somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সব মুসলমান তো খারাপ নয়!

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সংখ্যালঘুরা যদি নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে মাঠে নামে, তাহলে তাদের পক্ষে অনেক মুসলমানকেও পাওয়া যাবে।’

উপরের কথাগুলো এক বাংলাদেশি অধ্যাপকের। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাডজাঙ্কট ফ্যাকাল্টি হিসেবে তিনি শিক্ষকতা করছেন। গত ২৬ জানুয়ারি ঢাকার একটি প্রভাবশালী দৈনিক পত্রিকার সম্পাদকীয় পাতায় ছাপা হওয়া তার একটি সাক্ষাৎকারে তিনি কথাগুলো বলেছেন। তার উচ্চারিত এ বাক্যটি সাধারণভাবে মুসলমানদের প্রশংসা, নাকি নিন্দার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে -প্রথম পর্যায়ে বোঝা যায়নি। এরপরেই যেটা স্পষ্ট হয় তা হলো ঢালাওভাবে এখানে মুসলমানদেরকে ‘সাম্প্রদায়িক’ অর্থে খারাপ হিসেবে চিহ্নিত করার একটি উগ্র চেষ্টা বিদ্যমান। ‘সব মুসলমান তো খারাপ নয়’ -এ কথার অর্থ কি এটাই হয় না যে, সাধারণভাবে মুসলমানরা খারাপ হলেও সবাই তো আর খারাপ নয়; কেউ কেউ ভালো। অর্থাৎ সব খারাপের মধ্যেও ব্যতিক্রম কিছু ভালো আছে।

এখন যদি কেউ বলেন, সব বামপন্থী সম্পাদক তো আর ‘র’-এর এজেন্ট নন। তাদের কেউ কেউ তো বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্সি না নিয়েও দেশে সাংবাদিকতা করেন, তাহলে কথাটির অর্থ কী দাঁড়ায়? একইভাবে কেউ যদি বলেন, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষকই তো আর চরিত্রহীন নন, তাহলে তার মানে কী হয়? আসলে উপরের বাক্যটির মানে তারা খুব ভালোভাবেই জানেন এবং জানেন ওই পত্রিকার কর্তৃপক্ষও। তারপরও জোর করে এবং ঢালাওভাবে মুসলমানদের প্রতি সাম্প্রদায়িক বিষোদগারমূলক ওই বাক্যটি অসম্পাদিত রেখেই ছেপে দেওয়া হয়েছে। এটিকে আপনি কী বলবেন? সুস্থ বুদ্ধিবৃত্তি কিংবা দায়িত্বশীল সাংবাদিকতা?

তবে ওই সাক্ষাৎকারের এটিই একমাত্র দৃষ্টিটানা বিষয় ছিল না; বরং তাতে বাংলাদেশের হিন্দুদের পথে নেমে সংঘবদ্ধ প্রতিবাদ করতে বার বার উস্কানিও দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে-হিন্দুরা যদি নিজেরা সংগঠিত হয়, তাহলে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে, আরো বলা হয়েছে-তাদের নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। ‘করতে হবে’, ‘দিতে হবে’ - জাতীয় কথা তাদের কাছ থেকে কম শুনি।’ এমনকি এ পর্যন্তও বলা হয়েছে- ‘এই অঞ্চলে মুসলমান শাসকদের আমলে ধর্মান্তরকরণের ইতিহাস সব সময় শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে, তা তো নয়। অনেকে বলে, এখানে তরবারির জোরে ধর্মান্তর হয়েছে, এ কথা পুরোপুরি যেমন ঠিক না, তেমনি একদম ভুলও নয়।’

সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ‘নিরাপত্তা’ নিয়ে কথা বলা ছিল ওই সাক্ষাৎকারের পোশাকি আয়োজন। কিন্তু তাতে বেশিরভাগ কথাই বলা হয়েছে এদেশের মুসলমানদের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের বিরুদ্ধে। সাক্ষাৎকারটিতে হিন্দুদেরকে বার বার ‘প্রতিবাদপূর্ণ’, ‘প্রতিরোধমূলক’, ‘সংঘবদ্ধ’ ও ‘না-ছোড়’ একটি দ্বন্দ্বে নামতে আহবান জানানো হয়েছে। পারস্পরিক আস্থা ও শ্রদ্ধার পরিবর্তে জাগিয়ে তোলা হয়েছে এক ধরনের প্রতিশোধস্পৃহা। চাঙ্গা করা হয়েছে সংখ্যালঘুর মনের বিচ্ছিন্ন ইগো ও কমপ্লেক্স। সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন জেগেছে, এটা কি এ দেশে নতুন কোনো সাম্প্রদায়িক দাগ ও ক্ষত সৃষ্টির অশুভ পরিকল্পনা কিংবা মহড়ার সূচনা-পদক্ষেপ? ইসলামের ইতিহাস কিংবা সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পাঠ বিষয়ে একজন অর্ধশিক্ষিত ও অপরিচিত অধ্যাপকের সাক্ষাৎকার এত বড় পরিসরে ওই পত্রিকাটিতে ছাপানোর তাৎপর্য নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ওই প্রভাবশালী পত্রিকাটির সামনেও কি তাহলে সাম্প্রদায়িক হানাহানি সৃষ্টির ঘোর কালো নতুন কোনো ছক তৈরি হয়ে আছে! আল্লাহ ভালো জানেন।

বাস্তবে এমন কিছু হলে অবশ্য বড়ই দুশ্চিন্তার কথা। কারণ গণমাধ্যমে বসবাসকারী বিদ্বেষের কারিগররা ইতোমধ্যেই বহু সর্বনাশ সম্পন্ন করেছেন। সব চক্রান্ত থেকে আমরা আল্লাহ তাআলার কাছে পানাহ চাই।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

হামাস বিজয় উৎসব শুরু করেছে, ইসরায়েল বলছে, "না"

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:০৮



গতকাল অবধি হামাস যুদ্ধবিরতী মেনে নেয়নি; আজ সকালে রাফাতে কয়েকটা বোমা পড়েছে ও মানুষ উত্তর পশ্চিম দিকে পালাচ্ছে। আজকে , জেরুসালেম সময় সন্ধ্যা ৮:০০টার দিকে হামাস ঘোষণা করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ২:৩১


আশেপাশের কেউই টের পাইনি
খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে ।

প্রথমবার যখন খুন হলাম
সেই কি কষ্ট!
সেই কষ্ট একবারের জন্যও ভুলতে পারিনি এখনো।

ছয় বছর বয়সে মহল্লায় চড়ুইভাতি খেলতে গিয়ে প্রায় দ্বিগুন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×