somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রবীন্দ্রনাথের একটি ভুল পঙ্‌ক্তি, আমি যেটি সংশোধন করলাম

২৩ শে জুলাই, ২০২০ রাত ১০:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জীবনে অহরহ আওড়ানো নীচের পঙ্‌ক্তিটি কে লিখেছিলেন, তা যদি আপনি এখনো না জেনে থাকেন, তাহলে দয়া করে আজই ডায়েরির পাতায় সুরম্য হরফে লিখে রাখুন যে, এটি লিখেছিলেন আমার কাকা শ্রীশ্রী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর :

যাহা চাই তাহা ভুল করে চাই, যাহা পাই তাহা চাই না

একদা আমার রবিকাকা ধবধবে শাদা পাঞ্জাবিতে সুগন্ধি মেখে তার গন্ধে পাগল হয়ে হরিণের মতো দীর্ঘলম্ফে লাফিয়ে লাফিয়ে সুন্দরবন, বান্দরবন, পলাশীর আম্রকাননসহ দিগ্বিদিক ছুটতে ছুটতে বর্ষা-শ্রাবণ-হেমন্ত-শীত পার হয়ে ফাল্গুন রাতের অন্ধকারে দিশা হারিয়ে ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়ে স্বপ্নের ভেতর আবোল-তাবোল বলে ওঠেন : যাহা চাই তাহা ভুল করে চাই, যাহা পাই তাহা চাই না। এটা আপাত বিরাট হাই-সাউন্ডিং, গভীর তাৎপর্যপূর্ণ পঙ্ক্তি মনে হলেও বিদগ্ধ বিশ্লেষণে এটিকে একটি চমকদার কিন্তু অসাড় চরণ বলেই আমার কাছে মনে হয়।

চরণের প্রথম অংশটার কথাই ধরুন- 'যাহা চাই তাহা ভুল করে চাই'- একেবারে শিশুশুলভ কথা এবং কথাটা একেবারেই ভুল, অশুদ্ধ। এমনটা কখনোই ঘটে না যে, আমরা হুটহাট করে কিছু একটা চেয়ে বসলাম, যেটার দরকার সেটা না চেয়ে অন্য অদরকারি একটা জিনিস চাইলাম। আমরা যা-কিছুই চাই না কেন, তা ভেবেচিন্তে, খুব বুঝেশুনেই চেয়ে থাকি। যেমন, আমরা যদি মাছ কিনতে চাই, তাহলে মিষ্টির দোকানে যাই না। আবার, যদি চমচম খেতে চাই, তাহলে চমচম না চেয়ে মিষ্টিওয়ালাকে চানাচুর দিতে বলি না। যদি সিনেমা দেখতে চাই, তাহলে সিনেমা হলেই যাই, স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে যাই না।

