somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আল্লাহকে কে সৃষ্টি করেছে? – এ বিষয়ে আল্লাহ কি বলেন?

১৮ ই মার্চ, ২০২৩ সকাল ৭:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




সূরাঃ ৫৯ হাসর, ২৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৪। তিনিই আল্লাহ, সৃষ্টিকর্তা, উদ্ভাবক, রূপদাতা, সকল উত্তম নাম তাঁর। আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘেষণা করে। তিনি পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়।

সহিহ মুসলিম, ২৪৯ নং হাদিসের (কিতাবুল ঈমান) অনুবাদ-
২৪৯।হযরত আবু হুরায়রা (রা.) কর্তৃক বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমাদের কাছে লোকেরা প্রতিটি বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে থাকবে। শেষ পর্যন্ত এও বলবে যে, আল্লাহ প্রত্যেকটি বস্তু সৃষ্টি করেছেন, কিন্তু তাঁকে সৃষ্টি করেছে কে?

সহিহ মুসলিম, ২৫০ নং হাদিসের (কিতাবুল ঈমান) অনুবাদ-
২৫০। হযরত আনাস ইবনে মালিক (রা.)কর্তৃক বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, মহান পরাক্রমশালী আল্লাহ বলেন, তোমার উম্মত হঠাৎ এ ধরনের কথা বলবে। যেমন তারা বলবে, আল্লাহ প্রত্যেকটি বস্তুকে সৃষ্টি করেছেন, কিন্তু তাঁকে কে সৃষ্টি করেছে?

* আল্লাহ সকল কিছুর সৃষ্টিকর্তা কিন্তু আল্লাহকে কে সৃষ্টি করেছে? মানুষ এমন প্রশ্ন করবে বলে রাসূল (সা.) বলেছেন। প্রশ্নটি আল্লাহ সংক্রান্ত। সুতরাং এর উত্তর আল্লাহ প্রদান করার কথা। তো এমন প্রশ্নের উত্তরে আল্লাহ কি বললেন?

সূরাঃ ১১২ ইখলাস, ১ নং আয়াতের অনুবাদ-
১। বল, তিনি আল্লাহ, এক-অদ্বিতীয়।

* আল্লাহ বলেছেন, তিনি এক। তারমানে তিনি স্বীকার করলেন তাঁর পূর্বে শূণ্য ছিল। কারণ আল্লাহ যে আরবী ভাষায় কোরআন নাযিল করেছেন সে আরবী ভাষা; এমনকি অন্য সব ভাষাতেও শূণ্যের অবস্থান একের পূর্বে। আল্লাহকে কেউ সৃষ্টি করতে হলে তাকে আল্লাহর পূর্বে থাকতে হবে। আল্লাহর পূর্বে শূণ্য থাকায় এটা সাব্যস্ত হলো যে শূণ্য আল্লাহকে সৃষ্টি করেছে। শূণ্য আল্লাহকে সৃষ্টি করেছে তাহলে শূণ্যকে কে সৃষ্টি করেছে?

শূণ্য মানে কিছুই না হওয়ায় এর সৃষ্টিকর্তা থাকার দরকার নেই। সুতরাং একথা সাব্যস্ত হলো যে শূণ্য আল্লাহকে সৃষ্টি করেছে এবং আল্লাহ সব কিছু সৃষ্টি করেছেন। আর শূণ্য আল্লাহকে সৃষ্টি করেছে; একথার মানে হলো আল্লাহকে কেউ সৃষ্টি করেনি। কারণ শূণ্য মানে কিছুই না। আমরা কথার মানের দিকে না গিয়ে স্বাভাবিক কথায় থাকছি। এখন প্রশ্ন হলো শূণ্য আল্লাহকে সৃষ্টি করলে অন্য সব কিছু শূণ্য সৃষ্টি করলো না কেন? সেসব আবার আল্লাহকে সৃষ্টি করতে হলো কেন?

