
# কোরআনে কোন ভুল নেই
# শুধুমাত্র মুমিনদের জন্য উপস্থাপিত। অবিশ্বাসীদের এটি পাঠ ও এতে মন্তব্যের দরকার নেই
সূরাঃ ২ বাকারা, ২ নং আয়াতের অনুবাদ-
২। ঐ কিতাব; যাতে কোন ভুল নেই, যা হেদায়েত মোত্তাকীদের জন্য।
সূরাঃ ৪ নিসার ১১ ও ১২ নং আয়াতের অনুবাদ-
১১। আল্লাহ তোমাদের সন্তান সম্পর্কে নির্দেশ দিচ্ছেনঃ এক পুত্রের অংশ দুই কন্যার অংশের সমান; কিন্তু কেবল কন্যা দুইয়ের অধিক থাকলে, তাদের জন্য পরিত্যাক্ত সম্পত্তির দুই-তৃতীয়াংশ। আর মাত্র এক কন্যা থাকলে তার জন্য অর্ধাংশ। তার সন্তান থাকলে তার পিতা-মাতা প্রত্যেকের জন্য পরিত্যাক্ত সম্পত্তির এক-ষষ্ঠাংশ; সে নিঃসন্তান হলে পিতামতাই উত্তরাধীকারী হলে তার মাতার জন্য এক তৃতীয়াংশ। তার ভাইবোন থাকলে মাতার জন্য এক-ষষ্ঠাংশ।সবাই সে যা অসিয়ত করে তা’ দেওয়ার এবং ঋণ পরিশোধের পর।তোমাদের পিতা ও সন্তানের মধ্যে উপকারে কে তোমাদের নিকটতর তা’ তোমরা অবগত নও। নিশ্চয়ই এটা আল্লাহর বিধান: আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
১২।তোমাদের স্ত্রীদের পরিত্যাক্ত সম্পত্তির অর্ধাংশ তোমাদের জন্য, যদি তাদের কোন সন্তান না থাকে।আর তাদের সন্তান থাকলে তোমাদের জন্য তাদের পরিত্যাক্ত সম্পত্তির এক-চতুর্থাংশ; ওসিয়ত পালন এবং ঋণ পরিশোধের পর।তোমাদের সন্তান না থাকলে তাদের জন্য তোমাদের সম্পত্তির এক-চতুর্থাংশ; আর তোমাদের সন্তান থাকলে তাদের জন্য তোমাদের সম্পত্তির এক-অষ্টমাংশ; তোমরা যা ওসিয়ত করবে তা’ ওেয়ার পর এবং ঋণ পরিশোধের পর।যদি পিতা-মাতা ও সন্তানহীন কোন পুরুষ অথবা নারীর উত্তরাধীকারী থাকে তার বৈপিত্রেয় ভাই অথবা বোন; তবে প্রত্যেকের জন্য এক-ষষ্ঠাংশ।তারা এর অধিক হলে সকলে সম অংশিদার হবে এক-তৃতীয়াংশে; এটা যা ওসিয়ত করা হয় তা’ দেওয়ার এবং ঋণ পরিশোধের পর, যদি কারো জন্য ক্ষতিকর না হয়।ইহা আল্লাহর নির্দেশ, আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সহনশীল।
* আল্লাহর দাবী কোরআনে ভুল নেই। কিন্তু কতিপয় লোক সূরা নিসার ১১ ও ১২ নং আয়াতে ভুল পাওয়ার কথা বলছে। আয়াত অনুযায়ী দুই কন্যা, মাতা ও পিতা এবং স্ত্রীর প্রাপ্য অংশ যোগ করে তারা বলছে হরের চেয়ে লব বড় হয়ে গেছে। অথচ এটি কোন তথ্য নয়, বরং এটি একটি বিধান। রাসূল (সা.) বলেছেন, এতে হরকে লবের সমান করে নিতে হবে। দুই কন্যা, মাতা-পিতা ও স্ত্রীর অংশ যোগ করলে হর ২৪ ও লব ২৭ হয়। রাসূল (সা.) বলেছেন এ ক্ষেত্রে হরকে ২৭ করে নিতে হবে। তারমানে হরকে লবের সমান করায় স্ত্রী যেখানে ২৪ এর ৩ অংশ পেত হরকে বাড়িয়ে দেওয়ায় এখন সে ২৭ এর ৩ অংশ পাবে। দুই কন্যা যেখানে ২৪ এর ১৬ অংশ পেত সেখানে এখন তারা ২৭ এর ১৬ অংশ পাবে। আর পিতা-মাতা যেথানে ২৪ এর ৮ অংশ পেত এখন তারা ২৭ এর আট অংশ পাবে। আর এ ঘটনা হয়ে গেল সূরা বাকারার ২৮৬ নং আয়াতের অপারগতার একটি দৃষ্টান্ত।
