা নতুন ধারা ও তাদের সংখ্যাও খুব কম।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১২:৩৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