কিন্তু এই যে আমাদের এত চাওয়া, আমরা কি তার সবই পাই? আমি টেংরা মাছ কেনার জন্য বাজারে গেলাম। ছোটোবেলায় ওড়া দিয়ে আরায়, মজা পুকুরে এই টেংরা অনেক মেরেছি। বর্ষার শেষে দোহার খালের মাথায় আড়িয়াল বিলে মাছ-গাবানোর সময় ঝাঁকিজাল দিয়ে এই টেংরা ধরে বিরাট বিরাট পাতিল ভরে ফেলেছি, খেয়ে শেষ করতে না পেরে শুটকি করে রেখেছি। তো, হঠাৎ একদিন বাজারে গিয়ে টগবগে টসটসে বড়ো সাইজের লোভনীয় টেংরা দেখলাম, যা ছিল আমার দেখা জীবনের সেরা টেংরা। এইচডি কোয়ালিটির রেজ্যুলেশন দেখে মনে হচ্ছিল ফটোশপ করা, এত উজ্জ্বল ও সতেজ! এবং আরো পরিষ্কার করে বললে বলতে হয়- থ্রি-ডি টেংরা, রেজ্যুলেশন এতটা ক্লিয়ার। ওগুলো দেখেই আমার জিভের মাথায় লুল জমে গেলো। বয়স কম হলে হয়ত কাঁচাই খেয়ে ফেলতে চাইতাম। আমি জানি, টেংরা মাছও চাষ হচ্ছে দেশে অনেক আগে থেকেই। এই চাষ করা টেংরাই খাচ্ছি কমপক্ষে বিগত ১০ বছর ধরে। কিন্তু অন্যান্য চাষ করা হাইব্রিড মাছের মতো টেংরাকে কখনো স্বাদহীন মনে হয় নি, এবং এগুলো খেয়ে বোঝার উপায় নেই যে এগুলো চাষের টেংরা। মনে মনে ঠিক করে ফেললাম, কেজি দুয়েক নিয়ে যাব আজ। দাম আর কতই বা হবে, বড়োজোর ২/৩ শ, বা ৪শ টাকা কেজি।
মাছওয়ালার আরেক ডালিতে ছিল গুলশা মাছ। এটাও চাষের গুলশাই। সাইজও মাশা'ল্লাহ সেই রকম; ছোটো ছোটো আইড় মাছের মতো। কেজিখানেক নিয়ে নেব, ভাবলাম।
তিন নম্বর ডালিতে পুঁটিমাছ। এত বড়ো সাইজের পুঁটিমাছও এর আগে দেখি নি। এগুলো পুকুরে চাষ করা পেট-ছড়ানো হাইব্রিড পুঁটি না, খাঁটি দেশি পুঁটি, যা আমাদের আড়িয়াল বিলের পুঁটির মতো। শীতের দিনে বেগুন দিয়ে হালকা ঝোল করে পুঁটিমাছ রাঁধতো আমার মা, শুকনো শুকনো বেগুনের উপর ধনেপাতাগুলো সরের মতো জেগে থাকতো। খাওয়ার সময় মুখ দিয়ে ভাত চিবোতাম আর ঘন ঘন নাক টেনে ধনেপাতার তরতাজা ঘ্রাণ নিতাম- পুঁটিমাছগুলোর দিকে একধ্যানে তাকিয়ে থাকতে থাকতে আমার কিশোরবেলায় মায়ের রান্না করা পুঁটিমাছের তরকারির হাঁড়িতে গিয়ে চোখ আটকে থাকলো কিছুক্ষণ।
ধ্যানভোঙ্গ হলে খুব আবেগ আর উৎসাহের সাথে মাছওয়ালাকে জিজ্ঞাসা করি-
টেংরা কত টাকা কেজি ভাই?
-এক হাজার টাকা কেজি।
ভরা বাজারের মধ্যে কোথাও মনে হয় একটা বেলুন ফেটে চুপসে গেলো, কানে শব্দ এলো। আমার গলার স্বরটা কেন যেন একটু নেমে এলো। জিজ্ঞাসা করি, গুলশার দর কত, ভাই?
- সাড়ে আট শ টাকা কেজি।
আমার জিভে কিছুক্ষণ আগে লুল জমা হয়েছিল, তা শুকিয়ে বিরাণ হয়ে গেছে, টের পেলাম।
-আর, পুঁটিমাছ কত কইরা ভাই?
-নেন, সাড়ে ৬শ টাকা কেজি।
মাত্র একটু আগে ঝাঁকা থেকে মাছ নামানো হয়েছে। কেউ কেউ ইতিমধ্যে মাছওয়ালার হাঁকানো দরেই মাছ কিনতে শুরু করে দিয়েছে। এই মাছ দরদাম করে আর কয় টাকাই বা কমানো যাবে, একশ, দুইশ, তিনশ। তারপরও তো এই মাছের দর আমার নাগাল থেকে আরো কয়েক মাইল দূরে থাকবে। এখান থেকে চলে যাওয়াই শ্রেয়, তবে কিছু একটা না বলে যাওয়া যায় না, মান-সম্মানের ব্যাপার আছে তো!
মিনমিনে গলায় বললাম- দাম কমানো যায় না!
'একদাম।' আমার কথা শেষ হবার আগেই মাছওয়ালা দৃঢ় স্বরে বলে দিলেন। আমি মনকে বললাম, মন শান্ত হও। আপ্লুত হইয়ো না। পুঁটিমাছ তো পুঁটিমাছই, ইলিশ মাছ তো আর না। টেংরা গুলশা তো টেংরাই, হাঙ্গর বা তিমি মাছ তো আর না, তাই না? তো, অত মন খারাপ করিও না। এসব আজেবাজে মাছ না খাইলেই বরং জীবন বেশি তৃপ্তিময় হয়ে ওঠে।
সারা বাজার ঘোরাঘুরি করে অবশেষে বোয়াল মাছ কিনলাম। সাড়ে চারশ টাকা কেজি। ইলিশ মাছ ১৪ শ টাকা কেজি। বেলে মাছ, যেটাকে ছোটোবেলায় সবচেয়ে অলস ভাদাইম্যা মাছ মনে হতো, এখনো তাই মনে হয়, দাম ৮শ টাকা কেজি। পাবদা মাছ- সবচাইতে নরম মাছ। আমার কাছে কোনোদিনই এটাকে স্বাদের মাছ মনে হয় নি। বড়োটা ১২শ টাকা কেজি, ছোটোটা ১ হাজার টাকা কেজি। চিংড়ি- ৫ শ থেকে ১১ শ টাকা কেজি। বোয়াল মাছের দাম সবচাইতে কম হওয়ায় খুশি মনে ওটা কিনে বাসায় চলে এলাম। মাছটি কষানো হলো। খাওয়ার সময় মনে হলো, অনেকদিন পর রাজ-রাজড়ার খাবার খাইলাম, এত স্বাদের রান্না হয়েছিল।
তো, এবার বুঝুন, আমি যা চেয়েছিলাম, তা কি পেয়েছি? আমি চেয়েছিলাম ৩ কেজি টেংরা, ২কেজি গুলশা এবং খাঁটি দেশি পুঁটিমাছ কিনতে। তা কি কিনতে পেরেছি? না। পারি নি। অর্থাৎ, আমি যা চাই, তা পাই না। এরকম ব্যবহারিক ও সাংসারিক জীবনে অহরহই দেখতে পাবেন, আপনি যা চাইছেন, তা কোনোদিনই পাচ্ছেন না। এই যে আপনি টেংরা-পুঁটি কিনতে চাইছেন, তা কিনতে চাইলে সংসারের সব খয়খরচসহ আপনার বেতন চাই ৬৫ হাজার টাকা। কিন্তু আপনার বেতন মাত্র ২৯ হাজার টাকা। আপনি চান গুলশান-বনানীর একটা বিলাশবহুল অ্যাপার্টমেন্টে পরিবার-পরিজন নিয়ে থাকতে; কিন্তু আপনার বেতন কম হওয়ায় আপনাকে বাসা নিতে হয়েছে বুড়িগঙ্গার ওপারে কালিগঞ্জে বা জিঞ্জিরায়। আপনি চান দামি একজোড়া লাউঞ্জ স্যুট ফেরদৌস টেইলর থেকে বানাতে; কিন্তু আপনাকে বঙ্গবাজার থেকে অনেক যাচাই-বাছাই-পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর একটা 'নিশ্ছিদ্র' কোট, আর তার সাথে রঙ ম্যাচ করা একটা প্যান্ট কিনতে হচ্ছে।
আপনি হয়ত আশা করে আছেন, ঘাতক ড্রাইভারের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে সংসদে 'সড়ক পরিবহন' আইন পাশ হবে; হয়ত আশা করে আছেন, খুন ধর্ষণ, অপহরণের আসামিকে ৭দিনের মাথায় জরুরি ট্রাইব্যুনালে ট্রায়াল করে 'ক্রস ফায়ারে' মৃত্যুদণ্ডের বিধান করে আইন করা হবে। আপনি মুক্তিযোদ্ধার নাতি; কোটার বদৌলতে একটা সরকারি চাকরি অবশ্যই পাবেন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশে- আপনি আশায় আশায় দিন গুনছেন।
এসব চাইতে চাইতে শেষ পর্যন্ত দেখতে পেলেন আপনার প্রাপ্তির ভাণ্ডার শূন্য।