সূরাঃ ২ বাকারা, ২৮৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৮৬। আল্লাহ কারো উপর এমন কোন কষ্ট দায়ক দায়িত্ব অর্পণ করেন না যা তার সাধ্যাতীত।সে ভাল যা উপার্জন করে তার প্রতিফল তার। সে মন্দ যা উপার্জন করে তার প্রতিফল তার। হে আমাদের প্রতিপালক যদি আমরা ভুলেযাই অথবা আমাদের ত্রুটি হয় তবে আমাদেরকে পাকড়াও করো না। হে আমাদের প্রতিপালক আমাদের পূর্ববর্তিগণের উপর যেমন গুরু দায়িত্ব অর্পণ করেছিলে আমাদের উপর তেমন দায়িত্ব অর্পণ করবেন না।হে আমাদের প্রতিপালক এমন ভার আমাদের উপর অর্পণ করবেন না যা বহন করার শক্তি আমাদের নেই।আমাদের পাপ মোছন করুন, আমাদেরকে ক্ষমা করুন, আমাদের প্রতি দয়া করুন, আপনিই আমাদের অভিভাবক। সুতরাং কাফির সম্প্রদায়ের উপর আমাদেরকে জয়যুক্ত করুন।
* আল্লাহ কারো উপর এমন কোন কষ্ট দায়ক দায়িত্ব অর্পণ করেন না যা তার সাধ্যাতীত। তো হর ২৪ এবং লব ২৭ হলে প্রাপকদের পাপ্য অংশ বন্টন সম্ভব নয়। এ আয়াত অনুযায়ী সুরা নিসার উপরোক্ত অংশ বন্টন যেভাবে সম্ভব সেভাবে করতে হবে। আর এ ক্ষেত্রে অংশ বন্টন সম্ভব হলো হরকে ২৭ করে লবের অংশ সমূহ ঠিক রাখা। আল্লাহ এখানে বন্টন অসাধ্য একটা বিষয়ের অবতারণ করে এর সমাধান কিভাবে করতে হবে সেটা তাঁর বান্দাকে শিখিয়েছেন। এঘটনায় বাংলাদেশে যারা ইসলাম প্রতিষ্ঠিত করতে চায় তাদের জন্য একটা শিক্ষা রয়েছে। কি সেই শিক্ষা?
সহিহ বোখারী ৭ নং হাদিসের (কিতাবুল ঈমান) অনুবাদ-
৭। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, পাঁচটি ভিত্তির উপর ইসলাম প্রতিষ্ঠিত। ১। সাক্ষ দেওয়া যে, আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন ইলাহ নেই এবং মোহাম্মদ (সা.) আল্লাহর রাসূল ২।সালাত কায়েম করা ৩।জাকাত দেওয়া ৪। হজ্জ ৫। রমজানের রোজা রাখা।
সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ৩৯৫০ নং হাদিসের (ফিতনা অধ্যায়) অনুবাদ-
৩৯৫০। আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহকে (সা.)বলতে শুনেছি আমার উম্মত পথভ্রষ্টতার উপর একত্রিত হবে না। যখন তোমরা উম্মতের মাঝে মতপার্থক্য দেখতে পাবে, তখন সর্ববৃহৎ দলের সাথে সম্পৃক্ত থাকবে।
* আয়াত এবং হাদিস অনুযায়ী বাংলাদেশে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত করতে হলে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ দলের মাঝে আগে ইসলামের পঞ্চ ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। ইসলামের প্রথম ভিত্তি হলো কালিমা। সুদ, ঘুষ, চুরি, ডাকাতি, খুন, রাহাজানি, ছিনতাই ও জেনা হলো কালিমার বিপরীত কাজ। দেশের ৫১% লোকের মধ্যে যখন এসব কবিরা গুণাহ থাকবে না। তখন বুঝতে হবে এখানে কালিমা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ৫১% লোক হক আদায় করে নামাজ পড়লে বুঝতে হবে এখানে নামাজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ৫১% লোক হক আদায় করে রোজা রাখলে বুঝতে হবে এখানে রোজা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ৫১% লোক হক আদায় করে জাকাত দিলে বুঝতে হবে এখানে জাকাত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ৫১% লোক হক আদায় করে হজ্জ করলে বুঝতে হবে এখানে হজ্জ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তারপর যারা ইসলাম প্রতিষ্ঠিত করতে চায় এ ৫১% লোক তাদের দলের সদস্য হতে হবে। রাসূল যখন মদীনায় ইসলাম প্রতিষ্ঠিত করেছেন তখন এসব শর্ত মদীনায় প্রতিপালিত ছিলো বিধায় তিনি মদীনায় ইসলাম প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন।
