somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আল্লাহর কিছু ইচ্ছার বাস্তবায়ন সঠিকভাবে না হওয়ায় রাসূল (সা.) ও সাহাবায়ে কেরামকে (রা.) চরম মূল্য দিতে হয়েছে

০১ লা নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



সূরা: ৯ তাওবা, ১২২ নং আয়াতের অনুবাদ-
১২২। আর মু’মিনদের এটাও উচিৎ নয় যে (জিহাদের জন্য) সবাই একত্রে বের হয়ে পড়বে। সুতরাং এমন কেন করা হয় না যে, তাদের প্রত্যেক বড় দল হতে এক একটি ছোট দল (জিহাদে) বের হয় যাতে অবশিষ্ট লোক ফিকাহ (দীনের গভীর জ্ঞান) অর্জন করতে থাকে। আর যাতে তারা নিজ কওমকে ভয় প্রদর্শন করে, যাতে তারা সাবধান হয়।

সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে। তাদের জন্য মহাশাস্তি রয়েছে।

সূরাঃ ৮ আনফাল, ৩৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩৯। আর তোমরা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে থাকবে যতক্ষণ না ফিতনা দূরীভূত হয় এবং আল্লাহর দীন সর্বত্র প্রতিষ্ঠিত হয়।অতঃপর যদি তারা বিরত হয় তবে তারা যা করে আল্লাহতো এর দর্শক।

সহিহ আল বোখারী, ৬৫৭২ নং হাদিসের (কিতাবুল ফিতান)-
৬৫৭২। হযরত ওসামা ইবনে যায়েদ (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা নবি করিম (সা.) মদীনার এক সুউচ্চ অট্টালিকার উপর আরোহন করে বললেন, আমি যা কিছু দেখছি, তোমরা কি তা’ দেখছ? তারা বলল, জী না। তিনি বললেন, আমি দেখছি যে, তোমাদের ঘরের ভিতরে বৃষ্টি পাতের ন্যায় ফিতনা পতিত হচ্ছে।

সহিহ মুসলিম, ২৩২৬ নং হাদিসের (দানের ফজিলত) অনুবাদ-
২৩২৬। হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রা.)কর্তৃক বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার হযরত আলী (রা.) ইয়ামান হতে কিছু অপরিশোধিত স্বর্ণ রাসূলুল্লাহর (সা.) নিকট প্রেরণ করলে তিনি তা’ চার ব্যক্তি যথা –(১) আকরা ইবনে হাবিস (২) উয়াইনা ইবনে বদর আল ফযারী (৩) আলকামা ইবনে উসালা আল আমিরী ও (৪) বনি কিলাব সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তির মধ্যে বন্টন করেন। এরপর তায়ী সম্প্রদায়ের যায়েদ আল খায়ের ও বনী বাহনান সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তিকে এ হতে দান করেন। এতে কোরাইশ গোত্রের লোকেরা ক্ষেপে গিয়ে বললেন, আপনি কেবল নজদের নেতৃস্থানীয় লোকদের দান করেছেন আর আমাদের বাদ দিচ্ছেন, এটা কেমন ব্যাপার? একথা শুনে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, আমি তাদের শুধু চিত্তাকর্ষণ অর্থাৎ তাদের অন্তরে ইসলামের প্রতি ভালবাসা ও অনুরাগ সৃষ্টির জন্য দিচ্ছি। এমন সময় ঘণ দাড়ি, স্ফীতগাল, গর্তে ঢোকা চোখ, উচুঁ ললাট ও নেড়া মাথা বিশিষ্ট এক ব্যক্তি এসে বলল, হে মোহাম্মদ! আল্লাহকে ভয় কর। তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, আমিই যদি আল্লাহর অবাধ্য হই, তাহলে কে তাঁর বাধ্য ও অনুগত হবে? আল্লাহ আমাকে পৃথিবীবাসীদের জন্য আমানতদার হিসেবে প্রেরণ করেছেন, আর তুমি আমাকে আমানতদার মনে কর না? এরপর লোকটি ফিরে চলে যায়। উপস্থিত লোকদের মধ্যে এক ব্যক্তি তাকে হত্যা করার অনুমতি চাইল। লোকদের ধারণা, হত্যার অনুমতিপ্রার্থী ছিলেন খালিদ ইবনে ওয়ালিদ। এরপর রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, এর মূলে এমন একটি সম্প্রদায় রয়েছে যারা কোরআন পড়ে অথচ তাদের এ পড়া কন্ঠনালী অতিক্রম করে না। এরা ইসলামের অনুসারীদের হত্যা করে এবং মূর্তিপূজারীদের ছেড়ে দেয়। তীর যেভাবে শিকার ভেদ করে বেরিয়ে যায় তারাও অনুরূপভাবে ইসলাম থেকে দূরে সরে যায়।আমি তাদেরকে পেলে এমনভাবে হত্যা করতাম যেভাবে আদ সম্প্রদায়ের লোকদের হত্যা করা হয়েছে।

