somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্বপ্নরচিত গল্পনাটক

২১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গত কয়েকদিন ইউটিউবে প্রচুর নাটক দেখেছি। বেশিরভাগই কমেডি ড্রামা, অল্প কিছু ছিল সামাজিক নাটক। নাটক দেখার পর মন জুড়ে আনন্দের রেশ জেগে থাকতো। সেই রেশ এভাবে স্বপ্নেও স্থান করে নিবে, এটা মনে হয় নি কখনো। ইউটিউবের সিকোয়েন্স হিসাবেই হয়ত স্বপ্নের ভিতরে নাটক ঢুকে পড়লো গতরাতে। তবে স্বপ্নের ভিতর রোমান্টিসিজমের পরিবর্তে একটা বেদনাঘন আবহের সৃষ্টি হলো। স্বপ্নের সেই ঘটনাই বলছি এখন।

স্বপ্নের ভিতর দুটো নাটক কিংবা নাটকের গল্প দেখেছি। আমরা জানি, স্বপ্নের স্থায়িত্ব খুব কম। সেই ক্ষুদ্র সময়ের মধ্যেই আমার নাটক দুটো দেখা হয়, অথচ নাটক দুটোর প্রভাব খুব দীর্ঘস্থায়ী এবং মনের মধ্যে তা গভীর ছাপও ফেলেছে।

প্রথম নাটকটা প্রকৃত অর্থে নাটক কিনা তা স্পষ্ট না। একটা গ্রামীণ পরিবেশ; একটা রাস্তার পাশে বাঁশঝাড়ের ছায়া পড়েছে, বাঁশপাতার ফাঁক দিয়ে বিকেলে হালকা আলোর ছিটা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানে মধ্যবয়স্ক একজন লোক বসে আছেন- একবার মনে হলো আমার অশীতিপর চাচা, পরক্ষণেই দেখা গেল চাচা নন, অপরিচিত তৃতীয় কোনো ব্যক্তি। আমার চাচা যেভাবে একটা পিঁড়িতে বসে বাঁশের ফলা চাঁছতেন, ঐ লোকটাও ওভাবে বসে হাতে একটা দা কিংবা অন্যকোনো বস্তু নিয়ে কাজ করছেন। তিনি ওখানে ওভাবে বসে থেকেই আগে ঘটে যাওয়া ঘটনাপ্রবাহ বা সিকোয়েলের কাহিনি বর্ণনা করলেন, তারপর পরের দৃশ্যগুলো উন্মুক্ত করে দিলেন, কিংবা গল্পগুলো ব্যাখ্যা করলেন। গল্পটা আমার কিছুই মনে নেই, শুধু এটুকু অনুভব করা যাচ্ছিল- গল্পের শুরুটা খুব অদ্ভুত ও জটিল ছিল। কিন্তু স্বপ্নের ভিতরেই আগের সিকোয়েলগুলোর সাথে ধারাবাহিকতা বজায় রেখে চমৎকার সমাপ্তি টানার অনবদ্য শৈল্পিকতায় আমি মুগ্ধ ও অভিভূত হয়ে গেলাম। এ মুহূর্তে মনে হলো, গল্পের শেষে একজন বেদনাবিধূর দুঃখিনী নারী কোনো এক জনমানবহীন, মরুভূমিপ্রায় প্রান্তরের মাঝখানে ঘোমটায় মুখ ঢেকে বসে পড়ে গুমরে কাঁদতে থাকবেন। ঘটনার পরিণতি এতই করুণ যে, আমি তৎক্ষণাৎ ফুঁপিয়ে কাঁদতে শুরু করলাম। এ নাটক বা গল্পের এভাবেই যবনিকাপাত হয়; কিংবা এরপর হয়ত কিছু ঘটেছিল, কিন্তু আমার স্বপ্নকোষ তা ধরে রাখতে পারে নি। ঘুমের ভিতরে স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে, অথচ আমার ঘুমন্ত মন তখনো বারবারই চমৎকৃত হচ্ছিল লেখকের সুনিপুণ দক্ষতা ও কৌশলে – তিনি যেভাবে গল্প শুরু করে সুন্দর সমাপ্তি টেনেছেন তার জন্য।