এই যখন অবস্থা, তখন আমরা কি বলতে পারি না যে, গুরুকবি এই লাইনটা লেখার সময় মরীচিকার ধু-ধু দেখছিলেন, অথবা অন্যকিছু ভাবতে ভাবতে এলেবেলে এই লাইনটা লিখে ফেলেন; আর আমরা কিছু না ভেবেই এটাকে একেবারে সুমহান, অনন্য, অতুলনীয় দার্শনিক পঙ্‌ক্তি হিসাবে, জীবনের সাথে মিশে যাওয়া এক অবিচ্ছেদ্য অনুষঙ্গ করে ফেলি। অথচ, একবারও খতিয়ে দেখি নি, কথাটায় কী ফাঁকি লুকিয়ে আছে। সত্যি বলতে কী, কথাটা একেবারেই অর্থহীন। সারবত্তাহীন।
আমি এখন নিশ্চিত, রবীন্দ্রনাথ কথাটা বলতে চেয়েছিলেন এক ভাবে, কিন্তু বলে ফেলেছিলেন অন্যভাবে। কিংবা, তিনি হয়ত সঠিকভাবেই লিখেছিলেন, কিন্তু কোনোভাবে টাইপিং মিস্টেক হয়ে লেখাটা এইভাবে চলে এসেছে।
রবীন্দ্রকাব্যে এ ধরনের ভুল সারাজীবন চলতে থাকবে, তা হয় না। আমরা গুণিজন তাহলে কীজন্য আছি? এসব ভুল সংশোধন ও পরিমার্জন করা আমাদেরই কাজ। এ এক পবিত্র দায়িত্ব বটে।