* আল্লাহ জিহাদ থেকে ফিকাহকে বেশী গুরুত্ব দিলেন। জিহাদ বিষয়ে রাসূল (সা.) কোন ত্রুটি রাখেননি। কিন্তু তিনি তাঁর রাষ্ট্রের বিভিন্ন কেন্দ্রে ফিকাহ শিক্ষাকেন্দ্র স্থাপন করেননি। অবশেষে তাঁর গোত্র তাঁর কাজে অসন্তোষ প্রকাশ করে। কিছু সংখ্যক লোকের কোরআন বুঝায় সমস্যা দেখা দেয় এবং তারা ইসলাম থেকে দূরে সরে যায়।তারা রাসূলের (সা.) সাথেই মতভেদ করা শুরু করে।তাঁর ইন্তেকালের সময় তাঁর সাহাবায়ে কেরামের (রা.) মধ্যেও মতভেদ দেখা দেয়। খলিফা নির্বাচন সংক্রান্ত মতভেদে শিয়া নামে একটি নতুন দলের উদ্ভব ঘটে যারা এখনো প্রথম তিন খলিফাকে লানত দিয়ে থাকে। শিয়ারা হযরত ওসমানকে (রা.) হত্যা করলে সাহাবায়ে কেরাম (রা.) নিজেদের মধ্যে যুদ্ধে জড়িয়ে যান। তারপূর্বে জাকাত অস্বীকার কারী ও ভন্ড নবিদের থেকে দ্বীন রক্ষায় প্রথম খলিফাকে বহু যুদ্ধে লিপ্ত থাকতে হয়। এমনকি ইয়ামামার যুদ্ধে বহু হাফেজে কোরআন শহীদ হলে কোরআন সংরক্ষণে সমস্যা দেখা দেয়।

সূরাঃ ২ বাকারা, ২৫৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৫৩। ঐসব রাসূলদের আমরা তাদের কোন জনের উপর কোন জনকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি। তাদের মধ্যে কোন জনের সঙ্গে আল্লাহ কথা বলেছেন।আর কোন জনকে উচ্চ মর্যাদায় উন্নীত করেছেন। আর আমরা মরিয়ম পুত্র ঈসাকে প্রকাশ্য মুজেযা দান করেছি। আর তাকে পবিত্র আত্মা দ্বারা সাহায্য করেছি।আর আল্লাহ ইচ্ছা করলে নবিগণের পরবর্তী লোকেরা পরস্পরের সঙ্গে যুদ্ধ-বিগ্রহে লিপ্ত হতো না। কিন্তু তারা পরস্পর ইখতিলাফ (মতভেদ) করেছিল।তাতে তাদের কিছু লোক মুমিন এবং কিছু লোক কাফের হয়ে গেল। আল্লাহ ইচ্ছা করলে তারা পরস্পর যুদ্ধ-বিগ্রহে লিপ্ত হতো না। কিন্তু আল্লাহ যা ইচ্ছা তাই করে থাকেন।

* খলিফাগণও খেলাফতের বিভিন্ন কেন্দ্রে ফিকাহ শিক্ষাকেন্দ্র স্থাপন করেননি।অবশেষে খলিফা হযরত ওসমান (রা.) কোরআন সংকলন করলে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) তাঁর সাথে মতভেদে লিপ্ত হন। উক্ত মতভেদটি এখনো জারি আছে। তখন একদল লোক খলিফার বিরুদ্ধে চরমভাবে ক্ষিপ্ত হয়। তারা খলিফা সংকলিত কোরআন পাঠরত অবস্থায় উক্ত কোরআনের উপরেই তাঁকে শহীদ করে।তাদের বিচারে বিলম্ব হওয়ায় পরবর্তী খলিফা হযরত আলীর (রা.) সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হন উম্মল মুমিনিন হযরত আয়েশার (রা.) দল এবং রাসূলের (সা.) শালা হযরত মুয়াবিয়ার দল। এ ঘটনায় শিয়া সম্প্রদায় হযরত মুয়াবিয়াকে (রা.) কাফের বলে থাকে। অবশেষে খারেজী সম্প্রদায় হযরত আলীকে (রা.) কাফের ফতোয়া দিয়ে হত্যা করে ফেলে। খারেজীরা এখনো হযরত আলীকে (রা.) কাফের বলে থাকে।