পরের নাটক বা গল্পটা আগের নাটকের পরবর্তী সিকোয়েল ছিল না; কিংবা এমনটাও আমি নিশ্চিত না যে, এ নাটকটা আগের নাটক শেষ হবার পর পরই দেখেছি; কিংবা একটার সাথে অন্য নাটকটা ওভারল্যাপ করেছে, ব্যাপারটা তেমনও না। কিন্তু, এ নাটকটার প্রায় পুরোটাই আমার চোখের সামনে ঘটেছে; আবার, কিছু কিছু ঘটনা আমি স্বপ্নের ভিতরেই অনুভব করে পূরণ করে নিয়েছি, অর্থাৎ, কোনো ঘটনার আগের বা পরের অংশ উহ্য থাকলে সেটা আমি নিপাতনে বুঝে নিয়েছি। ব্যাপারটা আরো পরিষ্কার করে বলি – প্রথম নাটকটা কিংবা এটা, স্বপ্নের ভিতরে আমি কোনো ইউটিউব কিংবা টেলিভিশন চ্যানেলে দেখি নি। ঘটনা আমার চোখের সামনে ঘটেছে, পাত্রপাত্রীরা স্বপ্নের ভিতরে জীবনযাপন করেছেন, যা আমার কাছে গল্প কিংবা নাটকের মতো মনে হচ্ছে। এমনও হতে পারে, আমি কিছু পাত্রপাত্রীর জীবনপ্রবাহ দেখেছি, যা আমার কাছে গল্প বলে ভ্রম হচ্ছে।

কলেজ অ্যাডমিশনের সময়ে সিনিয়র ভাইয়েরা কলেজের বিভিন্ন ক্লাসরুমের সামনে অ্যাডমিশন টেস্টের সাজেশন পেপার বিক্রি করতেন, যেগুলো ছিল ফটোকপি করা লুজশিট, যা ছিল হাতে লেখা বা স্টেনসিল্ড। আমি নীলক্ষেত থেকে ছাপানো গাইডবই কিনেছিলাম। অ্যাডমিশন টেস্টের ফর্ম ফিল আপ করে জমা দেয়ার পর আমাকে-শহর-চেনানো ইউনুস ভাইকে সাথে নিয়ে সেই সময়ের দেশের সর্বশ্রেষ্ঠ কলেজ, অত্যাশ্চর্য প্রতিভাদের কলেজ, ঢাকা কলেজের অলিগলি-করিডোর, বিভিন্ন গ্যালারি (ক্লাসরুম) ও অডিটোরিয়াম ঘুরে দেখছিলাম। সিনিয়র ভাইয়েরা সবাই তাদের নিজ নিজ সাজেশন বিক্রি করার জন্য অস্থির ছিলেন। না কিনলেই পস্তাবো, কারণ, প্রশ্ন কমন না পড়লেই মনে হবে, ইশ্‌শিরে, বড়ো ভাইদের সাজেশন পেপারেই সব কমন প্রশ্ন ছিল! তাই অনেকগুলো সাজেশন পেপার কেনার ইচ্ছে থাকলেও টাকার অভাবে অল্প কয়েকটা কিনেছিলাম।

আমার বড়ো ছেলে যখন বিবিএ, অনার্স থার্ড ইয়ারে, তখন তাকে একদিন বললাম, ‘তোমার রেজাল্টটা ভালো করার চেষ্টা করো, শুধু গানবাজনা কইরা ভার্সিটি পার করলে তো রেজাল্ট খারাপ হবে, বিসিএস দিতে পারবা না।’ ছেলে এ কথা শুনে মুখ ম্লান করে বললো, ‘আমি তো আপনাকে অন্য বাবাদের চাইতে আলাদা ভাবছিলাম।’ আমি অবাক হয়ে এমন কমেন্টের কারণ জিজ্ঞাসা করলে সে আমাকে আরো অবাক করে দিয়ে বললো, ‘সবার বাবা-মা তাদের ছেলেমেয়েদেরকে বিসিএস দেয়ার জন্য অ্যাডভাইস দিয়া দিয়া পাগল করে ফেলে। আপনি কোনোদিন দেন নাই বলে প্রাইড নিতাম। আজ তো আপনিও দিলেন।’ সবাই কি তাহলে ‘স্বতন্ত্রতা’ই পছন্দ করে? আমি অন্য বাবাদের চাইতে ‘স্বতন্ত্র’ হতে পারি নি বলে কিছুটা হলেও বুকে ব্যথা অনুভব করেছিলাম; এবং তার পর থেকে আর কোনোদিন ছেলেকে বিসিএস অফিসার হবার জন্য কোনো প্রেষণা কিংবা অনুপ্রেরণা দিই নি। তার ভবিষ্যত সে নিজে গড়ে নিবে। প্রত্যেকের ভবিষ্যত তার নিজের ‘ভাগ্যরেখা’য় অঙ্কিত, যেটি তাকে নিজ হাতেই কেটে নিতে হয়।

