অনেকদিন পর মনে হল আমার প্রিয় ক্যাম্পাসটা থেকে একটু ঘুরে আসি। আবার যেতে ইচ্ছেও করছে না। কেমন জানি দোটানায় ভুগছি। অথচ কত প্রিয় ছিল এই ক্যাম্পাস আমার কাছে। সাড়ে চার বছরের অনেক সুখ স্মৃতি আছে এই ছোট্ট ক্যাম্পাসে। নিয়ম অনুযায়ী এখানে পাঁচ বছর থাকার কথার ছিল। কিন্তু শেষের দিকে এসে ‘ঐ ঘটনা’ টা ঘটল তাই আর থাকা হল না। মনে পড়ে আমি যে রুমটাতে থাকতাম আগে। বঙ্গবন্ধু হলের ২০৯ নাম্বার রুম। ঐ রুমটাতেই ‘ঘটনাটা’ ঘটেছিল। অনেকদিন পেরিয়ে গেছে তারপর। অনেকেই হয়ত ভুলে গেছে ‘ঘটনাটা’।
তারপর একবার গিয়েছিলাম ক্যাম্পাসে। সবার অলক্ষে চুপ করে ঢুকে পরেছিলাম আমার রুমটায়। অবশ্য এখন আর আমাকে পালিয়ে ঢুকতে হয়না। আগের রুমমেটরা সবাই চলে গেছে। সেখানে নতুন ছেলেরা উঠেছে। একটা রাত ছিলামও ওখানে। আমার বেডে যে ছেলেটা থাকে আমারই মত প্রায়। সারারাত ফোনে কথা বলছিল। আমি শুধু টেবিলের উপর পা তুলে বসে ওদের প্রেমালাপ শুনছিলাম। ভাবছেন আচ্ছা পাজি তো আমি। মানুষের প্রেমালাপ শুনি। আসলে ‘ঐ ঘটনাটার’ পর থেকে আমাকে আর নৈতিকতা মেনে চলতে হয়না। তবে ছেলেটার আবেগ আমাকে ভয় পাইয়ে দিয়েছিল। পাছে ও আমার মত কস্ত পায়। সতর্ক করার চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু লাভ হয়নি। ও কেন জানি আমার কথা শুনতে পারে না। ওর মনের কথাগুলা আমি বুঝতে পেরেছিলাম তাই যত ভয় হচ্ছিলো। ‘ঐ ঘটনাটার’ আগে কারো মনের কথা বুঝতে পারতাম না। এখন পারি আর ভাবি কেন যে আগে বুঝতে পারতাম না। ভুল মানুষটাকে পাগলের মত ভালোবাসার আগে যদি একবার তার নোংরা মনের কথাগুলো বুঝতে পারতাম!
মাঝে মাঝে খুব বাড়িতে যেতে ইচ্ছে করে। আমাকে নিতে যেদিন আব্বু ক্যাম্পাসে এসেছিলেন সেদিন আম্মু বারবার শুধু মূর্ছা যাচ্ছিলেন। ঐ সাড়ে চার বছরে যতবার বাড়িতে গিয়েছি ততবারই শুধু আনন্দ দেখেছি সবার মাঝে। বাসার গেটে যেতেই ছোট বোনটা দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরে বলত ‘কেমন আছিস ভাইয়া?’। সেবারও জড়িয়ে ধরেছিল কিন্তু কেমন আছি তা জিজ্ঞাসা করেনি। সেই যে অভিমান করেছে এখনও প্রর্যন্ত কারো সাথে কথা বলে না ভাল মত। ওদের জন্য খুব কষ্ট হয়। তবে তার চেয়েও বেশী কষ্ট হয় নিজের জন্য। ইস কেন যে সেদিন একজন ভুল মানুষের দেয়া কষ্ট সহ্য করতে না পেরে অতগুলা ঘুমের ওষুধ খেয়েছিলাম!!!

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