সূরাঃ ৪৮ ফাতহ, ২৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৯। মোহাম্মাদ আল্লাহর রাসুল; তাঁর সহচরগণ কাফিরদের প্রতি কঠোর এবং নিজেদের মধ্যে পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীল; আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি কামনায় তুমি তাদেরকে রুকু ও সিজদায় অবনত দেখবে।তাদের লক্ষণ তাদের মুখমন্ডলে সিজদার প্রভাব পরিস্ফুট থাকবে: তওরাতে তাদের বর্ণনা এরূপ এবং ইঞ্জিলেও তাদের বর্ণনা এরূপই। তাদের দৃষ্টান্ত একটি চারা গাছ, যা থেকে নির্গত হয় নতুন পাতা, অতঃপর ইহা শক্ত ও পুষ্ট হয় এবং পরে কান্ডের উপর দাঁড়ায় দৃঢ়ভাবে যা চাষীদের জন্য আনন্দ দায়ক। এভাবে মুমিনদের সমৃদ্ধি দ্বারা আল্লাহ কাফিরদের অন্তর্জালা সৃষ্টি করেন। যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে আল্লাহ তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ক্ষমা ও মহাপুরস্কারের।

সূরাঃ ৬২ জুমুআ, ২ নং থেকে ৪ নং আয়াতের অনুবাদ।
২। তিনিই উম্মীদের মধ্যে একজন রাসুল পাঠিয়েছেন তাদের মধ্য হতে, যে তাদের নিকট আবৃত করে তাঁর আয়াত সমূহ; তাদেরকে পবিত্র করে এবং শিক্ষা দেয় কিতাব ও হিকমত; এর আগে তো এরা ছিল ঘোর বিভ্রান্তিতে।
৩। আর তাদের অন্যান্যের জন্যও যারা এখনো তাদের সহিত মিলিত হয়নি। আল্লাহ পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়।
৪। ওটা আল্লাহরই অনুগ্রহ, যাকে ইচ্ছা তিনি ওটা দান করেন। আর আল্লাহ তো মহা অনুগ্রহশীল।

# সূরাঃ ৬২ জুমুআ, ৩ নং আয়াতের তাফসির- তাফসিরে ইবনে কাছির
৩। এ আয়াতের তাফসিরে আবু হুরায়রা হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, একদা আমরা রাসূলুল্লাহর পার্শ্বে বসে ছিলাম, এমন সময় তাঁর উপর সূরা জুমুয়া অবতীর্ণ হয়। জনগণ জিজ্ঞাস করেন হে আল্লাহর রাসূল (সা.)! ‘ওয়া আখারিনা মিনহুম লাম্মা ইয়ালহাকু বিহিম’ দ্বারা কাদেরকে বুঝানো হয়েছে? কিন্তু তিনি কোন উত্তর দিলেন না। তিন বার এ প্রশ্ন করা হয়। আমাদের মধ্যে সালমান ফারসীও (রা.) ছিলেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) তাঁর হাতখানা সালমান ফারসীর (রা.) উপর রেখে বললেন, ঈমান যদি সারিয়্যা নক্ষত্রের নিকট থাকত তাহলেও এই লোকগুলোর মধ্যে এক কিংবা একাধিক ব্যক্তি এটা পেয়ে যেত।(ফাতহুলবারী ৮/৫১০, মুসলিম ৪/১৯৭২, তিরমিযী ৯/২০৯, ১০/৪৩৩, নাসাঈ ৫/৭৫, ৬/৪৯০, তাবারী ২৩/৩৭৫)।

