দেশেরে প্রত্যন্ত একটা গ্রাম থেকে উচ্চশিক্ষার জন্য ঢাকায় এসেছে রাহাত। তেমন কাউকে চিনে না এই শহরে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েই নিজের পায়ে দাঁড়ানোর তীব্র প্রয়োজনীয়তা অনুভব করল রাহাত। কৃষক বাবা অনেক কষ্টে প্রথম কয়েকমাসের খরচের টাকা দিলেও ক্রমেই তা অসম্ভব হয়ে পড়ছে। একটা টিউশন পাওয়ার জন্য যখন হন্যে হয়ে ঘুরছিল ঠিক তখনই পত্রিকায় একটা বিজ্ঞাপন চোখে পরে। “গৃহ শিক্ষক দিচ্ছি/নিচ্ছি”। দেরি না করে তাড়াতাড়ি তাদের সাথে যোগাযোগ করে রাহাত। মহাখালীর অফিসে যাওয়ার পড় লোভনীয় একটা প্রস্তাবও পেয়ে যায়। ক্লাস নাইন ও টেনের দুজনকে পড়াতে হবে। তের হাজার টাকা দিবে। তবে শর্ত হল প্রথম মাসের অর্ধেক টাকা ওনাদের দিতে হবে। দ্বিতীয় মাস থেকে সব টাকা ও পাবে। তবে সব কিছুর শুরুতে ছয়শত টাকা দিয়ে ওদের সদস্য হতে হবে। গ্রামে থাকতে লোকমুখে শুনছিল ঢাকা শহরে অনেক প্রতারনা হয়। একটু খটকা লাগলেও টিউশনটা খুব দরকার ছিল রাহাতের। মাসটা কিভাবে চলবে না ভেবেই অনেক কষ্টের ছয়শত টাকা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে ফেলে। একটা সদস্য কার্ড আর একটা ফোন নাম্বার দেয়া হয় ওকে। রাতে কথাও হয় কথিত ছাত্রের বাবার সাথে। রাহাতকে বলা হয় ওনার স্ত্রী অসুস্থ। তাই সামনের সপ্তাহ থেকে পড়াতে হবে। কিন্তু সামনের সপ্তাহে ফোন করে আর পায়না ঐ নাম্বারে। বন্ধ থাকে বিজ্ঞাপনে দেয়া নাম্বারটাও।
উপরের গল্পটা কাল্পনিক। কিন্তু এই রকম ঘটনা অহরহ ঘটছে প্রতিদিন। প্রতিদিনই কোন না কোন রাহাত শিকার হচ্ছে এই প্রতারণার। গত ৬ই জুন “বাংলাদেশ প্রতিদিন” পত্রিকায় এই রকম একটা বিজ্ঞাপন দেখে গিয়েছিলাম সেখানে। তারপরের ঘটনা ঐ গল্পের সাথে মিল আছে। রেজিস্ট্রেশনের পরে একটা সদস্য কার্ড ও একটা নাম্বার দেয়া হয় এবং বলা হয় এক সপ্তাহ পরে যোগাযোগ করার জন্য। তারপর যথারীতি নাম্বার বন্ধ করে উধাও। আমি আমার টাকা ফেরত চাই না। কিন্তু আমি চাই এই প্রতারণা বন্ধ হোক। আমার মত মধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীগুলা যেন আর না হারায় কষ্টের ছয়শত টাকা।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