সংশোধিত কথাটি হবেঃ 'আমি যাহা চাই তাহা পাই না'। অর্থাৎ, আপনি যা চেয়েছেন তা পান নি- সহজ বাংলায় এই হলো কথাটা।

এভাবে চরণের পরের অংশ 'যাহা পাই তাহা চাই না' কথাটাও ব্যবহারিক ও ব্যকরণগত দিক থেকে ভুল। আমাদের জীবনে কখনো কি এমনটা ঘটে যে, আমরা একটা জিনিস পেয়ে গেলাম, অথচ ওটা নিতে চাই না, বা খেতে চাই না, বা ব্যবহার করতে চাই না? আমার জন্মদিনে আপনি আমাকে একটা দামি আইফোন গিফট করলেন, আমি কি এতই বোকা যে ওটা আমি পানিতে ফেলে দেব? অফিসের ৫ কোটি টাকার একটা ফাইল ক্লিয়ার করে দিলাম; আমাকে মাত্র লাখ তিনেক টাকা স্পিড মানি দিয়ে আমার কাজের স্পিড তিনগুণ বাড়িয়ে দিলেন, এটা আমি চাই, বার বার চাই, প্রতিদিনই চাই। পায়ে ঠেলে এই সোনা কেউ নর্দমায় ফেলে দেয়, বলুন? এজন্য, এই কথাটা ভুল। তারপর ধরুন, খুব আশা ভরসা নিয়া পরীক্ষা দিলেন যাতে গোল্ডেন জিপিএ ফাইভ পান। তো, সেটা পাওয়ার পরই কি আপনার আক্ষেপ শুরু হইয়া যায়- হায় হায়, গোল্ডেন না পাইয়া সিলভার পাইলে অনেক বেশি ভালো লাগতো! অর্থাৎ, আপনি যা চান, তা পাইলেই খুশি হন, না পাইলে আপনিসহ আপনার চৌদ্দ গুষ্টি বেজার হোন।

অথচ দেখুন, ব্লগে বা ফেইসবুকে স্টেটাস দেয়ার পর আপনি চান মুহূর্তে 1K লাইক, শ খানেক কমেন্ট আর অর্ধশত শেয়ার হয়ে যাক। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় গোটা দশেক লাইক, হয়ত 'বাহ', 'হুম' ধরনের এক-আধটা কমেন্ট নিয়ে পুরো স্টেটাসটাই দিনভর ঝিমোচ্ছে। অন্যদিকে, আপনি বার বার মেসেজ অপশন ব্লক/ডিসএবল করে দিচ্ছেন, কিন্তু তা সত্ত্বেও কোন অলৌকিক শক্তিতে কীভাবে যেন ঘণ্টায় ঘণ্টায় ডজন ডজন ভিডিও/অডিও শেয়ার ইনবক্সে এসে জমা হচ্ছে, যা আপনি ইহজনমে খুলেও দেখেন না। টিভি দেখতে বসে বিরতিহীন একটা চমৎকার নাটক বা সিনেমা দেখতে চান। কিন্তু ১০ মিনিট পর পর ১০ মিনিট কাল ধরে বিজ্ঞাপন চলতে থাকে। আপনি চান মেসি বিশ্বকাপ জিতুক, কিন্তু সে আব্দুল কুদ্দুস হিসাবে আলু খেতে খেতে দেশে ফিরে গেল।

