শঙ্খচিল নাম দিলাম তোমার,
এবার বৈশাখে রৌদ্রবাগানে সমুদ্র বানাবো, তুমি এসে দিগন্ত পাহারা দেবে।
ক্ষণজন্মা নদীতীর হতে কিছু কাশফুল এনে দেবো সেগুলো সঙ্গে থাকবে; আমার যখন পলেস্তারা ক্ষীন হতে হতে মৃয়মাণ অভিমান খসে যাবে তখন আমি কাশফুলের আশ্রয় চেয়ে নেবো..
তুমি অভিমানি ঈশ্বরী দেবী;
আমায় কিছু অভিমান ভিক্ষে দাও।
বেদনার তীর্থস্থান ক্ষয়ে এসে মোম জ্বালিয়েছি জোনাকীর হতে দেয়াশলাই কর্জ করে। কাঠি কয়েকটা ভিজে আছে ভিমরুলের মুখ নিঃসৃত মধুতে, আগুন জ্বালো; মধুতে আগুন লাগাও।
শিরিষ কাগজে ঘষে পিত্রাজের নৌকা মসৃণ করেছি, তুমি বসো।
ধানশালিকের কাছ থেকে চেয়ে এনেছি কাঠঠোকরার মন্ত্রণা; তোমার নাক মুখ বুলিয়ে খুসসুটি দেবো; দেখবো গভীর জলে মাঝ বিলেতে তুমি লজ্জ্বা কিভাবে লুকাও।
বক ছানাটি কোলে নিয়ে বসো, নাও ঢোলাবো; পানি ছিটাবো।
আমার মন না'য়ে ছই তুলিনি;
ঈষাণের মেঘ যেদিন নেমন্তন্ন নিয়েছিল সেদিনি বুঝেছি আধারে বিজলি বাতি জ্বলবে না আজ, পৃথিবী হতে সমস্ত আলোকে বিদায় দিলাম; স্বপ্ন নিলাম পাহারায় দুজনের, বৈঠা বাইবে স্বপ্নের সাড়ে সাতশ কোটি পায়েক পেয়াদা; আজ যে স্বপ্ন জন্ম নিয়েছে সেগুলোও দাঁড় টানার কাজে লাগানো যেতে পারে; বিল পেরিয়ে যদি নদীতে চলে যায় নৌকো তবে স্বপ্নগুলো তীর ঘেষে দ্বার টানবে।
আজ অভিমানে পুড়ছে নদী।
একদিন রোদ শুকাবে, ঘাম উড়ে যাবে খেজুরের হলুদ খোলস ছুঁয়ে; মিঠে আলাপনের অভাব দেখা দেবে খাঁজকাটা দেহের ভাজে। কিছু ভাতশালিক জলপাই ডালে বসে ছোট ছোট ফুলের রহস্য দেখবে, পথিক চলে যাবে পথের কাদামাটি জলে ছাপ ফেলে। অগ্রাহায়ণ মাতাল হলে পাখি উড়ে যাবে, জলপাইয়ের খসখসে পাতায় ঝড় এলে কোমলতায় স্থির জড়তার প্রভাবে ছোট ফুলগুলোও ঝরে যাবে। উঁচু পাড় হতে নিচে নেমে যাবার রাস্তায় দুলবে কলমিলতা।
কান্নার আওয়াজ ভেসে আসছে দূর পথ পথিকের কানে, সব পথিক ঘরে ফিরে না, একজন দাঁড়িয়েই থাকে হাত বাড়িয়ে। অজান্তেই ঘাসের মখমলে ভেজা পা ছুঁয়ে একজন বরাবরই নিচে নেমে যায়, নিজেরে শুধায় কি করে এইসব অদৃশ্যে অনুভূতি লুকানো থাকে, নিজস্ব স্বরে বিকাল কাঁদে অচেনা মুখের ইশারায়। না দেখে জমাটবদ্ধ প্রেম ঘনিয়ে আসা পথরুদ্ধ দ্বারে কি করে একলা বাচে নীল ছোঁয়া স্বপ্ন; হয়ত আকাশ অপেক্ষায় থাকেনা শূন্যের; কাছে ডেকে নেয় মেঘবালিকা। সব কিছুর উপারে কিছু লুকিয়ে থাকে যেখানে স্বাভাবিক কর্ণিয়ার কাছাকাছি দূরত্বে সবকিছু ঝাপসা মনে হয় সব।
একটি সিঁড়ি বেয়ে একা হেঁটে যায় একলা পথিক, পথ সাথে সৃষ্টি হয় ইতিহাস। ঘুম থেকে জেগে উঠার মাঝে একটি হাত স্পর্শকাতরতায় কল্পনার সুখ রোদটির নেই। রোদের শুকিয়ে যাওয়াই নিয়ম, ফুলেদের ঝরে যাওয়া ভবিতব্যের উপহার। আর পথিকের হেঁটে চলাই সৃষ্টির সংবিধান।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই নভেম্বর, ২০১২ রাত ৮:১৯