সহিহ আবু দাউদ, ৪৫৭৭ নং হাদিসের (সুন্নাহ অধ্যায়) অনুবাদ-
৪৫৭৭। হযরত সাফীনা (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, নবুয়তের খেলাফতের সময়কাল হলো ত্রিশ বছর। তারপর আল্লাহ যাকে ইচ্ছা রাজত্ব বা বাদশাহী দান করবেন।
হযরত সাঈদ (র.) বলেন, সাফীনা (রা.) আমাকে বলেন, তুমি হিসাব কর। আবু বকরের (রা.) শাসনকাল দু’বছর, ওমরের (রা.) দশ বছর, ওসমানের (রা.) বার বছর, আলীর (রা.) ছ’বছর।হযরত সাঈদ (র.) বলেন, আমি সাফীনাকে (রা.) জিজ্ঞেস করি যে, বনু মারওয়ান ধারণা করে যে, আলী (রা.) খলিফাদের অন্তর্ভূক্ত নন। তিনি বলেন, বনু-মারওয়ানরা মিথ্যা বলেছে।
* রাসূলের (সা.) ইন্তেকালের ত্রিশ বছর পর ইসলাম প্রতিষ্ঠিত থাকার শর্ত সমূহ যখন দূরিভূত হলো তখন তাঁর নবুয়তের খেলাফত দূরিভূত হয়ে রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেল। সেজন্য তখন হযরত ইমাম হোসেন (রা.) ও হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে জুবাইরের (রা.) খেলাফত পুণ: প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা বিফলে গিয়েছে।
শায়েখে চরমোনাই মাওলানা ফয়জুল করিম যে এলাকার মেয়র হতে চাইলেন সেই এলাকায় তাঁর দলের লোক ৫১% আছে কিনা তিনি কি সে হিসাব করেছেন? তারপর সেই ৫১% এর মধ্যে ইসলামের পঞ্চভিত্তি প্রতিষ্ঠিত আছে কিনা তাও কি তিনি দেখেছেন? কোন হিসাব নিকাষ ছাড়া ইসলামের নামে ভোট চাইলেই কি আর ইসলামের নামে ভোট পাওয়া যাবে? ঘুষ খোর, সুদ খোর, চোর-চামুন্ডা ও বেনামাজীরা কি তাঁকে ভোট দিবে? তাঁর দল ছাড়া অন্য ইসলামী দলের লোকেরাও কি তাঁকে ভোট দিবে? এসব হিসাবে গরমিল হলে আসলে ইসলামের নামে ভোট চাইলেও ভোট পাওয়া যাবে না। সেজন্য আমি ইসলামী দল সমূহের অনুসারীদেরকে বলেছি, তোমরা তোমাদের নিয়মে ইসলাম প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করলে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত করা যাবে না। ইসলাম প্রতিষ্ঠিত করতে হলে ইসলামের নিয়মে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। সুতরাং ভাই সব আগে ইসলামের ভিত্তি সমূহ প্রতিষ্ঠিত কর, তারপর ইসলাম প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা কর। ইসলামের ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত না করে তোমরা কিসের উপর ইসলাম প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছো? খুঁটি ছাড়া ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হবে কি? ইসলামের খুঁটি প্রতিষ্ঠিত না থাকা অবস্থায় ইসলম প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে হযরত ইমাম হোসেন (রা.) ও হযরত আব্দুল্লহ সইবনে জুবাইর (রা.) শহীদ হয়েছেন। তোমরা সেরকম করলে তোমরাও শহীদ হতে পারবা। এর চেয়ে বেশী এখন আশা করেও মূলত কোন লাভ নেই।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ রাত ৯:৫১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



