
কোরআন স্পষ্টকরে বলেছে, লা ইকরাহা ফিদ্দিন- দীনে জরবদস্তি নেই। দীন হলো ইসলাম। সুতরাং ইসলামে জবরদস্তি নেই। তাহলে কোরআনের সাথে গরমিল ইসলাম ছাড়লে হত্যা করা হবে এ হাদিস কোথা থেকে এলো? কোরআন স্পষ্ট করে বলেছে, মা ইয়ানতিকু আনিল হাওয়া, ইন হুয়া ইল্লা অহিউন ইউহা – তিনি অহির (কোরআন) বাইরে কোন কথা বলেন না। তাহলে কোরআনের সাথে গরমিল কথা হাদিস কেমন করে হয়?
রাসূল (সা.) হাদিস সংকলন তৈরী করে লোকদেরকে এর হাফেজ বানাননি। খোলাফায়ে রাশেদাও হাদিস সংকলন তৈরী করে লোকদেরকে এর হাফেজ বানাননি। এ সুযোগে দুষ্ট লোক নিজের কথাকে হাদিস হিসাবে চালিয়ে দিয়েছে। ডা. মরিচ বুকাইলি বলেছেন, দুষ্ট লোকেরা তাদের কথা বলে কোন কথা চালালে তা চলবে না ভেবে তারা তাদের কথা চালাতে তা’ রাসূলের (সা.) নামে চালিয়ে দিয়েছে। পরে লোকেরা এসব কথাকে হাদিস হিসাবে প্রচার করেছে এবং এর কতক সহিহ হিসাবেও গৃহিত হয়েছে। মুসলিম ঘরে জন্ম নেওয়া অমুসলিম হত্যার বিষয় এমন হাদিস হতে পারে। দুষ্ট লোকেরা মনে করেছে তারা যা করেছে তা’ মুসলিমদের মঙ্গলের জন্য করেছে। তাতে করে মুসলিম ঘরে জন্ম নেওয়া অমুসলিমেরা মুসলিম ঘরে আটকে থাকতে বাধ্য হবে।কিন্তু তাদেরকে এভাবে জোর করে ইসলামে আটকে রাখাতো অনৈতিক ব্যাপার হয়ে গেল। কেউ অমুসলিম থেকে মুসলিম হতে পারলে কেউ ইসলাম ছেড়ে যেতে পারবে না কেন? সেজন্য মোরতাদ হত্যার হাদিসগুলো আমার নিকট হাদিস হওয়া ক্ষেত্রে যথেষ্ট সন্দেহ জনক মনে হয়।
হাদিস কোরআনের গরমিল হলেও সে হাদিস মানতে হবে কোরআনে এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই। সুতরাং আমি মুসলিম ঘরে জন্ম নেওয়া অমুসলিম তথা মোরতাদ হত্যার ফতোয়া বাতিল করার জন্য মুসলিমদের কে সবিনয় অনুরোধ করছি। কেউ জাহান্নামে যেতে চাইলে তাকে শান্তিমত জাহান্নামে যেতে দেওয়া উচিত। তাকে জোর করে জান্নাতের পথে টেনে আনার চেষ্টা করার মানে কি? এমর জোর করা লোক তো লোক দেখানো ইবাদত করবে। আর লোক দেখানো ইবাদত করে তো কেউ জান্নাতে যেতে পারবে না। খামাখা এমন লোককে জান্নাতের পথে টানাটানির সময়টা সময়ের অপচয় হলো। আর অপচয়কারী হলো শয়তানের ভাই। সুতরাং যারা মুসলিম ঘরে জন্ম নেওয়া অমুসলিমদেরকে ইসলামে ধরে রাখার চেষ্টা করে তারা আসলে শয়তানের ভাই। কেউ যদি শয়তানের ভাই হতে না চায় তাহলে তারা অহেতুক মুসলিম ঘরে জন্ম নেওয়া অমুসলিমদেরকে ইসলামে ধরে রাখার চেষ্টা করবে না। আল্লাহ এদেরকে শুভবুদ্ধি প্রদান করুন- আমিন।
অমুসলিম হয়ে মুসলিম পরিচয়ে মুসলিম সমাজে বসবাস করাও কোরআন অপরাধ বলেছে। তাহলে অমুসলিমকে মুসলিম পরিচয়ে মুসলিম সমাজে ধরে রাখার মানেটা কি? আল্লাহ বলেছেন তাঁর কিতাব ছাড়া আর কারো কিতাব অসংগতি মুক্ত হবে না। এজন্যই হাদিসের কিতাবে এমন অসংখ্য অসংগত হাদিস আছে। যা মুসলিম জাতির উপকারের কারণ না হয়ে, বরং ক্ষতির কারণ হচ্ছে। মুসলিমগণ এ বিষয়টা যত দ্রুত বুঝবে তাদের জন্য ততই মঙ্গল।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৩ রাত ১২:৫৯

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