সূরাঃ ৫৫ রাহমান, ২৬ নং ও ২৭ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৬। তাতে সব বিলিন হয়
২৭। আর বাকী থাকে তোমার প্রতিপালকের সত্তা, যিনি মহিমাময়, মহানুভব।

* আল্লাহ বলেছেন, তাতে সব বিলিন হয়। আল্লাহ তাতে বলার কারণ উহা শূণ্য। আর শূণ্য মানে কিছুই না। কিছুই না এর আবার কি নাম? সেজন্য আল্লাহ কোন নাম না বলে তাতে বলেছেন। তবে মানুষ কিছুই না এর নাম দিয়েছে শূণ্য।

অন্য কোন কারণ না থাকলে কোন কিছু স্থানের দিকে ধাবিত হয়। অথবা স্থান এর কাছাকাছি কোন জিনিসকে নিজের দিকে টানে। স্থান যদি এক দিকে থাকে তাহলে স্থান কোন কিছুকে এক দিকে টানে এবং তাতে কোন কিছু অক্ষত থাকে। কিন্তু স্থান যদি সব দিকে থাকে এবং উহা যদি কোন কিছুকে সব দিকে টানে তাহলে এমন স্থানে কোন কিছু অক্ষত না থেকে ভেঙ্গে যায়। অত:পর তা ভেঙ্গে যেতে যেতে বিলিন হয়।শূণ্যর স্থান এক দিকে নয়। শূণ্যের স্থান সব দিকে। সেজন্য তাতে সব কিছু ভেঙ্গে গিয়ে বিলিন হয়। ভেঙ্গে বিলিন হতে গিয়ে পদার্থ এর পরমাণু থেকে ভেঙ্গে ইলেক্ট্রন পোট্রন ও নিউট্রন নামক শক্তিতে পরিণত হয়। এভাবে শূণ্যতে সব কিছু শক্তিতে পরিণত হয়ে সর্ব শক্তিমাণ হওয়ায় সব কিছু বিলিন হয়ে তিনি বাকি থাকলেন।

সূরাঃ ১১২ ইখলাস, ২ নং আয়াতের অনুবাদ-
২। আল্লাহ নিরভাব।

* শূণ্যের সীমা নেই বিধায় শূণ্যের সৃষ্টি আল্লাহ অসীম হলেন। সুতরাং আল্লাহর সত্তায় সব কিছু অসীম মাত্রায় বিদ্যমাণ। তাঁর সত্তায় সকল পদার্থ শক্তি রূপে অসীম মাত্রায় বিদ্যমাণ এবং তাঁর সত্তায় সকল শক্তি অসীম মাত্রায় বিদ্যমাণ। সেজন্য তিনি নিরভাব।

সূরাঃ ৩৬ ইয়াসীন, ৪০ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪০। সূর্য়ের পক্ষে সম্ভব নয় চন্দ্রের নাগাল পাওয়া। রাতের পক্ষে সম্ভব নয় দিনকে অতিক্রম করা। আর নভ:মন্ডলে প্রত্যেতে নিজ নিজ কক্ষপথে পরিভ্রমণ করে।

* শূণ্য স্থানের সব দিকের টানের কারণে বিলিন হওয়ায় সৃষ্টির জন্য আল্লাহ এক দিকের টানের ব্যবস্থা করলেন। সেটা হলো চক্রাকার কক্ষপথ। নভ:মন্ডণের সকল সদস্য নিজ নিজ কক্ষপথে পরিভ্রমণ করে অস্তিত্ব রক্ষা করছে। কেয়ামতে আল্লাহ এ কক্ষপথ ভেঙ্গে দিবেন বলে সব কিছু আবার বিলিন হয়ে আল্লাহ একা বাকী থাকবেন। তারপর তিনি তাঁর সৃষ্টি জগৎ আবার নতুন রূপে সাজিয়ে তাঁর অনুগত ও অবাধ্যদের কাজের প্রতিদান প্রদান করবেন।

সূরাঃ ২ বাকারা, ২৫৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৫৫। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই।তিনি চিরঞ্জীব চির বিদ্যমাণ।তাঁকে তন্দ্রা অথবা নিদ্রা স্পর্শ করে না।আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই তাঁর।কে সে যে তাঁর অনুমতি ছাড়া তাঁর নিকট সুপারিশ করবে? তাঁর সামনে পিছনে যা কিছু আছে তা’ তিনি জানেন।তাঁর ইচ্ছা ছাড়া তাঁর জ্ঞানের কিছুই কেউ আয়ত্ব করতে পারে না।তাঁর ‘কুরসী’ আকাশ ও পৃথিবী জুড়ে বিস্তৃত।এ দু’টির হেফাজত তাঁকে ক্লান্ত করে না।আর তিনি পরম উচ্চ-মহিয়ান।

