তখন আমার অল্প বয়স, কতই বা আর হবে
মা-চাচি আর খালা-ফুপুর কোল ছেড়েছি সবে
তখন আমি তোমার মতো ছোট্ট ছিলাম কী যে
গেরাম ভরে ঘুরে বেড়াই বাবার কাঁধে চড়ে
সকালবেলা বিছনাখানি থাকতো রোজই ভিজে
ওসব এখন বলতে গেলে লাজ নামে চোখ ভরে
ছোট্ট হলেও বলতে পারি কাজের ছিল ধুম
যেমন ধরো- নাওয়া-খাওয়া-খেলনা এবং ঘুম
তখন আমার বই ছিল না, দাদুর গলা ধরে
সন্ধ্যাবেলা কাটতো মজার চাঁদের ছড়া পড়ে
তোমরা কি কেউ কাগজ দিয়ে নাও বানাতে পারো?
উড়োজাহাজ? ঢাউস-ঘুড়ি? কত্ত কিছু আরো?
গাছের ডালে, কিংবা ধরো ঘরের পাটাতনে
দোলনা বেঁধে দোল খেয়েছো ভাইবোনদের সনে?
আমার ছিল ঘরের পাশে ছোট্ট চিকন খাল
তার পানিতে ভেসে গেছে আমার বাল্যকাল
পুবের ধারে ছোট্ট পুকুর, ঠান্ডা ছিল জল
বর্ষাতে তায় লগ্গি ফেলে খুঁজতে হতো তল
একদিন এক বকের বাসা হঠাৎ দিয়ে হানা
পেয়েছিলাম চোখ-না-ফোটা একটি ছোটো ছানা
ডোবার ধারে ডাহুকপাখির বিষম আনাগোনা
ধানের শিষে ফাঁদ পেতেছি, কিংবা মাছের পোনা
তোমার কি ভাই লাটিম ছিল? আর কী ছিল, বলো?
বড়শিতে কি মাছ ধরেছো? ঝাঁকিজালে, পলো?
আমার ছিল উদোম গায়ে নাচনতোলা দিন
ধানের ক্ষেতে সবুজ দুপুর, বিকেলটা রঙিন
এসব কথা শুনে তোমার ইচ্ছে হতে পারে
সেই যে ছিল সোনার জীবন- কোথায় পাব তারে?
কেমন তোমার দিন কেটেছে? কোন্ গাঁয়ে? কোন্ দেশে?
কোথায় তোমার মায়ার জীবন ঘর বেঁধেছে শেষে?
আমার এখন মন টেকে না ইটপাথরের ঘরে
মন ছুটে যায় কিশোরবেলার ধু-ধু তেপান্তরে
তোমরা কি কেউ সঙ্গে যাবে? জলদি বলো নাম
বেরিয়ে পড়ো, বেরিয়ে পড়ো, ঐ দেখা যায় গ্রাম
তোমরা ভাবো- আমিও আবার গ্রাম দেখেছি নাকি?
মিথ্যে না তা- মনের ভেতর গ্রামেই পড়ে থাকি
খুব বুঝেছি খুব বুঝেছি তোমাদের কারসাজি
জলদি করো, দোস্তি মানো, দোস্তিতে হও রাজি
অবাক মধুর ছন্দদোলায় চলতে থাকো সবে
ভুলে যাওয়া নিজ ঠিকানায় আবার মিলন হবে
কাঁদছে নদী নীরব ভাষায় শুকনো যে তার বুক
তার গহনে সোনায় ভরা একখানি সিন্দুক
ঐ দেখো তার হাতছানি ভাই, বেরিয়ে পড়ো সবে
উথালপাথাল ঢেউতুফানে প্রাণখোলা উৎসবে
২৪ এপ্রিল ২০১০ রাত ১০:৫১
ডাউনলোড লিংক : ই-বুক, আজগুবি ছড়া, প্রকাশকাল : ২৬ মার্চ ২০১৮
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ৮:৫০