সহিহ মুসলিম, ৪৫৭৬ নং হাদিসের (কিতাবুল ইমারাহ) অনুবাদ-
৪৫৭৬। হযরত জাবির ইবনে সামুরা (রা.)কর্তৃক বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহকে (সা.) বলতে শুনেছি, বারজন খলিফা অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত ইসলাম পরাক্রান্ত অবস্থায় চলতে থাকবে। তারপর তিনি যে কি বললেন, তা’ আমি বুঝতে পারিনি। তখন আমি আমার পিতার নিকট জিজ্ঞাস করলাম তিনি কি বলেছেন? তিনি বললেন নবি করিম (সা.) বলেছেন, তাঁদের সকলেই হবে কোরাইশ বংশোদ্ভুত।

সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ২৩০ নং হাদিসের (অবতরনিকা অধ্যায়) অনুবাদ-
২৩০। হযরত যায়েদ ইবনে সাবিত (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার থেকে একটি হাদিস শুনে অতঃপর তা’ অন্যদের কাছে পৌঁছে দেয় আল্লাহ তাকে হাস্যোজ্জল ও আনন্দময় করে দেবেন। কেননা এমন কতক ফিকাহ বাহক রয়েছে, যারা প্রকৃতপক্ষে ফকীহ নয়। কোন কোন ক্ষেত্রে এমনও হয় যে, ফিকাহ শিক্ষাদানকারীর চেয়ে উক্ত বিষয়ের শিক্ষার্থী অধিকতর জ্ঞানী হয়ে থাকে।

* ফিকাহ শিক্ষাকেন্দ্র স্থাপন না করায় আল্লাহ রাসূল (সা.) ও সাহাবায়ে কেরামকে (রা.) ক্ষমা করলেও সঠিক ফিকাহের অভাব জনিত কারণে ঈমান সারিয়্যা নক্ষত্রের নিকট চলে যায়। কারবালায় জান্নাতের যুব নেতা হযরত ইমাম হোসেন (রা.) তাঁর প্রতিপক্ষে ঈমান খুঁজে পাননি। অথচ তারা মুসলিম হওয়ার দাবীদার ছিল। তারা জান্নাতের যুব নেতার মাথা কেটে ইয়াজিদকে উপহার দেয় এবং সে এতে সন্তুষ্ট হয়। মদীনাবাসী এতে অসন্তোস প্রকাশ করায় ইয়াজিদ তাঁদেরকে লাঞ্চিত করে।এরপর মক্কায় হযরত আবু বকরের (রা.) নাতি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে যুবায়ের (রা.) খলিফা হলে হাজ্জাজ বাহিনী তাঁকে হত্যা করে তাঁর লাশ রাজপথে ঝুলিয়ে রাখে।এরপর পারসিক ইমাম আবু হানিফা (র.) ফিকাহ সংগ্রহ, সংকলন ও শিক্ষার ব্যবস্থা করলে ঈমান সারিয়্যা নক্ষত্রের নিকট থেকে পৃথিবীতে ফিরে আসে। তাঁর শিক্ষার্থী হযরত ইমাম আবু ইউসুফ (র.) তাঁর থেকে অধিকতর জ্ঞানী ছিলেন। কারণ ইমাম আবু হানিফা (র.) খেলাফতের প্রধান বিচারপতি পদে নিয়োগ পেলেও তিনি এ দায়িত্ব পালন না করে কারা বরণ করেছেন, কিন্তু তাঁর শিক্ষার্থী হযরত ইমাম আবু ইউসুফ (র.)খেলাফতের প্রধান বিচারপতি পদে নিয়োগ পেয়ে বহুকাল এ দায়িত্ব দক্ষতার সাথে পালন করেছেন। সুতরাং ইমাম আবু হানিফার (র.) যোগ্যতার বিপরীতে তাঁর ছাত্র ইমাম আবু ইউসুফের (র.) দক্ষতা ছিল।পৃথিবীতে এমন আর কোন ফকিহ না থাকায় লোকে ভুল করে কিছু লোককে ফকিহ মনে করলেও তারা আসলে ফকিহ ছিল না। সঠিক ফকিহের ফিকাহ পরিশোধন করে অনুমোদন করেছেন সবচেয়ে পরাক্রান্ত কুরাইশ খলিফা আমির হারুনুর রশিদ। শিয়া ইমামগণ কুরাইশ হলেও তাঁরা কুরাইশ খলিফা আমির হারুনুর রশিদের মত পরাক্রান্ত ছিলেন না। হযরত আলী (রা.) থেকে খেলাফতের একাংশ কেড়ে নিয়েছেন হযরত মুয়াবিয়া (র.)। খেলাফতের অপরাংশ হযরত ইমাম হাসান (রা.) হযরত মুয়াবিয়াকে (রা.) ছেড়ে দিয়েছেন।এরপর ইয়াজিদ থেকে হযরত ইমাম হোসেন (রা.) খেলাফত উদ্ধার করতে পারেননি।এরপর শিয়া ইমামগণের অন্য কেউ খেলাফত প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হননি। তাঁদের বিপরীতে আব্বাসীয় খলিফা হারুনুর রশিদ ছিলেন মহাপ্রক্রান্ত।তাঁর অনুমোদীত হানাফী ফিকাহ এখন বিশ্ব বিস্তৃত। যারা এর বিরোধীতা করেছে তাদের ফিকাহ কোন আমির অনুমোদীত নয়। মধ্যপ্রাচ্যে তারা ইহুদী কর্তৃক চরমভাবে লাঞ্চিত হচ্ছে।