অর্থাৎ, আপনি চান আনন্দ, কিন্তু পান হতাশা। আপনি হতাশা না চাইলেও খালি এটাই বার বার পেতে থাকেন। আপনি চান, খুন, ধর্ষণ, সড়ক দুর্ঘটনা বা অপহরণের কোনো ঘটনা এ দেশে আর না ঘটুক। কিন্তু তা ঘটছে, গতানুগতিক ঘটনা যেন এসব। আপনি কোনো গুজব চান না; কিন্তু বাতাসের আগে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। দুর্বৃত্তরা মাথায় হেলমেট পরে, লাঠি, রাম দা, অস্ত্র হাতে নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ুক- এটা কি আপনি চান? কিন্তু এসব এখন খুব সাধারণ দৃশ্য হয়ে গেছে। এসব আরো অনেক উদাহরণ আছে, যেগুলো আপনি শুনতে চান না, দেখতে চান না, পড়তে চান না, কিন্তু ওসব অনবরত পেতেই থাকেন। আপনি সায়েদাবাদ থেকে ৩০ মিনিটে উত্তরা যেতে চান? পারবেন না। কমপক্ষে ৩ ঘণ্টা, ভাগ্য ভালো থাকলে ৫ ঘণ্টাও লাগতে পারে। আপনি যানজটমুক্ত ঢাকা শহর চান, কিন্তু প্রতিদিন এখানে পাল্লা দিয়ে জ্যাম বাড়ছে। ফ্রেশ ফলমূল, শাকসবজি, মাছমাংস চান, কিন্তু ফরমালিনের বিষে সবকিছু মাখানো, আপনার কিডনির বারোটা বাজিয়ে দিচ্ছে।

রবীন্দ্রনাথের মতো নোবেলজয়ী গুরুকবির কাব্যে এমন ভুল কি আশা করা যায়? তিনি কীভাবে এতবড়ো ভুল করেও নোবেল প্রাইজ পেলেন, তা আমার কাছে এক বিরাট বিস্ময়।
এই ভুল আজ যদি আমি সংশোধন না করে যাই, আমার মৃত্যুর পর আর কারো চোখে এই ভুল ধরা পড়ার কোনো সম্ভাবনা দেখছি না। অতএব, এই গুরুদায়িত্ব পালন না করে থাকা গেলো না।

শুদ্ধ ও সার্থক কথাটা হবে, যাহা চাই না তাহা খালি পাই

এবার দেখুন, পূর্ণ চরণটা কীরকম হবেঃ

আমি যাহা চাই তাহা পাই না, যাহা চাই না তাহা খালি পাই।

***

পাগল হইয়া বনে বনে ফিরি আপন গন্ধে মম
চঞ্চলা হরিণী সম
ফাল্গুনরাতে ফেসবুক লাইভে একটুখানি সুখ চাই
আমি যাহা চাই তাহা পাই না, যাহা চাই না তাহা খালি পাই॥

মূল কবিতা

৭ আগস্ট ২০১৮


**


ওড়াঃ বেতের বা বাঁশের চটা/চটলা দিয়ে তৈরি এক ধরনের ছোটো ঝাঁকা।
আরাঃ ডোবা/পুকুর

সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুলাই, ২০২০ রাত ১০:৫৮
২৯টি মন্তব্য ৩০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মানুষের জন্য নিয়ম নয়, নিয়মের জন্য মানুষ?

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৭



কুমিল্লা থেকে বাসযোগে (রূপান্তর পরিবহণ) ঢাকায় আসছিলাম। সাইনবোর্ড এলাকায় আসার পর ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি আটকালেন। ঘটনা কী জানতে চাইলে বললেন, আপনাদের অন্য গাড়িতে তুলে দেওয়া হবে। আপনারা নামুন।

এটা তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটা গাছ কাঠ হলো, কার কী তাতে আসে গেলো!

লিখেছেন নয়ন বড়ুয়া, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:০৬



ছবিঃ একটি ফেসবুক পেইজ থেকে

একটা গাছ আমাকে যতটা আগলে রাখতে চাই, ভালো রাখতে চাই, আমি ততটা সেই গাছের জন্য কিছুই করতে পারিনা...
তাকে কেউ হত্যা করতে চাইলে বাঁধাও দিতে পারিনা...
অথচ... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। কালবৈশাখী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:২৪



গত পরশু এমনটি ঘটেছিল , আজও ঘটলো । ৩৮ / ৩৯ সে, গরমে পুড়ে বিকেলে হটাৎ কালবৈশাখী রুদ্র বেশে হানা দিল । খুশি হলাম বেদম । রূপনগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×