বাজারে ডিফেন্স অ্যাডমিশন গাইড, কলেজ, মেডিক্যাল কলেজ বা ইউনিভার্সিটি অ্যাডমিশন গাইডের মতো বিসিএস পরীক্ষার গাইডও হয়ত থাকবে। ‘হয়ত’ বলছি এ কারণে যে, বিসিএস গাইড আমি কখনো দেখি নি, অথচ গতরাতের শেষ বা দ্বিতীয় স্বপ্নটা ছিল বিসিএস গাইড নিয়ে।

এ স্বপ্নটার পটভূমিও একটা গ্রামীণ জনপদ।
একটা রাস্তার মোড়। দুপুর গড়িয়েছে। গাছগাছালিতে রাস্তার একটা দিক ছাওয়া, অন্যদিকে সূর্যের মৃদু হলুদাভ রোদ বাঁকা হয়ে নেমে আসছে। এখানে অল্প কিছু লোকের জটলা- বাদামওয়ালা, আচারওয়ালা, ঝালমুড়িওয়ালা – এমন ধরনের কিছু দোকানওয়ালা এখানে বেচাকিনি করছেন। আমি এসব দেখছি, কিন্তু কোথায় আমার অবস্থিতি তা জানি না। আমরা টেলিভিশন কিংবা সিনেমা যখন দেখি, পর্দায় গল্প বা ঘটনা চলমান থাকে, আমরা সেই গল্পের ভিতরে থাকি না, আমরা পর্দার বাইরে দর্শক হিসাবে থাকি। স্বপ্নের এ নাটকেও আমার উপস্থিতি এরকম- মানুষের জীবনযাত্রা, চলাচল দেখতে পাচ্ছি, কিন্তু আমার অবস্থান কোথায় তা দেখতে পাচ্ছি না আমি।