* আল্লাহ বললেন, তিনি চির বিদ্যমাণ। যারা এখনো জন্মগ্রহণ করেনি তারা অতীতে ছিল না। যারা এখন আছে তারা ভবিষ্যতে থাকবে না। এমন ক্ষণস্থায়ী অবস্খার কারণে সকল ক্ষণস্থায়ী বিলিন হয়, কিন্তু চিরস্থায়ী আল্লাহ বিলিন হন না। অন্যরা চিরস্থায়ী হলো না, আল্লাহ চিরস্থায়ী হলেন কেমন করে? এমন প্রশ্নের জবাবে আল্লাহ কি বললেন?

সূরাঃ ১১২ ইখলাস, ২ নং আয়াতের অনুবাদ-
২। আল্লাহ নিরভাব।
* অন্য সবার মাঝে কোন একটা কিছু আছে তো অনেক কিছুই নেই। কিন্তু আল্লাহর মাঝে সকল কিছু আছে অসীম মাত্রায়। অসীম কখনো ফুরিয়ে যায় না বিধায় আল্লাহ চিরস্থায়ী হয়ে গেলেন। আল্লাহ অসীম হলেন কেমন করে? এ প্রশ্নের উত্তরে আল্লাহ কি বললেন?

সূরাঃ ২৯ আনকাবুত, ২০ নং আয়াতের অনুবাদ-
২০। বল, পৃথিবীতে পরিভ্রমণ কর এবং অনুধাবন কর কিভাবে তিনি সৃাষ্ট শুরু করেছেন। অতঃপর আল্লাহ পূনর্বার সৃষ্টি করবেন পরবর্তী সৃষ্টি। আল্লাহ তো সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমাণ।

* আল্লাহ সর্বশক্তি সহযোগে অসীম হয়ে গেলেন অন্য আর কারো মাঝে সর্বশক্তি না থাকায় তাদের কেউ অসীম হতে পারেনি। এটা হলো যোগ্যতমের জয়। এই অসীম হওয়ার কারণেই আল্লাহ এক। কারণ অসীমের সীমা নেই। আর অসীমকে সীমা দিলে তা’ আর অসীম থাকে না। সুতরাং আল্লাহর একাধীক হওয়ার কোন সুযোগ নেই। আর বিলিন হওয়া সূত্রে সকল পদার্থ ইলেক্ট্রন, পোট্রন ও নিউট্রন ইত্যাদি শক্তিতে বিভাজিত হয়ে আল্লাহর সর্বশক্তির সত্ত্বায় একিভূত হওয়ায় আল্লাহর সত্ত্বায় কোন পদার্থ ও শক্তির কোন অভাব না থাকায় তিনি নিরভাব হয়েছেন। তিনি কিভাবে সৃষ্টি শুরু করলেন, এটা তিনি অনুধাবন করতে বলেছেন। সুতরাং অনুধাবন করলেই বুঝা যাবে আল্লাহ কিভাবে সৃষ্টি শুরু করলেন।

আল্লাহ তাঁর সত্ত্বায় বিদ্যমান পদার্থের শক্তি কনিকাকে শক্তি তাড়িত করে পদার্থ কনিকা সৃষ্টি করলেন। এভাবে তিনি অক্সিজেন ও হাইড্রোজেন কনিকা সৃষ্টি করলেন। এরপর তিনি অক্সিজেন ও হাইড্রোজেন কণিকাকে একিভূত করে পানির কনিকা সৃষ্টি করলেন। পানির কনিকা দিয়ে তিনি জলীয় বাস্প সৃষ্টি করলেন। জলীয় বাস্পকে তরল পানি করার জন্য তাঁর জমিন সৃষ্টির প্রয়োজন হলো। এরপর তিনি জমিন সৃষ্টি করে তাতে বড় বড় জলাধার তৈরী করে তাতে তরল পানি সৃষ্টি করে সঞ্চয় করে রাখলেন। এরপর তিনি আকাশ সৃষ্টি করলেন। আর এভাবে তিনি তাঁর সৃষ্টি সম্প্রসারিত করতে থাকলেন।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মার্চ, ২০২৩ সকাল ৭:১৬
১৩টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×