সহিহ সুনানে নাসাঈ, ৩১৭৭ নং হাদিসের (জিহাদ অধ্যায়) অুনবাদ-
৩১৭৭। হযরত আবু হুরায়রা (রা.)থেকে বর্ণিত।তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাদেরকে হিন্দুস্থানের যুদ্ধের আশ্বাস দিয়েছেন। আমি তা’ পেলে তাতে আমার জান মাল উৎসর্গ করব। আর আমি যদি নিহত হই তবে মর্যাদাবান শহীদ বলে গণ্য হব, আর যদি প্রত্যাবর্তন করি, তাহলে আমি আবু হুরায়রা হব আযাদ বা জাহান্নাম হতে মুক্ত।

সহিহ সুনানে নাসাঈ, ৩১৭৮ নং হাদিসের (জিহাদ অধ্যায়) অুনবাদ-
৩১৭৮। হযরত রাসূলুল্লাহর (সা.)গোলাম সাওবান (রা.)থেকে বর্ণিত।তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন আমার উম্মতের দু’টি দল, আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে জাহান্নাম হতে নাজাত দান করেছেন, একদল যারা হিন্দুস্থানের জিহাদ করবে আর একদল যারা ঈসা ইবনে মরিয়মের (আ.) সাথে থাকবে।

* ফিকাহের পর আকিদা বিষয়ে মুসলিমদের মধ্যে মতভেদ ব্যাপক আকার ধারণ করে। তখন কুরাইশ আমিরগণ হানাফী আবুল মনসুর মাতুরিদির আকিদা সঠিক হিসাবে অনুমোদন করেন। এ ছাড়া বিশ্বে কুরাইশ আমির অনুমোদীত আর কোন আকিদা নাই। হানাফী মাতুরিদি আকিদার অনুসারী খাজা মঈনদ্দীন চিশতি (র.) হিন্দুস্তানের যুদ্ধে মোহাম্মদ ঘুরীর সহযোগী হয়ে জয়ী হন।

তরাইনের দ্বিতীয় ও পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধ হয়েছে আফগান ও মোগল হানাফী এবং ভারতীয় হিন্দুদের সাথে সর্বাত্মক যুদ্ধ। পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধে আফগান হানাফীদের সহায়ক ছিল মোগল হানাফীরা।যা মোগল ও আফগান হানাফীদেরকে মহানবির (সা.) উম্মত সাব্যস্ত করে। বখতিয়ার খলজি ও শাসসুদ্দিন ইলিয়াস শাহ হিন্দুস্তানের যুদ্ধেজয়ী হন। তাঁরাও হানাফী-মাতুরিদি ছিলেন। শাসসুদ্দিন ইলিয়াস শাহের সহযোগী ছিলেন হানাফী-মাতুরিদি হযরত শাহ জালাল ইয়ামানী (র.)। কিছু দিন আগে হানাফী-মাতুরিদি পাকিস্তানের সাথে যুদ্ধ করতে গিয়ে ভারত জয়ী হতে পারেনি।ভারতে সামনে হিন্দুদের সাথে যুদ্ধ হলেও তাও হানাফী-মাতুরিদিদের সাথেই হবে। সংগত কারণে সহিহ সুনানে নাসাঈ, ৩১৭৭ নং হাদিস ও সহিহ সুনানে নাসাঈ, ৩১৭৮ নং হাদিস দ্বারা অহানাফী কোন দলকে সঠিক মুসলিম দল সাব্যস্ত করার কোন সুযোগ নেই।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:৪৭
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×