আমার উল্টোদিক থেকে এমন সময় এক জীর্ণশীর্ণ, হালকা গড়নের, সামনে সামান্য কুঁজো হওয়া, সাদা ও ময়লা পায়জামা-পাঞ্জাবি পরা, গরীব ধরনের লোক বেশ হকার ছেলেদের মতো হেঁটে আসতে থাকলেন, যার হাতে একগোছা বিসিএস ভর্তি সহায়িকা বই – যদিও বইগুলোর নাম দেখা গেল না, কেউ আমাকে বলেও দেয় নি, তবুও স্বপ্নসুলভ নিয়মে আমি জানলাম, এগুলো বিসিএস ভর্তি পরীক্ষার গাইড। এবং এমন সময়ে আমি বুঝতে পারলাম, আমি একজন শিক্ষিতা ও উচ্চমার্গীয় ভদ্রমহিলার পাশে বায়বীয় অবস্থায় উপস্থিত রয়েছি। যুগপৎ দেখতে পাচ্ছি, আমার দৃষ্টির ডানদিকে তীর্যক কোণ বরাবর খুব নিকটে তিনি দাঁড়িয়ে আছেন; তার বাদামি রঙের অভিজাত শাড়িটা আমার চোখে দৃশ্যত হচ্ছে। পরের মুহূর্তেই গাইডওয়ালা লোকটি এ মহিলার হাতে একখানা ভর্তিগাইড তুলে দিলেন। মহিলা বইটি হাতে নিয়ে পৃষ্ঠা খুলে তাতে কী যেন লিখতে থাকলেন। আমি আড়চোখে কিংবা অন্তরের চোখে দেখতে পাচ্ছি - তার ঠোঁটে এক রহস্যময় নিষ্ঠুর ক্রূর হাসির অস্ফুট চিকন রেখা ভেসে উঠছে; হ্যাঁ, ঠোঁটখানি একটুখানি বাঁকাও করলেন তিনি। গাইডওয়ালার প্রতি কিছুটা ক্ষোভও হয়ত তার মনে ফুটে উঠছে। তার হাতে গাইডবই তুলে দেয়ায় তিনি আহত বা অপমানিত বোধ করছেন। এসব বইয়ের তার কোনো প্রয়োজন নেই। ইচ্ছে করলে তিনি নিজেই এখন সেরা বিসিএস গাইড রচনা করতে পারেন। এখানে এই বিপনিচত্বরে এসে দাঁড়ানো মানেই কি বিসিএস গাইড কেনা? কেন তার হাতে মানুষ এসব আবর্জনা তুলে দেয়? তাকে দেখে কি কিছুই বোঝা যায় না? ভদ্রমহিলার অন্তরে অহঙ্কারগুলো আক্রোশে নীরবে ফুঁসতে থাকে। মানুষের কীভাবে এত আস্পর্ধা হয়? কাণ্ডজ্ঞান বলতে কিছু নেই মানুষের- গাইডওয়ালার বোঝা উচিত ছিল, তিনি বিসিএস পরীক্ষার্থী নন, বরং স্বয়ংসম্পূর্ণ বিসিএস অফিসার একজন, যিনি নিজেই অগণিত বিসিএস অফিসারের সুপিরিয়র তত্ত্বাবধায়ক। শুরুতে তিনি গাইডবইয়ের ভিতরের পাতায় কী যেন লিখেছিলেন মনে হয়েছিল; কিন্তু স্বপ্নপট বদলে গেছে; এখন দেখা যাচ্ছে তিনি একটা ফুল’স ক্যাপ সাইজ সাদা কাগজে কবিতার মতো ইংরেজিতে দুটো প্যারাগ্রাফ লিখেছেন- চমৎকার হাতের লেখা, সাদা কাগজের উপরে নীল কালির অক্ষরগুলো শিল্প হয়ে ফুটে উঠেছে। তিনি কাগজটি কিংবা বিসিএস গাইডটি লোকটার হাতে ফেরত দিলেন। লোকটার গাইড বইটি বিক্রি হলো না; বিমর্ষ মুখে ওটি ফেরত নিয়ে চলে যেতে থাকলেন গাইডওয়ালা। একটু দূরে গিয়ে তিনি ঘুরে দাঁড়ালেন। ভদ্রমহিলার দিকে তাকাচ্ছেন তিনি, তার কপালে সামান্য ভাঁজ পড়ে, চোখদুটো একটু সরু হতে থাকে, সেখানে জমে উঠতে থাকে একগাঁদা জিজ্ঞাসা ও বিস্ময়। কোথায় যেন ভদ্র মহিলাকে দেখেছেন তিনি। হয়ত চিনতে পারবেন তাকে। চেষ্টা করলেই চিনতে পারবেন। তিনি খুব করে তাকে চিনতে চেষ্টা করছেন। হ্যাঁ, তার মনে পড়ছে। এখানে দ্রুত, খুব দ্রুত একটা ফ্ল্যাশব্যাক ঘটতে থাকে।

এই ভদ্রমহিলা তার পরিচিতা। অনেকদিন আগে একবার তাদের দেখা হয়েছিল, ঠিক এখানেই। তারা একসাথে এই জায়গা থেকে বিসিএস ভর্তি গাইড কিনেছিলেন। বিসিএস ভর্তি নিয়ে তাদের মধ্যে বেশ আলোচনাও হয়েছিল। একদিনের দেখায় কার কতটুকুই বা মনে থাকে? গাইডওয়ালা সেদিনের কথা ভোলেন নি।
লোকটা ঘুরে দাঁড়িয়ে আছেন। তার ঠোঁটে পান খাওয়ার চিহ্ন। তার গরীব চোখদুটো কিছুটা উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। তিনি সম্ভবত মুখ ফুটে বলতে চাইছেন- ‘আরে আরে, আপনি সেই বিসিএস পরীক্ষার্থী মেয়েটা না? আপনি কি আমাকে চিনতে পেরেছেন? সেই যে একবার আমাদের দেখা হয়েছিল?’ তিনি কথাটা বলতে চাইছেন, হয়ত এখনই বলবেন… কিন্তু, শেষ মুহূর্তে তিনি কথাটা আর জিজ্ঞাসা করলেন না। আমার তখনো ঘুম ভাঙে নি, কিন্তু গল্পটা ওখানে ঐ অবস্থায়ই শেষ হয়ে যায়, কিংবা দৃশ্য ওখানে ‘ফ্রিজ’ বা স্থির হয়ে যায়। আমি ঘুমের ভিতর কিংবা স্বপ্নের ভিতরেই বলতে থাকি- অসাধারণ একটা প্লট তো! একজোড়া যুবক-যুবতী, যারা জীবনের কোনো এক পর্যায়ে একসাথে বিসিএস ভর্তি গাইড কিনে, একসাথে স্টাডি করে। মেয়েটা বিসিএস পাশ করে ডাকসাইটে অফিসার হয়ে যায়। উচ্চপদ আর আভিজাত্যের চাপে তার অতীতের দৈন্য নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়, বলা যায়, তার কোনো অতীত থাকে না, পুরোটাই সুবর্ণ বর্তমান। ছেলেটার বিসিএস পরীক্ষার বয়স পেরিয়ে যায়, ভাগ্যচক্রে সে নিঃস্ব হয়ে পড়ে, একসময় নিজেই বিসিএস ভর্তি গাইড ফেরি করে বিক্রি শুরু করে। ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস! আমি স্বপ্নের ভিতরই আফসোস করতে থাকি- হায়, এ নাটকটা যদি না থাকতো, এটা নিয়ে কত সুন্দর একটা গল্প লিখতে পারতাম!

ঘুম ভাঙবার পর আমি এ ভেবে অবাক হলাম যে, স্বপ্নে দেখা নাটক বা গল্পটা আদতেই অভিনব। আমি এ যাবত যত নাটক দেখেছি বা গল্প পড়েছি, তা থেকে এর থিম সম্পূর্ণ ভিন্ন। ইউটিউব বা টিভি চ্যানেলে নাটক দেখার প্রতিফলন হিসাবেই হয়ত স্বপ্নের ভিতরেও নাটক মঞ্চস্থ হয়েছে; তবে স্বপ্নের থিমের সাথে আমার বাস্তব চালচিত্রের কোনো মিল আছে কিনা তা নিয়ে আমি নিজেই সন্দিহান। বিসিএস নিয়ে বড়ো ছেলের সাথে সেই যে বহুদিন আগে একবার আলোচনা হয়েছিল, তারপর আর কোনোদিন সেই আলোচনা আমাদের টেবিলে স্থান পায় নি। ছেলের ভবিষ্যত যথারীতি ছেলের হাতেই ন্যস্ত, সে আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে সুন্দর ভবিষ্যত গড়ে তোলার জন্য। ইতোমধ্যে আমার শেষ গল্পটা লেখার পর মাঝখানে বড়ো একটা বিরতি চলে গেছে। মাথার ভিতর জড়ো হয়েছে আরো অসংখ্য প্লট। গত সন্ধ্যায় নতুন আরেকটা প্লটের কথা ভাবছিলাম, যেটি মনে মনে গুছিয়েও ফেলেছি। আজ আমার সেই গল্পটিই লেখার কথা ছিল। ‘লিরিক’ নামক একটা গল্প লেখা পেন্ডিং রয়েছে অনেকদিন ধরে, যেটি লিখবো বলে ডুলুকে কথা দিয়েছিলাম। গত সন্ধ্যায় যে প্লটটা গুছিয়ে ফেলেছি, ওটা আসলে সেই ‘লিরিক’ গল্পের প্লট। ডুলুকে দেয়া কথা রাখার জন্য হলেও ঐ গল্পটা লেখা হবে, কিন্তু, স্বপ্নের এই অসাধারণ থিমটা যদি ধরে না রাখি, তাহলে অন্য অনেক ব্রিলিয়ান্ট থিমের মতো এটাও একসময় হারিয়ে যেত, তাই স্বপ্নটাকে ধরে রাখার জন্যই স্বপ্নে পাওয়া নাটকের গল্পটা লিখে ফেললাম।

২১ ডিসেম্বর ২০২০
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৪৭
১৪টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×